জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছি। যে প্রেক্ষাপটে জুলাই অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেই শহীদ পরিবার ও যোদ্ধাদের অধিকার ও নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ। ইনশাআল্লাহ, আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ আদায় করব।’
তিনি বলেন, ‘আজ জুলাই অভ্যুত্থানকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। অথচ আজ ঝিনাইদহবাসীর কাছ থেকে অভূতপূর্ব ভালোবাসা পেয়েছি।‘
তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিয়ে দ্রুত জুলাই সনদ তৈরির দাবি জানান। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ পৌর শহরের পায়রা চত্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটির আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা ও পথসভা’য় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে বিএসএফ এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গিয়ে চোখ উপড়ে হত্যা করে লাশ ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০০০ সাল থেকে গত ২৫ বছরে বিএসএফ সীমান্তে প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা করেছে। বিএসএফ এখন আর সীমান্তরক্ষী নয় বরং একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। খুন করা যেন তাদের নেশা। আমরা এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন মেনে নেব না। ভারত সরকারকে স্পষ্টভাবে বলছি, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করুন।‘
তিনি আরও বলেন, ‘ঝিনাইদহের সন্তান তারেক রেজা ঢাকায় প্রথম ছয় শহীদের জানাজা পড়িয়েছেন। আমরা তাকে আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ উন্নয়নে কাজ করবেন। আপনারা এনসিপির সঙ্গে থাকুন। এনসিপি জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করবে এবং সবসময় জনগণের পাশে থাকবে।’ মাত্র দেড় মিনিটের বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
এর আগে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘২৪ তারিখে আমরা একজন খুনি শাসকের হাত থেকে মুক্ত হয়েছি, কিন্তু শাসনব্যবস্থা থেকে নয়। দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ধর্মের নামে হানাহানি থাকবে না।’
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে একটি দল আমাদের সংস্কার প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তারা বিচার চায় না, কেবল নির্বাচন চায়। আমরা বলছি, সংস্কার ও বিচার আগে, তারপর নির্বাচন। যারা বলে, নির্বাচিত হয়ে সংস্কার করবো এই ধোঁকাবাজি আর নয়। ছাত্ররা আবার রাজপথে নামবে। পুলিশ ভাইয়েরা, জুলাই হত্যার দায় আপনাদেরও নিতে হবে। সব পুলিশ খারাপ নয়, আপনার ভাই, আমার ভাই পুলিশে চাকরি করে। যারা ছাত্র-জনতার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তাদেরও এই দায় নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সাংবাদিক এখানে উপস্থিত আছেন, যারা ঠিকমতো বেতন পান না। তাদের হাতে বুম ধরিয়ে মাঠে নামানো হয়। আমরা আপনাদের মুক্তির কথা বলছি। আপনাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে এনসিপি কাজ করবে।’
‘ঝিনাইদহবাসী, আমরা আপনাদের সন্তান তারেক রেজাকে আপনাদের কাছে দিয়ে যাচ্ছি। তার হাতকে শক্তিশালী করুন। প্রিয় তরুণ সমাজ, আমরা দুর্নীতি চাই না, চাই একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।’
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াই, তখন আমরা আবার জুলাই আন্দোলনের চেতনায় ফিরে যাই।’ তার স্লোগানে সভাস্থল ও আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে যে হত্যাকা- ঘটেছে, তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ সভায় শহীদ রাকিব হোসেনের মা ও বাবা বক্তব্য দেন।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করেছি, কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও বিচার ও কাক্সিক্ষত সংস্কার হয়নি। জুলাই সনদও প্রণয়ন হয়নি। আমরা বিচার চাই, সংস্কার চাই, জুলাই সনদ চাই। আমরা কারও কাছে মাথানত করি না, আমাদের শক্তি সততা। জনতার ভালোবাসা আমাদের সাহস দিয়েছে, আজ ঝিনাইদহের মানুষের উচ্ছ্বাসই তার প্রমাণ।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের কথা বলছি। যে প্রেক্ষাপটে জুলাই অভ্যুত্থান ঘটেছে, সেই শহীদ পরিবার ও যোদ্ধাদের অধিকার ও নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ। ইনশাআল্লাহ, আমরা ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ আদায় করব।’
তিনি বলেন, ‘আজ জুলাই অভ্যুত্থানকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। অথচ আজ ঝিনাইদহবাসীর কাছ থেকে অভূতপূর্ব ভালোবাসা পেয়েছি।‘
তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও সমবেদনা জানিয়ে দ্রুত জুলাই সনদ তৈরির দাবি জানান। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ পৌর শহরের পায়রা চত্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটির আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা ও পথসভা’য় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে বিএসএফ এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গিয়ে চোখ উপড়ে হত্যা করে লাশ ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০০০ সাল থেকে গত ২৫ বছরে বিএসএফ সীমান্তে প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা করেছে। বিএসএফ এখন আর সীমান্তরক্ষী নয় বরং একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। খুন করা যেন তাদের নেশা। আমরা এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন মেনে নেব না। ভারত সরকারকে স্পষ্টভাবে বলছি, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করুন।‘
তিনি আরও বলেন, ‘ঝিনাইদহের সন্তান তারেক রেজা ঢাকায় প্রথম ছয় শহীদের জানাজা পড়িয়েছেন। আমরা তাকে আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ উন্নয়নে কাজ করবেন। আপনারা এনসিপির সঙ্গে থাকুন। এনসিপি জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করবে এবং সবসময় জনগণের পাশে থাকবে।’ মাত্র দেড় মিনিটের বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
এর আগে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘২৪ তারিখে আমরা একজন খুনি শাসকের হাত থেকে মুক্ত হয়েছি, কিন্তু শাসনব্যবস্থা থেকে নয়। দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ধর্মের নামে হানাহানি থাকবে না।’
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে একটি দল আমাদের সংস্কার প্রশ্নে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তারা বিচার চায় না, কেবল নির্বাচন চায়। আমরা বলছি, সংস্কার ও বিচার আগে, তারপর নির্বাচন। যারা বলে, নির্বাচিত হয়ে সংস্কার করবো এই ধোঁকাবাজি আর নয়। ছাত্ররা আবার রাজপথে নামবে। পুলিশ ভাইয়েরা, জুলাই হত্যার দায় আপনাদেরও নিতে হবে। সব পুলিশ খারাপ নয়, আপনার ভাই, আমার ভাই পুলিশে চাকরি করে। যারা ছাত্র-জনতার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তাদেরও এই দায় নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সাংবাদিক এখানে উপস্থিত আছেন, যারা ঠিকমতো বেতন পান না। তাদের হাতে বুম ধরিয়ে মাঠে নামানো হয়। আমরা আপনাদের মুক্তির কথা বলছি। আপনাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে এনসিপি কাজ করবে।’
‘ঝিনাইদহবাসী, আমরা আপনাদের সন্তান তারেক রেজাকে আপনাদের কাছে দিয়ে যাচ্ছি। তার হাতকে শক্তিশালী করুন। প্রিয় তরুণ সমাজ, আমরা দুর্নীতি চাই না, চাই একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।’
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াই, তখন আমরা আবার জুলাই আন্দোলনের চেতনায় ফিরে যাই।’ তার স্লোগানে সভাস্থল ও আশপাশের এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার নির্দেশে যে হত্যাকা- ঘটেছে, তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’ সভায় শহীদ রাকিব হোসেনের মা ও বাবা বক্তব্য দেন।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত করেছি, কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও বিচার ও কাক্সিক্ষত সংস্কার হয়নি। জুলাই সনদও প্রণয়ন হয়নি। আমরা বিচার চাই, সংস্কার চাই, জুলাই সনদ চাই। আমরা কারও কাছে মাথানত করি না, আমাদের শক্তি সততা। জনতার ভালোবাসা আমাদের সাহস দিয়েছে, আজ ঝিনাইদহের মানুষের উচ্ছ্বাসই তার প্রমাণ।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।