সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তরে প্রায় ১১১ কোটি টাকার নির্মাণ ও সংস্কারকাজে ‘সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি’র নামে যেভাবে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থাটি বলেছে, সরকারি অর্থ ব্যয়ে ক্রয়ের ক্ষেত্রে যেভাবে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা এড়িয়ে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির যুক্তিতে কাজ দেয়া হয়েছে, তা রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বুধবার(১৬-০৭-২০২৫) টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারক ও আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়নের ঘটনা তুলে ধরার জন্য গণভবনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর করার প্রশংসনীয় উদ্যোগটি এখন প্রশ্নের মুখে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রকল্পের সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই গৃহীত হয়েছিল এবং ক্রয়নীতি অনুযায়ী উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার জন্য দরপত্র ডাকাসহ যথাযথ নীতি অনুসরণের জন্য সময়ও হাতে ছিল। অথচ প্রায় সাত মাস সময় পার করে নির্ধারিত সময়সীমার তিন সপ্তাহ আগে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি বেছে নিয়ে সরকারি ক্রয় বিধিমালার ৭৬ (১) ও ৭৬ (২) ধারাকে পাশ কাটানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির ব্যবহার কোনোভাবেই অবাধ প্রতিযোগিতা এড়াতে বা নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুকূল্য প্রদর্শনের জন্য করা যাবে না এবং এই পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় এর প্রয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের প্রক্রিয়াটি কোনো বিশেষায়িত ক্রয় নয় উল্লেখ করে টিআইবি বলছে, ‘এ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিক (ইএম) এবং পূর্ত খাতের প্রায় ১১১ কোটি টাকার কাজ দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন হলো, নিয়মিত এ ক্রয়ের জন্য কেন সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে? এ কাজের জন্য যে দুটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হলো তা কিসের ভিত্তিতে? কোন যুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচিত করা হলো; কার্যাদেশের মূল্য নির্ধারণের ভিত্তিই-বা কী? ’
এত বড় অঙ্কের অর্থের কাজ কোনো উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া প্রদান করায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ ও সদ্ব্যবহারের প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, একদিকে যেখানে সরকার দুর্নীতি দমনসহ রাষ্ট্র সংস্কারের অভীষ্টের কথা বলছে, সেখানে সরকারি ক্রয়ে এ ধরনের মূলনীতি লঙ্ঘন আত্মঘাতী ও স্ববিরোধী।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর যথেষ্ট সময় থাকার পরও কেন বিলম্ব হলো, দরপত্র ছাড়া কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন কেন হলো, পুরো বিষয়টি কি উদ্দেশ্যমূলক, এ ধরনের প্রশ্নের নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানাই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, টিআইবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, দুর্নীতিবিরোধী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহারে পর্যাপ্ত স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত না হলে সব সংস্কার ও উত্তরণের কথা কেবল লোকদেখানো হয়েই থাকবে, যার ফল হবে দুর্নীতিকে স্বাভাবিকতা প্রদানের ধারাকে অব্যাহত রাখা ও উৎসাহিত করা।
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তরে প্রায় ১১১ কোটি টাকার নির্মাণ ও সংস্কারকাজে ‘সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি’র নামে যেভাবে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থাটি বলেছে, সরকারি অর্থ ব্যয়ে ক্রয়ের ক্ষেত্রে যেভাবে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা এড়িয়ে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির যুক্তিতে কাজ দেয়া হয়েছে, তা রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বুধবার(১৬-০৭-২০২৫) টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারক ও আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়নের ঘটনা তুলে ধরার জন্য গণভবনকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর করার প্রশংসনীয় উদ্যোগটি এখন প্রশ্নের মুখে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রকল্পের সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই গৃহীত হয়েছিল এবং ক্রয়নীতি অনুযায়ী উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার জন্য দরপত্র ডাকাসহ যথাযথ নীতি অনুসরণের জন্য সময়ও হাতে ছিল। অথচ প্রায় সাত মাস সময় পার করে নির্ধারিত সময়সীমার তিন সপ্তাহ আগে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি বেছে নিয়ে সরকারি ক্রয় বিধিমালার ৭৬ (১) ও ৭৬ (২) ধারাকে পাশ কাটানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির ব্যবহার কোনোভাবেই অবাধ প্রতিযোগিতা এড়াতে বা নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুকূল্য প্রদর্শনের জন্য করা যাবে না এবং এই পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় এর প্রয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের প্রক্রিয়াটি কোনো বিশেষায়িত ক্রয় নয় উল্লেখ করে টিআইবি বলছে, ‘এ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিক (ইএম) এবং পূর্ত খাতের প্রায় ১১১ কোটি টাকার কাজ দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি দেয়া হয়েছে। প্রশ্ন হলো, নিয়মিত এ ক্রয়ের জন্য কেন সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে? এ কাজের জন্য যে দুটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হলো তা কিসের ভিত্তিতে? কোন যুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচিত করা হলো; কার্যাদেশের মূল্য নির্ধারণের ভিত্তিই-বা কী? ’
এত বড় অঙ্কের অর্থের কাজ কোনো উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া প্রদান করায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ ও সদ্ব্যবহারের প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, একদিকে যেখানে সরকার দুর্নীতি দমনসহ রাষ্ট্র সংস্কারের অভীষ্টের কথা বলছে, সেখানে সরকারি ক্রয়ে এ ধরনের মূলনীতি লঙ্ঘন আত্মঘাতী ও স্ববিরোধী।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর যথেষ্ট সময় থাকার পরও কেন বিলম্ব হলো, দরপত্র ছাড়া কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রয়োজন কেন হলো, পুরো বিষয়টি কি উদ্দেশ্যমূলক, এ ধরনের প্রশ্নের নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানাই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, টিআইবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, দুর্নীতিবিরোধী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহারে পর্যাপ্ত স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত না হলে সব সংস্কার ও উত্তরণের কথা কেবল লোকদেখানো হয়েই থাকবে, যার ফল হবে দুর্নীতিকে স্বাভাবিকতা প্রদানের ধারাকে অব্যাহত রাখা ও উৎসাহিত করা।