বরিশাল মহানগরীর পার্ক, ফুটপাত ও ড্রেনসহ রাস্তার পাশের যেকোনো সরকারি-আধা সরকারি সম্পত্তিতে নব্য চাঁদাবাজ দখলবাজদের থাবা ক্রমশ শক্তপোক্ত হয়ে উঠেছে। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর চাঁদাবাজদের পরিবর্তন হলেও, নতুন চাঁদাবাজদের ছায়ায় দখলবাজরা আরও সক্রিয় এবং শক্তপোক্ত হয়ে বসেছে। এসব দখলবাজি প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগসহ সুস্থ সমাজ জীবনের অন্তরায় হয়ে উঠলেও, নগর প্রশাসনসহ জেলা প্রশাসনের স্বেচ্ছা অন্ধত্বে জনমনে অস্বস্তির সঙ্গে দুর্ভোগও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে সুস্থ নগর ও জীবন।
বরিশাল মহানগরীর বেলপার্ক, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, স্বাধীনতা পার্ক, শতায়ু অঙ্গন ছাড়াও নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকের পাড়সহ প্রতিটি দৃষ্টিনন্দন ও চিত্তবিনোদনের এলাকাগুলোতে চাঁদাবাজদের থাবা ক্রমশ ঋণী রূপ নিচ্ছে। এমনকি বগুড়া রোডের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে নতুন ড্রেনের স্লাব ঢালাইয়ের সঙ্গে তার ওপরও নতুন নতুন দোকান বসছে।
গত ৫ আগস্টের আগে ক্ষমতাসীন দলের মাঠ পর্যায়ের পাতি নেতারা এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলো থেকে নিয়মিত চাঁদার বিনিময়ে দখলবাজদের অবস্থান পাকাপোক্ত রাখতেন। গত বছরের ৫ আগস্টের আগের ক্ষমতাসীনদের বিদায়ের পরে, ভবিষ্যৎ ক্ষমতাসীনরা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে চাঁদার নতুন হার নির্ধারণের মাধ্যমে পুরনো দখলবাজদের প্রতি আশীর্বাদ অব্যাহত রেখেছেন।
ফলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত লাখ লাখ টাকা চাঁদার বিনিময়ে নাগরিক সুবিধা এখন ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে। অথচ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেই এ নগরীর বেলপার্কে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ সৌন্দর্য বর্ধনসহ কীর্তনখোলা নদী তীরে মেরিন ওয়ার্কশপ সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, আমতলা মোড়ে স্বাধীনতা পার্ক, নবগ্রাম রোড চৌমহনী লেকের পাড়ে ওয়াকওয়ে এবং তিরিশ গোডাউন সংলগ্ন ‘শতায়ু অঙ্গন’-এর বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে জনগণের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু এসব স্পট ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নগরবাসী বুকভরে নিশ্বাসও নিতে পারছেন না। চাঁদাবাজদের হাত ধরে তা দখলবাজ ব্যবসায়ীদের উর্বরভূমি। বেশিরভাগ বিনোদন কেন্দ্রই ইতোমধ্যে তার চরিত্র হারিয়েছে। নারী ও শিশুরা এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার সাহস রাখেন না। কারণ, চাঁদাবাজেরা এসব পথ খাবারের দোকান প্রতিষ্ঠা করে, যেগুলোকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে বিশাল এক বলয়। যাদের নেতৃত্বে রয়েছে কিশোর গ্যাং থেকে শুরু করে আগস্ট পরবর্তী নতুন মাস্তান গ্রুপ। অথচ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে এদের নূ্যূনতম কোনো ভূমিকা ছিল না।
কিছুদিন আগে নগর প্রশাসন নগরীর বেলপার্কের উত্তরাংশে কিছু অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করলেও, অত্যন্ত রহস্যজনকভাবে সেখানে সব দখলবাজ আরও উৎসাহ নিয়ে ফিরে এসেছে। এমনকি এখন বেলপার্কের অভ্যন্তরভাগেও দখলবাজদের থাবা বিস্তার লাভ করেছে। মাঠের অভ্যন্তরের ওয়াকওয়ের পাশেও নিত্যনতুন দোকান বসছে। ওয়াকওয়ের ওপর চোয়ার বসিয়ে পথ খাবারের দোকানগুলোতে নিম্নমানের খাবার বিক্রি হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও স্বাধীনতা পার্কেরও একই অবস্থা। শতায়ু অঙ্গনে আর মানুষ হাঁটার কোনো উপায় নেই, পথ খাবারের দোকানসহ ফেরিওয়ালাদের অত্যাচারে। নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকের পাড়ের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখানের ওয়াকওয়ের অনেক অবকাঠামোই ভেঙে চুরে একাকার।
নগর প্রশাসনের এসব দেখার কোনো সময় আছে বলে মনে করেন না নগরবাসী। নগরীর সচেতন প্রতিটি মানুষ শান্তি বিনোদন কেন্দ্রগুলোর এ
দুরাবস্থায় অসন্তুষ্ট। পাশাপাশি, নতুন চাঁদাবাজদের হাত ধরে দখলবাজদের কবল থেকে বরিশাল মহানগরীকে উদ্ধারেরও দাবি সবার। এসব বিষয়ে নগর প্রশাসনের কর্মকাণ্ডকে উদাসীনতাও বলছেন জনসাধারণ।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করা হলে, তিনি জানান, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নগরীর প্রতিটি পাবলিক প্লেসকে দখলমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
তবে শুধু মহানগরীর শান্তি বিনোদন কেন্দ্রগুলোই নয়, আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বরিশালের দুটি বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে আরও অনেক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাও দখলবাজদের কব্জায় চলে গেছে। সে হিসেবে, এখন পর্যন্ত বরিশাল মহানগরীতে আগস্ট বিপ্লবের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী চাঁদাবাজ ও দখলবাজদেরই দায়ী করছেন আমজনতা। এসব বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের নিরবতাকে রহস্যজনক এবং ভবিষ্যৎ ক্ষমতাসীনদের আগাম তোষণের মাধ্যমে তুষ্ট রেখে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার প্রয়াসও বলছেন কেউ কেউ।
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
বরিশাল মহানগরীর পার্ক, ফুটপাত ও ড্রেনসহ রাস্তার পাশের যেকোনো সরকারি-আধা সরকারি সম্পত্তিতে নব্য চাঁদাবাজ দখলবাজদের থাবা ক্রমশ শক্তপোক্ত হয়ে উঠেছে। গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর চাঁদাবাজদের পরিবর্তন হলেও, নতুন চাঁদাবাজদের ছায়ায় দখলবাজরা আরও সক্রিয় এবং শক্তপোক্ত হয়ে বসেছে। এসব দখলবাজি প্রতিনিয়ত জনদুর্ভোগসহ সুস্থ সমাজ জীবনের অন্তরায় হয়ে উঠলেও, নগর প্রশাসনসহ জেলা প্রশাসনের স্বেচ্ছা অন্ধত্বে জনমনে অস্বস্তির সঙ্গে দুর্ভোগও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে সুস্থ নগর ও জীবন।
বরিশাল মহানগরীর বেলপার্ক, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, স্বাধীনতা পার্ক, শতায়ু অঙ্গন ছাড়াও নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকের পাড়সহ প্রতিটি দৃষ্টিনন্দন ও চিত্তবিনোদনের এলাকাগুলোতে চাঁদাবাজদের থাবা ক্রমশ ঋণী রূপ নিচ্ছে। এমনকি বগুড়া রোডের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে নতুন ড্রেনের স্লাব ঢালাইয়ের সঙ্গে তার ওপরও নতুন নতুন দোকান বসছে।
গত ৫ আগস্টের আগে ক্ষমতাসীন দলের মাঠ পর্যায়ের পাতি নেতারা এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলো থেকে নিয়মিত চাঁদার বিনিময়ে দখলবাজদের অবস্থান পাকাপোক্ত রাখতেন। গত বছরের ৫ আগস্টের আগের ক্ষমতাসীনদের বিদায়ের পরে, ভবিষ্যৎ ক্ষমতাসীনরা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে চাঁদার নতুন হার নির্ধারণের মাধ্যমে পুরনো দখলবাজদের প্রতি আশীর্বাদ অব্যাহত রেখেছেন।
ফলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত লাখ লাখ টাকা চাঁদার বিনিময়ে নাগরিক সুবিধা এখন ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে। অথচ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেই এ নগরীর বেলপার্কে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ সৌন্দর্য বর্ধনসহ কীর্তনখোলা নদী তীরে মেরিন ওয়ার্কশপ সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, আমতলা মোড়ে স্বাধীনতা পার্ক, নবগ্রাম রোড চৌমহনী লেকের পাড়ে ওয়াকওয়ে এবং তিরিশ গোডাউন সংলগ্ন ‘শতায়ু অঙ্গন’-এর বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে জনগণের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু এসব স্পট ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নগরবাসী বুকভরে নিশ্বাসও নিতে পারছেন না। চাঁদাবাজদের হাত ধরে তা দখলবাজ ব্যবসায়ীদের উর্বরভূমি। বেশিরভাগ বিনোদন কেন্দ্রই ইতোমধ্যে তার চরিত্র হারিয়েছে। নারী ও শিশুরা এসব বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার সাহস রাখেন না। কারণ, চাঁদাবাজেরা এসব পথ খাবারের দোকান প্রতিষ্ঠা করে, যেগুলোকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে বিশাল এক বলয়। যাদের নেতৃত্বে রয়েছে কিশোর গ্যাং থেকে শুরু করে আগস্ট পরবর্তী নতুন মাস্তান গ্রুপ। অথচ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে এদের নূ্যূনতম কোনো ভূমিকা ছিল না।
কিছুদিন আগে নগর প্রশাসন নগরীর বেলপার্কের উত্তরাংশে কিছু অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করলেও, অত্যন্ত রহস্যজনকভাবে সেখানে সব দখলবাজ আরও উৎসাহ নিয়ে ফিরে এসেছে। এমনকি এখন বেলপার্কের অভ্যন্তরভাগেও দখলবাজদের থাবা বিস্তার লাভ করেছে। মাঠের অভ্যন্তরের ওয়াকওয়ের পাশেও নিত্যনতুন দোকান বসছে। ওয়াকওয়ের ওপর চোয়ার বসিয়ে পথ খাবারের দোকানগুলোতে নিম্নমানের খাবার বিক্রি হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও স্বাধীনতা পার্কেরও একই অবস্থা। শতায়ু অঙ্গনে আর মানুষ হাঁটার কোনো উপায় নেই, পথ খাবারের দোকানসহ ফেরিওয়ালাদের অত্যাচারে। নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকের পাড়ের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখানের ওয়াকওয়ের অনেক অবকাঠামোই ভেঙে চুরে একাকার।
নগর প্রশাসনের এসব দেখার কোনো সময় আছে বলে মনে করেন না নগরবাসী। নগরীর সচেতন প্রতিটি মানুষ শান্তি বিনোদন কেন্দ্রগুলোর এ
দুরাবস্থায় অসন্তুষ্ট। পাশাপাশি, নতুন চাঁদাবাজদের হাত ধরে দখলবাজদের কবল থেকে বরিশাল মহানগরীকে উদ্ধারেরও দাবি সবার। এসব বিষয়ে নগর প্রশাসনের কর্মকাণ্ডকে উদাসীনতাও বলছেন জনসাধারণ।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করা হলে, তিনি জানান, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নগরীর প্রতিটি পাবলিক প্লেসকে দখলমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
তবে শুধু মহানগরীর শান্তি বিনোদন কেন্দ্রগুলোই নয়, আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বরিশালের দুটি বাস টার্মিনাল থেকে শুরু করে আরও অনেক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাও দখলবাজদের কব্জায় চলে গেছে। সে হিসেবে, এখন পর্যন্ত বরিশাল মহানগরীতে আগস্ট বিপ্লবের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী চাঁদাবাজ ও দখলবাজদেরই দায়ী করছেন আমজনতা। এসব বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের নিরবতাকে রহস্যজনক এবং ভবিষ্যৎ ক্ষমতাসীনদের আগাম তোষণের মাধ্যমে তুষ্ট রেখে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার প্রয়াসও বলছেন কেউ কেউ।