লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই- এবার প্রমাণ দিলেন ৪২ বছর বয়সী আবদুল হান্নান। যত্নে যে রত্ন মিলে কিংবা সাধনায় যে সিদ্ধি হয়- তারই জ্বলন্ত উদাহরণ নাটোরের লালপুর উপজেলার আবদুল হান্নান।
মেয়ে হালিমা খাতুনের সঙ্গে তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
বাবা হান্নান রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার কাকড়ামারী কলেজ থেকে এবং হালিমা খাতুন (১৭) গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
হান্নান গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর মহল্লার বাসিন্দা। তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে। মেয়ে হালিমাই বড়। এরপর ছেলে আবু হানিফ নিরব (১৩) নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। আর ছোট ছেলে রমজান মিয়ার বয়স মাত্র ছয় বছর।
১৯৯৮ সালে তিনি নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন হান্নান। তখনই লেখাপড়া ছাড়েন তিনি। এরপর পৈতৃক সূত্রে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় পাওয়া একটা দোকানে চায়ের ব্যবসা শুরু করেন। পরে বিয়ে করে সংসার জীবনে শুরু করেন। এক পর্যায়ে লেখাপড়ার প্রতি আবারও ঝোঁক তৈরি হয় তার।
দীর্ঘ ২৩ বছর পর, ২০২১ সালে কাউকে না জানিয়ে উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণীতে ভর্তি হন। দুই বছর পর মেয়ে হালিমার সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাস করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে প্রশংসা কুড়ান তিনি।
আবদুল হান্নান বলেন, লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পাসের পর এবার এইচএসসি পরীক্ষাও দিচ্ছি। এখানেই থেমে থাকা নয়। উচ্চ শিক্ষার পথেও হাঁটতে চান আব্দুল হান্নান। মাস্টার্স ডিগ্রিও অর্জন করার ইচ্ছে তার।
মেয়ে হালিমা খাতুন জানান, বাবার মেধা আছে এবং ইচ্ছাশক্তি আছে। লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছার কারণেই তিনি এসএসসি পাস করে আবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরস্পরের মধ্যে লেখাপড়া নিয়ে প্রতিযোগিতাও রয়েছে বলে জানায় হালিমা।
হালিমা আরও বলেন, বাবার জন্য তিনি গর্ববোধ করেন। তার বাবাকে দেখে অন্যরা পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত হবে বলে মনে করেন এই শিক্ষার্থী।
আবদুল হান্নানের কৃতিত্বে খুশি প্রতিবেশীরাও। স্থানীয় মাসুদ রানা বলেন, শিক্ষার জন্য বয়স কোনো বাধা নয়, মনের ইচ্ছাটাই বড়- আবদুল হান্নান তা প্রমাণ করেছেন। সবার জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বাবা ও মেয়ের একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি শুনেছি। উচ্চশিক্ষা অর্জনে উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান মেহেদী হাসান।
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই- এবার প্রমাণ দিলেন ৪২ বছর বয়সী আবদুল হান্নান। যত্নে যে রত্ন মিলে কিংবা সাধনায় যে সিদ্ধি হয়- তারই জ্বলন্ত উদাহরণ নাটোরের লালপুর উপজেলার আবদুল হান্নান।
মেয়ে হালিমা খাতুনের সঙ্গে তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
বাবা হান্নান রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার কাকড়ামারী কলেজ থেকে এবং হালিমা খাতুন (১৭) গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
হান্নান গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর মহল্লার বাসিন্দা। তার এক মেয়ে ও দুই ছেলে। মেয়ে হালিমাই বড়। এরপর ছেলে আবু হানিফ নিরব (১৩) নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। আর ছোট ছেলে রমজান মিয়ার বয়স মাত্র ছয় বছর।
১৯৯৮ সালে তিনি নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন হান্নান। তখনই লেখাপড়া ছাড়েন তিনি। এরপর পৈতৃক সূত্রে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় পাওয়া একটা দোকানে চায়ের ব্যবসা শুরু করেন। পরে বিয়ে করে সংসার জীবনে শুরু করেন। এক পর্যায়ে লেখাপড়ার প্রতি আবারও ঝোঁক তৈরি হয় তার।
দীর্ঘ ২৩ বছর পর, ২০২১ সালে কাউকে না জানিয়ে উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণীতে ভর্তি হন। দুই বছর পর মেয়ে হালিমার সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাস করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাজুড়ে প্রশংসা কুড়ান তিনি।
আবদুল হান্নান বলেন, লেখাপড়ার কোনো বয়স নেই। চেষ্টা করলে সবই সম্ভব। মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পাসের পর এবার এইচএসসি পরীক্ষাও দিচ্ছি। এখানেই থেমে থাকা নয়। উচ্চ শিক্ষার পথেও হাঁটতে চান আব্দুল হান্নান। মাস্টার্স ডিগ্রিও অর্জন করার ইচ্ছে তার।
মেয়ে হালিমা খাতুন জানান, বাবার মেধা আছে এবং ইচ্ছাশক্তি আছে। লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছার কারণেই তিনি এসএসসি পাস করে আবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরস্পরের মধ্যে লেখাপড়া নিয়ে প্রতিযোগিতাও রয়েছে বলে জানায় হালিমা।
হালিমা আরও বলেন, বাবার জন্য তিনি গর্ববোধ করেন। তার বাবাকে দেখে অন্যরা পড়াশোনায় অনুপ্রাণিত হবে বলে মনে করেন এই শিক্ষার্থী।
আবদুল হান্নানের কৃতিত্বে খুশি প্রতিবেশীরাও। স্থানীয় মাসুদ রানা বলেন, শিক্ষার জন্য বয়স কোনো বাধা নয়, মনের ইচ্ছাটাই বড়- আবদুল হান্নান তা প্রমাণ করেছেন। সবার জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বাবা ও মেয়ের একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বিষয়টি শুনেছি। উচ্চশিক্ষা অর্জনে উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান মেহেদী হাসান।