রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের ভিড় বাড়ছে -সংবাদ
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উপদ্রব বেড়েই চলছে। এই মশার কামড়ে প্রতিদিন শিশু ও বয়স্কসহ নানা বয়সের মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাও যাচ্ছেন।
কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাসার বলেছেন, উড়ন্ত মশা মারা জরুরি। আর মশা দমনে সম্বনিত উদ্যোগ নেয়া দরকার। আর যে বাড়িতে বা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন থাকে। সেখানে রোগীকে মশারি খাটিয়ে ভিতরে রাখতে হবে। তা হলে রোগ কম ছড়াবে। না হয় বাড়তেই থাকবে বলে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমাজেন্সি ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. জাহিদুল ইসলামের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারাও গেছেন।
এ নিয়ে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে শনিবার,(২১ জুন ২০২৫) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৭ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ জন মারা গেছেন।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৬ জন, ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৯ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৪৩ জন, খুলনা বিভাগে ৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন। আক্রান্ত হয়েছে। আর চট্টগ্রামে আক্রান্ত একজন মারা গেছেন।
চলতি জুন মাসের ২১ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৫ জন। তার মধ্যে ৮ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এর আগে মে মাসে ৩ জন নিহত হয়েছে। এপ্রিল মাসে ৭ জন মারা গেছেন।
হাসপাতালের তথ্য মতে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৬৩ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি আছে ১২ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছে ৪ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে ৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে ৫২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৬ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ১৮ জন ভর্তি আছে। এভাবে দেশের ১৮টি সরকারি হাসপাতাল ভর্তি আছে ১৮৭ জন। পর্যটন জেলা কক্সবাজারে ভর্তি আছে ১৬ জন, উপকূলীয় জেলা বরগুনা জেলায় ভর্তি আছে ২২১ জন। এভাবে সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৮৮২ জন।
মশারি সংকট : উপকূলীয় জেলা বরগুনাসহ দেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করা হলেও অনেক রোগীই মশারি ছাড়াই হাসপাতালে বেডে চিকিৎসাধীন আছে। আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীকে মশা কামড় দেয়ার পর আবার একই মশা কোনো সুষ্ঠু মানুষকে কামড় দিলে তিনিও ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। এভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। একজন রোগীর জন্য
হাসপাতালে ৩ থেকে ৪ জন স্বজন থাকছে। তারা মশারি ছাড়াই রোগীর পাশে, হাসপাতালের বারান্দায় রাত কাটান। তারাও মশার কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছে।
আবার আক্রান্ত রোগী শহর থেকে গ্রামে গেলে সেখানে নতুন করে তাকে মশা কামড় দেয়ার পর সেই মশা অন্য কাউকে কামড় দিলে তার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে ডেঙ্গু ভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আগে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরে আক্রান্ত সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
মশা দমনে আলাদা বিভাগ: কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশাসহ অন্যান্য ভাইরাস বহনকারী মশা, মাছি দমনে বিশ্বের অনেক উন্নতশীল দেশে আলাদা বিভাগ আছে। তারা বছর জুড়ে জরিপ করে ও অনুসন্ধান চালিয়ে যেখানে মশার উপদ্রব সেখানে মশা দমনে কাজ করছে। কিন্তু বাংলাদেশে সেই ব্যবস্থা নেই। এডিস মশার উপদ্রব বাড়লে সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড কাউন্সিলার ও এলাকাভিত্তিক আগে মশা মারা হলেও বেশ কিছুদিন ধরে উড়ন্ত মশা মারা ও মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হচ্ছে না বলে নগরবাসী ও কীটতত্ত্ববিদরা মনে করেন।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একজন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বরগুনায় এডিস মশার উপদ্রব ঠেকাতে জেলা প্রশাসন কাজ শুরু করেছেন। সেখানে টিমে একজন ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে।
অনেকেই বলছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এডিস মশা ও লার্ভা দমনে কাজ করলে মশার উপদ্রব কমবে। দরকার হলে জরিমানা করা যেতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের ভিড় বাড়ছে -সংবাদ
শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার উপদ্রব বেড়েই চলছে। এই মশার কামড়ে প্রতিদিন শিশু ও বয়স্কসহ নানা বয়সের মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাও যাচ্ছেন।
কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাসার বলেছেন, উড়ন্ত মশা মারা জরুরি। আর মশা দমনে সম্বনিত উদ্যোগ নেয়া দরকার। আর যে বাড়িতে বা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন থাকে। সেখানে রোগীকে মশারি খাটিয়ে ভিতরে রাখতে হবে। তা হলে রোগ কম ছড়াবে। না হয় বাড়তেই থাকবে বলে কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমাজেন্সি ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. জাহিদুল ইসলামের পাঠানো তথ্যে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময় চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারাও গেছেন।
এ নিয়ে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে শনিবার,(২১ জুন ২০২৫) পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৭ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ জন মারা গেছেন।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৬৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৬ জন, ঢাকা বিভাগে ১৫ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৯ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৪৩ জন, খুলনা বিভাগে ৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন। আক্রান্ত হয়েছে। আর চট্টগ্রামে আক্রান্ত একজন মারা গেছেন।
চলতি জুন মাসের ২১ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৫ জন। তার মধ্যে ৮ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এর আগে মে মাসে ৩ জন নিহত হয়েছে। এপ্রিল মাসে ৭ জন মারা গেছেন।
হাসপাতালের তথ্য মতে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৬৩ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি আছে ১২ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছে ৪ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে ৯ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে ৫২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৬ জন, মহাখালী ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে ১৮ জন ভর্তি আছে। এভাবে দেশের ১৮টি সরকারি হাসপাতাল ভর্তি আছে ১৮৭ জন। পর্যটন জেলা কক্সবাজারে ভর্তি আছে ১৬ জন, উপকূলীয় জেলা বরগুনা জেলায় ভর্তি আছে ২২১ জন। এভাবে সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছে ৮৮২ জন।
মশারি সংকট : উপকূলীয় জেলা বরগুনাসহ দেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করা হলেও অনেক রোগীই মশারি ছাড়াই হাসপাতালে বেডে চিকিৎসাধীন আছে। আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীকে মশা কামড় দেয়ার পর আবার একই মশা কোনো সুষ্ঠু মানুষকে কামড় দিলে তিনিও ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। এভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। একজন রোগীর জন্য
হাসপাতালে ৩ থেকে ৪ জন স্বজন থাকছে। তারা মশারি ছাড়াই রোগীর পাশে, হাসপাতালের বারান্দায় রাত কাটান। তারাও মশার কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছে।
আবার আক্রান্ত রোগী শহর থেকে গ্রামে গেলে সেখানে নতুন করে তাকে মশা কামড় দেয়ার পর সেই মশা অন্য কাউকে কামড় দিলে তার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে ডেঙ্গু ভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আগে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরে আক্রান্ত সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
মশা দমনে আলাদা বিভাগ: কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশাসহ অন্যান্য ভাইরাস বহনকারী মশা, মাছি দমনে বিশ্বের অনেক উন্নতশীল দেশে আলাদা বিভাগ আছে। তারা বছর জুড়ে জরিপ করে ও অনুসন্ধান চালিয়ে যেখানে মশার উপদ্রব সেখানে মশা দমনে কাজ করছে। কিন্তু বাংলাদেশে সেই ব্যবস্থা নেই। এডিস মশার উপদ্রব বাড়লে সিটি করপোরেশন, ওয়ার্ড কাউন্সিলার ও এলাকাভিত্তিক আগে মশা মারা হলেও বেশ কিছুদিন ধরে উড়ন্ত মশা মারা ও মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হচ্ছে না বলে নগরবাসী ও কীটতত্ত্ববিদরা মনে করেন।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একজন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বরগুনায় এডিস মশার উপদ্রব ঠেকাতে জেলা প্রশাসন কাজ শুরু করেছেন। সেখানে টিমে একজন ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে।
অনেকেই বলছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এডিস মশা ও লার্ভা দমনে কাজ করলে মশার উপদ্রব কমবে। দরকার হলে জরিমানা করা যেতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।