প্রশাসন ক্যাডারের বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে শিগগিরই ‘কঠোর’ কর্মসূচির পরিকল্পনা করছে বিসিএস ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

বুধবার,(২৮ মে ২০২৫) দ্বিতীয় দিনের কলমবিরতি পালন শেষে ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের’ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, প্রশাসন ক্যাডার কর্তৃক বৈষম্যমূলকভাবে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদে সারাদেশের বিভিন্ন দপ্তরে অত্যন্ত সফলভাবে গতকাল মঙ্গলবারের মতো বুধবার ও কলমবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের আহ্বানে দেশের বিভিন্ন দপ্তরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরিষদের অন্তর্ভুক্ত সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা দুই দিনব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সম্প্রতি প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে মারামারি ও মিছিল এবং জনপ্রশাসনে ‘শোডাউন’ করেন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা সংস্কার কমিশনকে আল্টিমেটাম দেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি শুরু হয় এবং প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা বাকি ২৫টি ক্যাডারের সদস্যদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।

এসব লেখালেখির কারণে ২৫ ক্যাডারের ১২ জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল উল্লেখ করে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিষয়টি সমাধানের জন্য আশ্বস্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। উপরন্তু, সম্প্রতি কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম শুরু করেছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বিধি-বিধানবহির্ভূত কার্যকলাপের পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে দুর্নীতিমুক্ত জনসেবা নিশ্চিত করার মতো কোনো সুপারিশ ‘দেখা যায়নি’ দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা পরিষদ ভেঙে দিয়ে ডিসিকে জেলার প্রধান এবং তাকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ পদ আপগ্রেডেশনের সুপারিশ করা হয়েছে। পরিষদ মনে করে, কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে একটি ভৌগোলিক এলাকায় কোন সরকারি চাকরিজীবী প্রধান হতে পারেন না। এজন্য জেলা পরিষদকে শক্তিশালী ও কার্যকর করে জনগণের প্রতিনিধিকে জেলার প্রধান সমন্বয়কারী করার দাবি করে পরিষদ।

এছাড়া জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক, পরিবার-পরিকল্পনা, কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে।

উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখে অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করেছে, যা জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে পরিষদ মনে করে। এসব সমস্যার সমাধান না হলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তারা।