৫৭ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড
দেশের একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল শোধন করেছে ইআরএল, যা প্রতিষ্ঠানটির ৫৭ বছরের ইতিহাসে একটি নতুন রেকর্ড।
মঙ্গলবার,(১লা জুলাই ২০২৫) চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ইআরএলের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে তাদের ইতিহাসের গত অর্থবছরে সর্বোচ্চ পরিমাণ জ্বালানি তেল শোধন করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ইআরএলের চেয়ারম্যান নাসিমুল গনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পরিমাণ তেল শোধন সম্ভব হয়েছে। ৫৭ বছরের এই পরিশোধনাগারের জন্য এটি একটি বড় অর্জন।
বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান জানান, ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণের উদ্যোগ দ্রুত এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার পর দ্রুত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। তিনি আরও জানান, মহেশখালীতে ১০ লাখ টন সক্ষমতার নতুন শোধনাগার এবং পায়রাবন্দরে আরেকটি শোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে মহেশখালীর জন্য জমিও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বছরে প্রায় ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত তেল শোধন করতে পারে ইআরএল। দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ সম্পন্ন হলে প্রতিষ্ঠানটির মোট শোধন ক্ষমতা বেড়ে ৩০ লাখ টনে উন্নীত হবে। এতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।
ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হাসনাত বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, এবার আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা অতিক্রম করে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধন সম্ভব হয়েছে। এটি আমাদের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে ইআরএলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। তিনি আরও বলেন, যদিও আমাদের সামনে অনেক বাস্তব চ্যালেঞ্জ ছিল, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে তা জয় করতে পেরেছি। এই ঐতিহাসিক অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
পর্যালচনায় দেখা যায়, আগের বছরের তুলনায় এবার শোধন কার্যক্রমে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শোধিত হয়েছিল ১২ লাখ ৭৯ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৭৭ হাজার টন। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ লাখ ১৩ হাজার টন শোধন হয়েছিল, যা এতদিন ছিল সর্বোচ্চ।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশের পরিশোধন ক্ষমতা যথেষ্ট না হওয়ায় প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ বিভিন্ন জ্বালানি আমদানি করতে হয়। এতে সরকারকে অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়ন করা হলে বছরে প্রায় ২৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে এবং জ্বালানি খাতে দেশের আত্মনির্ভরতা অনেকটাই বাড়বে। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার। এখানে বিপিসির মাধ্যমে আমদানিকৃত অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কেরোসিন, এলপিজি ও ফার্নেস অয়েলসহ ১৪ ধরনের জ্বালানি উৎপাদন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইআরএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান, বিপিসির সচিব শাহিনা সুলতানা এবং ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হাসনাত।
৫৭ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
দেশের একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল শোধন করেছে ইআরএল, যা প্রতিষ্ঠানটির ৫৭ বছরের ইতিহাসে একটি নতুন রেকর্ড।
মঙ্গলবার,(১লা জুলাই ২০২৫) চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ইআরএলের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে তাদের ইতিহাসের গত অর্থবছরে সর্বোচ্চ পরিমাণ জ্বালানি তেল শোধন করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
ইআরএলের চেয়ারম্যান নাসিমুল গনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পরিমাণ তেল শোধন সম্ভব হয়েছে। ৫৭ বছরের এই পরিশোধনাগারের জন্য এটি একটি বড় অর্জন।
বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান জানান, ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণের উদ্যোগ দ্রুত এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার পর দ্রুত আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হবে। তিনি আরও জানান, মহেশখালীতে ১০ লাখ টন সক্ষমতার নতুন শোধনাগার এবং পায়রাবন্দরে আরেকটি শোধনাগার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে মহেশখালীর জন্য জমিও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বছরে প্রায় ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত তেল শোধন করতে পারে ইআরএল। দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ সম্পন্ন হলে প্রতিষ্ঠানটির মোট শোধন ক্ষমতা বেড়ে ৩০ লাখ টনে উন্নীত হবে। এতে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।
ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হাসনাত বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, এবার আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা অতিক্রম করে ১৫ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধন সম্ভব হয়েছে। এটি আমাদের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে ইআরএলের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। তিনি আরও বলেন, যদিও আমাদের সামনে অনেক বাস্তব চ্যালেঞ্জ ছিল, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে তা জয় করতে পেরেছি। এই ঐতিহাসিক অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।
পর্যালচনায় দেখা যায়, আগের বছরের তুলনায় এবার শোধন কার্যক্রমে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শোধিত হয়েছিল ১২ লাখ ৭৯ হাজার টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪৩ হাজার টন এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ লাখ ৭৭ হাজার টন। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫ লাখ ১৩ হাজার টন শোধন হয়েছিল, যা এতদিন ছিল সর্বোচ্চ।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশের পরিশোধন ক্ষমতা যথেষ্ট না হওয়ায় প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ বিভিন্ন জ্বালানি আমদানি করতে হয়। এতে সরকারকে অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ইআরএলের দ্বিতীয় ইউনিট বাস্তবায়ন করা হলে বছরে প্রায় ২৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে এবং জ্বালানি খাতে দেশের আত্মনির্ভরতা অনেকটাই বাড়বে। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সরকারি জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার। এখানে বিপিসির মাধ্যমে আমদানিকৃত অপরিশোধিত তেল থেকে পেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কেরোসিন, এলপিজি ও ফার্নেস অয়েলসহ ১৪ ধরনের জ্বালানি উৎপাদন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ইআরএলের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান আমিন উল আহসান, বিপিসির সচিব শাহিনা সুলতানা এবং ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. শরীফ হাসনাত।