alt

জাতীয়

দূরত্ব যেটুকু আছে, ঘুচে যাবে: আশা প্রধান উপদেষ্টার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রথম পর্বের আলোচনায় যেসব বিষয়ে দূরত্ব রয়ে গেছে, দ্বিতীয় পর্বে সেগুলো ঘুচে যাবে, এমন আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “এর (দূরত্ব ঘোচানোর) মধ্য দিয়ে একটি চমৎকার ‘জুলাই সনদ’ করা সম্ভব হবে। এ সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।”

সোমাবর (২ জুন) বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার (সংলাপ) শুরুতে কমিশনের প্রধান হিসেবে বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন। ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এই আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৩০টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সংস্কারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল উল্লেখ করে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য সংস্কার কমিশন গঠন ও পরবর্তীকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর প্রথম পর্বের আলোচনার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তার মনে হয়েছিল যে হয়তো দলগুলো এ কাজে আগ্রহ পাবে না। কিন্তু দলগুলো যেভাবে গভীরে গেছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিতর্ক করেছে, তাতে তিনি আনন্দিত।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘অনেকগুলো বিষয় আছে, কাছাকাছি এসে গেছি, আরেকটু হলে আমাদের তালিকাতে আরেকটা সুপারিশ যুক্ত হয়, ওই ঐকমত্যের সুপারিশে। এ সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।’

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি সারা দিনে যত মিটিং করি, এ পর্যন্ত যত মিটিং করে এসেছি, সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই, যখন আপনাদের সঙ্গে বসার সুযোগ পাই। কারণ, এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে এ রকম একটা কাজে আমি জড়িত হতে পেরেছি।’

রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা (সংলাপ) সোমাবর বিকেলে শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

*আলোচনায় অংশ নেন যারা*
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস; জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ; জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার; বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক; গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি; ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু; রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম; বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম; ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ; গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর; বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান; এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ; জেএসডি-এর সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন; এলডিপির সভাপতিম-লীর সদস্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।

*ঈদের পর ধারাবাহিক*
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। ঈদুল আজহার আগে এক দিন এবং ঈদের পরে দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা চলবে।

বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার কমিশনের যেসব মৌলিক প্রস্তাবে এখনও ঐকমত্য হয়নি সেগুলো এ পর্বে বেশি গুরুত্ব পাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের।

*ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা*
গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচারবিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়। সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি প্রস্তাব ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে মতামত নেয় এই কমিশন। এরপর গত ২০ মার্চ থেকে দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে প্রথম পর্বের আলোচনা শুরু হয়, যা শেষ হয় ১৯ মে। প্রথম পর্বে ৩৩টি দল অংশ নিয়েছিল। পরে ২৬ মে ঐকমত্য কমিশন সংবাদ সম্মেলন করে প্রথম ধাপের আলোচনার অগ্রগতি তুলে ধরে।

*ঐকমত্য হয়নি যেসব বিষয়ে*
ক্ষমতার ভারসাম্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি বলে ওই দিন জানিয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের কাঠামো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কতবার নির্বাচিত হতে পারবেন, একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী হবে, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া কী হবে- এ ধরনের মৌলিক কাঠামোগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত থেকে গেছে। তবে এসব বিষয়ে অনেক দল আরও আলোচনার কথা বলেছে এবং আলোচনায় নমনীয়তা দেখিয়েছে বলে জানায় ঐকমত্য কমিশন।

ছবি

মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের খবর ‘ভিত্তিহীন’: প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

ছবি

ঈদুল আজহার দিন বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল

ছবি

মানবিক করিডোর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সরকার: গোয়েন লুইস

ছবি

শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতা ‘মুক্তিযোদ্ধার তালিকায়’ আছেন: মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা

ছবি

ভারত থেকে পুশ ইন ফিজিক্যালি ঠেকানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

সংজ্ঞায় পরিবর্তন: ‘মুক্তিযোদ্ধা’ নয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হবেন এমএনএ-এমপিএরা

গুম: হাসিনাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সালাহউদ্দিনের অভিযোগ

টানা ১০ দিন বন্ধ বেনাপোল বন্দরের কার্যক্রম, পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত চলবে

ঈদে বাসে ডাকাতি ঠেকাতে যাত্রীদের ছবি তোলা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ: ‘থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়’

হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার শুনানি ও আদেশ ১৯ জুন

চাকরি আইন বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ

বাজেট ‘বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের’ অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: সিপিডি

ছবি

সংবিধান সংস্কারে ঐকমত্য গঠনের আলোচনায় আস্থা ভোট নিয়ে মতপার্থক্য

ছবি

আবেদন শুরুর ১২ ঘণ্টার মাথায় ননক্যাডার প্রক্রিয়া স্থগিত করল পিএসসি

ছবি

৪৪ থেকে ৪৮তম বিসিএস পর্যন্ত রোডম্যাপ ঘোষণা করল কমিশন

ছবি

*সরকারি বেতন নিশ্চিতে এনআইডি বাধ্যতামূলক করতে চায় ইসি

ছবি

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আগুন

ছবি

জুলাইয়ের মধ্যেই ‘ন্যূনতম ঐক্যমতের’ ভিত্তিতে জাতীয় সনদ চূড়ান্ত করতে চান আলী রীয়াজ

ছবি

ঈদুল আজহার পাঁচ জামাত বায়তুল মোকাররমে, প্রথমটি সকাল ৭টায়

ছবি

এক দিনে ২৬৪ বিচারককে রদবদল

ছবি

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের প্রেস ব্রিফিং-সংগৃহীত

ছবি

সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন বহাল

জুলাই আন্দোলন: ১৯ ডাক্তারকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ

শেষ হলো হজ ফ্লাইট, সৌদি পৌঁছেছেন ৮৭১৫৭ হজযাত্রী

ছবি

‘এ সুযোগ হারাব না’, রাজনৈতিক ঐকমত্যে জোর প্রধান উপদেষ্টার

আমিনুলের মনোনয়ন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ফারুকের রিট

ছবি

চাকরি সংশোধনী অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ

ছবি

মেননের ৫ দিনের রিমান্ড, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক ওসি হাসান

ছবি

আজ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ছয় আসামির যাবজ্জীবনও বহাল

ছবি

অভিযোগ আমলে নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল, হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

সেনা ও পুলিশ পাহারায় নিজ কার্যালয়ে ফিরলেন এনবিআর চেয়ারম্যান

জামায়াতের নিবন্ধনের অবৈধতার রায় বাতিল করলো আপিল বিভাগ

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের ‘অপপ্রয়োগের’ আশঙ্কা দেখছেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

জড়িতদের শনাক্তে বৈষম্যবিরোধী ও বিএনপি নেতাদের সহায়তা চাইলো সেনাবাহিনী

tab

জাতীয়

দূরত্ব যেটুকু আছে, ঘুচে যাবে: আশা প্রধান উপদেষ্টার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ০২ জুন ২০২৫

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রথম পর্বের আলোচনায় যেসব বিষয়ে দূরত্ব রয়ে গেছে, দ্বিতীয় পর্বে সেগুলো ঘুচে যাবে, এমন আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, “এর (দূরত্ব ঘোচানোর) মধ্য দিয়ে একটি চমৎকার ‘জুলাই সনদ’ করা সম্ভব হবে। এ সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।”

সোমাবর (২ জুন) বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার (সংলাপ) শুরুতে কমিশনের প্রধান হিসেবে বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন। ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এই আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ ৩০টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সংস্কারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল উল্লেখ করে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য সংস্কার কমিশন গঠন ও পরবর্তীকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর প্রথম পর্বের আলোচনার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তার মনে হয়েছিল যে হয়তো দলগুলো এ কাজে আগ্রহ পাবে না। কিন্তু দলগুলো যেভাবে গভীরে গেছে, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিতর্ক করেছে, তাতে তিনি আনন্দিত।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘অনেকগুলো বিষয় আছে, কাছাকাছি এসে গেছি, আরেকটু হলে আমাদের তালিকাতে আরেকটা সুপারিশ যুক্ত হয়, ওই ঐকমত্যের সুপারিশে। এ সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।’

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি সারা দিনে যত মিটিং করি, এ পর্যন্ত যত মিটিং করে এসেছি, সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই, যখন আপনাদের সঙ্গে বসার সুযোগ পাই। কারণ, এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে এ রকম একটা কাজে আমি জড়িত হতে পেরেছি।’

রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা (সংলাপ) সোমাবর বিকেলে শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

*আলোচনায় অংশ নেন যারা*
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস; জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ; জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার; বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক; গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি; ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান ও গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু; রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম; বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম; ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ; গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর; বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান; এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ; জেএসডি-এর সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন; এলডিপির সভাপতিম-লীর সদস্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।

*ঈদের পর ধারাবাহিক*
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। ঈদুল আজহার আগে এক দিন এবং ঈদের পরে দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা চলবে।

বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার কমিশনের যেসব মৌলিক প্রস্তাবে এখনও ঐকমত্য হয়নি সেগুলো এ পর্বে বেশি গুরুত্ব পাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের।

*ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা*
গত বছরের অক্টোবরে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচারবিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ফেব্রুয়ারিতে কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেয়। সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

পুলিশ সংস্কার কমিশন বাদে বাকি পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি প্রস্তাব ছক আকারে দলগুলোর কাছে পাঠিয়ে মতামত নেয় এই কমিশন। এরপর গত ২০ মার্চ থেকে দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে প্রথম পর্বের আলোচনা শুরু হয়, যা শেষ হয় ১৯ মে। প্রথম পর্বে ৩৩টি দল অংশ নিয়েছিল। পরে ২৬ মে ঐকমত্য কমিশন সংবাদ সম্মেলন করে প্রথম ধাপের আলোচনার অগ্রগতি তুলে ধরে।

*ঐকমত্য হয়নি যেসব বিষয়ে*
ক্ষমতার ভারসাম্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রশ্নে এখনও ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি বলে ওই দিন জানিয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের কাঠামো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কতবার নির্বাচিত হতে পারবেন, একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী হবে, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া কী হবে- এ ধরনের মৌলিক কাঠামোগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত থেকে গেছে। তবে এসব বিষয়ে অনেক দল আরও আলোচনার কথা বলেছে এবং আলোচনায় নমনীয়তা দেখিয়েছে বলে জানায় ঐকমত্য কমিশন।

back to top