ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় যেসব গুমের ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর পেছনে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সম্পৃক্ততা সবচেয়ে বেশি ছিল বলে জানিয়েছে গুমসংক্রান্ত কমিশন। এ তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গুম হয়েছে যারা, তার মেইন কালপ্রিট, মানে কিলার ফোর্স...এটা হচ্ছে র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং। তারা এ কাজটায় সবচেয়ে বেশি ইনভলবড ছিল।”

তিনি জানান, গুমসংক্রান্ত কমিশন তাদের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন আজ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা গুমের বিষয়ে জরুরি করণীয় সম্পর্কে কমিশনের কাছে জানতে চান।

সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম আরও জানান, গুমের ঘটনার ভয়াবহতা দেখে প্রধান উপদেষ্টা ‘হরর মিউজিয়াম’ করার কথা বলেছেন, যা গণভবনের জাদুঘরে স্থাপন করা হবে। একই সঙ্গে গুমের ঘটনা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে।

প্রেস সচিব আরও বলেন, গুমের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সরকারি পুরস্কার, পদক ও পোস্টিংয়ের জন্য এসব করতেন বলে কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে কেউ কেউ এ ধরনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানও করেছিলেন। তিনি জানান, গণভবন থেকে প্রাপ্ত দুটি চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তিনি আরও বলেন, গুমসংক্রান্ত কমিশনে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫০ জন অভিযোগকারী তাঁদের পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য জমা দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্তও নতুন অভিযোগ জমা পড়েছে।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল হচ্ছে—এমন খবরে সরকার বিস্মিত। তিনি একে ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’ বলে আখ্যায়িত করেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। তবে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরে তাঁর সঙ্গে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এবং দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।