alt

জাতীয়

ফেনীর বন্যায় ১৪৬ কোটি টাকার ক্ষতি, এখনও পানিবন্দী সাত হাজার পরিবার

জেলা বার্তা পরিবেশক, ফেনী : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

বন্যার আগ্রাসনে ফেনীর রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, জনজীবন ও অর্থনীতি -সংবাদ

ফেনীতে এবারের বন্যায় প্রায় ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, গ্রামীণ সড়ক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবকাঠামো মিলিয়ে এ ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। তবে ক্ষতির এ পরিমাণ চূড়ান্ত নয়। এদিকে বন্যায় গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত ফেনীতে পানিবন্দী রয়েছে জেলার সাত হাজার পরিবার।

টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ৮ জুলাই থেকে ফেনীতে বন্যা দেখা দেয়। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। প্লাবিত হয় জেলার পাঁচ উপজেলার ১৩৭টি গ্রাম। পরশুরাম, ফেনী সদর ও দাগনভূঞা উপজেলায় বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনও ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা পানিবন্দী। এই পাঁচ গ্রামের ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার,(১৫ জুলাই ২০২৫) রাত পর্যন্ত ছিলেন ৩৩০ জন বাসিন্দা।

সরকারি পাঁচটি দপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবারের বন্যায় সড়ক ভাঙার ফলে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা, আবার ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ৩৮ কোটি ৭ লাখ, মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে ৮ কোটি ৭১ লাখ, প্রাণিসম্পদ খাতে ৬৫ লাখ ও বাঁধ ভেঙে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। ফেনীতে গত বছরের বন্যায় প্রায় ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ২০ লাখ ৫০০ টাকার ক্ষতি হয়েছিল বলে জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবারের বন্যায় আমন ও আউশের বীজতলা এবং গ্রীষ্মকালীন সবজিসহ ৫ হাজার ৫৬৪ দশমিক ৬১ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আউশের বীজতলা ৮৪৫ হেক্টর, আমনের ৬৮৯ হেক্টর, বস্তায় সংরক্ষিত থাকা আদা ৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন সবজি ৫৩৭ হেক্টর, মরিচ ১৪ হেক্টর, আদা ৭ হেক্টর, হলুদ ২ দশমিক ৫ হেক্টর, টমেটো শূন্য দশমিক ১১ হেক্টর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনী কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এটা প্রাথমিক হিসাব। বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র ও আর্থিক পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে।

জেলা মৎস্য বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, বন্যায় জেলার ৬ উপজেলায় ২ হাজার ৩৩০টি পুকুর, দিঘি ও খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা মূল্যের ২৭৬ দশমিক ২০ মেট্রিক টন মাছ। আবার পোনা মাছ ভেসেছে প্রায় ১২৮ মেট্রিক টন। এসব পোনার বাজারমূল্য ছিল ৩ কোটি ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকার মৎস্য খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতে কাজ করছে। গত বছরের মতো এবারও ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের প্রণোদনা দেয়ার জন্য সরকারের কাছে তালিকা পাঠানো হবে।

এদিকে বন্যায় জেলায় ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৭৫০ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এবার বন্যায় ১০ হাজার ৬০০ মুরগি, ৪টি গরু, ৩টি ছাগল, ১টি ভেড়া, ২৩৫টি হাঁসের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু পরশুরামেই ৭ হাজার ২০০টি মুরগির মারা গেছে। আবার ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকার পশুপাখির দানাদার, ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার খড় ও ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার ঘাস নষ্ট হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য সরকার প্রণোদনা দিলে খামারিদের হস্তান্তর করা হবে।

নদীর বাঁধ ভেঙে সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ১২৫

কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এর মধ্যে ফুলগাজী উপজেলায় ১০০ কিলোমিটার, পরশুরামে ২০ কিলোমিটার। এর বাইরে ছাগলনাইয়া উপজেলায়ও কিছু সড়কের ক্ষতি হয়েছে। জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদ আল ফারুক বলেন, ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ৪১টি স্থান ভেঙেছে। এর মধ্যে পরশুরামে ২২টি ও ফুলগাজীতে ১৯টি স্থান রয়েছে। জানতে চাইলে বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, বেড়িবাঁধের ভাঙনস্থল গভীর হওয়ায় সেগুলোতে এখনও নদীর পানি প্রবেশ করছে। পানি নেমে যাওয়ার পর বাঁধের ভাঙন অংশের মেরামতকাজ শুরু হবে। ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসমাইল হোসেন বলেন, বন্যাপরবর্তী পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে নতুন করে ৩০ লাখ টাকা ও ৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় আক্রান্ত ১১ হাজার ১৭৪ জনকে ত্রাণসামগ্রী দেয়া হয়েছে। এবার বন্যাকবলিতদের জন্য ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

শামীম ওসমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

৯৬ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া

বাংলা একাডেমি সংস্কার কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন ব্রাত্য রাইসু

গুলিস্তানে দুই ট্রাকের মাঝখানে চাপা পড়ে চালকের সহকারী নিহত

আগস্ট থেকে ১৫ টাকা কেজিতে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার: খাদ্য উপদেষ্টা

ছবি

সব ঘটনা সাম্প্রদায়িক নয়’—সংখ্যালঘু সহিংসতা নিয়ে পুলিশের ব্যাখ্যা

ভাঙ্গুড়ায় তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা

ছবি

শ্রীমঙ্গলে ডিনস্টন সিমেট্রি যেন এক টুকরা স্কটল্যান্ড

বিএসবির বাশারকে আদালত চত্বরে ঘুষি, লাথি, ডিম নিক্ষেপ

দুই বিভাগে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামিদের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি কাল

চিকুনগুনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জাও ছড়াচ্ছে ডেঙ্গুর পাশাপাশি

বুধবার বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাইদ দিবস

বড়পুকুরিয়ার ‘উচ্চ মানের’ কয়লা ‘কম দামে’ নিচ্ছে পিডিবি

বাণিজ্যের নামে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন চুক্তি চলবে না: সিপিবি

রিভিউ হবে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্লান্টের চুক্তি

মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা: ফের ৫ দিনের রিমান্ডে মহিন

ছবি

‘জাতীয় সংস্কারক’ উপাধি পেতে ইচ্ছুক নন অধ্যাপক ইউনূস

নিবন্ধনের শর্ত পূরণে ব্যর্থ এনসিপিসহ ১৪৪ দল: ইসি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐকমত্য, পরিবর্তনে লাগবে গণভোট

ছবি

নতুন নীতিমালায় পিস্তল-রাইফেলের লাইসেন্স ও নবায়নে বাড়ল শর্ত ও ফি

ছবি

শহীদদের স্মরণে সরকারি-বেসরকারি ভবনে অর্ধনমিত থাকবে জাতীয় পতাকা

ছবি

দলগুলোর মতবিরোধে উচ্চকক্ষ নিয়ে রোববার সিদ্ধান্ত ঘোষণা

ছবি

বদলির আদেশ অমান্য ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে বরখাস্ত ৮ কর্মকর্তা

ছবি

তিস্তা রক্ষায় জনগণের দাবি পরিকল্পনায় যুক্ত করা হয়েছে: পরিবেশ উপদেষ্টা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচ দেশে প্রবাসী ভোটার তালিকাভুক্তির উদ্যোগ

ছবি

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে আরও ৫ লাখ পরিবার যুক্ত, শুরু অগাস্টে

ছবি

বাংলা একাডেমি সংস্কার কমিটি থেকে সরে দাঁড়ালেন ব্রাত্য রাইসু

ছবি

শর্ত পূরণের ব্যর্থতায় মালয়েশিয়া থেকে ৯৬ বাংলাদেশি ফেরত

ছবি

জাতীয় ঐকমত্যে ব্যর্থতা হলে দায় সবার: আলী রীয়াজ

ছবি

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

ছবি

‘সংস্কার উদ্যোগের প্রশংসা’ করলেন বিশ্ব ব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট

ছবি

ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা, নদী ও সমুদ্র বন্দরে সতর্ক সংকেত জারি

ছবি

মধ্যরাতের আকাশে ‘ড্রোন শো’তে ‘জুলাই স্মৃতি’

ছবি

গণঅভ্যুত্থানের ঐক্য সমুন্নত রাখার তাগিদ শোকসভায়

tab

জাতীয়

ফেনীর বন্যায় ১৪৬ কোটি টাকার ক্ষতি, এখনও পানিবন্দী সাত হাজার পরিবার

জেলা বার্তা পরিবেশক, ফেনী

বন্যার আগ্রাসনে ফেনীর রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, জনজীবন ও অর্থনীতি -সংবাদ

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

ফেনীতে এবারের বন্যায় প্রায় ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, গ্রামীণ সড়ক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবকাঠামো মিলিয়ে এ ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। তবে ক্ষতির এ পরিমাণ চূড়ান্ত নয়। এদিকে বন্যায় গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত ফেনীতে পানিবন্দী রয়েছে জেলার সাত হাজার পরিবার।

টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ৮ জুলাই থেকে ফেনীতে বন্যা দেখা দেয়। ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। প্লাবিত হয় জেলার পাঁচ উপজেলার ১৩৭টি গ্রাম। পরশুরাম, ফেনী সদর ও দাগনভূঞা উপজেলায় বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনও ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ার পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা পানিবন্দী। এই পাঁচ গ্রামের ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্রে মঙ্গলবার,(১৫ জুলাই ২০২৫) রাত পর্যন্ত ছিলেন ৩৩০ জন বাসিন্দা।

সরকারি পাঁচটি দপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবারের বন্যায় সড়ক ভাঙার ফলে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা, আবার ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ৩৮ কোটি ৭ লাখ, মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছে ৮ কোটি ৭১ লাখ, প্রাণিসম্পদ খাতে ৬৫ লাখ ও বাঁধ ভেঙে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। ফেনীতে গত বছরের বন্যায় প্রায় ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ২০ লাখ ৫০০ টাকার ক্ষতি হয়েছিল বলে জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবারের বন্যায় আমন ও আউশের বীজতলা এবং গ্রীষ্মকালীন সবজিসহ ৫ হাজার ৫৬৪ দশমিক ৬১ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আউশের বীজতলা ৮৪৫ হেক্টর, আমনের ৬৮৯ হেক্টর, বস্তায় সংরক্ষিত থাকা আদা ৩ হাজার ৪৭০ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন সবজি ৫৩৭ হেক্টর, মরিচ ১৪ হেক্টর, আদা ৭ হেক্টর, হলুদ ২ দশমিক ৫ হেক্টর, টমেটো শূন্য দশমিক ১১ হেক্টর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনী কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, এটা প্রাথমিক হিসাব। বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র ও আর্থিক পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে।

জেলা মৎস্য বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, বন্যায় জেলার ৬ উপজেলায় ২ হাজার ৩৩০টি পুকুর, দিঘি ও খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা মূল্যের ২৭৬ দশমিক ২০ মেট্রিক টন মাছ। আবার পোনা মাছ ভেসেছে প্রায় ১২৮ মেট্রিক টন। এসব পোনার বাজারমূল্য ছিল ৩ কোটি ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকার মৎস্য খামারের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতে কাজ করছে। গত বছরের মতো এবারও ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের প্রণোদনা দেয়ার জন্য সরকারের কাছে তালিকা পাঠানো হবে।

এদিকে বন্যায় জেলায় ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৭৫০ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এবার বন্যায় ১০ হাজার ৬০০ মুরগি, ৪টি গরু, ৩টি ছাগল, ১টি ভেড়া, ২৩৫টি হাঁসের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু পরশুরামেই ৭ হাজার ২০০টি মুরগির মারা গেছে। আবার ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকার পশুপাখির দানাদার, ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার খড় ও ৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার ঘাস নষ্ট হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য সরকার প্রণোদনা দিলে খামারিদের হস্তান্তর করা হবে।

নদীর বাঁধ ভেঙে সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ১২৫

কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এর মধ্যে ফুলগাজী উপজেলায় ১০০ কিলোমিটার, পরশুরামে ২০ কিলোমিটার। এর বাইরে ছাগলনাইয়া উপজেলায়ও কিছু সড়কের ক্ষতি হয়েছে। জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহমুদ আল ফারুক বলেন, ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, মুহুরী, কুহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ৪১টি স্থান ভেঙেছে। এর মধ্যে পরশুরামে ২২টি ও ফুলগাজীতে ১৯টি স্থান রয়েছে। জানতে চাইলে বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, বেড়িবাঁধের ভাঙনস্থল গভীর হওয়ায় সেগুলোতে এখনও নদীর পানি প্রবেশ করছে। পানি নেমে যাওয়ার পর বাঁধের ভাঙন অংশের মেরামতকাজ শুরু হবে। ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসমাইল হোসেন বলেন, বন্যাপরবর্তী পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে নতুন করে ৩০ লাখ টাকা ও ৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় আক্রান্ত ১১ হাজার ১৭৪ জনকে ত্রাণসামগ্রী দেয়া হয়েছে। এবার বন্যাকবলিতদের জন্য ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

back to top