জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মালয়েশিয়া প্রবাসীরা রিমান্ড শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, অন্যদের অপকর্মের জন্য তারা ফেঁসে গেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমান বিমানবন্দর থানার মামলায় চার প্রবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। শুনানিতে আদালতে দাঁড়িয়ে আসামিরা এসব কথা বলেন।
রিমান্ডে পাঠানো চারজনের মধ্যে তিনজনকে গত শুক্রবার মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো হয়। তারা হলেন নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও জাহেদ আহমেদ। আর মাহফুজকে সোমবার কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিও কিছুদিন আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এন্টি টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক কে. এম. তারিকুল ইসলাম প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। তিনি শুনানিতে বলেন, আসামিরা মালয়েশিয়ায় ছিলেন, সেখানকার পুলিশ তাদের জঙ্গি সন্দেহে ইমিগ্রেশনে হস্তান্তর করে। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন কি না, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার ও পুলিশের এসআই এসএম বখতিয়ার খালেদও রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি দেন। তারা বলেন, প্রকৃত তথ্য বের করা ও রেমিটেন্সের ক্ষতি যেন না হয়, সে জন্য জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি।
অন্যদিকে আসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চান। শুনানিতে বিচারক বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। আসামিরা জড়িত হোক বা না হোক, তদন্ত করতে হবে, কারণ এতে দুই দেশের সম্পর্ক, সরকারের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয় জড়িত।
আদালত আসামিদের বক্তব্যও শোনেন। জাহেদ আহমেদ বলেন, কোম্পানি থেকে ছয়জনকে চোখ বেঁধে থানায় নেয়া হয়। তার ফোন জব্দ করা হয়, রুম তল্লাশি করা হয়, কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি। দুইজনের কারণে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তিনি আরও বলেন, জঙ্গি হলে তার সাজা হতো, কিন্তু তাকে দুই বছরের জন্য ব্ল্যাকলিস্ট করা হয়েছে।
মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম বলেন, তিনি মাত্র চার মাস ওই কোম্পানিতে কাজ করেছেন। অন্যদের কারণে তিনি ফেঁসে গেছেন। মালয়েশিয়ায় রেইডের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। তিনি নিজ খরচে দেশে ফিরেছেন।
মাহফুজ জানান, গত ১৭ জুন কুয়ালালামপুরে গিয়ে কোম্পানির হয়ে তিন দিন কাজ করেন।
শুনানি শেষে বিচারক বলেন, প্রমাণের ভিত্তিতে মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করতে হবে। বিষয়টি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। রিমান্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি ভয়ের কিছু নয়, হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে জিজ্ঞাসাবাদ হবে।
গত ৩ জুলাই সোহাগ, রেদোয়ানুল ও জাহেদকে মালয়েশিয়ার পুলিশ দেশে ফেরত পাঠায়। পরদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এলে এন্টি টেররিজম ইউনিট তাদের হেফাজতে নেয়। ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে বিমানবন্দর থানায় মামলা হওয়ার পর এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলায় মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে দীর্ঘদিন ধরে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিলেন। তারা সেদেশের জননিরাপত্তা বিপন্ন করা ও বাংলাদেশি নাগরিকদের প্ররোচিত করার কাজ করছিলেন। সংগঠনের সদস্য হিসেবে তহবিল সংগ্রহ, অর্থ প্রেরণ ও বছরে ৫০০ রিঙ্গিত চাঁদা দিতেন।
এছাড়া গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, তারা দেশে ফিরে উগ্রবাদী কার্যক্রম চালানোর মাধ্যমে দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার আশঙ্কা রয়েছে।
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মালয়েশিয়া প্রবাসীরা রিমান্ড শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, অন্যদের অপকর্মের জন্য তারা ফেঁসে গেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমান বিমানবন্দর থানার মামলায় চার প্রবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। শুনানিতে আদালতে দাঁড়িয়ে আসামিরা এসব কথা বলেন।
রিমান্ডে পাঠানো চারজনের মধ্যে তিনজনকে গত শুক্রবার মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো হয়। তারা হলেন নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও জাহেদ আহমেদ। আর মাহফুজকে সোমবার কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিও কিছুদিন আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এন্টি টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক কে. এম. তারিকুল ইসলাম প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। তিনি শুনানিতে বলেন, আসামিরা মালয়েশিয়ায় ছিলেন, সেখানকার পুলিশ তাদের জঙ্গি সন্দেহে ইমিগ্রেশনে হস্তান্তর করে। তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন কি না, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার ও পুলিশের এসআই এসএম বখতিয়ার খালেদও রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি দেন। তারা বলেন, প্রকৃত তথ্য বের করা ও রেমিটেন্সের ক্ষতি যেন না হয়, সে জন্য জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি।
অন্যদিকে আসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চান। শুনানিতে বিচারক বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। আসামিরা জড়িত হোক বা না হোক, তদন্ত করতে হবে, কারণ এতে দুই দেশের সম্পর্ক, সরকারের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয় জড়িত।
আদালত আসামিদের বক্তব্যও শোনেন। জাহেদ আহমেদ বলেন, কোম্পানি থেকে ছয়জনকে চোখ বেঁধে থানায় নেয়া হয়। তার ফোন জব্দ করা হয়, রুম তল্লাশি করা হয়, কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি। দুইজনের কারণে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তিনি আরও বলেন, জঙ্গি হলে তার সাজা হতো, কিন্তু তাকে দুই বছরের জন্য ব্ল্যাকলিস্ট করা হয়েছে।
মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম বলেন, তিনি মাত্র চার মাস ওই কোম্পানিতে কাজ করেছেন। অন্যদের কারণে তিনি ফেঁসে গেছেন। মালয়েশিয়ায় রেইডের সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। তিনি নিজ খরচে দেশে ফিরেছেন।
মাহফুজ জানান, গত ১৭ জুন কুয়ালালামপুরে গিয়ে কোম্পানির হয়ে তিন দিন কাজ করেন।
শুনানি শেষে বিচারক বলেন, প্রমাণের ভিত্তিতে মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করতে হবে। বিষয়টি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। রিমান্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি ভয়ের কিছু নয়, হাইকোর্টের নির্দেশনা মেনে জিজ্ঞাসাবাদ হবে।
গত ৩ জুলাই সোহাগ, রেদোয়ানুল ও জাহেদকে মালয়েশিয়ার পুলিশ দেশে ফেরত পাঠায়। পরদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এলে এন্টি টেররিজম ইউনিট তাদের হেফাজতে নেয়। ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে বিমানবন্দর থানায় মামলা হওয়ার পর এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলায় মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে দীর্ঘদিন ধরে কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিলেন। তারা সেদেশের জননিরাপত্তা বিপন্ন করা ও বাংলাদেশি নাগরিকদের প্ররোচিত করার কাজ করছিলেন। সংগঠনের সদস্য হিসেবে তহবিল সংগ্রহ, অর্থ প্রেরণ ও বছরে ৫০০ রিঙ্গিত চাঁদা দিতেন।
এছাড়া গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, তারা দেশে ফিরে উগ্রবাদী কার্যক্রম চালানোর মাধ্যমে দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার আশঙ্কা রয়েছে।