জ্বর কমলেও পেট, মাথা ব্যথা কমছে না, দুর্বলতা কাটছে না, দুর্বল রোগীদের ঝুঁকি বেশি, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
সারাদেশে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্ত বহু শিশু প্রতিদিন ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে জরুরি ও বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে। এভাবে সারাদেশে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আবার জ্বর কমলেও শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথা ব্যথা, পেটে ব্যথা হয়। এমনকি শিশুসহ দুর্বল ব্যক্তিরা এই জ্বরে আক্রান্ত হলে অনেকেরই স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। এ জন্য জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেতে হবে। আর অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও বর্তমানে রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. জাহাঙ্গীর আলম সংবাদকে জানান, দেশে এখন ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জ্বর হচ্ছে। ডেঙ্গু ছাড়াও প্রতি বছর মে মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এই ভাইরাসে শিশুদের জ্বর হলে রেশ ওঠে।
জ্বর হলে প্যারাসিটামল, ভিটামিন ওষুধ খেতে দিতে হবে। আর শরীর মুছে দিতে হবে। শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হলে, জ্বর কমে যাওয়ার পরও দুর্বল থাকে। দেখা দেয় নানা লক্ষণ। এই জন্য ভিটামিন খেতে দিতে হবে।
বি ভাইরাস এটা একটা খারাপ ব্যাক্টেরিয়া। এর জন্য যখন তখন অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়াই ভালো। অ্যান্টিবায়োটিক (রেজিস্ট্রেশন) কাজ না করলে পরবর্তীতে আরও সমস্যা হতে পারে।
অনেক শিশুর ভাইরাস জ্বর ভালো হয়ে গেলেও ১৫ দিন থেকে এক মাস ব্যথা থাকে। বেশি ব্যথা থাকলে দরকার হলে আবার পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর বেশি ব্যথা হলে শিশুদের চিকিৎসকের গাইডলাইন অনুযায়ী ওষুধ খেতে দিতে হবে।
সিনিয়র ইণ্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুনিল কুমার বিশ্বাস সংবাদকে জানান, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরে আক্রান্ত হলে ৫ থেকে ৭ দিন থাকে। ডেঙ্গু হলে ব্যথা কম হয়। মাংসপেশী ও কোমরে কিছুটা ব্যথা হয়। আর চিকুনগুনিয়া হলে পিঠে, কোমরে হাতে, দীর্ঘদিন থাকে। আর টেস্ট করলে নেগেটিভ আসে। কারও কারও শরীরে বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়।
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ হলে ৭ দিন পর টেস্ট করতে হবে। আর ডেঙ্গু টেস্ট ১ থেকে ২ দিন পর করলেও হবে। ব্যথা সাধারণত নাপা খেয়ে কমাতে হবে। না হয় স্টেরয়েড দিতে হবে।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, শিশুর জ্বর হলে তিন দিনেও জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে হতে পারে বলে এই বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেন। আর শিশুকে তরল খাবার দিতে হবে। খাওয়া দেয়ার সময় হাত ধুইয়ে পরিষ্কার হাতে শিশুকে খাবার দিতে হবে।
শ্যামলী আড়াইশ’ বেডের টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার জানান, শিশু বাচ্চা ও কিশোররা জ্বর হলে খেতে চায় না। অনেক বাচ্চা বাইরের খাবার খায়। আবার শিশু বাচ্চা খেলাধুলা করার সময় ধুলাবালি বা পানির সঙ্গে জীবাণু তাদের পেটে গেলে পেট ব্যথা হতে পারে। আবার অনেকেই দোকানের
খাবার খায়। এতে সমস্যা হয়। এসব কারণে শিশুদের প্রতি সব সময় যত্ন দিতে হবে। বেশি সমস্যা হলে ডাক্তারে কাছে যেতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে জ্বর ও চিকুনগুনিয়া হয়। এইবার ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে জেলাগুলোতে আক্রান্ত বাড়তে থাকবে। বৃষ্টি কমলে ও শীত পড়তে শুরু করে আগামী অক্টোবর ও নভেম্বরের দিতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। বর্ষা মৌসুমে বাড়তে থাকবে।
এদিকে মঙ্গলবার,(১৫ জুলাই ২০২৫) মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩৭৫ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৫,৫৮৫ জন। ত্রা মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৫৮ জন। এখনও হাসপাতালগুলোতে ১২শ’র বেশি রোগী ভর্তি আছে। তার মধ্যে শিশু ও কিশোর রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা।
জ্বর কমলেও পেট, মাথা ব্যথা কমছে না, দুর্বলতা কাটছে না, দুর্বল রোগীদের ঝুঁকি বেশি, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
সারাদেশে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্ত বহু শিশু প্রতিদিন ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে জরুরি ও বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে। এভাবে সারাদেশে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আবার জ্বর কমলেও শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথা ব্যথা, পেটে ব্যথা হয়। এমনকি শিশুসহ দুর্বল ব্যক্তিরা এই জ্বরে আক্রান্ত হলে অনেকেরই স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। এ জন্য জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেতে হবে। আর অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ও বর্তমানে রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. জাহাঙ্গীর আলম সংবাদকে জানান, দেশে এখন ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস জ্বর হচ্ছে। ডেঙ্গু ছাড়াও প্রতি বছর মে মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এই ভাইরাসে শিশুদের জ্বর হলে রেশ ওঠে।
জ্বর হলে প্যারাসিটামল, ভিটামিন ওষুধ খেতে দিতে হবে। আর শরীর মুছে দিতে হবে। শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হলে, জ্বর কমে যাওয়ার পরও দুর্বল থাকে। দেখা দেয় নানা লক্ষণ। এই জন্য ভিটামিন খেতে দিতে হবে।
বি ভাইরাস এটা একটা খারাপ ব্যাক্টেরিয়া। এর জন্য যখন তখন অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়াই ভালো। অ্যান্টিবায়োটিক (রেজিস্ট্রেশন) কাজ না করলে পরবর্তীতে আরও সমস্যা হতে পারে।
অনেক শিশুর ভাইরাস জ্বর ভালো হয়ে গেলেও ১৫ দিন থেকে এক মাস ব্যথা থাকে। বেশি ব্যথা থাকলে দরকার হলে আবার পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর বেশি ব্যথা হলে শিশুদের চিকিৎসকের গাইডলাইন অনুযায়ী ওষুধ খেতে দিতে হবে।
সিনিয়র ইণ্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সুনিল কুমার বিশ্বাস সংবাদকে জানান, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরে আক্রান্ত হলে ৫ থেকে ৭ দিন থাকে। ডেঙ্গু হলে ব্যথা কম হয়। মাংসপেশী ও কোমরে কিছুটা ব্যথা হয়। আর চিকুনগুনিয়া হলে পিঠে, কোমরে হাতে, দীর্ঘদিন থাকে। আর টেস্ট করলে নেগেটিভ আসে। কারও কারও শরীরে বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়।
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণ হলে ৭ দিন পর টেস্ট করতে হবে। আর ডেঙ্গু টেস্ট ১ থেকে ২ দিন পর করলেও হবে। ব্যথা সাধারণত নাপা খেয়ে কমাতে হবে। না হয় স্টেরয়েড দিতে হবে।
মহাখালী রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুস্তাক হোসেন সংবাদকে জানান, শিশুর জ্বর হলে তিন দিনেও জ্বর না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া থেকে হতে পারে বলে এই বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেন। আর শিশুকে তরল খাবার দিতে হবে। খাওয়া দেয়ার সময় হাত ধুইয়ে পরিষ্কার হাতে শিশুকে খাবার দিতে হবে।
শ্যামলী আড়াইশ’ বেডের টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার জানান, শিশু বাচ্চা ও কিশোররা জ্বর হলে খেতে চায় না। অনেক বাচ্চা বাইরের খাবার খায়। আবার শিশু বাচ্চা খেলাধুলা করার সময় ধুলাবালি বা পানির সঙ্গে জীবাণু তাদের পেটে গেলে পেট ব্যথা হতে পারে। আবার অনেকেই দোকানের
খাবার খায়। এতে সমস্যা হয়। এসব কারণে শিশুদের প্রতি সব সময় যত্ন দিতে হবে। বেশি সমস্যা হলে ডাক্তারে কাছে যেতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে জ্বর ও চিকুনগুনিয়া হয়। এইবার ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে জেলাগুলোতে আক্রান্ত বাড়তে থাকবে। বৃষ্টি কমলে ও শীত পড়তে শুরু করে আগামী অক্টোবর ও নভেম্বরের দিতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। বর্ষা মৌসুমে বাড়তে থাকবে।
এদিকে মঙ্গলবার,(১৫ জুলাই ২০২৫) মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৩৭৫ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১৫,৫৮৫ জন। ত্রা মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৫৮ জন। এখনও হাসপাতালগুলোতে ১২শ’র বেশি রোগী ভর্তি আছে। তার মধ্যে শিশু ও কিশোর রয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা।