এ নিয়ে ৬শ’র বেশি নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় ভারত
সিলেটের বিয়ানীবাজার দিয়ে আরও ৩২ জন নারী-পুরুষকে ভারত থেকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। রোববার,(২৫ মে ২০২৫) বিয়ানীবাজার সীমান্তের বড়গ্রাম এলাকা দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের ঠেলে পাঠালো (পুশইন)। তাদের মধ্যে ১২টি শিশু, ১১জন নারী ও ৯ জন পুরুষ।
রোববার সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে মোট ১৫৩ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে বলে বিজিবি সদর দপ্তর ও বিয়ানীবাজার জানানো হয়েছে।
এরমধ্যে ৫১টি শিশু, ৪৯ জন পুরুষ। বাকি সবাই নারী। তাদের বিয়ানীবাজার ও বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এভাবে গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী পয়েন্ট দিয়ে ৬শ’র বেশি নারী, শিশু ও পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে।
সংবাদের বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি জানান, বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধীন নওয়াগ্রামে একটি টহল দল বড়গ্রাম সীমান্ত এলাকা দিয়ে রোববার ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় তাদের আটক করে।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নওয়াগ্রাম প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, ‘আটক ৩২ জনের সবাই বাংলাদেশি, তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের কাঁটাতারের পাশ দিয়ে শূন্যরেখার একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। সেখান থেকে বিজিবি তাদের উদ্ধার করে। আটককৃতদের বেশিরভাগের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।’
বিয়ানীবাজার থানার ওসি আশরাফ উজ্জামান জানান, ৩২ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিজিবি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন আমরা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিব।’
বিজিবির সদর দপ্তর থেকে জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সংবাদের আখাউড়া প্রতিনিধি জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, আখাউড়া, বিজয়নগর উপজেলার ৭৪ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে এখন থমথমে পরিস্থিতি। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী (বিএসএফ) ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করছে। আর এদিকে প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে।
গত ১৬ মে রাতে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে ৭৫০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করেছে বিএসএফ। তাৎক্ষণিক বিজিবি ও স্থানীয়দের প্রতিরোধে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন চৌধুরী জানান, ১৬ মে গভীররাতে হঠাৎ করে মাইকিং শুরু করা হয়। এরপর স্থানীয় লোকজন লাঠি নিয়ে সীমান্তে জড়ো হয়। বিজিবিও পদক্ষেপ নেয়। একপর্যায়ে বিএসএফ পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর জমিতে কৃষকরা কৃষিকাজ করতেও ভয় পাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়ার কথাও ভাবছেন বলে স্থানীয়রা মন্তব্য করেন।
এর আগেও ফেনী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৫৯ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চগড় লালমনিরহাট পাটগ্রাম দিয়ে আরও ৪১ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। এভাবে খাগড়াছড়ি, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশি পরিচয়ে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
পাটগ্রাম থানা পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি পাটগ্রামে সীমান্ত ২০ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। তারা বাংলাদেশ নাগরিক কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের নাম-ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ড নিশ্চিত করে স্থানীয়দের জিম্মায় হস্তান্তর করা হবে। হস্তান্তর করা শিশুদের বয়স ১ বছর থেকে ৭ বছর। অন্যরা মহিলা ও পুরুষ।
আমাদের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, বিজিবি রামগড় সীমান্ত থেকে সম্প্রতি ৫ জনকে উদ্ধার করছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে রামগড় এলাকা থেকে বিজিবি তাদের আটক করেছে। এর আগে গত বুধবার রামগড় সাব্রুম সাব্রুম সীমান্তের ফেনীরকুল কাজীরচর এলাকার সীমান্ত দিয়ে তাদের ঠেলে পাঠানো হয়েছে। তারা হলো উমেদ আলী, তার স্ত্রী সেলিনা বেগম ও তাদের শিশুসহ তিন সন্তান রয়েছে। তারা কুড়িগ্রামের চরসুপার কুটি গ্রামের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ঠেলে পাঠানো উমেদ আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে তারা ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তাদের আটক করে হাত-পা বেঁধে প্রথমে সীমান্তের কাছে আনা হয়। তাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনও তারা কেড়ে নিয়েছে।
গত বুধবার রাত ১২টার দিকে তাদের মারধর করে জোরপূর্বক নদীতে ভাসিয়ে দেয়। নদীতে ফেলার আগে তাদের কোমরে প্লাস্টিকের খালি বোতল বেঁধে দেয়া হয়। এতে তারা পানিতে ভাসতে ভাসতে ভোর ৫টার দিকে বাংলাদেশের নদীর কিনারে ভেড়েন। পরে নদীর তীরবর্তী গ্রামবাসীর সহায়তায় তারা সোনাইপুল এলাকায় পৌঁছান। সেখান থেকে বিজিবি তাদের আটক করে।
এর আগেও গত ৭ মে খাগড়াছড়ির মারিটরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৮৯ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে মাটিরাঙ্গা উপজেলার শান্তিপুর দিয়ে ২৭জন, তাইন্দং দিয়ে ১৫ জন, পানছড়ি উপজেলার লোগাং সীমান্ত দিয়ে ৩০ জনকে বাংলাদেশের সীমান্তে ঠেলে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। ঠেলে দেয়া অধিকাংশই নারী ও শিশু।
কুলাউড়া থানার ওসি মো. গোলাম আফছার বলেন, বিজিবি আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, জাহিদুল ইসলামের পরিবার ৬ বছর আগে, মাহাবুবুর রহমানের পরিবার ১১ বছর আগে, শাহজালালের পরিবার ১২ বছর আগে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে যায়। তারা ভারতের হরিয়ানার শনিপথ এলাকায় একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। গত ১০ থেকে ১৫ দিন আগে তাদের আটক করে বিমানে আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের কুমিল্লা ও ফেনীর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬০ বিজিবির আওতাধীন গোলাবাড়ি এলাকা দিয়ে ১৩ জন, ১০ বিজিবির ফেনীর নোয়াপাড়া দিয়ে ১৫ জন এবং ৪ বিজিবির ফেনীর সীমান্ত দিয়ে ২৪ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। এভাবে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো দিয়ে প্রায় গভীররাতে ভারত থেকে বাংলাদেশি পরিচয়ে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে। বিজিবির টিম নজরদারি বাড়িয়েছে।
এ নিয়ে ৬শ’র বেশি নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় ভারত
রোববার, ২৫ মে ২০২৫
সিলেটের বিয়ানীবাজার দিয়ে আরও ৩২ জন নারী-পুরুষকে ভারত থেকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। রোববার,(২৫ মে ২০২৫) বিয়ানীবাজার সীমান্তের বড়গ্রাম এলাকা দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের ঠেলে পাঠালো (পুশইন)। তাদের মধ্যে ১২টি শিশু, ১১জন নারী ও ৯ জন পুরুষ।
রোববার সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে মোট ১৫৩ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে বলে বিজিবি সদর দপ্তর ও বিয়ানীবাজার জানানো হয়েছে।
এরমধ্যে ৫১টি শিশু, ৪৯ জন পুরুষ। বাকি সবাই নারী। তাদের বিয়ানীবাজার ও বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এভাবে গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী পয়েন্ট দিয়ে ৬শ’র বেশি নারী, শিশু ও পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে।
সংবাদের বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি জানান, বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধীন নওয়াগ্রামে একটি টহল দল বড়গ্রাম সীমান্ত এলাকা দিয়ে রোববার ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় তাদের আটক করে।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নওয়াগ্রাম প্রগতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাদের নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে বিয়ানীবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়।
বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়ন বিয়ানীবাজারের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, ‘আটক ৩২ জনের সবাই বাংলাদেশি, তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের কাঁটাতারের পাশ দিয়ে শূন্যরেখার একটি বিলে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। সেখান থেকে বিজিবি তাদের উদ্ধার করে। আটককৃতদের বেশিরভাগের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়।’
বিয়ানীবাজার থানার ওসি আশরাফ উজ্জামান জানান, ৩২ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিজিবি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন আমরা আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিব।’
বিজিবির সদর দপ্তর থেকে জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সংবাদের আখাউড়া প্রতিনিধি জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, আখাউড়া, বিজয়নগর উপজেলার ৭৪ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে এখন থমথমে পরিস্থিতি। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী (বিএসএফ) ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করছে। আর এদিকে প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে।
গত ১৬ মে রাতে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে ৭৫০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করেছে বিএসএফ। তাৎক্ষণিক বিজিবি ও স্থানীয়দের প্রতিরোধে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন চৌধুরী জানান, ১৬ মে গভীররাতে হঠাৎ করে মাইকিং শুরু করা হয়। এরপর স্থানীয় লোকজন লাঠি নিয়ে সীমান্তে জড়ো হয়। বিজিবিও পদক্ষেপ নেয়। একপর্যায়ে বিএসএফ পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর জমিতে কৃষকরা কৃষিকাজ করতেও ভয় পাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়ার কথাও ভাবছেন বলে স্থানীয়রা মন্তব্য করেন।
এর আগেও ফেনী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ৫৯ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চগড় লালমনিরহাট পাটগ্রাম দিয়ে আরও ৪১ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। এভাবে খাগড়াছড়ি, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশি পরিচয়ে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
পাটগ্রাম থানা পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি পাটগ্রামে সীমান্ত ২০ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। তারা বাংলাদেশ নাগরিক কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের নাম-ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ড নিশ্চিত করে স্থানীয়দের জিম্মায় হস্তান্তর করা হবে। হস্তান্তর করা শিশুদের বয়স ১ বছর থেকে ৭ বছর। অন্যরা মহিলা ও পুরুষ।
আমাদের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, বিজিবি রামগড় সীমান্ত থেকে সম্প্রতি ৫ জনকে উদ্ধার করছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে রামগড় এলাকা থেকে বিজিবি তাদের আটক করেছে। এর আগে গত বুধবার রামগড় সাব্রুম সাব্রুম সীমান্তের ফেনীরকুল কাজীরচর এলাকার সীমান্ত দিয়ে তাদের ঠেলে পাঠানো হয়েছে। তারা হলো উমেদ আলী, তার স্ত্রী সেলিনা বেগম ও তাদের শিশুসহ তিন সন্তান রয়েছে। তারা কুড়িগ্রামের চরসুপার কুটি গ্রামের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ঠেলে পাঠানো উমেদ আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে তারা ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তাদের আটক করে হাত-পা বেঁধে প্রথমে সীমান্তের কাছে আনা হয়। তাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোনও তারা কেড়ে নিয়েছে।
গত বুধবার রাত ১২টার দিকে তাদের মারধর করে জোরপূর্বক নদীতে ভাসিয়ে দেয়। নদীতে ফেলার আগে তাদের কোমরে প্লাস্টিকের খালি বোতল বেঁধে দেয়া হয়। এতে তারা পানিতে ভাসতে ভাসতে ভোর ৫টার দিকে বাংলাদেশের নদীর কিনারে ভেড়েন। পরে নদীর তীরবর্তী গ্রামবাসীর সহায়তায় তারা সোনাইপুল এলাকায় পৌঁছান। সেখান থেকে বিজিবি তাদের আটক করে।
এর আগেও গত ৭ মে খাগড়াছড়ির মারিটরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৮৯ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে মাটিরাঙ্গা উপজেলার শান্তিপুর দিয়ে ২৭জন, তাইন্দং দিয়ে ১৫ জন, পানছড়ি উপজেলার লোগাং সীমান্ত দিয়ে ৩০ জনকে বাংলাদেশের সীমান্তে ঠেলে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। ঠেলে দেয়া অধিকাংশই নারী ও শিশু।
কুলাউড়া থানার ওসি মো. গোলাম আফছার বলেন, বিজিবি আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, জাহিদুল ইসলামের পরিবার ৬ বছর আগে, মাহাবুবুর রহমানের পরিবার ১১ বছর আগে, শাহজালালের পরিবার ১২ বছর আগে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে যায়। তারা ভারতের হরিয়ানার শনিপথ এলাকায় একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। গত ১০ থেকে ১৫ দিন আগে তাদের আটক করে বিমানে আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের কুমিল্লা ও ফেনীর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬০ বিজিবির আওতাধীন গোলাবাড়ি এলাকা দিয়ে ১৩ জন, ১০ বিজিবির ফেনীর নোয়াপাড়া দিয়ে ১৫ জন এবং ৪ বিজিবির ফেনীর সীমান্ত দিয়ে ২৪ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। এভাবে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো দিয়ে প্রায় গভীররাতে ভারত থেকে বাংলাদেশি পরিচয়ে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে। বিজিবির টিম নজরদারি বাড়িয়েছে।