কৃষিখাতে পদোন্নতি ও বদলিসহ সকল ধরনের কাজে সচ্ছতা ও যোগ্যতাের আলোকে হতে হবে। কোন ব্যক্তি এসবখাতে কানাকড়ি দুর্নীতি করলেও তার 'লাইফ হেল' করে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের (তৃতীয় সংশোধনী) জাতীয় কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রাজধানীর খামারবাড়িস্থ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। ডিএইর মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুবুল হক পাটোওয়ারী, ডিএইর পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) হাবিবউল্লাহ, হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দীন। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পটি পরিচালক আব্দুল হালিম।
পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা উৎপাদন, বিক্রয় ও রোপণ নিষিদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে
কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘এ বছর সারা দেশে ২ কোটি ৫০ লাখ আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাসের চারা গাছ রয়েছে। এগুলো নার্সারি থেকে ৪ টাকা করে কিনে নিয়ে চারাগুলো মেরে ফেলা হবে।’
আব্দুল হালিম বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে ৭৫০ লাখ হেক্টর ও উপকূলে ১৮ লাখ হেক্টর জমি পতিত পড়ে আছে। এসব জমিকে ফল চাষের আওতায় নিয়ে আসাই ছিল আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, ১৪ টি হর্টিকারচার সেন্টার করার লক্ষ্য নিয়ে ৯ টি করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে ড্রাগন উৎপাদন হচ্ছে ৬৮ হাজার ৮৬৩ মেট্রিক টন।
প্রকল্পের কারণে দেশে ফলের উৎপাদন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কমেছে আপেল আমদানি।
প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার ৫০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা উদ্যোক্তা সাবলম্বী হচ্ছে। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত ৯ হাজার বাণিজ্যিক ফল বাগান তৈরি করা হয়েছে। রপ্তানিযোগ্য এমডি টু জাতের আনারসের চাষাবাদ বাড়ছে।
দেশের হর্টিকারচার সেন্টারগুলোতে আগে যেখানে দেড় কোটি চারা হতো সেখানে ১১টি হর্টিকারচারে ৫ কোটি চারা উৎপাদন হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের কারণে এক দশকে ফলের উৎপাদন বেড়েছে ৫০ শতাংশ।
প্রকল্পের সহযোগিতায় চাষাবাদ করছেন খাগড়চড়ির নাড়িয়াচরের চাষি কবিতা চাকমা। তিনি বলেন, ৩ হাজার এমডি টু জাতের আনারস চাষ করেছেন। দুই কেজি ৮০০ গ্রামের ওজন হয়েছিল। প্রতিটি আনারস ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
নাটোরের গোলাম মাওলা বলেন, ফুল, ফল চাষ করেন। তিনি পেয়ারা চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন। পরবর্তীতে ড্রাগন চাষ করছেন।
উদ্যোক্তা এম এ হাসান বলেন, হর্টিকালচার যেন ভালো চারা উৎপাদন ও সরবরাহ করা হয়। আর বছরব্যাপী ফল উৎপাদন প্রকল্পটির সময় বাড়ানো দরকার।
ফলে প্রচুর পরিমাণ হরমোন ব্যবহার করায় পুষ্টিগুণ থাকে না বলে জানান ফরিদপুর হর্টিকালচার সেন্টারের পরিচালক। আমাদের চাহিদাভিত্তিক ফল উৎপাদন করতে হবে। তিনি বলেন, কৃষিতে সারের ব্যবহার বাড়ছে। তাই প্রতি তিনটি ওয়ার্ড মিলে একজন করে ডিলার দিতে হবে। ডিলার বাড়ানোর সঙ্গে সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত।
বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের সাবেক পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ বলেন, দেশে ফলের কোন গবেষক নেই। অথচ চাষিরা নিজেরা চাষ করে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অফিসাররা তাদের কাছে শিখছি।
তিনি বলেন, মাটিতে চারা করলে বিদেশে রপ্তানি করা যায় না। করতে হবে কোকোপিটে। আমরা ম্যানেজমেন্ট করতে পারছি না।
তিনি বলেন, নারকেল গাছে খাদ্য উপকরণ দিতে পারলে পুরাতন গাছেও প্রচুর নারকেল হবে।
রফতানিযোগ্য আম প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুর রহমান বলেন, কৃষকরাই সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষকরা নিজেরাই অনেক প্রযুক্তি বা পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। আমরা যদি কোন একটি উইংয়ের মাধ্যমে এসব প্রযুক্তিকে সংগ্রহ করে সেগুলোকে সংরক্ষণ করতে পারি এবং বার্ষিক রিপোর্ট করতে পারি সেটা কৃষিখাতে পরিবর্তন আনবে।
এ ব্যাপারে কাজ করতে তিনি হর্টিকালচারের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন।
কৃষি সচিব বলেন, টাকা-পয়সা দিয়ে পোস্টিং নিলে বা হলে তাদের ডাউন করা হবে। যোগ্যতা দিয়ে পোস্টিং হবে। আমরা শূন্য। যারা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে তাদেরকে ভালো জায়গায় পোস্ট দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, পোল করে ডিডি, পিডি ও উপজেলা কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রত্যেক ক্যাডারের প্রশিক্ষণ আছে অথচ কৃষিতে তা নেই। আমরা রপ্তানির জন্য প্রযুক্তি বাড়ানোর কথা বলছি অথচ আভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা দেখছি না।
কৃষি সচিব বলেন, এ প্রকল্পটি বন্ধ করা যাবে না। এটি চালিয়ে যেতে হবে।
ডিএইর সাবেক মহাপরিচালক এম এনামুল হক বলেন, আমি ফল ও লেবু জাতীয় ফসল উৎপাদনে বেশি আগ্রহী ছিলাম। সে দৃষ্টিকোণ থেকেই আম্রপালি এনে দেশে আবাদের ব্যবস্থা করেছি।
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
কৃষিখাতে পদোন্নতি ও বদলিসহ সকল ধরনের কাজে সচ্ছতা ও যোগ্যতাের আলোকে হতে হবে। কোন ব্যক্তি এসবখাতে কানাকড়ি দুর্নীতি করলেও তার 'লাইফ হেল' করে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের (তৃতীয় সংশোধনী) জাতীয় কর্মশালায় এসব কথা বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রাজধানীর খামারবাড়িস্থ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়। ডিএইর মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুবুল হক পাটোওয়ারী, ডিএইর পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) হাবিবউল্লাহ, হর্টিকালচার উইংয়ের পরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দীন। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পটি পরিচালক আব্দুল হালিম।
পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাস গাছের চারা উৎপাদন, বিক্রয় ও রোপণ নিষিদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে
কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘এ বছর সারা দেশে ২ কোটি ৫০ লাখ আকাশমনি ও ইউক্যালিপটাসের চারা গাছ রয়েছে। এগুলো নার্সারি থেকে ৪ টাকা করে কিনে নিয়ে চারাগুলো মেরে ফেলা হবে।’
আব্দুল হালিম বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে ৭৫০ লাখ হেক্টর ও উপকূলে ১৮ লাখ হেক্টর জমি পতিত পড়ে আছে। এসব জমিকে ফল চাষের আওতায় নিয়ে আসাই ছিল আমাদের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, ১৪ টি হর্টিকারচার সেন্টার করার লক্ষ্য নিয়ে ৯ টি করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে ড্রাগন উৎপাদন হচ্ছে ৬৮ হাজার ৮৬৩ মেট্রিক টন।
প্রকল্পের কারণে দেশে ফলের উৎপাদন ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কমেছে আপেল আমদানি।
প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার ৫০০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা উদ্যোক্তা সাবলম্বী হচ্ছে। তা ছাড়া এখন পর্যন্ত ৯ হাজার বাণিজ্যিক ফল বাগান তৈরি করা হয়েছে। রপ্তানিযোগ্য এমডি টু জাতের আনারসের চাষাবাদ বাড়ছে।
দেশের হর্টিকারচার সেন্টারগুলোতে আগে যেখানে দেড় কোটি চারা হতো সেখানে ১১টি হর্টিকারচারে ৫ কোটি চারা উৎপাদন হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের কারণে এক দশকে ফলের উৎপাদন বেড়েছে ৫০ শতাংশ।
প্রকল্পের সহযোগিতায় চাষাবাদ করছেন খাগড়চড়ির নাড়িয়াচরের চাষি কবিতা চাকমা। তিনি বলেন, ৩ হাজার এমডি টু জাতের আনারস চাষ করেছেন। দুই কেজি ৮০০ গ্রামের ওজন হয়েছিল। প্রতিটি আনারস ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
নাটোরের গোলাম মাওলা বলেন, ফুল, ফল চাষ করেন। তিনি পেয়ারা চাষে সাফল্য অর্জন করেছেন। পরবর্তীতে ড্রাগন চাষ করছেন।
উদ্যোক্তা এম এ হাসান বলেন, হর্টিকালচার যেন ভালো চারা উৎপাদন ও সরবরাহ করা হয়। আর বছরব্যাপী ফল উৎপাদন প্রকল্পটির সময় বাড়ানো দরকার।
ফলে প্রচুর পরিমাণ হরমোন ব্যবহার করায় পুষ্টিগুণ থাকে না বলে জানান ফরিদপুর হর্টিকালচার সেন্টারের পরিচালক। আমাদের চাহিদাভিত্তিক ফল উৎপাদন করতে হবে। তিনি বলেন, কৃষিতে সারের ব্যবহার বাড়ছে। তাই প্রতি তিনটি ওয়ার্ড মিলে একজন করে ডিলার দিতে হবে। ডিলার বাড়ানোর সঙ্গে সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত।
বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের সাবেক পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ বলেন, দেশে ফলের কোন গবেষক নেই। অথচ চাষিরা নিজেরা চাষ করে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা অফিসাররা তাদের কাছে শিখছি।
তিনি বলেন, মাটিতে চারা করলে বিদেশে রপ্তানি করা যায় না। করতে হবে কোকোপিটে। আমরা ম্যানেজমেন্ট করতে পারছি না।
তিনি বলেন, নারকেল গাছে খাদ্য উপকরণ দিতে পারলে পুরাতন গাছেও প্রচুর নারকেল হবে।
রফতানিযোগ্য আম প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুর রহমান বলেন, কৃষকরাই সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষকরা নিজেরাই অনেক প্রযুক্তি বা পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। আমরা যদি কোন একটি উইংয়ের মাধ্যমে এসব প্রযুক্তিকে সংগ্রহ করে সেগুলোকে সংরক্ষণ করতে পারি এবং বার্ষিক রিপোর্ট করতে পারি সেটা কৃষিখাতে পরিবর্তন আনবে।
এ ব্যাপারে কাজ করতে তিনি হর্টিকালচারের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন।
কৃষি সচিব বলেন, টাকা-পয়সা দিয়ে পোস্টিং নিলে বা হলে তাদের ডাউন করা হবে। যোগ্যতা দিয়ে পোস্টিং হবে। আমরা শূন্য। যারা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে তাদেরকে ভালো জায়গায় পোস্ট দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, পোল করে ডিডি, পিডি ও উপজেলা কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রত্যেক ক্যাডারের প্রশিক্ষণ আছে অথচ কৃষিতে তা নেই। আমরা রপ্তানির জন্য প্রযুক্তি বাড়ানোর কথা বলছি অথচ আভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা দেখছি না।
কৃষি সচিব বলেন, এ প্রকল্পটি বন্ধ করা যাবে না। এটি চালিয়ে যেতে হবে।
ডিএইর সাবেক মহাপরিচালক এম এনামুল হক বলেন, আমি ফল ও লেবু জাতীয় ফসল উৎপাদনে বেশি আগ্রহী ছিলাম। সে দৃষ্টিকোণ থেকেই আম্রপালি এনে দেশে আবাদের ব্যবস্থা করেছি।