জনগণের ‘ভোট ছাড়াই’ নির্বাচন সম্পন্ন করা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিএনপির করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম জি এম ফারহান ইশতিয়াক রবিবার,(২৯ জুন ২০২৫) দুপুরে শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে এদিন হাবিবুল আউয়ালকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান। সাবেক এই সিইসির পক্ষে তার আইনজীবী শফি উল আলম জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে প্রায় প্রত্যেকটি ধারা জামিনযোগ্য। আর রাষ্ট্রদ্রোহ অভিযোগও সঠিক নয়, কারণ তিনি কোনো ষড়যন্ত্র করেননি। আর কোন সরকারে সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকাত করেছেন তিনি, আগের না বর্তমান- তা এজাহারে বলা হয়নি।
তিনি বলেন, হাবিবুল আউয়াল তিন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। জামিন দিলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। ‘আপনি তাকে জামিন দিতে পারেন। জামিন দিলে সবাই বুঝবে দেশে ন্যায়বিচার আছে, আবার ন্যায়বিচারকও আছেন।’ রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন।
তিনি বলেন, ‘সাবেক সিইসি জাতিকে সামনে মধুর বাণী শুনাতেন। সবার আশা ছিল, সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করবেন। কিন্তু তা করেননি। তিনি সংবিধান স্বীকৃত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। কেউ পদত্যাগ না করলে জোর করে পদত্যাগ করানো যায় না। স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠান।’
হাবিবুল আউয়াল শপথ ভঙ্গ করেছেন অভিযোগ তুলে ফারুকী বলেন, ‘তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। হাসিনার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ‘নির্বাচনের সময় অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আসতে কোনো প্রক্রিয়া গ্রহণ করেননি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থেকে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।
গত বুধবার রাজধানীর মগবাজার থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। পরদিন তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ। এর আগে ২২ জুন সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২৩ জুন তার চার দিনের এবং ২৭ জুন আরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান গত ২২ জুন শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের পাশাপাশি তাদের সময়ের নির্বাচন কমিশনারদের আসামি করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবী মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। ‘সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্ত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দ-নীয় অপরাধ।
‘উক্ত ঘটনার সাক্ষী সব ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা। এছাড়া ভোট কেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিংশ অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরও অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে। ‘এছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে উল্লেখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার গত বুধবার মামলায় দ-বিধির ১২০ (ক)/ ৪২০/৪০৬ ধারায় অভিযোগ যুক্ত করার আবেদন করেন। ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মিনহাজুর রহমান শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন। ফলে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ যুক্ত হয়েছে এ মামলায়।
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
জনগণের ‘ভোট ছাড়াই’ নির্বাচন সম্পন্ন করা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিএনপির করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম জি এম ফারহান ইশতিয়াক রবিবার,(২৯ জুন ২০২৫) দুপুরে শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম এ তথ্য দিয়েছেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে এদিন হাবিবুল আউয়ালকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান। সাবেক এই সিইসির পক্ষে তার আইনজীবী শফি উল আলম জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে তিনি বলেন, হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে প্রায় প্রত্যেকটি ধারা জামিনযোগ্য। আর রাষ্ট্রদ্রোহ অভিযোগও সঠিক নয়, কারণ তিনি কোনো ষড়যন্ত্র করেননি। আর কোন সরকারে সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকাত করেছেন তিনি, আগের না বর্তমান- তা এজাহারে বলা হয়নি।
তিনি বলেন, হাবিবুল আউয়াল তিন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। জামিন দিলে তিনি পালিয়ে যাবেন না। ‘আপনি তাকে জামিন দিতে পারেন। জামিন দিলে সবাই বুঝবে দেশে ন্যায়বিচার আছে, আবার ন্যায়বিচারকও আছেন।’ রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন।
তিনি বলেন, ‘সাবেক সিইসি জাতিকে সামনে মধুর বাণী শুনাতেন। সবার আশা ছিল, সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করবেন। কিন্তু তা করেননি। তিনি সংবিধান স্বীকৃত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। কেউ পদত্যাগ না করলে জোর করে পদত্যাগ করানো যায় না। স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠান।’
হাবিবুল আউয়াল শপথ ভঙ্গ করেছেন অভিযোগ তুলে ফারুকী বলেন, ‘তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। হাসিনার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ‘নির্বাচনের সময় অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আসতে কোনো প্রক্রিয়া গ্রহণ করেননি। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থেকে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।
গত বুধবার রাজধানীর মগবাজার থেকে হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। পরদিন তাকে তিন দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ। এর আগে ২২ জুন সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ২৩ জুন তার চার দিনের এবং ২৭ জুন আরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান গত ২২ জুন শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের পাশাপাশি তাদের সময়ের নির্বাচন কমিশনারদের আসামি করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবী মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। ‘সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্ত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দ-নীয় অপরাধ।
‘উক্ত ঘটনার সাক্ষী সব ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা। এছাড়া ভোট কেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিংশ অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরও অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে। ‘এছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে উল্লেখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শামসুজ্জোহা সরকার গত বুধবার মামলায় দ-বিধির ১২০ (ক)/ ৪২০/৪০৬ ধারায় অভিযোগ যুক্ত করার আবেদন করেন। ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মিনহাজুর রহমান শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন। ফলে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ যুক্ত হয়েছে এ মামলায়।