চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সরকার প্রধানের এই নির্দেশকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলটির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান উপদেষ্টার এমন পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তাকে (প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসক) ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করব, নির্বাচন কমিশন এই কাজটা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে নির্বাচনের একটা পরিবেশ তৈরি করবেন। আমরা দাবি করছি যে, এই নির্বাচন যেন সবার কাছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়। সব প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন কমিশন দ্রুত ভোটের আয়োজন করবে বলে আশাবাদী বিএনপি।’ জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপির চূড়ান্ত মতামত সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার,(১০ জুলাই ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিকের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদ সাংবাদিক পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। সেই নির্বাচিত সরকারই একমাত্র দেশ চালাবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একদলীয় থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংযুক্ত করেছেন। কিন্তু এখন কেউ কেউ বলছে বিএনপি সংস্কারে বাধা দিচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপি একমত। কিন্তু কিছু মৌলিক বিষয়ে আমরা একমত নই। তবে পরবর্তী সংসদ সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে মত দিয়েছি।’
মার্কিন শুল্ক নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ-জাতি বড় সমস্যায় আছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদ- ভেঙ্গে যাবে।’ এ বিষয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আরও মনোযোগ দিয়ে কাজ করা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কতটুকু এ বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছেন জানি না। যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজন ছিল। তবে সময় বোধহয় এখন চলে যায়নি। এখনও সময় আছে এ বিষয়গুলো বিবেচনা করার। আমাদের শিল্প যেন বেঁচে থাকে, কর্মসংস্থান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, এই বিষয়টা সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুলের মতে, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংস্কার গভীরভাবে জড়িত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্কার তো আমাদের মজ্জায়, সংস্কার আমাদের রক্তে, আমাদের জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তাই আজকে যদি বলা হয়, বিএনপি সংস্কার আটকে দিচ্ছে, এটা আমি মনে করব যে অত্যন্ত অন্যায়ভাবে এটা বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আমরা সংস্কার চাই না, সংস্কার রুখে দিচ্ছি। তাহলে এর চেয়ে বড় সত্যের অপরাধ তো আর কিছু হতে পারে না। ঐকমত্য কমিশনের প্রতিটি মিটিংয়ে আমাদের প্রতিনিধি দল গেছে, আমরা প্রত্যেকটি বিষয়ে আমাদের মতামত সংস্কার কমিটিগুলোর সামনে তুলে ধরেছি।’
সীমান্ত হত্যা ও পুশইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো হালকা ব্যাপার নয়। প্রতিদিন সীমান্তে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। সুতরাং এই বিষয়টাকে আরও গুরুত্ব সহকারে জনমত সৃষ্টি করার ব্যাপারে গণমাধ্যমে নিয়ে আসার দরকার।’ তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সরকার যেন এ বিষয়টাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সঙ্গে দরকষাকষির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যায়। পানির হিস্যা ও বণ্টনের বিষয়গুলোতেও সরকারকে জোরালো অবস্থান নিতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম প্রমুখ।
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সরকার প্রধানের এই নির্দেশকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলটির মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান উপদেষ্টার এমন পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তাকে (প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসক) ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করব, নির্বাচন কমিশন এই কাজটা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে নির্বাচনের একটা পরিবেশ তৈরি করবেন। আমরা দাবি করছি যে, এই নির্বাচন যেন সবার কাছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়। সব প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন কমিশন দ্রুত ভোটের আয়োজন করবে বলে আশাবাদী বিএনপি।’ জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বিএনপির চূড়ান্ত মতামত সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার,(১০ জুলাই ২০২৫) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিকের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদ সাংবাদিক পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। সেই নির্বাচিত সরকারই একমাত্র দেশ চালাবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একদলীয় থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান সংযুক্ত করেছেন। কিন্তু এখন কেউ কেউ বলছে বিএনপি সংস্কারে বাধা দিচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপি একমত। কিন্তু কিছু মৌলিক বিষয়ে আমরা একমত নই। তবে পরবর্তী সংসদ সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে মত দিয়েছি।’
মার্কিন শুল্ক নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ-জাতি বড় সমস্যায় আছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদ- ভেঙ্গে যাবে।’ এ বিষয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আরও মনোযোগ দিয়ে কাজ করা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার কতটুকু এ বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছেন জানি না। যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজন ছিল। তবে সময় বোধহয় এখন চলে যায়নি। এখনও সময় আছে এ বিষয়গুলো বিবেচনা করার। আমাদের শিল্প যেন বেঁচে থাকে, কর্মসংস্থান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, এই বিষয়টা সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুলের মতে, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংস্কার গভীরভাবে জড়িত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্কার তো আমাদের মজ্জায়, সংস্কার আমাদের রক্তে, আমাদের জন্মই সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তাই আজকে যদি বলা হয়, বিএনপি সংস্কার আটকে দিচ্ছে, এটা আমি মনে করব যে অত্যন্ত অন্যায়ভাবে এটা বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আমরা সংস্কার চাই না, সংস্কার রুখে দিচ্ছি। তাহলে এর চেয়ে বড় সত্যের অপরাধ তো আর কিছু হতে পারে না। ঐকমত্য কমিশনের প্রতিটি মিটিংয়ে আমাদের প্রতিনিধি দল গেছে, আমরা প্রত্যেকটি বিষয়ে আমাদের মতামত সংস্কার কমিটিগুলোর সামনে তুলে ধরেছি।’
সীমান্ত হত্যা ও পুশইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো হালকা ব্যাপার নয়। প্রতিদিন সীমান্তে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। সুতরাং এই বিষয়টাকে আরও গুরুত্ব সহকারে জনমত সৃষ্টি করার ব্যাপারে গণমাধ্যমে নিয়ে আসার দরকার।’ তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সরকার যেন এ বিষয়টাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সঙ্গে দরকষাকষির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যায়। পানির হিস্যা ও বণ্টনের বিষয়গুলোতেও সরকারকে জোরালো অবস্থান নিতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম প্রমুখ।