আন্দোলনরত ইশরাক সমর্থকরা বুধবার(২১-০৫- ২০২৫) নগর ভবন ছেড়ে কাকরাইল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে -সোহরাব আলম
যতক্ষণ ‘প্রয়োজন’, নেতাকর্মীদের ততক্ষণ রাজপথে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথের অপেক্ষায় থাকা বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বুধবার(২১-০৫- ২০২৫) দুপুরে এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘নির্দেশ একটাই- যতক্ষণ দরকার রাজপথ ছেড়ে উঠে আসা যাবে না।’
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন ছেড়ে এবার রাজধানীর কাকরাইল ও মৎস্য এলাকায় অবস্থান নেয় তার সমর্থকেরা। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সপ্তম দিনের মতো দাবি বাস্তবায়নের কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন ইশরাক সমর্থকরা।
গত ১৪ মে থেকে কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাক সমর্থকরা। গত মঙ্গলবার তার সমর্থকরা ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো না হলে, আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। পাশাপাশি ডিএসসিসি এলাকার সব নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেয়ারও হুঁশিয়ারি আসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্মচারী ইউনিয়নের কাছ থেকে।
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হওয়ায় বুধবার সকাল দশটার পর নগর ভবনের সামনে থেকে চলে আসেন ইশরাক সমর্থকরা। তারপর তারা মৎস্য ভবন ও কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নেন। বুধবার ঢাকা মহানগর উত্তর, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, কেরানীগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।
বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রথমে মৎস্য ভবন মোড়ে জড়ো হয়ে এই পথ হয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে কাকরাইল মসজিদসংলগ্ন যমুনার প্রবেশমুখে অবস্থান নেন। এতে এই এলাকা হয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিকেল চারটার দিকে বৃষ্টি নামে। এর মধ্যেই বিএনপির নেতাকর্মীদের মিছিল ও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে পদত্যাগের আহ্বান ইশরাকের
বুধবার এক ফেইসবুক পোস্টে ইশরাক লিখেছেন, ‘গণতান্ত্রিক ভাষায়, রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনে যৌক্তিক কারণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।’ ইশরাক লিখেছেন, ‘যেহেতু এটা প্রতীয়মান যে আপনারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, হয়তো আগামীতে সরাসরি যুক্ত হবেন এবং এটাও অনেকটা স্পষ্ট আপনারা নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে এবং আপনাদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের অবসান ঘটবে।’
‘আর ক্ষমতা ধরে রাখলে আপনাদের দলের লোকজনকে বিশেষ সুবিধা দিতেই হবে, এটা থেকে বিরত থাকার বা শতভাগ নিরপেক্ষ থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা অথবা ক্ষমতা আপনাদের নাই। কারোরই থাকে না। কাঁঠাল ভাঙবে আপনাদের মাথায়, খাবে কিন্তু অন্য সবাই।’
‘আপনাদের যে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে সেটা জনগণকে বোঝানো দেশের জন্যে প্রয়োজন ছিল এবং আজ অবধি আমাকে বাধা দেয়ার কাজটি যৌথ সিদ্ধান্তে হচ্ছে, এটা মিনিমাম রাজনৈতিক বোধসম্পন্ন মানুষ বোঝে। কিন্তু আমি বলব এটা ছিল উনাদের ভুল পলিসি, ব্যবহার হলেন আপনি আসিফ ভূঁইয়া।
‘আইন আদালত মেনে নিতে না পারলে কোথা থেকে দেশ সংস্কার শুরু হবে? তারপর যত ইচ্ছা সমালোচনা করতেন, দেখতেন আসলে কী করি। এখন পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া আমাকে সম্পন্ন করতেই হবে।’
পদত্যাগের এই দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপি নেতা ইশরাক লিখেছেন, ‘বন্দোবস্ত তো আগেরটাই অনুসরণ হচ্ছে। আরও পাকাপোক্ত করা হচ্ছে বললেও ভুল হবে না। আপনাদের পদত্যাগের দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নাই। আপনারাই বা কেন থাকতে চাচ্ছেন?’
ইশরাকের মেয়র পদ নিয়ে রিট মামলার আদেশ আজ
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেয়া গেজেট অবৈধ ঘোষণার দাবি এবং তাকে শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা চেয়ে রিট মামলার আদেশ পিছিয়ে আজ দিন রেখেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার দুপুরে এ আদেশ দেয়। এ রিট মামলার ওপর গত মঙ্গলবার দুই দফা শুনানির পর আজ আদেশের জন্য রাখা হয়েছিল। কিন্তু এদিন আবার দুইপক্ষের শুনানি হয় এবং পরে আদালত আদেশের জন্য আজ দিন রাখা হয়।
বুধবার রিট আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী কায়সার কামাল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। অন্যদিকে রিটকারী পক্ষে জবাব দেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন।
ইশরাকের পক্ষে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে কয়েকটি ‘ভুল’ থাকার দাবি তুলে রুল জারির আর্জি জানান মোহাম্মদ হোসেন। অন্যদিকে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও আদেশে সংক্ষুব্ধ হলে নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যায়। সেটা করতে পারে মামলার বিবাদী পক্ষ। সেখানে আপিল না করে একজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট মামলা করতে পারেন না।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি। তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ।
এদিকে ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে নগর ভবন অচল করে রেখেছেন। বুধবার হাইকোর্টে যখন শুনানি চলছে, তখনও মৎস্য ভবন ও কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন ইশরাক সমর্থকরা।
এর পাল্টায় নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। দলটির অভিযোগ, ইশরাককে মেয়র ঘোষণার গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব করেছে। ওই অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন কমিশন বলেছে, এনসিপি দাবি ‘রাজনৈতিক’; নির্বাচনী ট্রাইবুনালের রায়ে ইসির পক্ষভুক্ত হওয়ার নজির নেই।
সপ্তাহ ধরে চলা ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। সেখানে কোনো ধরনের দাপ্তরিক কাজ হচ্ছে না। দুর্ভোগে পড়েছেন সেবা নিতে আসা লোকজন। স্থানীয় সরকার বিভাগের অফিস নগর ভবনে থাকায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কার্যালয়ে আসতে পারছেন না।
আন্দোলনরত ইশরাক সমর্থকরা বুধবার(২১-০৫- ২০২৫) নগর ভবন ছেড়ে কাকরাইল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে -সোহরাব আলম
বুধবার, ২১ মে ২০২৫
যতক্ষণ ‘প্রয়োজন’, নেতাকর্মীদের ততক্ষণ রাজপথে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথের অপেক্ষায় থাকা বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বুধবার(২১-০৫- ২০২৫) দুপুরে এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘নির্দেশ একটাই- যতক্ষণ দরকার রাজপথ ছেড়ে উঠে আসা যাবে না।’
ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন ছেড়ে এবার রাজধানীর কাকরাইল ও মৎস্য এলাকায় অবস্থান নেয় তার সমর্থকেরা। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সপ্তম দিনের মতো দাবি বাস্তবায়নের কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন ইশরাক সমর্থকরা।
গত ১৪ মে থেকে কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাক সমর্থকরা। গত মঙ্গলবার তার সমর্থকরা ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো না হলে, আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। পাশাপাশি ডিএসসিসি এলাকার সব নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেয়ারও হুঁশিয়ারি আসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্মচারী ইউনিয়নের কাছ থেকে।
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হওয়ায় বুধবার সকাল দশটার পর নগর ভবনের সামনে থেকে চলে আসেন ইশরাক সমর্থকরা। তারপর তারা মৎস্য ভবন ও কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নেন। বুধবার ঢাকা মহানগর উত্তর, নারায়ণগঞ্জ, রূপগঞ্জ, কেরানীগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।
বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রথমে মৎস্য ভবন মোড়ে জড়ো হয়ে এই পথ হয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে কাকরাইল মসজিদসংলগ্ন যমুনার প্রবেশমুখে অবস্থান নেন। এতে এই এলাকা হয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিকেল চারটার দিকে বৃষ্টি নামে। এর মধ্যেই বিএনপির নেতাকর্মীদের মিছিল ও স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমকে পদত্যাগের আহ্বান ইশরাকের
বুধবার এক ফেইসবুক পোস্টে ইশরাক লিখেছেন, ‘গণতান্ত্রিক ভাষায়, রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনে যৌক্তিক কারণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।’ ইশরাক লিখেছেন, ‘যেহেতু এটা প্রতীয়মান যে আপনারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, হয়তো আগামীতে সরাসরি যুক্ত হবেন এবং এটাও অনেকটা স্পষ্ট আপনারা নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে এবং আপনাদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের অবসান ঘটবে।’
‘আর ক্ষমতা ধরে রাখলে আপনাদের দলের লোকজনকে বিশেষ সুবিধা দিতেই হবে, এটা থেকে বিরত থাকার বা শতভাগ নিরপেক্ষ থাকার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা অথবা ক্ষমতা আপনাদের নাই। কারোরই থাকে না। কাঁঠাল ভাঙবে আপনাদের মাথায়, খাবে কিন্তু অন্য সবাই।’
‘আপনাদের যে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে সেটা জনগণকে বোঝানো দেশের জন্যে প্রয়োজন ছিল এবং আজ অবধি আমাকে বাধা দেয়ার কাজটি যৌথ সিদ্ধান্তে হচ্ছে, এটা মিনিমাম রাজনৈতিক বোধসম্পন্ন মানুষ বোঝে। কিন্তু আমি বলব এটা ছিল উনাদের ভুল পলিসি, ব্যবহার হলেন আপনি আসিফ ভূঁইয়া।
‘আইন আদালত মেনে নিতে না পারলে কোথা থেকে দেশ সংস্কার শুরু হবে? তারপর যত ইচ্ছা সমালোচনা করতেন, দেখতেন আসলে কী করি। এখন পূর্ণাঙ্গ প্রক্রিয়া আমাকে সম্পন্ন করতেই হবে।’
পদত্যাগের এই দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপি নেতা ইশরাক লিখেছেন, ‘বন্দোবস্ত তো আগেরটাই অনুসরণ হচ্ছে। আরও পাকাপোক্ত করা হচ্ছে বললেও ভুল হবে না। আপনাদের পদত্যাগের দাবি থেকে সরার কোনো সুযোগ নাই। আপনারাই বা কেন থাকতে চাচ্ছেন?’
ইশরাকের মেয়র পদ নিয়ে রিট মামলার আদেশ আজ
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের দেয়া গেজেট অবৈধ ঘোষণার দাবি এবং তাকে শপথ পড়ানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা চেয়ে রিট মামলার আদেশ পিছিয়ে আজ দিন রেখেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার দুপুরে এ আদেশ দেয়। এ রিট মামলার ওপর গত মঙ্গলবার দুই দফা শুনানির পর আজ আদেশের জন্য রাখা হয়েছিল। কিন্তু এদিন আবার দুইপক্ষের শুনানি হয় এবং পরে আদালত আদেশের জন্য আজ দিন রাখা হয়।
বুধবার রিট আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আইনজীবী কায়সার কামাল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। অন্যদিকে রিটকারী পক্ষে জবাব দেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন।
ইশরাকের পক্ষে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে কয়েকটি ‘ভুল’ থাকার দাবি তুলে রুল জারির আর্জি জানান মোহাম্মদ হোসেন। অন্যদিকে মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও আদেশে সংক্ষুব্ধ হলে নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যায়। সেটা করতে পারে মামলার বিবাদী পক্ষ। সেখানে আপিল না করে একজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট মামলা করতে পারেন না।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি। তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ।
এদিকে ইশরাককে শপথ পড়ানোর দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে নগর ভবন অচল করে রেখেছেন। বুধবার হাইকোর্টে যখন শুনানি চলছে, তখনও মৎস্য ভবন ও কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন ইশরাক সমর্থকরা।
এর পাল্টায় নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি। দলটির অভিযোগ, ইশরাককে মেয়র ঘোষণার গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব করেছে। ওই অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন কমিশন বলেছে, এনসিপি দাবি ‘রাজনৈতিক’; নির্বাচনী ট্রাইবুনালের রায়ে ইসির পক্ষভুক্ত হওয়ার নজির নেই।
সপ্তাহ ধরে চলা ইশরাক সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। সেখানে কোনো ধরনের দাপ্তরিক কাজ হচ্ছে না। দুর্ভোগে পড়েছেন সেবা নিতে আসা লোকজন। স্থানীয় সরকার বিভাগের অফিস নগর ভবনে থাকায়, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া কার্যালয়ে আসতে পারছেন না।