alt

জাতীয়

কালের আবর্তে শৈল্পিক কারুকার্যের বাবুই পাখির বাসার দেখা মেলা ভার

মনিরুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা : মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

বাবুই পাখির বাসা -সংবাদ

শৈল্পিক কারুকার্যে ভরা বাবুইপাখির বাসা, এখন খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে। আবহমান গ্রাম বাংলায় তাল কিংবা নারকেল বা সুপারি গাছে বেশি দেখা যেতো বাবুই পাখির বাসা।

পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি পর্যন্ত বাসা তৈরি করতে পারে, একটা বাসা তৈরিতে ১০/১২ দিন সময় লাগে

বিশ্বে বাবুই পাখির প্রজাতির সংখ্যা১১৭টি। আমাদের দেশে তিন প্রজাতির বাবুই দেখা যায়

শীতকালের শুরুতে শিল্পী পাখি বাবুই বুনতে শুরু করতো তার বাসা। কোনোটা এক কক্ষ, আবার কোনোটাতে থাকতো একাধিক কক্ষও। তাদের বাসার বুনন দেখে কম-বেশি সবাই মুগ্ধ হতো।

কালের বিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে আজ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে বাবুই পাখির বাসা। কারণ তাল গাছ কমে যাচ্ছে। কমছে পাখির সংখ্যাও।

জানা যায়, আগে চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ আশপাশের গ্রামগঞ্জের তাল, নারিকেল, বাবলা ও সুপারি গাছে প্রচুর বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়তো। এসব বাসা শুধুমাত্র শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক এবং উৎসাহ জোগাত। পাখি প্রেমিরা বলেন, বাবুই পাখির বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়ে বাতাসে টিকে থাকে। খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ, ঘাস, আখের পাতা ও কাঁশবনের লতাপাতা দিয়ে উঁচুগাছে বাসা তৈরি করে বাবুই পাখিরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, বাবুই পাখির একটা বাসা তৈরিতে ১০/১২ দিন সময় লাগে। এপ্রিলের শেষ থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এদের প্রজনন কাল। প্রজনন সময় ছাড়া অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী পাখির গায়ে কালো কালো দাগসহ পিঠ তামাটে বর্ণের হয়। নিচের দিকে কোনো দাগ থাকে না। ঠোঁট পুরো মোচাকৃতি, লেজ চৌকা। তবে প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখির রঙ হয় গাঢ় বাদামি। বুকের ওপরের দিক হয় ফ্যাকাশে।

পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি পর্যন্ত বাসা তৈরি করতে পারে। সেই বাসাগুলোতেই প্রজনন প্রক্রিয়ায় স্ত্রী বাবুই ডিমে তা দেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। আর তিন সপ্তাহ পর বাবুই বাচ্চা ছেড়ে উড়ে যায়। বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম হলো পাকা ধানের মৌসুম। স্ত্রী বাবুই দুধ, ধান সংগ্রহ করে বাচ্চাদের খাওয়ায়। বাবুই পাখির প্রধান খাদ্য তালিকায় আছে ধান, চাল, গম, পোকা-মাকড় প্রভৃতি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পাখি ও পরিবেশবিদ বকতিয়ার হামিদ বলেন, এক সময় গ্রামাঞ্চলে প্রচুর তাল, নারিকেল, বাবলা গাছ ও খেজুরগাছ দেখা যেত। আর এ সব গাছে বাসা বেঁধে বসবাস করত বাবুই পাখি। বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দ এবং তাদের শৈল্পিক বাসা মানুষকে আনন্দ দিত। কিন্তু বর্তমানে সেই তালগাছ যেমন আর দেখা যায় না, তেমনি দেখা মেলে না শৈল্পিক বাবুই পাখিরও। গ্রামের মাঠের ধারে, পুকুর কিংবা নদীর তীরে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে শৈল্পিক পাখি বাবুইও। এখন এসব যেন বইয়ের ছড়া এবং দাদুর কাছে শোনা গল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

দর্শনা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল আলম বলেন, ‘বাবুই-চড়ুই সদৃশ পাখি। বিশ্বে বাবুই পাখির

প্রজাতির সংখ্যা ১১৭টি। তবে আমাদের দেশে তিন প্রজাতির বাবুই বাস করে। এগুলো হলো বাংলা বাবুই, দাগী বাবুই ও দেশি বাবুই। গাছে ঝুড়ির মতো চমৎকার বাসা তৈরি করায় এ পাখির পরিচিতি জগতজোড়া। অনেকেই একে তাঁতি পাখিও বলে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, পরিবেশে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা এবং বড় বড় তাল, খেজুর, নারিকেল ও বাবলা গাছ না থাকার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে ‘কারিগর’ পাখি- বাবুই। তাই বাবুই পাখি ও এর শৈল্পিক নিদর্শন, নিজের বোনা বাসা রক্ষার জন্য দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

পিএনআর দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, গ্রাহকদের সতর্ক করলো বিমান

স্ত্রীকে খুন করে থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ

কারওয়ান বাজারে পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে শিশুর মৃত্যু

চকরিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধ: প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে ভাবছে সরকার - অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক: নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার ওপর গুরুত্বারোপ

ছবি

নৌ-বাহিনীর অভিযান: নাবিক ভর্তি জালিয়াত চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার

৪৩তম বিসিএস থেকে বাদ পড়া ১৬২ প্রার্থী গেজেটভুক্ত

ছবি

৩ জুন থেকে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করবে বিআরটিসি

এক মাসে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৪৮ হাজার

ছবি

ঢাকার রাস্তায় ‘বিএনপি কর্মীকে’ কোপানোর ভিডিও ফেইসবুকে, থানায় মামলা

আ’লীগের ‘দোসর’ ৪৪ সচিব ও ৯৫ ম্যাজিস্ট্রেটের তালিকা প্রকাশ ‘জুলাই ঐক্য’র

সাম্য হত্যা: পৌনে এক ঘণ্টা পর শাহবাগ ছাড়লো ছাত্রদল নেতাকর্মীরা

এনবিআর দুই ভাগই থাকবে, ভুল বোঝাবুঝি দূর হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

‘আমি বলছি, আপনি গ্রেপ্তার করেন,’ পুলিশের সঙ্গে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টায় তিনজন আটক

ছবি

নিরাপত্তা রক্ষায় বাহিনীগুলোর ভূমিকার প্রশংসা ইউনূসের

সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫: নতুন ধারায় সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ

ছবি

আধুনিক দেশ গড়ার ক্ষেত্রে ‘কালো ছায়া’ দেখছেন মির্জা ফখরুল

ছবি

ইশরাকের পক্ষে যোগ দিলো কর্মচারী ইউনিয়ন, সেবা বন্ধের হুমকি

ছবি

সাম্য হত্যা: ঢাবি শিক্ষার্থীদের লং মার্চের হুঁশিয়ারি, নয় দফা দাবি

ছবি

কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত নুসরাত ফারিয়া

ছবি

পিএনআর দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ, গ্রাহকদের সতর্ক করল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স

ঢাকায় উড্ডয়নের পর তার্কিশ এয়ারলাইন্সের ইঞ্জিনে আগুন

ছবি

হত্যাচেষ্টা মামলা: জামিনে মুক্তির পথে নুসরাত ফারিয়া

ছবি

হজ করতে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৫১২৭৮ জন, আরও একজনের মৃত্যু

ছবি

যশোরে এক দশকে ভরাট হয়েছে শতাধিক জলাশয়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে ‘সার্চ কমিটি’ গঠন

ছবি

স্বাধীনতা জাদুঘরের ‘ধ্বংসস্তূপ’ পরিদর্শন সংস্কৃতি উপদেষ্টার

ছবি

‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ গঠনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান তিতুমীর শিক্ষার্থীদের

পুলিশের অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজিসহ ৮২ কর্মকর্তা ওএসডি

কর্মবিরতিতে অচল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ

বিমানের চাকা খুলে পড়ার ঘটনায় যা বলছে কর্তৃপক্ষ

ছবি

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: দ্বিতীয় দিনও বিপাকে রপ্তানিকারক ও ট্রাকচালকরা

যশোরে বোমা বিস্ফোরণে তিন ভাইবোন হতাহত

আ’লীগের চোরতন্ত্রের আমলারা আবার উজ্জীবিত, অর্থনীতির ভালো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না: দেবপ্রিয়

ঐকমত্য কমিশনের অনেক প্রস্তাবে ‘ঘোরতর’ দ্বিমত সিপিবির

tab

জাতীয়

কালের আবর্তে শৈল্পিক কারুকার্যের বাবুই পাখির বাসার দেখা মেলা ভার

মনিরুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা

বাবুই পাখির বাসা -সংবাদ

মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

শৈল্পিক কারুকার্যে ভরা বাবুইপাখির বাসা, এখন খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে। আবহমান গ্রাম বাংলায় তাল কিংবা নারকেল বা সুপারি গাছে বেশি দেখা যেতো বাবুই পাখির বাসা।

পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি পর্যন্ত বাসা তৈরি করতে পারে, একটা বাসা তৈরিতে ১০/১২ দিন সময় লাগে

বিশ্বে বাবুই পাখির প্রজাতির সংখ্যা১১৭টি। আমাদের দেশে তিন প্রজাতির বাবুই দেখা যায়

শীতকালের শুরুতে শিল্পী পাখি বাবুই বুনতে শুরু করতো তার বাসা। কোনোটা এক কক্ষ, আবার কোনোটাতে থাকতো একাধিক কক্ষও। তাদের বাসার বুনন দেখে কম-বেশি সবাই মুগ্ধ হতো।

কালের বিবর্তন ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে আজ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে বাবুই পাখির বাসা। কারণ তাল গাছ কমে যাচ্ছে। কমছে পাখির সংখ্যাও।

জানা যায়, আগে চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ আশপাশের গ্রামগঞ্জের তাল, নারিকেল, বাবলা ও সুপারি গাছে প্রচুর বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়তো। এসব বাসা শুধুমাত্র শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক এবং উৎসাহ জোগাত। পাখি প্রেমিরা বলেন, বাবুই পাখির বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়ে বাতাসে টিকে থাকে। খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ, ঘাস, আখের পাতা ও কাঁশবনের লতাপাতা দিয়ে উঁচুগাছে বাসা তৈরি করে বাবুই পাখিরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, বাবুই পাখির একটা বাসা তৈরিতে ১০/১২ দিন সময় লাগে। এপ্রিলের শেষ থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এদের প্রজনন কাল। প্রজনন সময় ছাড়া অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী পাখির গায়ে কালো কালো দাগসহ পিঠ তামাটে বর্ণের হয়। নিচের দিকে কোনো দাগ থাকে না। ঠোঁট পুরো মোচাকৃতি, লেজ চৌকা। তবে প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখির রঙ হয় গাঢ় বাদামি। বুকের ওপরের দিক হয় ফ্যাকাশে।

পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি পর্যন্ত বাসা তৈরি করতে পারে। সেই বাসাগুলোতেই প্রজনন প্রক্রিয়ায় স্ত্রী বাবুই ডিমে তা দেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। আর তিন সপ্তাহ পর বাবুই বাচ্চা ছেড়ে উড়ে যায়। বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম হলো পাকা ধানের মৌসুম। স্ত্রী বাবুই দুধ, ধান সংগ্রহ করে বাচ্চাদের খাওয়ায়। বাবুই পাখির প্রধান খাদ্য তালিকায় আছে ধান, চাল, গম, পোকা-মাকড় প্রভৃতি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পাখি ও পরিবেশবিদ বকতিয়ার হামিদ বলেন, এক সময় গ্রামাঞ্চলে প্রচুর তাল, নারিকেল, বাবলা গাছ ও খেজুরগাছ দেখা যেত। আর এ সব গাছে বাসা বেঁধে বসবাস করত বাবুই পাখি। বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দ এবং তাদের শৈল্পিক বাসা মানুষকে আনন্দ দিত। কিন্তু বর্তমানে সেই তালগাছ যেমন আর দেখা যায় না, তেমনি দেখা মেলে না শৈল্পিক বাবুই পাখিরও। গ্রামের মাঠের ধারে, পুকুর কিংবা নদীর তীরে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে শৈল্পিক পাখি বাবুইও। এখন এসব যেন বইয়ের ছড়া এবং দাদুর কাছে শোনা গল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

দর্শনা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফুল আলম বলেন, ‘বাবুই-চড়ুই সদৃশ পাখি। বিশ্বে বাবুই পাখির

প্রজাতির সংখ্যা ১১৭টি। তবে আমাদের দেশে তিন প্রজাতির বাবুই বাস করে। এগুলো হলো বাংলা বাবুই, দাগী বাবুই ও দেশি বাবুই। গাছে ঝুড়ির মতো চমৎকার বাসা তৈরি করায় এ পাখির পরিচিতি জগতজোড়া। অনেকেই একে তাঁতি পাখিও বলে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, পরিবেশে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা এবং বড় বড় তাল, খেজুর, নারিকেল ও বাবলা গাছ না থাকার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে ‘কারিগর’ পাখি- বাবুই। তাই বাবুই পাখি ও এর শৈল্পিক নিদর্শন, নিজের বোনা বাসা রক্ষার জন্য দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

back to top