রাজধানীর মগবাজার আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ মারা যাওয়া সৌদিপ্রবাসী মনির হোসেনের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে কোনো বিরোধ ছিল না বলে দাবি করেছেন স্বজন রফিকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলাম ওই সৌদিপ্রবাসীর ‘চাচাতো চাচা’। তিনি কেরানীগঞ্জে মনির হোসেনের দুটি বাড়ির দেখভাল করেন।
মঙ্গলবার,(১লা জুলাই ২০২৫) তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মাহবুব আলম। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার এসআই মো. জালাল উদ্দিন তাকে আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তখন বিচারক বলেন, ‘এটা একটা চাঞ্চল্যকর ঘটনা। পত্রপত্রিকায় ঘটনাটা আসছে। একটা পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এ ঘটনায় রফিকুল ইসলামও দুঃখিত। মনির হোসেন দেশে এলে ওনার মাধ্যমেই হোটেলে উঠতেন; আর খাবারটা উনিও খেয়েছেন।’ তখন বিচারক বলেন, ‘একজন অসুস্থ হতে পারে, পুরো পরিবার মারা গেল!’ এরপর রফিকুল ইসলামের
বক্তব্য শুনতে চান বিচারক। তখন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ যা বলছে, এর অতিরিক্ত আমি জানি না।’
বিচারক জানতে চান, ঘটনার দিন হোটেল থেকে বেরিয়ে কোথায় ছিলেন? তখন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মনির হোসেন দুইটা বাড়ি কিনছে কেরানীগঞ্জে। একটা ২০১২ সালে; আরেকটা ২০১৪ সালে। ২০১৬ সাল থেকে আমি বাড়ি দেখাশোনা করছি।’ পরিবার কোথায় থাকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গ্রামে থাকে। দুইটা ছোট রুমের বাসা। সেখানে আমার মেয়ে আর তার স্বামী থাকে।’
কোথা থেকে খাবার নেন জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভর্তা-ভাত হোটেল থেকে। মনির বলে খাবার নিতে। এক বক্স ভাত, মুরগির রেজালা, আলু ভর্তা আর শুঁটকি ভর্তা নেয়। মনিরের স্ত্রী শুঁটকি পছন্দ করেন; এজন্য শুঁটকি নিতে বলে। ‘ওরা খাওয়ার পর আমি আর মনির ওই হোটেলে নান, শিক কাবার আর ফালুদা খাই।’
তিনি বলেন, ‘বাড়ির নাম পরিবর্তনের জন্য এক লাখ ৪০ হাজার টাকা লাগবে। আমাকে এক লাখ টাকা দেন। বাকি ৪০ হাজার ভাড়ার টাকা থেকে ম্যানেজ করে নিতে বলে।’
তার আইনজীবী বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা তার হাত দিয়ে লেনদেন হয়। টাকার লোভ তার ছিল না। আর তারা তো রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। রফিকুল ইসলাম অসুস্থ, দুবার স্ট্রোক করেছেন। আর এ ঘটনার পর অস্বস্তিতে ভুগছেন। তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি।’
একপর্যায়ে রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, জায়গা বা সম্পত্তি নিয়ে তাদের ভেতর কোনো দ্বন্দ্বও নেই।
শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন বলে জানান রমনা মডেল থানার প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী। এর আগে এদিন রমনা থানায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
গত রোববার মগবাজারের আবাসিক হোটেল ‘সুইট স্লিপ’ থেকে আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেয়া হলে সৌদিপ্রবাসী মনির হেসেন (৪৮), তার স্ত্রী নাসরিন আকতার স্বপ্না (৩৮) ও তাদের সন্তান আরাফাতকে (১৮) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে।
ঘটনার দুইদিন পর মঙ্গলবার রমনা থানায় এ মামলা করেন ওই প্রবাসীর ভাই নুরুল আমিন। নুরুল আমিন ইতালি থাকেন। মামলায় বলা হয়, কোরবানির ঈদে মনির হোসেন গ্রামে আসেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় মনির তাদের চাচাতো চাচা রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে ঢাকাসহ গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় জমিজমা ও বাড়ি কেনেন। চাচা রফিকুলই সেসব দেখভাল করছিলেন।
এজাহারে বলা হয়, মনির দেশে আসার পর জমিজমা ও টাকা-পয়সার হিসাব নিয়ে রফিকুলের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এর মধ্যে ২৮ জুন মনির ছেলের চিকিৎসার জন্য স্ত্রীসহ ঢাকায় আসেন। তারাসহ ঢাকায় অবস্থান করা চাচা রফিকুল ইসলাম নিউ ইস্কাটন রোডের এসপিআরসি হাসপাতালে যান।
ওইদিন চিকিৎসকের সূচি না পেয়ে মনির স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে মগবাজারের ‘সুইট স্লিপ’ হোটেলে ওঠেন। বিকেলে পাশের ‘ভর্তা ভাত’ হোটেলে গিয়ে খাবার খান মনির ও রফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মনিরের স্ত্রী ও সন্তানের জন্য খাবার নিয়ে হোটেল কক্ষে যান রফিকুল। এরপর রফিকুল তার বাসায় চলে যান।
মামলায় বলা হয়েছে, চাচা রফিকুলের আনা খাবার মনির ও তার পরিবার খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে তারা বমি করতে থাকেন, তাদের আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে নুরুল বলেছেন, ‘আত্মীয়-স্বজনদের কাছে শুনে আমার ধারণা হয় যে, আমার ভাইয়ের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্যে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা পরিকল্পনা করে খাবারে বিষ মিশিয়ে অথবা অন্য উপায়ে তাদের হত্যা করেছে।’
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর মগবাজার আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ মারা যাওয়া সৌদিপ্রবাসী মনির হোসেনের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে কোনো বিরোধ ছিল না বলে দাবি করেছেন স্বজন রফিকুল ইসলাম। রফিকুল ইসলাম ওই সৌদিপ্রবাসীর ‘চাচাতো চাচা’। তিনি কেরানীগঞ্জে মনির হোসেনের দুটি বাড়ির দেখভাল করেন।
মঙ্গলবার,(১লা জুলাই ২০২৫) তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দেন ঢাকার মহানগর হাকিম মাহবুব আলম। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার এসআই মো. জালাল উদ্দিন তাকে আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তখন বিচারক বলেন, ‘এটা একটা চাঞ্চল্যকর ঘটনা। পত্রপত্রিকায় ঘটনাটা আসছে। একটা পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘এ ঘটনায় রফিকুল ইসলামও দুঃখিত। মনির হোসেন দেশে এলে ওনার মাধ্যমেই হোটেলে উঠতেন; আর খাবারটা উনিও খেয়েছেন।’ তখন বিচারক বলেন, ‘একজন অসুস্থ হতে পারে, পুরো পরিবার মারা গেল!’ এরপর রফিকুল ইসলামের
বক্তব্য শুনতে চান বিচারক। তখন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ যা বলছে, এর অতিরিক্ত আমি জানি না।’
বিচারক জানতে চান, ঘটনার দিন হোটেল থেকে বেরিয়ে কোথায় ছিলেন? তখন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মনির হোসেন দুইটা বাড়ি কিনছে কেরানীগঞ্জে। একটা ২০১২ সালে; আরেকটা ২০১৪ সালে। ২০১৬ সাল থেকে আমি বাড়ি দেখাশোনা করছি।’ পরিবার কোথায় থাকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গ্রামে থাকে। দুইটা ছোট রুমের বাসা। সেখানে আমার মেয়ে আর তার স্বামী থাকে।’
কোথা থেকে খাবার নেন জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভর্তা-ভাত হোটেল থেকে। মনির বলে খাবার নিতে। এক বক্স ভাত, মুরগির রেজালা, আলু ভর্তা আর শুঁটকি ভর্তা নেয়। মনিরের স্ত্রী শুঁটকি পছন্দ করেন; এজন্য শুঁটকি নিতে বলে। ‘ওরা খাওয়ার পর আমি আর মনির ওই হোটেলে নান, শিক কাবার আর ফালুদা খাই।’
তিনি বলেন, ‘বাড়ির নাম পরিবর্তনের জন্য এক লাখ ৪০ হাজার টাকা লাগবে। আমাকে এক লাখ টাকা দেন। বাকি ৪০ হাজার ভাড়ার টাকা থেকে ম্যানেজ করে নিতে বলে।’
তার আইনজীবী বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা তার হাত দিয়ে লেনদেন হয়। টাকার লোভ তার ছিল না। আর তারা তো রাতের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। রফিকুল ইসলাম অসুস্থ, দুবার স্ট্রোক করেছেন। আর এ ঘটনার পর অস্বস্তিতে ভুগছেন। তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি।’
একপর্যায়ে রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, জায়গা বা সম্পত্তি নিয়ে তাদের ভেতর কোনো দ্বন্দ্বও নেই।
শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন বলে জানান রমনা মডেল থানার প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই জিন্নাত আলী। এর আগে এদিন রমনা থানায় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
গত রোববার মগবাজারের আবাসিক হোটেল ‘সুইট স্লিপ’ থেকে আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেয়া হলে সৌদিপ্রবাসী মনির হেসেন (৪৮), তার স্ত্রী নাসরিন আকতার স্বপ্না (৩৮) ও তাদের সন্তান আরাফাতকে (১৮) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামে।
ঘটনার দুইদিন পর মঙ্গলবার রমনা থানায় এ মামলা করেন ওই প্রবাসীর ভাই নুরুল আমিন। নুরুল আমিন ইতালি থাকেন। মামলায় বলা হয়, কোরবানির ঈদে মনির হোসেন গ্রামে আসেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় মনির তাদের চাচাতো চাচা রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে ঢাকাসহ গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় জমিজমা ও বাড়ি কেনেন। চাচা রফিকুলই সেসব দেখভাল করছিলেন।
এজাহারে বলা হয়, মনির দেশে আসার পর জমিজমা ও টাকা-পয়সার হিসাব নিয়ে রফিকুলের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। এর মধ্যে ২৮ জুন মনির ছেলের চিকিৎসার জন্য স্ত্রীসহ ঢাকায় আসেন। তারাসহ ঢাকায় অবস্থান করা চাচা রফিকুল ইসলাম নিউ ইস্কাটন রোডের এসপিআরসি হাসপাতালে যান।
ওইদিন চিকিৎসকের সূচি না পেয়ে মনির স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে মগবাজারের ‘সুইট স্লিপ’ হোটেলে ওঠেন। বিকেলে পাশের ‘ভর্তা ভাত’ হোটেলে গিয়ে খাবার খান মনির ও রফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মনিরের স্ত্রী ও সন্তানের জন্য খাবার নিয়ে হোটেল কক্ষে যান রফিকুল। এরপর রফিকুল তার বাসায় চলে যান।
মামলায় বলা হয়েছে, চাচা রফিকুলের আনা খাবার মনির ও তার পরিবার খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে তারা বমি করতে থাকেন, তাদের আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এজাহারে নুরুল বলেছেন, ‘আত্মীয়-স্বজনদের কাছে শুনে আমার ধারণা হয় যে, আমার ভাইয়ের সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্যে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা পরিকল্পনা করে খাবারে বিষ মিশিয়ে অথবা অন্য উপায়ে তাদের হত্যা করেছে।’