সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি
আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগী বা ‘দোসর’ হয়ে কাজ করেছেন এমন ৪৪ জন সচিবের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ‘জুলাই ঐক্য’। এসব সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। তারা একইসঙ্গে ৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটের তালিকা প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন।
মঙ্গলবার,(২০ মে ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করেন জুলাই ঐক্যের নেতারা।
এই তালিকা প্রধান উপদেষ্টা এবং জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তুলে দেয়া হবে জানিয়ে জুলাই ঐক্যের নেতারা বলেন, তারা কী ব্যবস্থা নেয় দেখে আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে।
বক্তারা বলেন, ‘ স্বৈরাচারী সরকার পালিয়ে গেছে। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসরা বিদ্যমান সর্বত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি পালিয়ে গেছেন। আবার ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেয়া বহু নেতাও পালিয়ে গেছেন। আর তাদের এসব কর্মকর্তাই পালাতে সহযোগিতা করেছেন।’
ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে কিন্তু ‘অন্য কিছু বদলায়নি’ মন্তব্য করে তারা বলেন, ‘সেই পেটোয়া বাহিনী, সেই কর্মকর্তা সবই বহাল তবিয়তে রয়েছে।’
গণঅভ্যুত্থানে নিহত মুনতাছির রহমান আরিফের বাবা গাজিউর রহমান তালিকা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার ছেলে ফ্যাসিবাদীর বিলুপ্তি চেয়েছিল। চেয়েছিলাম একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে দেশ ভালো চলবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারকে যারা ইন্ধন দিয়েছে তারা বহাল তবিয়তে আছে। আমরা যে মামলা করেছি তার একজন অপরাধীকেও ধরা হয়নি। না ধরলে বিচার কীভাবে হবে? উল্টো আমাদের হুমকি দিচ্ছে। গত ১৬ বছর যারা জেলে ছিল তারা তো বাড়িতে সুখে দিন কাটাচ্ছে, তারা তো একটা মামলা করেনি। মামলা কি শুধু আমরা করবো?’
যারা হত্যা করেছে তারাই আবার এই ঘটনার তদন্ত করছে অভিযোগ করে গাজিউর রহমান বলেন, ‘তাহলে কীভাবে সত্য উদ্ঘাটন হবে? কীভাবেই বিচার হবে? আমরা জানি এখন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মকর্তারা বহাল রয়েছেন।’
৪৪ জন সচিব ও কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন, পানি সচিব নাজমুল হাসান, পরিবেশ সচিব ফারহানা আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জুবায়ের, কৃষি সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান ইব্রাহিমসহ ৪৪ জন। যাদের সবাই কর্মরত আছেন।
জুলাই ঐক্যের নেতা প্লাবন তারিক অভিযোগ করেন, ‘লীগের সময় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন এসব সচিব। আওয়ামী লীগ সরকার সুযোগ দিয়ে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েছে।’
সচিব নাজমুল আহসান এক সময় সাতক্ষীরার ডিসি ছিলেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তার নির্দেশে অনেক মানুষের বাড়িঘর ভেঙেছেন। তিনি কট্টোর আওয়ামী লীগের সমর্থক। তারা কিন্তু বহাল তবিয়তে আছেন। সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব মফিউর রহমান মুজিব শতবর্ষের সময় বই লেখেন। তিনি বানোয়াট গল্প লিখে তাঁবেদারি করেছেন। তার বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবি উঠলেও বর্তমান সরকার তা শোনেনি। এ ধরনের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে সেসব কর্মকর্তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের না সরালে জুলাই বিপ্লবের স্প্রিরিট থাকবে না।’
৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রটের তালিকা প্রকাশ করে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপরে গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
এই তালিকা প্রকাশ করে জুলাই ঐক্যের নেতা আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদে সিস্টেম দাঁড় করাতে সবক্ষেত্রের কর্মকর্তাদের দরকার হয়। তাদের তালিকা আমরা প্রকাশ করেছি। আমরা ঝুঁকি নিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করছি। জুলাই আন্দোলনকে ব্যর্থ হতে দেবো না।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে কিছু দাবি জানানো হয়েছে জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো- আগামী ৩১ মে এর মধ্যে তালিকায় উল্লিখিত ‘সন্ত্রাসী’ দল আওয়ামী লীগের সব দোসরকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে হবে। তিন সরকারি কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি দেশের জনগণকে দেখাতে হবে।
দেশের তথ্য পাচারকারী ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালানো, নির্দেশকারী এবং সহযোগিতাকারী সব আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবারসহ সবার ব্যাংক হিসাব ও অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে।
স্বৈরাচারের দোসর আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘আগামী ৩৬ জুলাইয়ের’ (৫ আগস্ট) মধ্যে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সব স্বৈরাচারের দোসরের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। আইনের ১৩২ ধারার কারণে থানায় খুনি পুলিশদের নামে মামলা নেয়া হয় না। আগামী ৩১ মের মধ্যে এই ধারা বাতিল অথবা সংশোধন করতে হবে। আগামী ৩১ মের মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারা এখন কোথায় আছে এবং কতজন, কার সহযোগিতায় দেশ ছেড়েছে তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী ৩১ মের মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ, সচিবালয় ও প্রশাসন স্বৈরাচারের দোসর মুক্ত এবং ১৩২ ধারা বাতিল বা সংশোধন না করলে ছাত্র-জনতা এবং জুলাইয়ের স্প্রিরিট ধারণকারী সব সংগঠনকে নিয়ে মার্চ টু সচিবালয়সহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
আওয়ামী লীগ সরকারের সহযোগী বা ‘দোসর’ হয়ে কাজ করেছেন এমন ৪৪ জন সচিবের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ‘জুলাই ঐক্য’। এসব সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। তারা একইসঙ্গে ৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রেটের তালিকা প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন।
মঙ্গলবার,(২০ মে ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করেন জুলাই ঐক্যের নেতারা।
এই তালিকা প্রধান উপদেষ্টা এবং জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তুলে দেয়া হবে জানিয়ে জুলাই ঐক্যের নেতারা বলেন, তারা কী ব্যবস্থা নেয় দেখে আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে।
বক্তারা বলেন, ‘ স্বৈরাচারী সরকার পালিয়ে গেছে। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসরা বিদ্যমান সর্বত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি পালিয়ে গেছেন। আবার ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেয়া বহু নেতাও পালিয়ে গেছেন। আর তাদের এসব কর্মকর্তাই পালাতে সহযোগিতা করেছেন।’
ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে কিন্তু ‘অন্য কিছু বদলায়নি’ মন্তব্য করে তারা বলেন, ‘সেই পেটোয়া বাহিনী, সেই কর্মকর্তা সবই বহাল তবিয়তে রয়েছে।’
গণঅভ্যুত্থানে নিহত মুনতাছির রহমান আরিফের বাবা গাজিউর রহমান তালিকা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার ছেলে ফ্যাসিবাদীর বিলুপ্তি চেয়েছিল। চেয়েছিলাম একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে দেশ ভালো চলবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারকে যারা ইন্ধন দিয়েছে তারা বহাল তবিয়তে আছে। আমরা যে মামলা করেছি তার একজন অপরাধীকেও ধরা হয়নি। না ধরলে বিচার কীভাবে হবে? উল্টো আমাদের হুমকি দিচ্ছে। গত ১৬ বছর যারা জেলে ছিল তারা তো বাড়িতে সুখে দিন কাটাচ্ছে, তারা তো একটা মামলা করেনি। মামলা কি শুধু আমরা করবো?’
যারা হত্যা করেছে তারাই আবার এই ঘটনার তদন্ত করছে অভিযোগ করে গাজিউর রহমান বলেন, ‘তাহলে কীভাবে সত্য উদ্ঘাটন হবে? কীভাবেই বিচার হবে? আমরা জানি এখন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মকর্তারা বহাল রয়েছেন।’
৪৪ জন সচিব ও কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন, পানি সচিব নাজমুল হাসান, পরিবেশ সচিব ফারহানা আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জুবায়ের, কৃষি সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান ইব্রাহিমসহ ৪৪ জন। যাদের সবাই কর্মরত আছেন।
জুলাই ঐক্যের নেতা প্লাবন তারিক অভিযোগ করেন, ‘লীগের সময় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন এসব সচিব। আওয়ামী লীগ সরকার সুযোগ দিয়ে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েছে।’
সচিব নাজমুল আহসান এক সময় সাতক্ষীরার ডিসি ছিলেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তার নির্দেশে অনেক মানুষের বাড়িঘর ভেঙেছেন। তিনি কট্টোর আওয়ামী লীগের সমর্থক। তারা কিন্তু বহাল তবিয়তে আছেন। সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব মফিউর রহমান মুজিব শতবর্ষের সময় বই লেখেন। তিনি বানোয়াট গল্প লিখে তাঁবেদারি করেছেন। তার বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবি উঠলেও বর্তমান সরকার তা শোনেনি। এ ধরনের অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে সেসব কর্মকর্তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের না সরালে জুলাই বিপ্লবের স্প্রিরিট থাকবে না।’
৯৫ জন ম্যাজিস্ট্রটের তালিকা প্রকাশ করে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপরে গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
এই তালিকা প্রকাশ করে জুলাই ঐক্যের নেতা আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদে সিস্টেম দাঁড় করাতে সবক্ষেত্রের কর্মকর্তাদের দরকার হয়। তাদের তালিকা আমরা প্রকাশ করেছি। আমরা ঝুঁকি নিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করছি। জুলাই আন্দোলনকে ব্যর্থ হতে দেবো না।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছে কিছু দাবি জানানো হয়েছে জুলাই ঐক্যের পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো- আগামী ৩১ মে এর মধ্যে তালিকায় উল্লিখিত ‘সন্ত্রাসী’ দল আওয়ামী লীগের সব দোসরকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে হবে। তিন সরকারি কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃশ্যমান কাজের অগ্রগতি দেশের জনগণকে দেখাতে হবে।
দেশের তথ্য পাচারকারী ছাত্র-জনতার বুকে গুলি চালানো, নির্দেশকারী এবং সহযোগিতাকারী সব আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবারসহ সবার ব্যাংক হিসাব ও অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে।
স্বৈরাচারের দোসর আমলা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
‘আগামী ৩৬ জুলাইয়ের’ (৫ আগস্ট) মধ্যে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত সব স্বৈরাচারের দোসরের শ্বেতপত্র সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। আইনের ১৩২ ধারার কারণে থানায় খুনি পুলিশদের নামে মামলা নেয়া হয় না। আগামী ৩১ মের মধ্যে এই ধারা বাতিল অথবা সংশোধন করতে হবে। আগামী ৩১ মের মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তারা এখন কোথায় আছে এবং কতজন, কার সহযোগিতায় দেশ ছেড়েছে তাদের তালিকাও প্রকাশ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী ৩১ মের মধ্যে সেনানিবাসে আশ্রয় নেয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ, সচিবালয় ও প্রশাসন স্বৈরাচারের দোসর মুক্ত এবং ১৩২ ধারা বাতিল বা সংশোধন না করলে ছাত্র-জনতা এবং জুলাইয়ের স্প্রিরিট ধারণকারী সব সংগঠনকে নিয়ে মার্চ টু সচিবালয়সহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।