জঙ্গিবাদে জড়িত সন্দেহে দুই বছর আগে গ্রেপ্তার হওয়া শামিন মাহফুজ আবারও গ্রেপ্তার হয়েছেন। দুই বছর আগে পুলিশ জানিয়েছিল শামিন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে একটি উগ্রবাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। এবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহে।
শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাভার মডেল থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায়। মামলাটি দায়ের করেছিল জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এটিইউ। ওই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার থেকে তাকে রিমান্ডে পেয়েছে এটিইউ। এটিইউর মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বিভাগের এসপি ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল বলেন, ‘সাভার মডেল থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই মামলার এজাহারে আসামিদের সঙ্গে টিটিপি সম্পৃক্ততার একটা অভিযোগ এনেছেন বাদী। এর আগে ফয়সাল নামে আরও একজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’
পুলিশের এই ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, শামিন সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ থেকে র্যাব-১১ তাকে আবার গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে সাভার থানার ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এটিইউ মামলাটি তদন্ত করছে। গত সোমবার আদালতে নেয়া হলে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এটিইউ কর্মকর্তা জানান, ২ জুলাই সাভার থেকে ফয়সাল নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩ জুলাই তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ৫ জুলাই সাভার মডেল থানায় ফয়সালসহ আরও পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন এটিইউর পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আল ইমরান ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার, রেজাউল করিম আবরার, আসিফ আদনান, জাকারিয়া মাসুদ এবং সানাফ হোসেন। তারা টিটিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
শামিন মাহফুজ এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন। এটিইউর ওই কর্মকর্তা বলছেন, শামিনও টিটিপির সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তথ্যের জন্য রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান গোষ্ঠীটি পাকিস্তানি তালেবান নামে পরিচিত। মূলত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সক্রিয় টিটিপি বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কর্মকা-ের জন্য সমালোচিত।
‘পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তান গিয়েছিলেন ফয়সাল’
৩৩ বছর বয়সী ফয়সাল সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে কাজী অফিসসংলগ্ন ভবনে ‘ভাই ব্রাদার্স টেলিকম’ নামে একটি ফটোকপি ও টেলিকমসহ অন্যান্য সেবার দোকান চালাতেন। তার বাবা প্রয়াত মো. ইব্রাহিম এক সময় একই এলাকায় চায়ের দোকান করতেন।
সাভার থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, ‘ফয়সালকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে সন্ত্রাসী সংগঠন টিটিপির মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সহযোগী আহমেদ জুবায়ের যুবরাজসহ (২৩) পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তানে যায়। যুবরাজের বাসা সাভারের ভাটপাড়ায়। পরবর্তীতে পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তান সীমান্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অভিযানে যুবরাজ নিহত হন।’
মামলায় বলা হয়, গত বছরের ১৮ অক্টোবর ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ফয়সাল ও যুবরাজ। তারা সৌদি আরব থেকে ২৯ অক্টোবর পাকিস্তানে যান। সেখান থেকে ৬ নভেম্বর তুরখাম স্থল সীমান্ত দিয়ে আফগানিস্তানে ঢোকেন। পরে ফয়সাল গত ১০ নভেম্বর আফগানিস্তান থেকে তুরখাম স্থল সীমান্ত দিয়ে আবারও পাকিস্তানে যান। পাকিস্তানের করাচি থেকে দুবাই হয়ে গত ১৬ নভেম্বর তিনি ঢাকা ফেরত আসেন।
মামলায় বলা হয়েছে, ‘জিজ্ঞাসাবাদে মো. ফয়সাল জানান, মামলার আসামি আল ইমরান ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার বাংলাদেশি যুবকদের টিটিপির হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ ও সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেন। ইমরান বর্তমানে টিটিপির হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ‘ইমরান নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। তাছাড়া ফয়সাল জানিয়েছে, তার কয়েকজন বন্ধু রেজাউল করিম আবরার, আসিফ আদনান, জাকারিয়া মাসুদ, সানাফ হাসানসহ আরও সহযোগী ধর্মীয় উগ্রবাদে দীক্ষিত হয়ে জিহাদে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
শামিন সম্পর্কে এর আগে যা বলা হয়েছিল
এর আগে ২০২৩ সালের ২৪ জুন সংবাদ সম্মেলন করে স্ত্রীসহ শামিনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের জঙ্গি দমনের বিশেষায়িত ইউনিট সিটিটিসি। সে সময় বলা হয়, শামিন মাহফুজ ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা, যে জঙ্গি সংগঠনটি দেশের পার্বত্য এলাকায় বম পার্টি নামে পরিচিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ’র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে যৌথভাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। সিটিটিসি তখন বলেছিল, সেটা ছিল শামিনের তৃতীয় দফা গ্রেপ্তার।
সিটিটিসির তথ্যানুযায়ী, শামিন মাহফুজ ১৯৯২ সালে রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও ১৯৯৪ সালে এইচএসসিতে পাস করেন। দুই পরীক্ষাতেই মানবিক বিভাগ থেকে মেধা তালিকায় স্থান ছিল তার। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। মাস্টার্সের পরে রাজধানীর একটি কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতা করেছিলেন শামিন। এরপর শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষকতার কারণেই শামিন জঙ্গি সংগঠনে ‘স্যার’ হিসেবে পরিচিতি পান বলে এর আগে র্যাব জানিয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শামিনের বন্ধুত্ব হয় চারুকলার শিক্ষার্থী নাথান বমের সঙ্গে, যিনি এখন পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ বা ‘বম পার্টি’র প্রধান। তখন সিটিটিসির তরফে বলা হয়, গবেষণা ও খামারের আড়ালে ‘উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১১ সালে বান্দরবানের থানচি থানার একটি মামলায় শামিন গ্রেপ্তার হন। প্রথমবার গ্রেপ্তারের পর জামিনে বের হয়ে জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত রাখেন শামিন। ২০১৪ সালে যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৮ সালে জামিনে বের হওয়ার পর শামিন সস্ত্রীক আত্মগোপনে থেকে নতুন সংগঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য।
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
জঙ্গিবাদে জড়িত সন্দেহে দুই বছর আগে গ্রেপ্তার হওয়া শামিন মাহফুজ আবারও গ্রেপ্তার হয়েছেন। দুই বছর আগে পুলিশ জানিয়েছিল শামিন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে একটি উগ্রবাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। এবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহে।
শামিন মাহফুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাভার মডেল থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায়। মামলাটি দায়ের করেছিল জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এটিইউ। ওই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার থেকে তাকে রিমান্ডে পেয়েছে এটিইউ। এটিইউর মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বিভাগের এসপি ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল বলেন, ‘সাভার মডেল থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ওই মামলার এজাহারে আসামিদের সঙ্গে টিটিপি সম্পৃক্ততার একটা অভিযোগ এনেছেন বাদী। এর আগে ফয়সাল নামে আরও একজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’
পুলিশের এই ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, শামিন সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ থেকে র্যাব-১১ তাকে আবার গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে সাভার থানার ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এটিইউ মামলাটি তদন্ত করছে। গত সোমবার আদালতে নেয়া হলে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এটিইউ কর্মকর্তা জানান, ২ জুলাই সাভার থেকে ফয়সাল নামে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩ জুলাই তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। ৫ জুলাই সাভার মডেল থানায় ফয়সালসহ আরও পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন এটিইউর পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আল ইমরান ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার, রেজাউল করিম আবরার, আসিফ আদনান, জাকারিয়া মাসুদ এবং সানাফ হোসেন। তারা টিটিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
শামিন মাহফুজ এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নন। এটিইউর ওই কর্মকর্তা বলছেন, শামিনও টিটিপির সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তথ্যের জন্য রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তান গোষ্ঠীটি পাকিস্তানি তালেবান নামে পরিচিত। মূলত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে সক্রিয় টিটিপি বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কর্মকা-ের জন্য সমালোচিত।
‘পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তান গিয়েছিলেন ফয়সাল’
৩৩ বছর বয়সী ফয়সাল সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে কাজী অফিসসংলগ্ন ভবনে ‘ভাই ব্রাদার্স টেলিকম’ নামে একটি ফটোকপি ও টেলিকমসহ অন্যান্য সেবার দোকান চালাতেন। তার বাবা প্রয়াত মো. ইব্রাহিম এক সময় একই এলাকায় চায়ের দোকান করতেন।
সাভার থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, ‘ফয়সালকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে সন্ত্রাসী সংগঠন টিটিপির মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সহযোগী আহমেদ জুবায়ের যুবরাজসহ (২৩) পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তানে যায়। যুবরাজের বাসা সাভারের ভাটপাড়ায়। পরবর্তীতে পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তান সীমান্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অভিযানে যুবরাজ নিহত হন।’
মামলায় বলা হয়, গত বছরের ১৮ অক্টোবর ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ফয়সাল ও যুবরাজ। তারা সৌদি আরব থেকে ২৯ অক্টোবর পাকিস্তানে যান। সেখান থেকে ৬ নভেম্বর তুরখাম স্থল সীমান্ত দিয়ে আফগানিস্তানে ঢোকেন। পরে ফয়সাল গত ১০ নভেম্বর আফগানিস্তান থেকে তুরখাম স্থল সীমান্ত দিয়ে আবারও পাকিস্তানে যান। পাকিস্তানের করাচি থেকে দুবাই হয়ে গত ১৬ নভেম্বর তিনি ঢাকা ফেরত আসেন।
মামলায় বলা হয়েছে, ‘জিজ্ঞাসাবাদে মো. ফয়সাল জানান, মামলার আসামি আল ইমরান ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার বাংলাদেশি যুবকদের টিটিপির হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ ও সংঘবদ্ধ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেন। ইমরান বর্তমানে টিটিপির হয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ‘ইমরান নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। তাছাড়া ফয়সাল জানিয়েছে, তার কয়েকজন বন্ধু রেজাউল করিম আবরার, আসিফ আদনান, জাকারিয়া মাসুদ, সানাফ হাসানসহ আরও সহযোগী ধর্মীয় উগ্রবাদে দীক্ষিত হয়ে জিহাদে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’
শামিন সম্পর্কে এর আগে যা বলা হয়েছিল
এর আগে ২০২৩ সালের ২৪ জুন সংবাদ সম্মেলন করে স্ত্রীসহ শামিনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের জঙ্গি দমনের বিশেষায়িত ইউনিট সিটিটিসি। সে সময় বলা হয়, শামিন মাহফুজ ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা, যে জঙ্গি সংগঠনটি দেশের পার্বত্য এলাকায় বম পার্টি নামে পরিচিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ’র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে যৌথভাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। সিটিটিসি তখন বলেছিল, সেটা ছিল শামিনের তৃতীয় দফা গ্রেপ্তার।
সিটিটিসির তথ্যানুযায়ী, শামিন মাহফুজ ১৯৯২ সালে রংপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও ১৯৯৪ সালে এইচএসসিতে পাস করেন। দুই পরীক্ষাতেই মানবিক বিভাগ থেকে মেধা তালিকায় স্থান ছিল তার। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। মাস্টার্সের পরে রাজধানীর একটি কলেজে কিছুদিন শিক্ষকতা করেছিলেন শামিন। এরপর শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষকতার কারণেই শামিন জঙ্গি সংগঠনে ‘স্যার’ হিসেবে পরিচিতি পান বলে এর আগে র্যাব জানিয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় শামিনের বন্ধুত্ব হয় চারুকলার শিক্ষার্থী নাথান বমের সঙ্গে, যিনি এখন পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ বা ‘বম পার্টি’র প্রধান। তখন সিটিটিসির তরফে বলা হয়, গবেষণা ও খামারের আড়ালে ‘উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১১ সালে বান্দরবানের থানচি থানার একটি মামলায় শামিন গ্রেপ্তার হন। প্রথমবার গ্রেপ্তারের পর জামিনে বের হয়ে জঙ্গি তৎপরতা অব্যাহত রাখেন শামিন। ২০১৪ সালে যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৮ সালে জামিনে বের হওয়ার পর শামিন সস্ত্রীক আত্মগোপনে থেকে নতুন সংগঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য।