দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির ‘সম্পর্ক নেই’: নাহিদ
অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে থাকা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা হিসেবে এই দুইজনের ব্যাপারে বিএনপির আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলেন নাহিদ।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসানোর দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে তার সমর্থকদের বিক্ষোভ থেকে এই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি উঠেছে। এরপর বিএনপির একাধিক নেতাও একই দাবি জানিয়ে আসছেন। ইশরাক নিজেও দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, ‘ওই দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সেই সময় তারা সরকারে গিয়েছিলেন, আমিও গিয়েছিলাম।’
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার,(২৪ মে ২০২৫) রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে গতবছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা দুই ছাত্র নেতা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পরে এনসিপির হাল ধরতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টার পদ ছাড়েন নাহিদ। তখন তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন।
আসিফ মাহমুদ বর্তমানে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা। আর নাহিদ ইসলামের রেখে যাওয়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছেন মাহফুজ আলম।
এই দুই উপদেষ্টার রাজনীতিতে আসা, না আসার বিষয়টি তাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে আছেন। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। তারা রাজনীতি বা নির্বাচন করতে চাইলে সরকারে থেকে তা পারবে না। সরকার থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের এনসিপির সঙ্গে সংযুক্ত করে অপপ্রচার ও হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এই দুজনের সরকারে থাকা প্রসঙ্গে নাহিদ আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে তারা সরকারে রয়েছেন। শহীদ পরিবার এবং আহতদের পুনর্বাসন, অপরাধীদের বিচার এবং সংস্কারের আকাক্সক্ষাগুলো তদারকি করার জন্য তারা অন্তর্বর্তী সরকারে গিয়েছিলেন। ফলে তারা সরকার থেকে কখন বের হবেন বা আদৌ বের হবেন কিনা, সেটা তাদেরই সিদ্ধান্ত।’
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন
জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার মতানৈক্যের প্রেক্ষাপটে একই সঙ্গে বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কেবল একটি নির্বাচন নয়, বরং জুলাই গণহত্যাসহ পূর্ববর্তী সরকারের অপরাধের বিচার এবং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের দায়িত্বও রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকারের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা ছিল তিনটি বিষয়—বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। তাই আমাদের স্পষ্ট দাবি, সরকার যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করে এবং সেই সঙ্গে এই তিনটি বিষয়ে একটি সমন্বিত রোডম্যাপও প্রকাশ করে। এতে করে জনগণের মনে স্বস্তি আসবে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও আস্থার জায়গা তৈরি হবে।’
দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির ‘সম্পর্ক নেই’: নাহিদ
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে থাকা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা হিসেবে এই দুইজনের ব্যাপারে বিএনপির আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলেন নাহিদ।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসানোর দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে তার সমর্থকদের বিক্ষোভ থেকে এই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি উঠেছে। এরপর বিএনপির একাধিক নেতাও একই দাবি জানিয়ে আসছেন। ইশরাক নিজেও দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ বলেন, ‘ওই দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সেই সময় তারা সরকারে গিয়েছিলেন, আমিও গিয়েছিলাম।’
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার,(২৪ মে ২০২৫) রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে দলটি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে গতবছরের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা দুই ছাত্র নেতা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পরে এনসিপির হাল ধরতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টার পদ ছাড়েন নাহিদ। তখন তিনি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন।
আসিফ মাহমুদ বর্তমানে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা। আর নাহিদ ইসলামের রেখে যাওয়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছেন মাহফুজ আলম।
এই দুই উপদেষ্টার রাজনীতিতে আসা, না আসার বিষয়টি তাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে আছেন। আমিও তাদের মধ্যে একজন ছিলাম। তারা রাজনীতি বা নির্বাচন করতে চাইলে সরকারে থেকে তা পারবে না। সরকার থেকে বের হয়ে তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের এনসিপির সঙ্গে সংযুক্ত করে অপপ্রচার ও হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এই দুজনের সরকারে থাকা প্রসঙ্গে নাহিদ আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে তারা সরকারে রয়েছেন। শহীদ পরিবার এবং আহতদের পুনর্বাসন, অপরাধীদের বিচার এবং সংস্কারের আকাক্সক্ষাগুলো তদারকি করার জন্য তারা অন্তর্বর্তী সরকারে গিয়েছিলেন। ফলে তারা সরকার থেকে কখন বের হবেন বা আদৌ বের হবেন কিনা, সেটা তাদেরই সিদ্ধান্ত।’
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন
জাতীয় নির্বাচনের রূপরেখা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার মতানৈক্যের প্রেক্ষাপটে একই সঙ্গে বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কেবল একটি নির্বাচন নয়, বরং জুলাই গণহত্যাসহ পূর্ববর্তী সরকারের অপরাধের বিচার এবং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের দায়িত্বও রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকারের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা ছিল তিনটি বিষয়—বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। তাই আমাদের স্পষ্ট দাবি, সরকার যেন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করে এবং সেই সঙ্গে এই তিনটি বিষয়ে একটি সমন্বিত রোডম্যাপও প্রকাশ করে। এতে করে জনগণের মনে স্বস্তি আসবে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও আস্থার জায়গা তৈরি হবে।’