শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আদালত অবমাননার এক মামলায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার,(২ জুলাই ২০২৫) এ রায় দেয়। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল: চিফ প্রসিকিউটর
তাজুল ইসলাম
রায়ে সন্তুষ্ট নন শেখ হাসিনার (রাষ্ট্রনিযুক্ত) আইনজীবী আমির হোসেন
এগারো মাস আগে ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগের পর এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনার সাজা হলো। একই মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন) নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে দেয়া হয়েছে দুই মাসের কারাদণ্ড। সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
মামলার নেপথ্যে
ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের কথিত টেলিফোন আলাপের একটি অডিও টেপ ভাইরাল হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার এই মামলা হয়। ওই অডিও টেপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।’ পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে ‘সত্যতা’ পাওয়ার কথা জানায়।
এই প্রেক্ষাপটে গত ৩০ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর।
সেদিন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে ১৫ মের মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা জবাব দাখিল না করায় ২৫ মে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও শেখ হাসিনা নিজে উপস্থিত হননি কিংবা কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেননি। এ অবস্থায় ট্রাইব্যুনাল আইনানুযায়ী শাস্তি দিতে পারে।
আইনানুযায়ী, এ ধরনের মামলায় কোনো পক্ষের জন্য সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগের বিধান না থাকলেও ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে’ শেখ হাসিনার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেয় আদালত।
এ মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য গত ১৯ জুন এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) দায়িত্ব দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে বুধবার শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত রায় দিলো।
চিফ প্রসিকিউটর
রায়ের পর ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে আমরা প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আর্গুমেন্ট করি এবং অ্যামিকাস কিউরিও আর্গুমেন্ট করেন। আমরা আর্গুমেন্টে বলেছি, শেখ হাসিনার যে তর্কিত কনভারসেশন, তা পুলিশের সিআইডিকে দিয়ে ফরেনসিক করিয়েছি। তাতে জানা গেছে এই কনভারসেশন এআই জেনারেটেড নয়, অর্থাৎ এটা শেখ হাসিনা এবং শাকিল আকন্দ বুলবুলের। এই কনভারসেশন প্রথমে দৈনিক কালবেলায় রিপোর্ট হয়; পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ হয়।’
সাজা কার্যকর
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সবার আর্গুমেন্ট শুনে এবং সিআইডির যে ফরেনসিক রিপোর্ট সেটি বিচার-বিশ্লেষণ করে আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, তর্কিত এ কনভারসেশনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী, সাক্ষী এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ যারা এ বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের হত্যা করা এবং তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়াসহ তাদের ‘থ্রেট’ করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এবং ১১ এর ৪ ধারা অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়াকে প্রিজুডিস করার অপরাধ করেছেন। এ অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা এবং
শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দণ্ডিত করেছেন। যেদিন তারা আত্মসমর্পণ করবেন অথবা পুলিশ কর্তৃক ধৃত হবেন সেদিন থেকে সাজা কার্যকর হবে।’
*ট্রাইব্যুনাল গঠন*
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এ পর্যন্ত তিনটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তার মধ্যে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
জুলাই-আগস্টের দমন-পীড়নে ভূমিকার জন্য দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের জন্যও ইতোমধ্যে আইন সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
*পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি*
শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুল পলাতক থাকায় তাদের আত্মসমর্পণ করতে দুটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তারপরও তারা হাজির না হলে তাদের জন্য রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন বুধবার ট্রাইব্যুনালে তার যুক্তি তুলে ধরেন। অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানও তার বক্তব্য তুলে ধরেন। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ট্রাইব্যুনাল রায় দেয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা।
*দ্বিমত*
রায়ের পর রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে দেয়া বক্তব্য নিয়ে আমার দ্বিমত রয়েছে। এ সাজার রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই। সাজার রায় দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও হাজির হয়ে বা আইনজীবীর মাধ্যমে কোনো ব্যাখ্যা দেননি শেখ হাসিনা। আইনানুযায়ী তাকে শাস্তি দিতে পারবে আদালত। অভিযোগ প্রমাণ হলে এক বছরের সাজা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আদালত অবমাননার এক মামলায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার,(২ জুলাই ২০২৫) এ রায় দেয়। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ড দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল: চিফ প্রসিকিউটর
তাজুল ইসলাম
রায়ে সন্তুষ্ট নন শেখ হাসিনার (রাষ্ট্রনিযুক্ত) আইনজীবী আমির হোসেন
এগারো মাস আগে ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগের পর এই প্রথম কোনো মামলায় শেখ হাসিনার সাজা হলো। একই মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন) নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলমকে দেয়া হয়েছে দুই মাসের কারাদণ্ড। সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
মামলার নেপথ্যে
ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের কথিত টেলিফোন আলাপের একটি অডিও টেপ ভাইরাল হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে আদালত অবমাননার এই মামলা হয়। ওই অডিও টেপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।’ পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে ‘সত্যতা’ পাওয়ার কথা জানায়।
এই প্রেক্ষাপটে গত ৩০ এপ্রিল শেখ হাসিনা ও শাকিল আলম বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ দাখিল করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর।
সেদিন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে ১৫ মের মধ্যে অভিযুক্তদের জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা জবাব দাখিল না করায় ২৫ মে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও শেখ হাসিনা নিজে উপস্থিত হননি কিংবা কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেননি। এ অবস্থায় ট্রাইব্যুনাল আইনানুযায়ী শাস্তি দিতে পারে।
আইনানুযায়ী, এ ধরনের মামলায় কোনো পক্ষের জন্য সরকারি খরচে আইনজীবী নিয়োগের বিধান না থাকলেও ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে’ শেখ হাসিনার পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেয় আদালত।
এ মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য গত ১৯ জুন এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) দায়িত্ব দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে বুধবার শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত রায় দিলো।
চিফ প্রসিকিউটর
রায়ের পর ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে আমরা প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আর্গুমেন্ট করি এবং অ্যামিকাস কিউরিও আর্গুমেন্ট করেন। আমরা আর্গুমেন্টে বলেছি, শেখ হাসিনার যে তর্কিত কনভারসেশন, তা পুলিশের সিআইডিকে দিয়ে ফরেনসিক করিয়েছি। তাতে জানা গেছে এই কনভারসেশন এআই জেনারেটেড নয়, অর্থাৎ এটা শেখ হাসিনা এবং শাকিল আকন্দ বুলবুলের। এই কনভারসেশন প্রথমে দৈনিক কালবেলায় রিপোর্ট হয়; পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ হয়।’
সাজা কার্যকর
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সবার আর্গুমেন্ট শুনে এবং সিআইডির যে ফরেনসিক রিপোর্ট সেটি বিচার-বিশ্লেষণ করে আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, তর্কিত এ কনভারসেশনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদী, সাক্ষী এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ যারা এ বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের হত্যা করা এবং তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়াসহ তাদের ‘থ্রেট’ করেছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ এবং ১১ এর ৪ ধারা অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়াকে প্রিজুডিস করার অপরাধ করেছেন। এ অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা এবং
শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দণ্ডিত করেছেন। যেদিন তারা আত্মসমর্পণ করবেন অথবা পুলিশ কর্তৃক ধৃত হবেন সেদিন থেকে সাজা কার্যকর হবে।’
*ট্রাইব্যুনাল গঠন*
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এ পর্যন্ত তিনটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তার মধ্যে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
জুলাই-আগস্টের দমন-পীড়নে ভূমিকার জন্য দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের জন্যও ইতোমধ্যে আইন সংশোধন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
*পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি*
শেখ হাসিনা ও শাকিল আকন্দ বুলবুল পলাতক থাকায় তাদের আত্মসমর্পণ করতে দুটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তারপরও তারা হাজির না হলে তাদের জন্য রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন বুধবার ট্রাইব্যুনালে তার যুক্তি তুলে ধরেন। অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানও তার বক্তব্য তুলে ধরেন। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ট্রাইব্যুনাল রায় দেয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর তানভীর জোহা।
*দ্বিমত*
রায়ের পর রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে দেয়া বক্তব্য নিয়ে আমার দ্বিমত রয়েছে। এ সাজার রায়ে আমি সন্তুষ্ট নই। সাজার রায় দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও হাজির হয়ে বা আইনজীবীর মাধ্যমে কোনো ব্যাখ্যা দেননি শেখ হাসিনা। আইনানুযায়ী তাকে শাস্তি দিতে পারবে আদালত। অভিযোগ প্রমাণ হলে এক বছরের সাজা ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।