alt

জাতীয়

তিস্তার ভাঙন: হুমকির মুখে শতাধিক বসতবাড়ি ও স্থাপনা

প্রতিনিধি, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে তীব্র ভাঙন -সংবাদ

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। জিও ব্যাগ, জিও টিউব ও ব্লক ফেলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

অব্যাহত ভাঙনে গত সাত দিনের ব্যবধানে ৭৫টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি ভাঙনের মুখে।

উপজেলার কাপাসিয়া, হরিপুর, শ্রীপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীপারের পরিবারগুলো ইতোমধ্যে তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।

তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর থেকে অন্য চরে যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামে ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নদীভাঙন, যা বছরজুড়েই চলতে থাকে।

নদীপাড়ের মানুষের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর এত দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার। ফলে প্রতিবছর শত শত বসতবাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।

সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ব্লক, জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেললেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটিকাপাসিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, “হঠাৎ তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করায় নদীভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আমার বসতবাড়িসহ এক বিঘা জমির তোষাপাট নদীগর্ভে চলে গেছে। ‘ভোরের পাখি’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতাধিক বিঘা ফসলি জমি ভাঙনের মুখে।”

তিনি আরও বলেন, “নদীতে পানি বাড়লে এবং বন্যা আসলে চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। অথচ দেখার কেউ নেই। সামান্য ত্রাণ দিয়ে দায় শেষ করে সবাই।”

হরিপুর লখিয়ারপাড়া গ্রামের ইব্রাহীম মিয়া বলেন, “প্রতি বছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে হারাতে হয়। একজন চরবাসীকে বছরে অন্তত চারবার ঘর সরাতে হয়। অথচ আজও স্থায়ীভাবে নদীভাঙন রোধের কোনো ব্যবস্থা হয়নি।”

কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া বলেন, “গত সাত দিনে উত্তর লালচামার গ্রামে তীব্র ভাঙনে ৭৫টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্কুল, মসজিদসহ শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে।”

হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “নদী খনন ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে বহুবার আবেদন জানানো হয়েছে, কিন্তু এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ও টিউব ফেলা হয়েছে মাত্র। স্থায়ী সমাধান না হলে চরবাসীর দুঃখ দূর হবে না।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এখনও সরকারি কোনো বরাদ্দ আসেনি, তবে বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা পৌঁছে দেওয়া হবে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে।” গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, “ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও টিউব ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিষয়।”

ডেমরায় বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবক নিহত

শেরপুর সীমান্ত দিয়ে নারী-শিশুসহ ১০ জনকে পুশইন

চাঁদপুরে খতিবকে হত্যার চেষ্টা, হামলাকারী আটক

ছবি

শার্শায় বাগআঁচড়া-কায়বা সড়কের বেহাল দশা : চরম দুর্ভোগে মানুষ

ছবি

ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ১৩৮ রোগী, বেশিরভাগই বরিশালের

সূত্রাপুরে ‘গ্যাসের’ আগুনে একই পরিবারে দগ্ধ ৫

১৮ মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে দেড় লাখ রোহিঙ্গা: ইউএনএইচসিআর

ছবি

ভারী বৃষ্টিপাতে টেকনাফে ৫০ হেক্টর আমন বীজতলা নষ্ট

‘ঋণ জালিয়াতি’র অভিযোগে আবুল বারকাত কারাগারে

শুল্ক নিয়ে আলোচনা: দ্বিতীয় দিনে কিছু বিষয়ে ঐকমত্য

আগামীর আন্দোলন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে: নাহিদ

খুলনায় গুলি করে ও রগ কেটে সেই সাবেক যুবদল নেতাকে হত্যা

১৮ জন বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার

হঠাৎই চারগুণ হলো কাঁচামরিচের ঝাঁজ

পুরান ঢাকায় হত্যার পর লাশ ঘিরে প্রকাশ্যে উল্লাস

ছবি

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্বেগ

ছবি

এবারের হজ শেষে দেশে ফিরলেন ৮২ হাজারের বেশি হাজি, মৃত্যু ৪৪ জনের

ছবি

চলতি বছর ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি ১৪ হাজার ছাড়াল, মৃত্যুর শীর্ষ জুনে

ছবি

শুল্ক আলোচনা: দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কিছু বিষয় একমত

পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা ফেরত চায় নির্বাচন কমিশন

ছবি

বৃষ্টিপাত কমার আভাস, সরানো হলো সতর্ক সংকেত

ছবি

১৮ বিচারককে অবসরে পাঠাল সরকার

প্রধান উপদেষ্টার উপহারের আম গেলো ত্রিপুরা

৯৮৪টি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ উত্তীর্ণ, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনে খসড়া অনুমোদন

৪৮তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা স্থগিতের তথ্য ভিত্তিহীন: পিএসসি

নির্মাণাধীন ভবনে সাবেক সচিব, বিচারক ও কর্মকর্তার ফ্ল্যাট, অনুসন্ধানে দুদক

দেশে আবার ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা যাতে তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সবাই একমত: আলী রীয়াজ

সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিল

এস আলম ও পরিবারের সিঙ্গাপুরে ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ

অর্থ আত্মসাৎ স্বাস্থ্যের সাবেক পরিচালকসহ ২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় সড়কে প্রাণ গেল অন্তঃসত্ত্বার

ছবি

প্রতিবন্ধকতাকে উড়িয়ে এসএসসিতে অদম্য লিতুন জিরার চমক

ডেঙ্গু: চলতি বছরে আক্রান্ত প্রায় ১৪ হাজার, মোট মৃত্যু ৫৪ জনের

ছবি

বিএসএফ সীমান্তরক্ষী নয়, একটি খুনি বাহিনী: নাহিদ

ছবি

মোবাইল তুলতে গিয়ে ৪ চা শ্রমিকের মৃত্যু, বাগানে শোকের ছায়া

tab

জাতীয়

তিস্তার ভাঙন: হুমকির মুখে শতাধিক বসতবাড়ি ও স্থাপনা

প্রতিনিধি, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে তীব্র ভাঙন -সংবাদ

শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। জিও ব্যাগ, জিও টিউব ও ব্লক ফেলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামের ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

অব্যাহত ভাঙনে গত সাত দিনের ব্যবধানে ৭৫টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শতাধিক বসতবাড়ি ও ফসলি জমি ভাঙনের মুখে।

উপজেলার কাপাসিয়া, হরিপুর, শ্রীপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে গত এক সপ্তাহ ধরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীপারের পরিবারগুলো ইতোমধ্যে তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে।

তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর থেকে অন্য চরে যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে কাপাসিয়া ইউনিয়নের লালচামার গ্রামে ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। প্রতিবছর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নদীভাঙন, যা বছরজুড়েই চলতে থাকে।

নদীপাড়ের মানুষের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর এত দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার। ফলে প্রতিবছর শত শত বসতবাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।

সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ব্লক, জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেললেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটিকাপাসিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, “হঠাৎ তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করায় নদীভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আমার বসতবাড়িসহ এক বিঘা জমির তোষাপাট নদীগর্ভে চলে গেছে। ‘ভোরের পাখি’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতাধিক বিঘা ফসলি জমি ভাঙনের মুখে।”

তিনি আরও বলেন, “নদীতে পানি বাড়লে এবং বন্যা আসলে চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। অথচ দেখার কেউ নেই। সামান্য ত্রাণ দিয়ে দায় শেষ করে সবাই।”

হরিপুর লখিয়ারপাড়া গ্রামের ইব্রাহীম মিয়া বলেন, “প্রতি বছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে হারাতে হয়। একজন চরবাসীকে বছরে অন্তত চারবার ঘর সরাতে হয়। অথচ আজও স্থায়ীভাবে নদীভাঙন রোধের কোনো ব্যবস্থা হয়নি।”

কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া বলেন, “গত সাত দিনে উত্তর লালচামার গ্রামে তীব্র ভাঙনে ৭৫টি পরিবারের বসতবাড়ি ও শতাধিক একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্কুল, মসজিদসহ শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে।”

হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “নদী খনন ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে বহুবার আবেদন জানানো হয়েছে, কিন্তু এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। প্রাথমিকভাবে জিও ব্যাগ ও টিউব ফেলা হয়েছে মাত্র। স্থায়ী সমাধান না হলে চরবাসীর দুঃখ দূর হবে না।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, “ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এখনও সরকারি কোনো বরাদ্দ আসেনি, তবে বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা পৌঁছে দেওয়া হবে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হচ্ছে।” গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, “ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ও টিউব ফেলা হচ্ছে। তবে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের সিদ্ধান্ত সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিষয়।”

back to top