রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন এবং তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বাকি তিন আসামি হলেন সুব্রত বাইনের তিন সহযোগী আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসির।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম রোববার,(১৩ জুলাই ২০২৫) ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারক অভিযোগপত্র দেখে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন বলে প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই মোকছেদুল ইসলাম জানিয়েছেন।
গত ২৭ মে ভোরে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ‘তাদের তথ্যের ভিত্তিতে’ রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকে।
অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করার কথা জানানো হয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। ওই ঘটনায় ২৮ মে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন হাতিরঝিল থানার এস আই আসাদুজ্জামান।
সেখানে বলা হয়, ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে এবং তাদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। তারা ‘সেভেন স্টার গ্রুপ’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করত। ‘সুব্রত বাইন তৎকালীন সময়ে খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে। পরে সে ভারত পালিয়ে যায়। ৫ আগস্টের পর সে দেশে প্রবেশ করে পুনরায় খুন, চাঁদাবাজি শুরু করে।
‘তার সহযোগী আসামি এস এম শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত মিটিং করেন এবং সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রাখা আছে বলে তথ্য পায় পুলিশ। পরে হাতিরঝিল থানাধীন নতুন রাস্তা এলাকা হতে আসামি এম এ এস শরীফ ও আসামি মো. আরাফাত ইবনে নাসিরকে আটক করা হয়।’
এ মামলার বিবরণে ৫ আগস্টের পর সুব্রত বাইনের দেশে ফেরার কথা বলা হলেও গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে ভিন্ন তথ্য এসেছে।
২০০৩ সালে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর তৎপরতা বেড়ে গেলে সুব্রত ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর কলকাতার স্পেশাল টাস্কফোর্স কারাইয়া এলাকা থেকে ২০০৮ সালের ১৩ অক্টোবর সুব্রতকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে কলকাতায় অস্ত্র ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলাও হয়। ওই মামলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার গা ঢাকা দেন সুব্রত।
এরপর ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের কর্মকর্তাদের ধাওয়া খেয়ে সুব্রত বাইন নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা শহরে ঢুকে পড়েন। পরে নেপালের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের প্রায় তিন বছরের মাথায় ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সুড়ঙ্গ খুঁড়ে নেপালের কারাগার থেকে পালিয়ে ফের ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন সুব্রত বাইন।
পরে আবার তিনি ভারতে গ্রেপ্তার হন এবং ২০২২ সালে ভারত ও বাংলাদেশের ‘গোপন ও অবৈধ’ বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে সুব্রতকে র্যাবের হাতে তুলে দেয়া হয় বলে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের ভাষ্য। কমিশনের প্রতিবেদেনে বলা হয়, দেশে আনার পর থেকেই সুব্রত র্যাব হেফাজতে টাস্কফোর্স ফর ইন্টাররোগেশন (টিএফআই) সেলে বন্দী ছিলেন। তবে পুরো বিষয়টি সে সময় গোপন রাখা হয়। অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ৬ থেকে ৭ আগস্টের মধ্যে টিএফআই সেল থেকে তিনি মুক্তি পান বলে উঠে এসেছে কমিশনের প্রতিবেদনে।
রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন এবং তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। বাকি তিন আসামি হলেন সুব্রত বাইনের তিন সহযোগী আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসির।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম রোববার,(১৩ জুলাই ২০২৫) ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম ওয়াহিদুজ্জামানের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচারক অভিযোগপত্র দেখে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন বলে প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই মোকছেদুল ইসলাম জানিয়েছেন।
গত ২৭ মে ভোরে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ‘তাদের তথ্যের ভিত্তিতে’ রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকে।
অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করার কথা জানানো হয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। ওই ঘটনায় ২৮ মে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন হাতিরঝিল থানার এস আই আসাদুজ্জামান।
সেখানে বলা হয়, ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আসামি সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম ঘোষণা করে এবং তাদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। তারা ‘সেভেন স্টার গ্রুপ’ নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করত। ‘সুব্রত বাইন তৎকালীন সময়ে খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে। পরে সে ভারত পালিয়ে যায়। ৫ আগস্টের পর সে দেশে প্রবেশ করে পুনরায় খুন, চাঁদাবাজি শুরু করে।
‘তার সহযোগী আসামি এস এম শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত মিটিং করেন এবং সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলি অপরাধ সংগঠনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রাখা আছে বলে তথ্য পায় পুলিশ। পরে হাতিরঝিল থানাধীন নতুন রাস্তা এলাকা হতে আসামি এম এ এস শরীফ ও আসামি মো. আরাফাত ইবনে নাসিরকে আটক করা হয়।’
এ মামলার বিবরণে ৫ আগস্টের পর সুব্রত বাইনের দেশে ফেরার কথা বলা হলেও গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে ভিন্ন তথ্য এসেছে।
২০০৩ সালে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর তৎপরতা বেড়ে গেলে সুব্রত ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর কলকাতার স্পেশাল টাস্কফোর্স কারাইয়া এলাকা থেকে ২০০৮ সালের ১৩ অক্টোবর সুব্রতকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে কলকাতায় অস্ত্র ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলাও হয়। ওই মামলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার গা ঢাকা দেন সুব্রত।
এরপর ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের কর্মকর্তাদের ধাওয়া খেয়ে সুব্রত বাইন নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা শহরে ঢুকে পড়েন। পরে নেপালের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের প্রায় তিন বছরের মাথায় ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সুড়ঙ্গ খুঁড়ে নেপালের কারাগার থেকে পালিয়ে ফের ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন সুব্রত বাইন।
পরে আবার তিনি ভারতে গ্রেপ্তার হন এবং ২০২২ সালে ভারত ও বাংলাদেশের ‘গোপন ও অবৈধ’ বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে সুব্রতকে র্যাবের হাতে তুলে দেয়া হয় বলে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের ভাষ্য। কমিশনের প্রতিবেদেনে বলা হয়, দেশে আনার পর থেকেই সুব্রত র্যাব হেফাজতে টাস্কফোর্স ফর ইন্টাররোগেশন (টিএফআই) সেলে বন্দী ছিলেন। তবে পুরো বিষয়টি সে সময় গোপন রাখা হয়। অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ৬ থেকে ৭ আগস্টের মধ্যে টিএফআই সেল থেকে তিনি মুক্তি পান বলে উঠে এসেছে কমিশনের প্রতিবেদনে।