মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে তালতলা-ডহরী খালে দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেড পারাপার হতে দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের চাঁদা? কখনও বিকাশ কখনও ছোট ট্রলার দিয়ে চাঁদা তুলে প্রভাবশালী একটি চক্র। যদিও এ নৌরুটে প্রশাসনিক ভাবে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চক্রটি বালুবাহী বাল্কহেডগুলো তালতলা থেকে গোয়ারা হয়ে ডয়রী পার করে দিচ্ছে মোটা অংশের চাঁদা নিয়ে। বাল্কহেড অনুযায়ী সে চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ছোট আকারের বাল্কহেড থেকে ২ হাজার, মাঝারি আকার থেকে ৩ হাজার বড় হলে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেয়। সে সঙ্গে জটিলতা বাড়লে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায় চাঁদা পরিমাণ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ খাল দিয়ে প্রায় শতাধিক বাল্কহেড চলাচল করতে দেখা যায়।
জানা যায়, গত ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট এই খালে খিদিরপাড়া ইউনিয়নের রসকাঠি এলাকায় বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ট্রলার ডুবে নারী ও শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়। এ ঘটনার পরে উপজেলা প্রশাসন এই খালে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদা দিয়ে দালাল চক্রের সহায়তায় নির্বিঘেœ চলাচল করছে বাল্কহেডগুলো? এতে দেখা দিয়েছে খালের দুইতীর ভাঙনও।
সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাট বালিগাঁও গ্রামের মুন্সী বাড়ির রাজন মুন্সী, সাজন মুন্সী, শিপন সে সঙ্গে লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া গ্রামের একাধিক নৌ ডাকাতি ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি রুবেল মাদবর, শামুরবাড়ি গ্রামের চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলার আসামি রিপন ওস্তাকার, আনোয়ার ঢালী, মোসা. ফরিদা বেগম, রাহাত চাকলাদারসহ ২০ থেকে ৩০ চাঁদাবাজের একটি সংঘবদ্ধ চক্র কমপক্ষে ১ হাজার থেকে ১৫’শ টাকার বিনিময় এসব বাল্কহেড পারাপার করছে? এদের দল একেক জায়গায় একেক জনের দায়িত্বে থাকেন। দিনে রাতে ভাগ করা থাকে তাদের ডিউটি।
এ ঘটনায় এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর সংঘবদ্ধ চাঁদবাজ চক্রের অন্যতম সদস্য রাহাত চাকলাদার ও দীপু ওস্তাকারকে লৌহজং থানায় চাঁদাবাজি মামলায় নং ৪ (৯) ২৪ গ্রেপ্তার করে পুলিশ? পরে চাঁদাবাজি মামলা নং ৪ (৯) ২৪ইং ও হত্যা মামলা নং ১৫ (৮) ২৪ মামলার আসামি রিপন ওস্তাকারকে গত ১২ নভেম্বরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ? রিপন ওস্তাকার গ্রেপ্তারের পর এলাকার জনমনে স্বস্তি ফিরেছিল? আসামিরা কিছুদিন জেল খেটে জামিনে এসে আবারও চাঁদাবাজি শুরু করেছে?
বাল্কহেড চালকরা বলেন, বালিগাঁওয়ের রাজন মুন্সি, গাঁওদিয়ার রুবেল মাদবর, আল-আমীন মাতবর, চঞ্চল শেখ, ডহরি শামুরবাড়ির রিপন ওস্তাকার, আনোয়ার ঢালী, তাজু ঢালী, শাকিল ওস্তাকার, রিপন মন্ডল, ডহরির লিটন এ সব বাল্কহেড পারাপার করে দিচ্ছে? এ ছাড়া তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে আসলে আমাদের মারধর করে এবং ডাকাতি পর্যন্ত করে। আমাদের কাছে যা থাকে সব নিয়ে যায়।
খালপাড়ের বাসিন্দা আসলাম তালুকদার, পাপ্পু শিকদার, স্বপনসহ তীরবর্তী বাসিন্দারা বলেন, ডহরি-তালতলা খালে দিন-রাত বেপরোয়াভাবে চলে খালের বিষফোঁড়া নামক বাল্কহেডগুলো। এতে খালের দুই তীরে ভাঙন শুরু হয়েছে? অতিরিক্ত বাল্কহেড চলাচলে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা? আগের ইউএনও এসব বাল্কহেড এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিলো? খালে পানি বাড়ায় আবারও চাঁদাবাজ চক্র সক্রিয় হয়ে বাল্কহেড পারাপার করছে? এই বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করতে না পারলে বাপ-দাদার বসত ভিটেমাটি হারাতে হবে?
এ বিষয় রুবেল মাদবর বলেন, বাল্কহেড আমি একা আনিনা আমাকে ছাড়াও আরও ২০ থেকে ৩০ জন আনে? একাধিক মামলার বিষয় স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, মামলাগুলোতে আমাকে মিথ্যা ভাবে জড়ানো হয়েছে? বাল্কহেড চালকরা নদী থেকে আমাদের লাইনের টাকা দেয়?
অভিযুক্ত নারী চাঁদাবাজ ফরিদা বেগম বলেন, লোকজনে বলে আমি নাকি চাঁদাবাজি করি। আমার আন্ডারে ৫/৭ টা বাল্কহেড আসে, সুকানি ভাইরা খুশি হইয়া কিছু টাকা দেয়? বাল্কহেড আনতে গিয়ে আমি ও আমার ছেলে এই খালের ২টা চাঁদাবাজির মামলা খাইছি জেলও খাটছি? এখন মাসে মাসে হাজিরা দিতে হয়? দরকার হলে আরও মামলা খামু তব্ওু ব্যবসা বন্ধ করমু না, দেখি কে বাল্কহেড থামাইতে আসে?
পদ্মা নদীতে ডাকাতি ও ডহরি খালের চাঁদাবাজি মামলার আসামি আনোয়ার ঢালী মামলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, টাকা হলে থানা পুলিশ কোনো বিষয় না। মামলা হয়েছিল কোর্ট থেকে জামিন লইয়া আইছি। চাঁদাবাজি করবো কেন বাল্কহেড সুকানিরা খুশি মনে টাকা দিয়ে যায়।
এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন বলেন, চাঁদাবাজি ও বালুবাহী বাল্কহেড বন্ধের বিষয়টি জোর দিয়ে দেখবো। সে সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়ায় এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে? তিনি আরও জানান, এ নৌ রুটটি শুধু লৌহজং নয় আশপাশের অনেকগুলো উপজেলার নৌপথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নৌ রুটটি একেবারের জন্য বন্ধ করা সম্ভব নয় তবে যেসব নৌযান নিষিদ্ধ সেসব বন্ধে প্রশাসন কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে তালতলা-ডহরী খালে দিয়ে বালুবাহী বাল্কহেড পারাপার হতে দিতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের চাঁদা? কখনও বিকাশ কখনও ছোট ট্রলার দিয়ে চাঁদা তুলে প্রভাবশালী একটি চক্র। যদিও এ নৌরুটে প্রশাসনিক ভাবে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিলো। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চক্রটি বালুবাহী বাল্কহেডগুলো তালতলা থেকে গোয়ারা হয়ে ডয়রী পার করে দিচ্ছে মোটা অংশের চাঁদা নিয়ে। বাল্কহেড অনুযায়ী সে চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ছোট আকারের বাল্কহেড থেকে ২ হাজার, মাঝারি আকার থেকে ৩ হাজার বড় হলে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেয়। সে সঙ্গে জটিলতা বাড়লে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায় চাঁদা পরিমাণ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ খাল দিয়ে প্রায় শতাধিক বাল্কহেড চলাচল করতে দেখা যায়।
জানা যায়, গত ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট এই খালে খিদিরপাড়া ইউনিয়নের রসকাঠি এলাকায় বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ট্রলার ডুবে নারী ও শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়। এ ঘটনার পরে উপজেলা প্রশাসন এই খালে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদা দিয়ে দালাল চক্রের সহায়তায় নির্বিঘেœ চলাচল করছে বাল্কহেডগুলো? এতে দেখা দিয়েছে খালের দুইতীর ভাঙনও।
সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার হাট বালিগাঁও গ্রামের মুন্সী বাড়ির রাজন মুন্সী, সাজন মুন্সী, শিপন সে সঙ্গে লৌহজং উপজেলার গাঁওদিয়া গ্রামের একাধিক নৌ ডাকাতি ও চাঁদাবাজি মামলার আসামি রুবেল মাদবর, শামুরবাড়ি গ্রামের চাঁদাবাজি ও হত্যা মামলার আসামি রিপন ওস্তাকার, আনোয়ার ঢালী, মোসা. ফরিদা বেগম, রাহাত চাকলাদারসহ ২০ থেকে ৩০ চাঁদাবাজের একটি সংঘবদ্ধ চক্র কমপক্ষে ১ হাজার থেকে ১৫’শ টাকার বিনিময় এসব বাল্কহেড পারাপার করছে? এদের দল একেক জায়গায় একেক জনের দায়িত্বে থাকেন। দিনে রাতে ভাগ করা থাকে তাদের ডিউটি।
এ ঘটনায় এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর সংঘবদ্ধ চাঁদবাজ চক্রের অন্যতম সদস্য রাহাত চাকলাদার ও দীপু ওস্তাকারকে লৌহজং থানায় চাঁদাবাজি মামলায় নং ৪ (৯) ২৪ গ্রেপ্তার করে পুলিশ? পরে চাঁদাবাজি মামলা নং ৪ (৯) ২৪ইং ও হত্যা মামলা নং ১৫ (৮) ২৪ মামলার আসামি রিপন ওস্তাকারকে গত ১২ নভেম্বরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ? রিপন ওস্তাকার গ্রেপ্তারের পর এলাকার জনমনে স্বস্তি ফিরেছিল? আসামিরা কিছুদিন জেল খেটে জামিনে এসে আবারও চাঁদাবাজি শুরু করেছে?
বাল্কহেড চালকরা বলেন, বালিগাঁওয়ের রাজন মুন্সি, গাঁওদিয়ার রুবেল মাদবর, আল-আমীন মাতবর, চঞ্চল শেখ, ডহরি শামুরবাড়ির রিপন ওস্তাকার, আনোয়ার ঢালী, তাজু ঢালী, শাকিল ওস্তাকার, রিপন মন্ডল, ডহরির লিটন এ সব বাল্কহেড পারাপার করে দিচ্ছে? এ ছাড়া তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে আসলে আমাদের মারধর করে এবং ডাকাতি পর্যন্ত করে। আমাদের কাছে যা থাকে সব নিয়ে যায়।
খালপাড়ের বাসিন্দা আসলাম তালুকদার, পাপ্পু শিকদার, স্বপনসহ তীরবর্তী বাসিন্দারা বলেন, ডহরি-তালতলা খালে দিন-রাত বেপরোয়াভাবে চলে খালের বিষফোঁড়া নামক বাল্কহেডগুলো। এতে খালের দুই তীরে ভাঙন শুরু হয়েছে? অতিরিক্ত বাল্কহেড চলাচলে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা? আগের ইউএনও এসব বাল্কহেড এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিলো? খালে পানি বাড়ায় আবারও চাঁদাবাজ চক্র সক্রিয় হয়ে বাল্কহেড পারাপার করছে? এই বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ করতে না পারলে বাপ-দাদার বসত ভিটেমাটি হারাতে হবে?
এ বিষয় রুবেল মাদবর বলেন, বাল্কহেড আমি একা আনিনা আমাকে ছাড়াও আরও ২০ থেকে ৩০ জন আনে? একাধিক মামলার বিষয় স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, মামলাগুলোতে আমাকে মিথ্যা ভাবে জড়ানো হয়েছে? বাল্কহেড চালকরা নদী থেকে আমাদের লাইনের টাকা দেয়?
অভিযুক্ত নারী চাঁদাবাজ ফরিদা বেগম বলেন, লোকজনে বলে আমি নাকি চাঁদাবাজি করি। আমার আন্ডারে ৫/৭ টা বাল্কহেড আসে, সুকানি ভাইরা খুশি হইয়া কিছু টাকা দেয়? বাল্কহেড আনতে গিয়ে আমি ও আমার ছেলে এই খালের ২টা চাঁদাবাজির মামলা খাইছি জেলও খাটছি? এখন মাসে মাসে হাজিরা দিতে হয়? দরকার হলে আরও মামলা খামু তব্ওু ব্যবসা বন্ধ করমু না, দেখি কে বাল্কহেড থামাইতে আসে?
পদ্মা নদীতে ডাকাতি ও ডহরি খালের চাঁদাবাজি মামলার আসামি আনোয়ার ঢালী মামলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, টাকা হলে থানা পুলিশ কোনো বিষয় না। মামলা হয়েছিল কোর্ট থেকে জামিন লইয়া আইছি। চাঁদাবাজি করবো কেন বাল্কহেড সুকানিরা খুশি মনে টাকা দিয়ে যায়।
এ বিষয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন বলেন, চাঁদাবাজি ও বালুবাহী বাল্কহেড বন্ধের বিষয়টি জোর দিয়ে দেখবো। সে সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়ায় এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে? তিনি আরও জানান, এ নৌ রুটটি শুধু লৌহজং নয় আশপাশের অনেকগুলো উপজেলার নৌপথ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নৌ রুটটি একেবারের জন্য বন্ধ করা সম্ভব নয় তবে যেসব নৌযান নিষিদ্ধ সেসব বন্ধে প্রশাসন কাজ করছে।