আন্দোলনে অংশ নিয়ে বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর এবং বদলির আতঙ্কে থাকার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মীরা। তারা বলছেন, কাজে মনোযোগ দিতে ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে, আর কিছু হবে না’ এমন একটা নিশ্চয়তা তারা চান। শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ভয়ে তারা কাজে ফিরলেও মনোযোগ দিতে পারছেন না। অন্যদিকে সরকার বলছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান এটা চলমান প্রক্রিয়া। এটার সঙ্গে আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। এই অনুসন্ধান চলমান থাকবে।
শুধু এনবিআর নয়, অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে: ফাওজুল কবির খান
কেউ কেউ বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন, সেটা হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
এই পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতাকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন তারা খুবই হতাশ
এনবিআরের সংকট নিরসনে যে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে একটি কমিটি করা হয়। এই কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধান চলবে জানিয়ে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘অনেকে এনবিআর আন্দোলনের সঙ্গে এই অনুসন্ধানকে রিলেট করে ফেলছেন। এটা ঠিক নয়। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে। আর এনবিআর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানুষের নেতিবাচক ধারণা তো আছেই। এটা শুধু এনবিআর নয়, আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করুক। সরকার কারও প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করবে না। তাদের দায় মুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে।’
একই রকম কথা বলেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। যারা বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন তাদের হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে জানিয়ে সোমবার,(০৭ জুলাই ২০২৫) এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেকে যদি দায়িত্বশীল আচরণ করেন, তাদের যে কাজকর্ম সেগুলো যদি তারা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেন, তাহলে আমি মনে করি না তাদের
ভয়ের কোনো কারণ আছে। কেউ কেউ বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। সেটা হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে। তবে সাধারণভাবে আমার মনে হয় না কারও ভয়ের কোনো কারণ আছে।’
যদি কর্মকর্তাদের ভয়ের কোনো কারণ না-ই থাকবে তাহলে আন্দোলনের মধ্যেই কেন তাদের বিরুদ্ধে দুদক আন্দোলন শুরু করলো এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু বিষয় আছে সেগুলো সরকারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। ওইখানে কি পাঁচজন গিয়েছিল মাত্র, আন্দোলনে কি মাত্র পাঁচজন সম্পৃক্ত ছিলেন? অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তাহলে আমি যেটা আশ্বাস দিয়েছি সেটা তো ঠিকই আছে। যদি তাই হতো.. আমরা যদি ও রকম হতো... তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো। সে রকম কিছুতো হয়নি।’
এর আগে একই কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনিও বলেছেন, ‘দুদকের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ নেই। অতীতেও দেখা গেছে, সরকার দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয় না বরং আগে যারা গভর্নর ছিলেন, তারা অনেক সময় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। এখন সেই ধারা বদলেছে।’
এর আগে মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সেই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশে ‘প্রয়োজনীয় সংশোধনী’ আনা হবে। আর সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান কাঠামোতেই চলবে এনবিআরের সব কাজ। সরকারের এমন ঘোষণাতেও আন্দোলন অব্যাহত থাকলে তিন দিন পর (২৫ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনবিআর বিলুপ্ত হবে না, বরং এ সংস্থাকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। এজন্য ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশে সংশোধন আনার কথাও বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এর মধ্যে সংস্থাটির কর্মীরা নানা অভিযোগে এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নামেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। দাবি আদায়ে ২৮ জুন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন এনবিআর কর্মীরা। তাদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম। পরের দিন ২৯ জুন কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে সংস্থাটির সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
সংকট নিরসনে সেদিন এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরা এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানায় সরকার। এ আহ্বানে সাড়া না দিলে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
পরে সংকট সমাধানে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করার কথা জানায় সরকার। দিনভর নানা নাটকীয়তার পর রাতে ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থ উপদেষ্টা। সেখানেই মেলে সমাধানের সূত্র। ওই বৈঠকে ‘ইতিবাচক আশ্বাসের’ ভিত্তিতে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ শাটডাউন কর্মসূচি তুলে নেয়। কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও আন্দোলনের সামনের সারির নেতাদের ‘দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধানে’ নামে দুদক। তিন দফায় ১৬ জনের তথ্যানুসন্ধান শুরুর তথ্য দেয় সংস্থাটি। এরপর থেকেই এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্কা সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, অনেকে ব্যক্তিগতভাবে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে ক্ষমাও চেয়ে এসেছেন।
এনবিআর কর্মীদের মধ্যে এমন আতঙ্ক তৈরি হওয়ার বিষয়টিকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা যাদের মধ্যস্থতায় মূল ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ‘আমরা যখন মিটিং করছিলাম ওদের (আন্দোলনরত) সঙ্গে, ফাইনাল মিটিং, এটা করার আগে আমরা প্রথমে আরেকটা মিটিং করি। তাদের সঙ্গে বসে আমাদের মোটামুটি আলোচনা হলো। তারপরে গেলাম অর্থ উপদেষ্টার কাছে। ওখানে এনবিআর চেয়ারম্যান সাহেবও ছিলেন। তো বললাম যে ওরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবে, আমাদের কথা দিছে। ওদের একটু ভয়ভীতি কাজ করতেছে। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘জেনুইন’ অন্যায় করলে তাদের আস্তেধীরে আইনের আওতায় আনার পরামর্শ ছিল আমাদের। তো সেটা তারা (সরকার) রাখেনি। সেজন্য আমরা খুবই হতাশ।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, তিনি বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কারণ ইতোমধ্যেই তার কাছের একজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। হয়তো তার বিরুদ্ধেও শুরু হতে পারে।
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
আন্দোলনে অংশ নিয়ে বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর এবং বদলির আতঙ্কে থাকার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মীরা। তারা বলছেন, কাজে মনোযোগ দিতে ‘যা হওয়ার হয়ে গেছে, আর কিছু হবে না’ এমন একটা নিশ্চয়তা তারা চান। শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ভয়ে তারা কাজে ফিরলেও মনোযোগ দিতে পারছেন না। অন্যদিকে সরকার বলছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান এটা চলমান প্রক্রিয়া। এটার সঙ্গে আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। এই অনুসন্ধান চলমান থাকবে।
শুধু এনবিআর নয়, অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে: ফাওজুল কবির খান
কেউ কেউ বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন, সেটা হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
এই পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতাকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন তারা খুবই হতাশ
এনবিআরের সংকট নিরসনে যে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে একটি কমিটি করা হয়। এই কমিটির সভাপতি হিসেবে রয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধান চলবে জানিয়ে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘অনেকে এনবিআর আন্দোলনের সঙ্গে এই অনুসন্ধানকে রিলেট করে ফেলছেন। এটা ঠিক নয়। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান অব্যাহত থাকবে। আর এনবিআর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানুষের নেতিবাচক ধারণা তো আছেই। এটা শুধু এনবিআর নয়, আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করুক। সরকার কারও প্রতি বিন্দুমাত্র অবিচার করবে না। তাদের দায় মুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে।’
একই রকম কথা বলেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। যারা বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন তাদের হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে জানিয়ে সোমবার,(০৭ জুলাই ২০২৫) এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেকে যদি দায়িত্বশীল আচরণ করেন, তাদের যে কাজকর্ম সেগুলো যদি তারা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেন, তাহলে আমি মনে করি না তাদের
ভয়ের কোনো কারণ আছে। কেউ কেউ বড় আকারের সীমা লঙ্ঘন করেছেন। সেটা হয়তো ভিন্নভাবে দেখা হবে। তবে সাধারণভাবে আমার মনে হয় না কারও ভয়ের কোনো কারণ আছে।’
যদি কর্মকর্তাদের ভয়ের কোনো কারণ না-ই থাকবে তাহলে আন্দোলনের মধ্যেই কেন তাদের বিরুদ্ধে দুদক আন্দোলন শুরু করলো এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু বিষয় আছে সেগুলো সরকারের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। ওইখানে কি পাঁচজন গিয়েছিল মাত্র, আন্দোলনে কি মাত্র পাঁচজন সম্পৃক্ত ছিলেন? অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তাহলে আমি যেটা আশ্বাস দিয়েছি সেটা তো ঠিকই আছে। যদি তাই হতো.. আমরা যদি ও রকম হতো... তাহলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো। সে রকম কিছুতো হয়নি।’
এর আগে একই কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনিও বলেছেন, ‘দুদকের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ নেই। অতীতেও দেখা গেছে, সরকার দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয় না বরং আগে যারা গভর্নর ছিলেন, তারা অনেক সময় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। এখন সেই ধারা বদলেছে।’
এর আগে মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সেই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশে ‘প্রয়োজনীয় সংশোধনী’ আনা হবে। আর সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান কাঠামোতেই চলবে এনবিআরের সব কাজ। সরকারের এমন ঘোষণাতেও আন্দোলন অব্যাহত থাকলে তিন দিন পর (২৫ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনবিআর বিলুপ্ত হবে না, বরং এ সংস্থাকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে। এজন্য ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশে সংশোধন আনার কথাও বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এর মধ্যে সংস্থাটির কর্মীরা নানা অভিযোগে এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নামেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। দাবি আদায়ে ২৮ জুন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন এনবিআর কর্মীরা। তাদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম। পরের দিন ২৯ জুন কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে সংস্থাটির সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
সংকট নিরসনে সেদিন এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরা এবং আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানায় সরকার। এ আহ্বানে সাড়া না দিলে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
পরে সংকট সমাধানে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করার কথা জানায় সরকার। দিনভর নানা নাটকীয়তার পর রাতে ব্যবসায়ীদের বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থ উপদেষ্টা। সেখানেই মেলে সমাধানের সূত্র। ওই বৈঠকে ‘ইতিবাচক আশ্বাসের’ ভিত্তিতে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ শাটডাউন কর্মসূচি তুলে নেয়। কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও আন্দোলনের সামনের সারির নেতাদের ‘দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধানে’ নামে দুদক। তিন দফায় ১৬ জনের তথ্যানুসন্ধান শুরুর তথ্য দেয় সংস্থাটি। এরপর থেকেই এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্কা সৃষ্টি হয়। জানা গেছে, অনেকে ব্যক্তিগতভাবে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে ক্ষমাও চেয়ে এসেছেন।
এনবিআর কর্মীদের মধ্যে এমন আতঙ্ক তৈরি হওয়ার বিষয়টিকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ী নেতারা যাদের মধ্যস্থতায় মূল ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ‘আমরা যখন মিটিং করছিলাম ওদের (আন্দোলনরত) সঙ্গে, ফাইনাল মিটিং, এটা করার আগে আমরা প্রথমে আরেকটা মিটিং করি। তাদের সঙ্গে বসে আমাদের মোটামুটি আলোচনা হলো। তারপরে গেলাম অর্থ উপদেষ্টার কাছে। ওখানে এনবিআর চেয়ারম্যান সাহেবও ছিলেন। তো বললাম যে ওরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবে, আমাদের কথা দিছে। ওদের একটু ভয়ভীতি কাজ করতেছে। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘জেনুইন’ অন্যায় করলে তাদের আস্তেধীরে আইনের আওতায় আনার পরামর্শ ছিল আমাদের। তো সেটা তারা (সরকার) রাখেনি। সেজন্য আমরা খুবই হতাশ।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, তিনি বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কারণ ইতোমধ্যেই তার কাছের একজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। হয়তো তার বিরুদ্ধেও শুরু হতে পারে।