আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা দিচ্ছে জাপান সরকার। অবাধ, স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মাধ্যমে এই অর্থ দেয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বাস্তবায়নাধীন ‘ব্যালট প্রকল্পের’ জন্য জাপান এই আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই আর্থিক সহায়তার অংশ হিসেবে জাপান সরকার ও ইউএনডিপির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

বুধবার,(২ জুলাই ২০২৫) রাজধানীর আগারগাঁওয় নির্বাচন ভবনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) উপস্থিততে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ সময় জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যুরোর মহা-পরিচালক ইশিজুকি হিদেও উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন কমিশনের ‘ব্যালট প্রকল্পের’ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮.৫৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে জাতিসংঘের মাধ্যমে ৪.৮

মিলিয়ন ডলার সহায়তা করবে জাপান। এর আগে গত ১৮ জুন অস্ট্রেলিয়া একই প্রকল্পে জাতিসংঘের মাধ্যমে ২ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়।

ইসি সূত্র জানায়, এই চুক্তির আওতায় নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি এবং ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধিতে এই অনুদান ব্যয় করা হবে। পাশাপাশি, ভোটার ও নাগরিক শিক্ষা জোরদার, নারী ও তরুণদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সমাজের অনগ্রসর গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানো হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘জাপানের এই সহযোগিতা আমাদের কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় রেখে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সহায়তা দেবে।’

জাপান সরকারের ৬৯৫ মিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৪৮ লাখ মার্কিন ডলার) অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বলেন, ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথে যাত্রার এক সন্ধিক্ষণে রয়েছে। জাপান বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকারকে সম্মান করে এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে সমর্থন করে। ইউএনডিপির মাধ্যমে জাপানের এই সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘জাপানের উদারতা এবং দীর্ঘদিনের অংশীদারত্বের জন্য আমরা গভীর কৃতজ্ঞ। তাদের এই সহায়তা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সাহায্য করবে। এই নির্বাচনী সহায়তা গণতান্ত্রিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেবে। এটি বাংলাদেশ ও জাপানের বন্ধুত্ব এবং ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে শান্তি ও গণতান্ত্রিক অগ্রগতির প্রতিশ্রুতির অংশ।’

অনুষ্ঠান শেষে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জাপান আজ ৪.৮ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা আশা করি, ইসি এই অর্থ যথাযথভাবে কাজে লাগাবে। ইউএনডিপি এরইমধ্যে সহায়তা দিচ্ছে এবং সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।’