জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যে ৬ জনের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলা হচ্ছে, তাদের পাঁচজনই এনবিআরের চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির ‘নেতৃত্বে’ রয়েছেন।
রবিবার,(২৯ জুন ২০২৫) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে, নিজে লাভবান হয়ে ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করার মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ জনের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম চলছে।’
তদন্তের মুখে পড়া ৬ কর্মকর্তা হলেন এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার ও অতিরিক্ত কমিশনার ও সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য সাধন কুমার কুণ্ডু। এদের মধ্যে বদিউল আলম ছাড়া বাকি পাঁচজন এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সামনের সারিতে রয়েছেন।
রবিবার আন্দোলনকারীদের যে প্রতিনিধিদলের অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বসার কথা ছিল, সেই দলে মির্জা আশিক রানা, মোরশেদ উদ্দীন খান, মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা ও হাছান তারেক রিকাবদারের নামও ছিল।
আর সাধন কুমার কুণ্ডুকে আন্দোলনকারীদের একাধিক সংবাদ সম্মেলনে সামনের সারিতে দেখা গেছে।
দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও নিজেদের লাভে করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুদক বলছে, এতে প্রতিবছর সরকার বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করার অভিযোগও আছে।
দুদকের নথিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরও অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা।
মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলমবিরতিসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এরপর আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। দাবি আদায়ে গত শনিবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছেন এনবিআর কর্মীরা। তাদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম।
এর মধ্যে রবিবার সংস্থাটির সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টম হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণীর চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
চলমান সংকট নিরসনে এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরার এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিও দেয় সরকার। এ আহ্বানে সাড়া না দিলে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয় তাতে। সরকারের সেই বিবৃতির পরই দুদকের এমন পদক্ষেপের কথা সামনে এলো।
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যে ৬ জনের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান শুরুর কথা বলা হচ্ছে, তাদের পাঁচজনই এনবিআরের চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির ‘নেতৃত্বে’ রয়েছেন।
রবিবার,(২৯ জুন ২০২৫) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে, নিজে লাভবান হয়ে ও রাষ্ট্রের ক্ষতি করার মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ জনের বিরুদ্ধে তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম চলছে।’
তদন্তের মুখে পড়া ৬ কর্মকর্তা হলেন এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার ও অতিরিক্ত কমিশনার ও সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য সাধন কুমার কুণ্ডু। এদের মধ্যে বদিউল আলম ছাড়া বাকি পাঁচজন এনবিআরের চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সামনের সারিতে রয়েছেন।
রবিবার আন্দোলনকারীদের যে প্রতিনিধিদলের অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বসার কথা ছিল, সেই দলে মির্জা আশিক রানা, মোরশেদ উদ্দীন খান, মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা ও হাছান তারেক রিকাবদারের নামও ছিল।
আর সাধন কুমার কুণ্ডুকে আন্দোলনকারীদের একাধিক সংবাদ সম্মেলনে সামনের সারিতে দেখা গেছে।
দুদকের নথিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও নিজেদের লাভে করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুদক বলছে, এতে প্রতিবছর সরকার বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিককে হয়রানি করার অভিযোগও আছে।
দুদকের নথিতে আরও বলা হয়েছে, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরও অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা।
মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলমবিরতিসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এরপর আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। দাবি আদায়ে গত শনিবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছেন এনবিআর কর্মীরা। তাদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম।
এর মধ্যে রবিবার সংস্থাটির সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের কার্যক্রম চলমান রাখার জাতীয় স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন সব কাস্টম হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণীর চাকরিকে অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
চলমান সংকট নিরসনে এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরার এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিও দেয় সরকার। এ আহ্বানে সাড়া না দিলে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয় তাতে। সরকারের সেই বিবৃতির পরই দুদকের এমন পদক্ষেপের কথা সামনে এলো।