পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার পেছনে ‘ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও ব্যক্তিগত আক্রোশ’ মূলত কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৩৫ বছর বযসী রেজওয়ান উদ্দিন অভিকে গত মঙ্গলবার রাতে পটুয়াখালী থেকে করা হয় বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। এই নিয়ে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হলেন ৯ জন।
গ্রেপ্তার অভির ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল সোহাগের প্রতি
গ্রেপ্তার ৯ জনের মধ্যে ৮ জনকে ভিডিও দেখে চিহ্নিত
তিন আসামি ৭ দিনের রিমান্ডে
গতকাল রাজধানীতে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারদের পরিচয় তুলে ধরা হয়। তারা হলেনÑ আলমগীর (২৮), মনির ওরফে লম্বা মনির (৩২), মো. টিটন গাজী (৩২), মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১), তারেক রহমান রবিন (২২), নান্নু গাজী (২৫), সজীব বেপারী, রাজীব বেপারী, এবং রেজওয়ান উদ্দিন অভি (৩৫)। অভি ধর্মান্তরিত মুসলিম। তাদের মধ্যে ৮ জনকে ভিডি দেখে চিহ্নিত করা হয় বলে পুলিশ বলছে।
সাজ্জাত আলী বলেন, ‘ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া অভির ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল ব্যবসায়ী সোহাগের প্রতি। একাধিকবার সোহাগ তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাছাড়া দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ সোহাগ এক চেটিয়া ব্যবসা করে আসছিল।’
প্রাথমিক জেরার মুখের অভির দেয়া তথ্য তুলে ধরে সাজ্জাত আলী বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর অভি বলেছে, ২০১৮ সারে সোহাগ তার ফুটপাথের দোকান দখল করার সময়, মোবাইলও কেড়ে নেয় সোগাগ। এই মোবাইলে তার স্ত্রীর সঙ্গে (অভির স্ত্রী) ব্যক্তিগত ভিডিও ছিল। এই ভিডিও দিয়ে তার সঙ্গে সোহাগ প্রতারণা করত। এসব কারণে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করে বলেও জানিয়েছেন অভির।’
মামলার এজাহার নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, এজাহার নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হলো, মামলার এজাহারের জন্য প্রথমে লাল চাঁদের সাবেক স্ত্রী লাকি আক্তার থানায় আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তার সৎভাইও থানায় আসেন। তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে ২৩ জনকে আসামি করে একটি খসড়া এজাহার প্রস্তুত করেন। একই সময়ে লাল চাঁদের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম থানায় এসে এজাহার দাখিলের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তখন মঞ্জুয়ারার সামনে আগের খসড়া উপস্থাপন করা হয়। সে সময় তার মেয়ে খসড়া এজাহারের ছবি তুলে রাখেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত মঞ্জুয়ারাই বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মঞ্জুয়ারা খসড়া এজাহার থেকে ৫ জনের নাম বাদ দিয়ে নতুন একজনের নাম সংযোজন করে মোট ১৯ জনকে আসামি করেন। তার লিখিত এজাহারের ভিত্তিতে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। এজাহার একটি প্রাথমিক তথ্যবিবরণী মাত্র। এজাহারে উল্লেখিত ঘটনা তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চান, এই নারকীয় ঘটনায় জড়িত সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি এ ধরনের অপরাধের যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। হত্যার নেপথ্যের কারণ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড হয়নি। লাল চাঁদ আগের সরকারের সময়ে পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন। পটপরিবর্তনের পর আরেকটা গ্রুপ এই ব্যবসায় জড়িয়ে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়। দুই দলই আগে থেকে পরস্পরকে চিনত।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে এ ধরণের ক্ষোভ কাজ করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় শতাধিক ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে লালাবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ‘আমাদের বড় সাফল্য ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা।’ পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, ওই হত্যাকাণ্ডে যাদের অংশ নিতে দেখা গেছে এবং নেপথ্যে যাদের নাম আসছে, তারা সবাই সোহাগের পূর্ব পরিচিত। একসময় তাদের কয়েকজন সোহাগের ব্যবসার সহযোগী ছিলেন।
তিন আসামির ৭ দিনের রিমান্ড
সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তিন আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেয়। রিমান্ডে যাওয়া তিন আসামি হলেনÑ নান্নু কাজী, রেজওয়ান উদ্দিন ওরফে অভিজিৎ বসু ও তারেক রহমান রবিন। তাদের মধ্যে ৩৫ বছর বযসী রেজওয়ান উদ্দিন অভিকে গত মঙ্গলবার রাতে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার থেকে করা হয় বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ুম হোসেন নয়ন ১০ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানির পর আদালত তাদের ৭ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয় বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী। এর আগে ১০ জুলাই মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে রিমান্ডে পাঠানো হয়। রবিনকে অস্ত্র মামলায় দুই দিনের রিমান্ডে পাঠানোর পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। গত শনিবার ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয় টিটন গাজী নামে আরেক আসামিকে। পরদিন রোববার মো. আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনিরের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত সোমবার দুই ভাই সজীব বেপারী ও রাজীব বেপারীকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার মহিনকে আবার ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৯ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর একদল লোক ব্যবাসায়ী সোহাগকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর পুলিশ অস্ত্র মামলা দায়ের করে। এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার পেছনে ‘ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও ব্যক্তিগত আক্রোশ’ মূলত কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৩৫ বছর বযসী রেজওয়ান উদ্দিন অভিকে গত মঙ্গলবার রাতে পটুয়াখালী থেকে করা হয় বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। এই নিয়ে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হলেন ৯ জন।
গ্রেপ্তার অভির ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল সোহাগের প্রতি
গ্রেপ্তার ৯ জনের মধ্যে ৮ জনকে ভিডিও দেখে চিহ্নিত
তিন আসামি ৭ দিনের রিমান্ডে
গতকাল রাজধানীতে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারদের পরিচয় তুলে ধরা হয়। তারা হলেনÑ আলমগীর (২৮), মনির ওরফে লম্বা মনির (৩২), মো. টিটন গাজী (৩২), মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১), তারেক রহমান রবিন (২২), নান্নু গাজী (২৫), সজীব বেপারী, রাজীব বেপারী, এবং রেজওয়ান উদ্দিন অভি (৩৫)। অভি ধর্মান্তরিত মুসলিম। তাদের মধ্যে ৮ জনকে ভিডি দেখে চিহ্নিত করা হয় বলে পুলিশ বলছে।
সাজ্জাত আলী বলেন, ‘ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে।’ তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া অভির ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল ব্যবসায়ী সোহাগের প্রতি। একাধিকবার সোহাগ তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাছাড়া দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ সোহাগ এক চেটিয়া ব্যবসা করে আসছিল।’
প্রাথমিক জেরার মুখের অভির দেয়া তথ্য তুলে ধরে সাজ্জাত আলী বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর অভি বলেছে, ২০১৮ সারে সোহাগ তার ফুটপাথের দোকান দখল করার সময়, মোবাইলও কেড়ে নেয় সোগাগ। এই মোবাইলে তার স্ত্রীর সঙ্গে (অভির স্ত্রী) ব্যক্তিগত ভিডিও ছিল। এই ভিডিও দিয়ে তার সঙ্গে সোহাগ প্রতারণা করত। এসব কারণে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করে বলেও জানিয়েছেন অভির।’
মামলার এজাহার নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, এজাহার নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হলো, মামলার এজাহারের জন্য প্রথমে লাল চাঁদের সাবেক স্ত্রী লাকি আক্তার থানায় আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তার সৎভাইও থানায় আসেন। তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে ২৩ জনকে আসামি করে একটি খসড়া এজাহার প্রস্তুত করেন। একই সময়ে লাল চাঁদের বড় বোন মঞ্জুয়ারা বেগম থানায় এসে এজাহার দাখিলের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তখন মঞ্জুয়ারার সামনে আগের খসড়া উপস্থাপন করা হয়। সে সময় তার মেয়ে খসড়া এজাহারের ছবি তুলে রাখেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত মঞ্জুয়ারাই বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মঞ্জুয়ারা খসড়া এজাহার থেকে ৫ জনের নাম বাদ দিয়ে নতুন একজনের নাম সংযোজন করে মোট ১৯ জনকে আসামি করেন। তার লিখিত এজাহারের ভিত্তিতে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। এজাহার একটি প্রাথমিক তথ্যবিবরণী মাত্র। এজাহারে উল্লেখিত ঘটনা তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চান, এই নারকীয় ঘটনায় জড়িত সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি এ ধরনের অপরাধের যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। হত্যার নেপথ্যের কারণ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড হয়নি। লাল চাঁদ আগের সরকারের সময়ে পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন। পটপরিবর্তনের পর আরেকটা গ্রুপ এই ব্যবসায় জড়িয়ে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়। দুই দলই আগে থেকে পরস্পরকে চিনত।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে এ ধরণের ক্ষোভ কাজ করেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় শতাধিক ভিডিও সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে লালাবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। ‘আমাদের বড় সাফল্য ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা।’ পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, ওই হত্যাকাণ্ডে যাদের অংশ নিতে দেখা গেছে এবং নেপথ্যে যাদের নাম আসছে, তারা সবাই সোহাগের পূর্ব পরিচিত। একসময় তাদের কয়েকজন সোহাগের ব্যবসার সহযোগী ছিলেন।
তিন আসামির ৭ দিনের রিমান্ড
সোহাগকে মাথা থেঁতলে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তিন আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেয়। রিমান্ডে যাওয়া তিন আসামি হলেনÑ নান্নু কাজী, রেজওয়ান উদ্দিন ওরফে অভিজিৎ বসু ও তারেক রহমান রবিন। তাদের মধ্যে ৩৫ বছর বযসী রেজওয়ান উদ্দিন অভিকে গত মঙ্গলবার রাতে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার থেকে করা হয় বলে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামান তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ুম হোসেন নয়ন ১০ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানির পর আদালত তাদের ৭ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয় বলে জানিয়েছেন প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই তানভীর মোর্শেদ চৌধুরী। এর আগে ১০ জুলাই মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে রিমান্ডে পাঠানো হয়। রবিনকে অস্ত্র মামলায় দুই দিনের রিমান্ডে পাঠানোর পর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। গত শনিবার ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয় টিটন গাজী নামে আরেক আসামিকে। পরদিন রোববার মো. আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনিরের ৪ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। গত সোমবার দুই ভাই সজীব বেপারী ও রাজীব বেপারীকে ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার মহিনকে আবার ৫ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৯ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর একদল লোক ব্যবাসায়ী সোহাগকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর পুলিশ অস্ত্র মামলা দায়ের করে। এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।