দেশ ছাড়তে সহযোগীদের নিয়ে যশোরে আত্মগোপন
রাজধানীর ফকিরাপুলে গোয়েন্দা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পিকে অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার দুই সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত ২টার দিকে যশোর জেলার ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্যরা হলো আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে বোমা রিপন ও মো. কামরুল হাসান। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ম্যাগাজিন ও দেড় শতাধিক গুলি উদ্ধার করা হয়।
ডিবি বলছে, গ্রেপ্তার এড়াতে সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়ার উদ্দেশে যশোরে এক বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল বাপ্পি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি। অভিযানের তথ্য জানতে পেরে গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওই বাসার নারী ও শিশুকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার,(২৯ জুন ২০২৫) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ১৮ জুন রাত সোয়া ৯টার দিকে ফকিরাপুল এলাকার ডিআইটি এক্সটেনশন রোডে অভিযান চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ আবদুর রহমান নামে একজনকে আটক করা হয়। এরপর ১৯ জুন রাত সোয়া ১২টার দিকে মাদকসহ আটক আবদুর রহমানের দেয়া তথ্যে পল্টন থেকে আসা একটি প্রাইভেটকার থামাতে নির্দেশনা দেয় ডিবি সদস্যরা। এরপর প্রাইভেটকারে থাকা মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের তল্লাশি ও গ্রেপ্তারকালে শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি ওরফে মো. আলী ওরফে ফিরোজ আলম ওরফে আহসানুল হক ডিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করতে ঢাকা, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গোপন সংবাদে জানা যায়, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে বাপ্পি যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থান নেয়। সেখানে নজরুলের জামাতা আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে বোমা রিপন এবং মো. কামরুল হাসান উপস্থিত ছিল। গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাপ্পি বাসায় থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দেয়। বাসায় গ্যাস জমাট করে পুলিশকে হুমকি দেয় যে, যদি তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা করা হয় তাহলে বাসায় থাকা শিশু ও নারীদের হত্যা করবে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় বাসার গ্যাস অপসারণ করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে গতকাল শনিবার রাজধানীর ডেমরা থানার বসতবাড়ি আবাসিক এলাকায় বাপ্পির বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ভর্তি ৪টি ম্যাগাজিনসহ মোট ১৫১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়।
যুগ্ম কমিশনার নাসির আরও বলেন, বাপ্পির গ্রুপের সদস্য ২৫ জন। গত কোরবানির ঈদে তাদের অন্তত সাত লাখ টাকা সালামি দিয়েছে বাপ্পি। এমন একটি তালিকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২০১০ সাল থেকে বাপ্পি মাদক বিক্রি করে আসছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে।
পাশাপাশি তার গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে বাপ্পি গোয়েন্দা পুলিশকে বেশ কিছু ব্যক্তির নাম জানিয়েছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। মাদক-অস্ত্রের রুট সম্পর্কেও আমরা কাজ করছি। মাদক কারবারি হয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলির মজুতের বিষয়ে ডিবির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বাপ্পির কাছ থেকে ৪টি বিদেশি পিস্তল ও দেড় শতাধিক গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রগুলো বেশ দামি। অস্ত্র-গুলি মজুতের বিষয়ে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে মাদক কারবারের পাশাপাশি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেয়াসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে আসছিল। এসব কাজে অস্ত্রগুলো মজুত করে।
দেশ ছাড়তে সহযোগীদের নিয়ে যশোরে আত্মগোপন
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
রাজধানীর ফকিরাপুলে গোয়েন্দা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পিকে অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার দুই সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত ২টার দিকে যশোর জেলার ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্যরা হলো আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে বোমা রিপন ও মো. কামরুল হাসান। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, ৬টি ম্যাগাজিন ও দেড় শতাধিক গুলি উদ্ধার করা হয়।
ডিবি বলছে, গ্রেপ্তার এড়াতে সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়ার উদ্দেশে যশোরে এক বাড়িতে আত্মগোপনে ছিল বাপ্পি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি। অভিযানের তথ্য জানতে পেরে গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওই বাসার নারী ও শিশুকে হত্যার হুমকি দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রবিবার,(২৯ জুন ২০২৫) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত ১৮ জুন রাত সোয়া ৯টার দিকে ফকিরাপুল এলাকার ডিআইটি এক্সটেনশন রোডে অভিযান চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ আবদুর রহমান নামে একজনকে আটক করা হয়। এরপর ১৯ জুন রাত সোয়া ১২টার দিকে মাদকসহ আটক আবদুর রহমানের দেয়া তথ্যে পল্টন থেকে আসা একটি প্রাইভেটকার থামাতে নির্দেশনা দেয় ডিবি সদস্যরা। এরপর প্রাইভেটকারে থাকা মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের তল্লাশি ও গ্রেপ্তারকালে শীর্ষ সন্ত্রাসী বাপ্পি ওরফে মো. আলী ওরফে ফিরোজ আলম ওরফে আহসানুল হক ডিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করতে ঢাকা, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গোপন সংবাদে জানা যায়, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে বাপ্পি যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের নজরুল ইসলামের বাড়িতে অবস্থান নেয়। সেখানে নজরুলের জামাতা আবু খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে বোমা রিপন এবং মো. কামরুল হাসান উপস্থিত ছিল। গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাপ্পি বাসায় থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের গ্যাস ছেড়ে দেয়। বাসায় গ্যাস জমাট করে পুলিশকে হুমকি দেয় যে, যদি তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা করা হয় তাহলে বাসায় থাকা শিশু ও নারীদের হত্যা করবে। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় বাসার গ্যাস অপসারণ করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যে গতকাল শনিবার রাজধানীর ডেমরা থানার বসতবাড়ি আবাসিক এলাকায় বাপ্পির বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দুটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ভর্তি ৪টি ম্যাগাজিনসহ মোট ১৫১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়।
যুগ্ম কমিশনার নাসির আরও বলেন, বাপ্পির গ্রুপের সদস্য ২৫ জন। গত কোরবানির ঈদে তাদের অন্তত সাত লাখ টাকা সালামি দিয়েছে বাপ্পি। এমন একটি তালিকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২০১০ সাল থেকে বাপ্পি মাদক বিক্রি করে আসছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে।
পাশাপাশি তার গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে বাপ্পি গোয়েন্দা পুলিশকে বেশ কিছু ব্যক্তির নাম জানিয়েছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। মাদক-অস্ত্রের রুট সম্পর্কেও আমরা কাজ করছি। মাদক কারবারি হয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলির মজুতের বিষয়ে ডিবির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বাপ্পির কাছ থেকে ৪টি বিদেশি পিস্তল ও দেড় শতাধিক গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রগুলো বেশ দামি। অস্ত্র-গুলি মজুতের বিষয়ে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে মাদক কারবারের পাশাপাশি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেয়াসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করে আসছিল। এসব কাজে অস্ত্রগুলো মজুত করে।