টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বুধবারের জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগ -সংবাদ
রাজধানী ঢাকায় বুধবার,(০৯ জুলাই ২০২৫) দিনভর বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতাসহ যানবাহন চলাচলেও চরম অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল। নগরবাসী যারা জরুরি কাজে বাইরে বের হতে বাধ্য হয়েছেন তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে গতকাল মঙ্গলবার রাতভর বৃষ্টির পর বুধবার সকাল থেকেও থেমে থেমে সারাদিন বৃষ্টি ঝরেছে, কখনও হালকা, কখনও ভারী বৃষ্টি কাবু করে ফেলেছিল সাধারণ মানুষকে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি ধরনের ভারী, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে অতিভারী বৃষ্টিপাত বলে আবহাওয়া অফিস।
নানা কাজে যাদের বাড়ির বাইরে বেরুতেই হয় তারা চরম বেকায়দায় পড়েন বৃষ্টির বিড়ম্বনায়। অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ রাস্তায় বের হওয়া মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েন। অনেক জায়গায় সময়মতো যানবাহন পাওয়া যায়নি। যানবাহন পেলেও বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও যাত্রী সংকটে পড়েছে পরিবহনগুলো। তবে আগের রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি দেখে অনেকেই বুধবার বাড়ির বাইরে বের হননি। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের হতে হয়েছে দায়িত্ব পালনের তাগিদেই। কিন্তু পথে বেরিয়েই যানবাহন সংকটে পড়ে দুর্ভোগ সইতে হয়েছে।
দীর্ঘ সময় বৃষ্টি ঝরার কারণে রাজধানীর অনেক সড়কেই পানি জমে গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর মধ্য দিয়ে রিকশা ও ত্রিচক্রযানে চড়ে অনেককেই চরম অসুবিধায় এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে হয়েছে। প্রধান সড়ক ছাড়াও অনেক অলিগলিতেও পানি জমার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা পড়েন বিপাকে। ফুটপাথে দোকান বসতে পারেনি, পাড়ার দোকানও অনেক স্থানে বৃষ্টি কারণে খোলেননি দোকানিরা। ফলে কেনাকাটায়ও কিছুটা অসুবিধায় পড়ে অনেকে।
শহর ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী, মিরপুরের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, ভাটারা, নতুন বাজার, নিউমার্কেট, খিলগাঁও, নিকেতনসহ কিছু এলাকার সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এসব জায়গায় জলাবদ্ধতা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না।
ঢাকার খিলগাঁও থেকে মতিঝিলে গিয়ে অফিস করেন আবদুল মতিন নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। সকালে বৃষ্টি থাকায় বাসা থেকে বেরিয়ে যানবাহন সংকটে পড়েন তিনি। বাস চলাচল ছিল অনেক কম, রিকশাও ছিল কম। ফলে অফিস যেতে দেরি হয়ে যায় তার। তিনি বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আসতে কিছুটা ভিজেছি। এরপর বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই অর্ধেক ভিজে গেছি। এমন বৃষ্টি, ছাতা মানছিল না। গাড়িতে উঠাও কষ্টকর ছিল। পানি ছিটায় প্যান্টও ভিজে গেছে। পরে অনেক বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশায় চড়ে মতিঝিলে আসতে হয়েছে।
এমন আরও কয়েকজন অফিসযাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবাইকেই কম-বেশি এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বুধবার বাসা থেকে অফিসে যেতে হয়েছে।
জলাবদ্ধতা ঠেকাতে দক্ষিণ সিটিতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা দূর করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম গঠন ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
ডিএসসিসি জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারেণ রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বৃষ্টিপাত আগামী কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় ডিএসসিসি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন। তৈরি করা হয়েছে ওয়ার্ডভিত্তিক ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম।
ডিএসসিসির কোনো এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিলে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ নম্বরে জানানোর অনুরোধ করেছে ডিএসসিসি।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রাসেল রহমান বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আজ এখন পর্যন্ত তেমন ভারী বৃষ্টি হয়নি। রাতে কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টি হয়েছিল আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সেসব জায়গায় কাজ করেছেন। আর ভারী বৃষ্টি হতে পারে এজন্য সতর্কতা হিসেবে ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম করা হয়েছে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জোবায়ের হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘রাতে বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় সামান্য পানি জমেছিল। আমাদের কর্মীরা তা সরিয়ে দিয়েছে। কোনো এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় আছে। পানি জমলে তা সরাতে ব্যবস্থা নেবে।’
টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় বুধবারের জলাবদ্ধতা ও দুর্ভোগ -সংবাদ
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকায় বুধবার,(০৯ জুলাই ২০২৫) দিনভর বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতাসহ যানবাহন চলাচলেও চরম অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল। নগরবাসী যারা জরুরি কাজে বাইরে বের হতে বাধ্য হয়েছেন তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে গতকাল মঙ্গলবার রাতভর বৃষ্টির পর বুধবার সকাল থেকেও থেমে থেমে সারাদিন বৃষ্টি ঝরেছে, কখনও হালকা, কখনও ভারী বৃষ্টি কাবু করে ফেলেছিল সাধারণ মানুষকে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি ধরনের ভারী, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে অতিভারী বৃষ্টিপাত বলে আবহাওয়া অফিস।
নানা কাজে যাদের বাড়ির বাইরে বেরুতেই হয় তারা চরম বেকায়দায় পড়েন বৃষ্টির বিড়ম্বনায়। অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ রাস্তায় বের হওয়া মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েন। অনেক জায়গায় সময়মতো যানবাহন পাওয়া যায়নি। যানবাহন পেলেও বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও যাত্রী সংকটে পড়েছে পরিবহনগুলো। তবে আগের রাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টি দেখে অনেকেই বুধবার বাড়ির বাইরে বের হননি। তবে সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের হতে হয়েছে দায়িত্ব পালনের তাগিদেই। কিন্তু পথে বেরিয়েই যানবাহন সংকটে পড়ে দুর্ভোগ সইতে হয়েছে।
দীর্ঘ সময় বৃষ্টি ঝরার কারণে রাজধানীর অনেক সড়কেই পানি জমে গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এর মধ্য দিয়ে রিকশা ও ত্রিচক্রযানে চড়ে অনেককেই চরম অসুবিধায় এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে হয়েছে। প্রধান সড়ক ছাড়াও অনেক অলিগলিতেও পানি জমার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা পড়েন বিপাকে। ফুটপাথে দোকান বসতে পারেনি, পাড়ার দোকানও অনেক স্থানে বৃষ্টি কারণে খোলেননি দোকানিরা। ফলে কেনাকাটায়ও কিছুটা অসুবিধায় পড়ে অনেকে।
শহর ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী, মিরপুরের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, ভাটারা, নতুন বাজার, নিউমার্কেট, খিলগাঁও, নিকেতনসহ কিছু এলাকার সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এসব জায়গায় জলাবদ্ধতা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না।
ঢাকার খিলগাঁও থেকে মতিঝিলে গিয়ে অফিস করেন আবদুল মতিন নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা। সকালে বৃষ্টি থাকায় বাসা থেকে বেরিয়ে যানবাহন সংকটে পড়েন তিনি। বাস চলাচল ছিল অনেক কম, রিকশাও ছিল কম। ফলে অফিস যেতে দেরি হয়ে যায় তার। তিনি বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আসতে কিছুটা ভিজেছি। এরপর বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতেই অর্ধেক ভিজে গেছি। এমন বৃষ্টি, ছাতা মানছিল না। গাড়িতে উঠাও কষ্টকর ছিল। পানি ছিটায় প্যান্টও ভিজে গেছে। পরে অনেক বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশায় চড়ে মতিঝিলে আসতে হয়েছে।
এমন আরও কয়েকজন অফিসযাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবাইকেই কম-বেশি এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে বুধবার বাসা থেকে অফিসে যেতে হয়েছে।
জলাবদ্ধতা ঠেকাতে দক্ষিণ সিটিতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর বিভিন্ন স্থানে সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা দূর করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম গঠন ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
ডিএসসিসি জানিয়েছে, সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারেণ রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বৃষ্টিপাত আগামী কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় ডিএসসিসি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন। তৈরি করা হয়েছে ওয়ার্ডভিত্তিক ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম।
ডিএসসিসির কোনো এলাকায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিলে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৭০৯৯০০৮৮৮ নম্বরে জানানোর অনুরোধ করেছে ডিএসসিসি।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রাসেল রহমান বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আজ এখন পর্যন্ত তেমন ভারী বৃষ্টি হয়নি। রাতে কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টি হয়েছিল আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা সেসব জায়গায় কাজ করেছেন। আর ভারী বৃষ্টি হতে পারে এজন্য সতর্কতা হিসেবে ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম করা হয়েছে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জোবায়ের হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘রাতে বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় সামান্য পানি জমেছিল। আমাদের কর্মীরা তা সরিয়ে দিয়েছে। কোনো এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় আছে। পানি জমলে তা সরাতে ব্যবস্থা নেবে।’