সংবিধান সংস্কার কমিশনের বেশকিছু সুপারিশের বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, এ কমিশনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে দ্বিমত নেই, দুদক
সংস্কারে সব দল একমত
‘জাতীয় সনদ’ জুলাইয়ের মধ্যেই: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কারের সুপারিশগুলোর মধ্য থেকে নির্বাচিত কিছু বিষয়ে জনগণের মতামত নিতে জরিপ চালাতে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছেন তিনি। এছাড়া তিনি জানিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশের পক্ষেই মোটাদাগে দলগুলো নীতিগতভাবে একমত।
আর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুনের শুরুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার যে আলোচনা শুরু করবে, তার মধ্য দিয়েই ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি সম্ভব বলে আশা করছেন আলী রীয়াজ।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম পর্বের সংলাপ শেষে অগ্রগতি তুলে ধরতে সোমবার,( ২৬ মে ২০২৫) সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি।
সংবিধান
এ সময় তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের বেশকিছু সুপারিশের মধ্যে বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের কাঠামো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কতবার নির্বাচিত হতে পারবেন, একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী হবে, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া কী হবে- এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত থেকে গেছে।
সংবিধান সংস্কারে যেসব বিষয়ে একমত হওয়া গেছে তা তুলে ধরতে গিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্র’ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবে ‘বহুত্ববাদ’ না রাখার ব্যাপারে অধিকাংশ দল মতামত দিয়েছে। অন্য চারটি মূলনীতির ব্যাপারে এক ধরনের ঐকমত্য আছে। তবে অনেক দল এই চারটির বাইরেও অন্যান্য বিষয় যুক্ত করার কথা বলেছে।
তিনি বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনের ব্যাপারে অধিকাংশ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। কিছু দল অবশ্য এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। নিম্নকক্ষে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রশ্নে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে দলগুলোর মধ্যে। তবে এর পদ্ধতি কী হবে তা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে। যারা সংসদের উভয় কক্ষের পক্ষে এবং যারা এক কক্ষবিশিষ্ট আইন সভার পক্ষে, উভয়ই আইন সভায় ডেপুটি স্পিকারের পদ বিরোধী দল থেকে দেয়ার পক্ষে বলে জানান তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংবিধানের ৪৮-(ক) অনুচ্ছেদ যা কার্যত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নির্ধারণ করে, তা সংশোধনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য কীভাবে হবে, সেই প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘৭০ অনুচ্ছেদ, অর্থাৎ সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেবার ক্ষেত্রে যে বিধান তা পরিবর্তনের ব্যাপারে ঐকমত্য হলেও- কী কী বিষয়ে দলের পক্ষে ভোট দেয়া বাধ্যতামূলক হবে তার একটি আংশিক তালিকার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে- অর্থ বিল, আস্থা ভোট, সংবিধান সংশোধন বিলের ব্যাপারে দলীয় অনুশাসনের বাধ্যবাধকতার ব্যাপারে অধিকাংশ দল একমত, এর অতিরিক্ত আরও কিছু যুক্ত করার যেমন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিল যুক্ত করার জন্যও কিছু দলের প্রস্তাব আছে।’
বিচার বিভাগ
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা তুলে ধরতে গিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে পৃথকীকরণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করার ব্যাপারে সব দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশনের যেসব সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা তুলে ধরতে গিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, দলনিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিধান করার ব্যাপারে অধিকাংশ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে কিংবা শপথ ভঙ্গ করলে মেয়াদ শেষে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করবে প্রস্তাবিত সংসদীয় কমিটি। এরপর সেই কমিটি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ পাঠাবেন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে। এ বিধানের বিষয়ে বেশিরভাগ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার প্রশ্নে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে দলগুলো। এর আইনি দিক বিবেচনার জন্যে অধিকাংশ দল গুরুত্ব দিয়েছে।
জনপ্রশাসন
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে আলী রীয়াজ
বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা ও নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত এবং ভোট জালিয়াতি ও দুর্নীতির সঙ্গে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন প্রশ্নে অধিকাংশ দল একমত পোষণ করেছে। তিনি বলেন, বর্তমান পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে পুনর্গঠন করে তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করার ব্যাপারে বেশিরভাগ দল নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছে।
চার প্রদেশ
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের পুরনো চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা, বিদ্যমান জেলা পরিষদ ব্যবস্থা বাতিল করা, ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বিলুপ্ত করার প্রস্তাবে বেশিরভাগ দল একমত হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের। রাজনৈতিক দলগুলো নির্ধারণ করবে প্রক্রিয়াটা কী হবে।’
*জরিপ*
চলতি মাসের শেষে বা জুনের শুরুতে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে কবে, কীভাবে জরিপ চালানো হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘যে সুপারিশগুলো সম্পর্কে রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো সম্পর্কে জনগণের মতামত নেয়ার উদ্দেশ্যেই জরিপ পরিচালনা করা হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের। রাজনৈতিক দলগুলো নির্ধারণ করবে প্রক্রিয়াটা কী হবে।
* দুদক, তত্ত্বাবধায়ক সরকার*
নিম্নকক্ষে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রশ্নে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে দলগুলোর মধ্যে। তবে এর পদ্ধতি কী হবে তা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সবগুলো সুপারিশের পক্ষেই মোটাদাগে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত বলে জানান আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়েও দলগুলোর মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই।
আলী রীয়াজ বলেন, দুদক সংস্কারে কমিশনের সব সুপারিশের পক্ষেই মোটাদাগে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের সুপারিশের বিষয়ে সব দল একমত পোষণ করেছে। দুদকের স্বাধীনতা, কার্যকারিতা ও গতিশীলতার পাশাপাশি এর স্বচ্ছতা, নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তাবিত সব সুপারিশ সম্পর্কে প্রায় সব দলই সম্পূর্ণ একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদককে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাবে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করেছে। দু-একটি দল বিষয়টি নিয়ে নির্বাচিত সংসদে আলোচনা হতে পারে বলে মত দিয়েছে।
আলী রিয়াজ বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে নীতিগত ঐকমত্য হলেও অনেক বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। যেসব সুপারিশের বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
*‘জাতীয় সনদ’*
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুনের শুরুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় যে আলোচনা শুরু করবে, তার মধ্য দিয়ে জুলাই মাসের মধ্যেই একটি ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন কমিশনের সহ-সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কমিশনের দায়িত্ব হলো রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো এবং একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা।
*বাস্তবায়নের ক্ষমতা*
সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষমতা ঐকমত্য কমিশনের নেই মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘এটা অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা কীভাবে অগ্রসর হবেন এবং আমি যেটা আগে বলেছি রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে কীভাবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া তৈরি হয়, সেটা হচ্ছে প্রশ্ন। মনে রাখা দরকার যে, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটা আসলে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র, আইন নতুন করে সাজানোর এক ঐতিহাসিক সুযোগ আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে আমাদের ভোটাধিকার ও টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কতগুলো সুদূরপ্রসারী সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের পক্ষে জুলাই অভ্যুত্থানের বীর সেনানীদের রক্তের ঋণ স্বীকার করা সম্ভব হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, এমদাদুল হক, আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
*জাতীয় ঐকমত্য কমিশন*
শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অক্টোবরে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। পরে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নিয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিভিন্ন সংস্কার সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে ঐকমত্যে পৌঁছানো ও ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা এ ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করা এ কমিশনকে ছয় মাস সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়। পরে তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শেষে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
সংবিধান সংস্কার কমিশনের বেশকিছু সুপারিশের বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, এ কমিশনের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে দ্বিমত নেই, দুদক
সংস্কারে সব দল একমত
‘জাতীয় সনদ’ জুলাইয়ের মধ্যেই: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কারের সুপারিশগুলোর মধ্য থেকে নির্বাচিত কিছু বিষয়ে জনগণের মতামত নিতে জরিপ চালাতে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছেন তিনি। এছাড়া তিনি জানিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশের পক্ষেই মোটাদাগে দলগুলো নীতিগতভাবে একমত।
আর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুনের শুরুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার যে আলোচনা শুরু করবে, তার মধ্য দিয়েই ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি সম্ভব বলে আশা করছেন আলী রীয়াজ।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম পর্বের সংলাপ শেষে অগ্রগতি তুলে ধরতে সোমবার,( ২৬ মে ২০২৫) সংসদ ভবনের এলডি হলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি।
সংবিধান
এ সময় তিনি বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের বেশকিছু সুপারিশের মধ্যে বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের কাঠামো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কতবার নির্বাচিত হতে পারবেন, একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী হবে, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া কী হবে- এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত থেকে গেছে।
সংবিধান সংস্কারে যেসব বিষয়ে একমত হওয়া গেছে তা তুলে ধরতে গিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্র’ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবে ‘বহুত্ববাদ’ না রাখার ব্যাপারে অধিকাংশ দল মতামত দিয়েছে। অন্য চারটি মূলনীতির ব্যাপারে এক ধরনের ঐকমত্য আছে। তবে অনেক দল এই চারটির বাইরেও অন্যান্য বিষয় যুক্ত করার কথা বলেছে।
তিনি বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনের ব্যাপারে অধিকাংশ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। কিছু দল অবশ্য এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে। নিম্নকক্ষে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রশ্নে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে দলগুলোর মধ্যে। তবে এর পদ্ধতি কী হবে তা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে। যারা সংসদের উভয় কক্ষের পক্ষে এবং যারা এক কক্ষবিশিষ্ট আইন সভার পক্ষে, উভয়ই আইন সভায় ডেপুটি স্পিকারের পদ বিরোধী দল থেকে দেয়ার পক্ষে বলে জানান তিনি।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংবিধানের ৪৮-(ক) অনুচ্ছেদ যা কার্যত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নির্ধারণ করে, তা সংশোধনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য কীভাবে হবে, সেই প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘৭০ অনুচ্ছেদ, অর্থাৎ সংসদে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেবার ক্ষেত্রে যে বিধান তা পরিবর্তনের ব্যাপারে ঐকমত্য হলেও- কী কী বিষয়ে দলের পক্ষে ভোট দেয়া বাধ্যতামূলক হবে তার একটি আংশিক তালিকার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে- অর্থ বিল, আস্থা ভোট, সংবিধান সংশোধন বিলের ব্যাপারে দলীয় অনুশাসনের বাধ্যবাধকতার ব্যাপারে অধিকাংশ দল একমত, এর অতিরিক্ত আরও কিছু যুক্ত করার যেমন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিল যুক্ত করার জন্যও কিছু দলের প্রস্তাব আছে।’
বিচার বিভাগ
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা তুলে ধরতে গিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে পৃথকীকরণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করার ব্যাপারে সব দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ক কমিশনের যেসব সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা তুলে ধরতে গিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, দলনিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিধান করার ব্যাপারে অধিকাংশ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে কিংবা শপথ ভঙ্গ করলে মেয়াদ শেষে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করবে প্রস্তাবিত সংসদীয় কমিটি। এরপর সেই কমিটি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ পাঠাবেন রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে। এ বিধানের বিষয়ে বেশিরভাগ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার প্রশ্নে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে দলগুলো। এর আইনি দিক বিবেচনার জন্যে অধিকাংশ দল গুরুত্ব দিয়েছে।
জনপ্রশাসন
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে আলী রীয়াজ
বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা ও নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত এবং ভোট জালিয়াতি ও দুর্নীতির সঙ্গে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন প্রশ্নে অধিকাংশ দল একমত পোষণ করেছে। তিনি বলেন, বর্তমান পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে পুনর্গঠন করে তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করার ব্যাপারে বেশিরভাগ দল নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছে।
চার প্রদেশ
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের পুরনো চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা, বিদ্যমান জেলা পরিষদ ব্যবস্থা বাতিল করা, ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া এবং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বিলুপ্ত করার প্রস্তাবে বেশিরভাগ দল একমত হয়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের। রাজনৈতিক দলগুলো নির্ধারণ করবে প্রক্রিয়াটা কী হবে।’
*জরিপ*
চলতি মাসের শেষে বা জুনের শুরুতে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে কবে, কীভাবে জরিপ চালানো হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘যে সুপারিশগুলো সম্পর্কে রাজনৈতিক দলের মতামত নেয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো সম্পর্কে জনগণের মতামত নেয়ার উদ্দেশ্যেই জরিপ পরিচালনা করা হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়টি সরকারের। রাজনৈতিক দলগুলো নির্ধারণ করবে প্রক্রিয়াটা কী হবে।
* দুদক, তত্ত্বাবধায়ক সরকার*
নিম্নকক্ষে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রশ্নে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে দলগুলোর মধ্যে। তবে এর পদ্ধতি কী হবে তা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের সবগুলো সুপারিশের পক্ষেই মোটাদাগে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত বলে জানান আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়েও দলগুলোর মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই।
আলী রীয়াজ বলেন, দুদক সংস্কারে কমিশনের সব সুপারিশের পক্ষেই মোটাদাগে রাজনৈতিক দলগুলো নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের সুপারিশের বিষয়ে সব দল একমত পোষণ করেছে। দুদকের স্বাধীনতা, কার্যকারিতা ও গতিশীলতার পাশাপাশি এর স্বচ্ছতা, নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার জন্য প্রস্তাবিত সব সুপারিশ সম্পর্কে প্রায় সব দলই সম্পূর্ণ একমত হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদককে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাবে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করেছে। দু-একটি দল বিষয়টি নিয়ে নির্বাচিত সংসদে আলোচনা হতে পারে বলে মত দিয়েছে।
আলী রিয়াজ বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর ক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে নীতিগত ঐকমত্য হলেও অনেক বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। যেসব সুপারিশের বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
*‘জাতীয় সনদ’*
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুনের শুরুতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় যে আলোচনা শুরু করবে, তার মধ্য দিয়ে জুলাই মাসের মধ্যেই একটি ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন কমিশনের সহ-সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কমিশনের দায়িত্ব হলো রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো এবং একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা।
*বাস্তবায়নের ক্ষমতা*
সংস্কার সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষমতা ঐকমত্য কমিশনের নেই মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘এটা অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা কীভাবে অগ্রসর হবেন এবং আমি যেটা আগে বলেছি রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে কীভাবে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া তৈরি হয়, সেটা হচ্ছে প্রশ্ন। মনে রাখা দরকার যে, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটা আসলে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র, আইন নতুন করে সাজানোর এক ঐতিহাসিক সুযোগ আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে আমাদের ভোটাধিকার ও টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কতগুলো সুদূরপ্রসারী সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের পক্ষে জুলাই অভ্যুত্থানের বীর সেনানীদের রক্তের ঋণ স্বীকার করা সম্ভব হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফররাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, এমদাদুল হক, আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
*জাতীয় ঐকমত্য কমিশন*
শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অক্টোবরে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। পরে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধানদের নিয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
বিভিন্ন সংস্কার সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে ঐকমত্যে পৌঁছানো ও ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়ন করা এ ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করা এ কমিশনকে ছয় মাস সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়।
তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়। পরে তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শেষে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।