বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নেবে। বৃহস্পতিবার (২৯-০৫-২০২৫) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ সংক্রান্ত লিভ টু আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করে এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
লিভ টু আপিলকারীর
আইনজীবীর বক্তব্য
লিভ টু আপিলকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের আদেশের পর বলেন, ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করায় বিলম্ব মার্জনা করে আপিল গ্রহণের কথা বলেছেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগ বলেছেন. সাংবিধানিক যে দায়িত্ব আছে, তা নির্বাচন কমিশন পালন করবে। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত একসঙ্গে পড়লে অর্থ দাঁড়ায় যে, নির্বাচন কমিশনকে আপিল করার জন্য বলছেন, যা এতদিন তারা করতে ব্যর্থ হয়েছে। পর্যবেক্ষণে ইসিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে ইসি আপিল করতে বাধ্য। তা না হলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
ইশরাকের আইনজীবীর বক্তব্য
ইশরাকের আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা গেজেট স্থগিত চেয়েছিল, তা স্থগিত করেননি আপিল বিভাগ। আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। পক্ষ না হওয়ায় এবং আপিল করার যুক্তি না থাকায় ইসি আপিল করবে না বলে আগে জানিয়েছে। আজকে (বৃহস্পতিবার ) যে আদেশ হলো আবেদনকারীকে লিভ দেননি, কোনো স্থগিতাদেশ দেননি এবং নিষ্পত্তি করেছেন। নিষ্পত্তি করে বলেছেন, ইসির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।’ডিএসসিসির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে ইসি। শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন তাপস। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক
*তাপস বাতিল, নতুন গেজেট*
শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। একই বছরের ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে ইশরাকের করা নির্বাচনী মামলায় চলতি বছরের ২৭ মার্চ রায় দেয় ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। রায়ে তাপসকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করা হয়।
আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে ডিএসসিসির মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে ইসি।
*শপথ না পড়াতে রিট*
কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ডিএসসিসির বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ।
২২ মে ওই রিট মামলা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে গত সোমবার আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন রিট আবেদনকারী মামুনুর রশিদ।
লিভ টু আপিলের ওপর গতকাল বুধবার শুনানি হয়। আদালত ইসির বক্তব্য শুনতে নোটিশ ইস্যু করে বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য দিন রাখে। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শুনানি হয়। আদালতে ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াছিন খান। লিভ টু আপিলকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন শুনানি করেন। ইশরাকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এ কে এম এহসানুর রহমান শুনানিতে ছিলেন।
*উচ্চ আদালতের বক্তব্য*
শুনানি শেষে আপিল বিভাগ বিষয়টি পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দেয়। আদালত বলে, যেসব প্রশ্নের অবতারণা হয়েছে, তা সাংবিধানিকভাবে ও সমভাবে নির্বাচন কমিশনের মৌলিক ম্যান্ডেটের (আইনগত বা বিচারগত) ভেতরে পড়ে। লিখিত রায় প্রকাশিত হলে আদালতের পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ জানা যাবে।
*ইশরাকের হুঁশিয়ারি*
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর নগর ভবনের সামনে সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে তার শপথগ্রহণের ব্যবস্থা না করে অন্তর্বর্তী সরকার ‘আদালত অবমাননা’ করছে। তিনি আরও বলেন, ‘শপথ পড়ানোর শেষ সুযোগ দেয়া হচ্ছে, না হলে শুক্রবার থেকে কঠোর আন্দোলন।’
*৩০০ এমপিকে কীভাবে*
ইশরাক বলেন, ‘একজন মেয়রকে শপথ গ্রহণ করাতে ব্যর্থ হয়েছে (অন্তর্বর্তী সরকার), তাহলে আগামীতে ৩০০ এমপিকে (সংসদ সদস্য) শপথগ্রহণ করাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে কি না- সেটা নিয়ে জনগণের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। অতএব, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শেষ সুযোগ দেয়া হচ্ছে; নিজেদের সংশোধন করুন, আদালতের রায়কে মেনে নিন, জনগণের রায়কে মেনে নিন, কার্যকর পদক্ষেপ নিন।’
*ইশরাক-আসিফ পাল্টাপাল্টি*
পাঁচ বছরের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আদালতের রায়ে ইশরাক মেয়র হওয়ার সুযোগ পেলেও আইনি জটিলতার কথা বলে তার শপথগ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। এই প্রেক্ষিতে ইশরাকের সমর্থকরা গত দুই সপ্তাহ ধরে নগর ভবনে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এর মধ্যে তারা নগর ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এই ইস্যুতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজের ফেইসবুকে লেখেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গায়ের জোরে দাবি আদায় করার উদ্দেশ্যেই নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি এই আন্দোলন চালাচ্ছে।’
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেন ইশরাক।
*নগর ভবনে আন্দোলন*
বৃহস্পতিবার নগর ভবনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ইশরাক হোসেন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে বৈধতা দেয়া হয়েছে, যারা আপিল করেছিল সেই আপিলকে খারিজ করে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছিল, সেই গেজেটকে বহাল রাখা হয়েছে।’
*নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা*
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ না পড়িয়ে আদালত অবমাননা করেছে’- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটাও প্রমাণিত হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কতিপয় উপদেষ্টা আমার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। নির্বাচন কমিশন, বিচার ব্যবস্থা এবং প্রশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ করে আমাকে মেয়র হিসেবে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, আমাকে শপথ পড়ানোর যে দায়িত্ব ছিল- সেই দায়িত্বটুকু পালনে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়েছে।’
অবিলম্বে শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে ইশরাক বলেন, ‘অন্যথায়, জাতীয় নির্বাচনের আগে যাতে একটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়; যার অধীনে জনগণ ভোট দিতে পারবে, যেই ভোটদানের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন করবে- সেই পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করব।’
বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানো হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নেবে। বৃহস্পতিবার (২৯-০৫-২০২৫) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ সংক্রান্ত লিভ টু আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করে এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
লিভ টু আপিলকারীর
আইনজীবীর বক্তব্য
লিভ টু আপিলকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের আদেশের পর বলেন, ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করায় বিলম্ব মার্জনা করে আপিল গ্রহণের কথা বলেছেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগ বলেছেন. সাংবিধানিক যে দায়িত্ব আছে, তা নির্বাচন কমিশন পালন করবে। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত একসঙ্গে পড়লে অর্থ দাঁড়ায় যে, নির্বাচন কমিশনকে আপিল করার জন্য বলছেন, যা এতদিন তারা করতে ব্যর্থ হয়েছে। পর্যবেক্ষণে ইসিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে ইসি আপিল করতে বাধ্য। তা না হলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
ইশরাকের আইনজীবীর বক্তব্য
ইশরাকের আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা গেজেট স্থগিত চেয়েছিল, তা স্থগিত করেননি আপিল বিভাগ। আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। পক্ষ না হওয়ায় এবং আপিল করার যুক্তি না থাকায় ইসি আপিল করবে না বলে আগে জানিয়েছে। আজকে (বৃহস্পতিবার ) যে আদেশ হলো আবেদনকারীকে লিভ দেননি, কোনো স্থগিতাদেশ দেননি এবং নিষ্পত্তি করেছেন। নিষ্পত্তি করে বলেছেন, ইসির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।’ডিএসসিসির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। পরদিন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে ইসি। শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন তাপস। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক
*তাপস বাতিল, নতুন গেজেট*
শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। একই বছরের ১৯ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে ইশরাকের করা নির্বাচনী মামলায় চলতি বছরের ২৭ মার্চ রায় দেয় ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। রায়ে তাপসকে নির্বাচিত ঘোষণা বাতিল করা হয়।
আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে ডিএসসিসির মেয়র ঘোষণা করে গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে ইসি।
*শপথ না পড়াতে রিট*
কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ডিএসসিসির বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ।
২২ মে ওই রিট মামলা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে গত সোমবার আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন রিট আবেদনকারী মামুনুর রশিদ।
লিভ টু আপিলের ওপর গতকাল বুধবার শুনানি হয়। আদালত ইসির বক্তব্য শুনতে নোটিশ ইস্যু করে বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য দিন রাখে। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার শুনানি হয়। আদালতে ইসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াছিন খান। লিভ টু আপিলকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন শুনানি করেন। ইশরাকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও এ কে এম এহসানুর রহমান শুনানিতে ছিলেন।
*উচ্চ আদালতের বক্তব্য*
শুনানি শেষে আপিল বিভাগ বিষয়টি পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দেয়। আদালত বলে, যেসব প্রশ্নের অবতারণা হয়েছে, তা সাংবিধানিকভাবে ও সমভাবে নির্বাচন কমিশনের মৌলিক ম্যান্ডেটের (আইনগত বা বিচারগত) ভেতরে পড়ে। লিখিত রায় প্রকাশিত হলে আদালতের পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষণ জানা যাবে।
*ইশরাকের হুঁশিয়ারি*
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর নগর ভবনের সামনে সমর্থকদের অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে তার শপথগ্রহণের ব্যবস্থা না করে অন্তর্বর্তী সরকার ‘আদালত অবমাননা’ করছে। তিনি আরও বলেন, ‘শপথ পড়ানোর শেষ সুযোগ দেয়া হচ্ছে, না হলে শুক্রবার থেকে কঠোর আন্দোলন।’
*৩০০ এমপিকে কীভাবে*
ইশরাক বলেন, ‘একজন মেয়রকে শপথ গ্রহণ করাতে ব্যর্থ হয়েছে (অন্তর্বর্তী সরকার), তাহলে আগামীতে ৩০০ এমপিকে (সংসদ সদস্য) শপথগ্রহণ করাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে কি না- সেটা নিয়ে জনগণের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। অতএব, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শেষ সুযোগ দেয়া হচ্ছে; নিজেদের সংশোধন করুন, আদালতের রায়কে মেনে নিন, জনগণের রায়কে মেনে নিন, কার্যকর পদক্ষেপ নিন।’
*ইশরাক-আসিফ পাল্টাপাল্টি*
পাঁচ বছরের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আদালতের রায়ে ইশরাক মেয়র হওয়ার সুযোগ পেলেও আইনি জটিলতার কথা বলে তার শপথগ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। এই প্রেক্ষিতে ইশরাকের সমর্থকরা গত দুই সপ্তাহ ধরে নগর ভবনে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এর মধ্যে তারা নগর ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এই ইস্যুতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজের ফেইসবুকে লেখেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গায়ের জোরে দাবি আদায় করার উদ্দেশ্যেই নগর ভবন বন্ধ করে মহানগর বিএনপি এই আন্দোলন চালাচ্ছে।’
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেন ইশরাক।
*নগর ভবনে আন্দোলন*
বৃহস্পতিবার নগর ভবনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ইশরাক হোসেন আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে বৈধতা দেয়া হয়েছে, যারা আপিল করেছিল সেই আপিলকে খারিজ করে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছিল, সেই গেজেটকে বহাল রাখা হয়েছে।’
*নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা*
‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ না পড়িয়ে আদালত অবমাননা করেছে’- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটাও প্রমাণিত হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কতিপয় উপদেষ্টা আমার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। নির্বাচন কমিশন, বিচার ব্যবস্থা এবং প্রশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ করে আমাকে মেয়র হিসেবে যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, আমাকে শপথ পড়ানোর যে দায়িত্ব ছিল- সেই দায়িত্বটুকু পালনে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হয়েছে।’
অবিলম্বে শপথ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে ইশরাক বলেন, ‘অন্যথায়, জাতীয় নির্বাচনের আগে যাতে একটি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়; যার অধীনে জনগণ ভোট দিতে পারবে, যেই ভোটদানের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন করবে- সেই পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করব।’