কারফিউতে গোপালগঞ্জ, শুক্রবারের ছবি - প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ ও সংহিসতার ঘটনায় চলমান কারফিউর মধ্যে ১৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে মুকসুদপুরে ৬৬ জন, গোপালগঞ্জ সদরে ৪৫, কাশিয়ানীতে ২৪, টুঙ্গিপাড়ায় ১৭ ও কোটালীপাড়া থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫
মুকসুদপুরে ৬৬ জন,
সদরে ৪৫, কাশিয়ানীতে ২৪, টুঙ্গিপাড়ায় ১৭ ও কোটালীপাড়া থেকে ১২ জন
গ্রেপ্তার
৭৫ জনের নাম উল্লেখ
ও অজ্ঞাত সাড়ে ৪শ’
থেকে ৫শ’ জনকে আসামি করে মামলা
শুক্রবার,(১৮ জুলাই ২০২৫) বিকেলের মধ্যে গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির সাজেদুর রহমান।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫
গোপালগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সী (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ জনে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে তিনটার দিকে তিনি মারা যান। রমজান মুন্সির ভাই জামাল মুন্সি তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা আছে। রমজান মুন্সী গত ১৬ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০১ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি হন।
নিহত রমজান মুন্সির ভাই জামাল মুন্সি জানান, তার ভাই রিকশা চালাতেন। গত বুধবারের সংঘর্ষের সময় তিনি এক যাত্রীকে পৌঁছে দিতে রিকশা নিয়ে লঞ্চঘাট এলাকায় যান। তখন সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
রমজান কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেন জামাল মুন্সি। তিনি ভাইয়ের হত্যার বিচার দাবি করেন। জামাল আরও বলেন, পোস্ট মর্টেম শেষে লাশ সন্ধ্যার দিকে গোপালগঞ্জে আসবে। তারপর জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় এ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হলো। এর আগে গত বুধবার ঘটনার দিনই চারজন নিহত হন। তারা হলেন- মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশের দোকানি সোহেল মোল্লা (৩৫), পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহা (২৫), ক্রোকারিজ পণ্যের দোকান কর্মচারী ইমন তালুকদার (১৭) ও টাইলস মিস্ত্রির সহকারী রমজান কাজী (১৮)।
গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে রমজান মুন্সি গত বুধবার বিকেলে আমাদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। তাই তাকে উন্নত
চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় মামলা
গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, মারপিট গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-১৫। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বাদী হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা-সাধারণ সম্পাদক আতাউর পিয়ালসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান শুক্রবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, গত বুধবার সকালে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুরে পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক অতর্কিতে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হামলা করে। তারপর তারা পুলিশ সদস্যদের মারপিট ও গাড়ি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় পুলিশ পরিদর্শক আহম্মেদ আলীসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।
অনির্দিষ্টকালের কারফিউ
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ শুরু হয়েছে।
বেলা ১১টা থেকে ৩ ঘণ্টার বিরতি দিয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত করফিউ শিথিল ছিল।
তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল হওয়ার পর গোপালগঞ্জ শহরে এখন কিছুটা প্রাণের সঞ্চার হয়। বেড়ে যায় যানবাহন চলাচল ও লোকজনের উপস্থিতি। কিছু দোকানপাট খুলেছে, চলেছে বেচাকেনা।
তখন গোপালগঞ্জ শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত লঞ্চঘাটসংলগ্ন রাস্তায় প্রচুর ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পো (মাহিন্দ্র) চলছে। সড়কে রয়েছে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল। জরুরি দরকারে বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটছেন মানুষ। মূল সড়কের পাশের ও গলির ভেতর বেশ কিছু দোকান খুলেছে। তবে মার্কেট বন্ধ রয়েছে। বাজারের বেশিরভাগ দোকান খোলেনি।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ফল-সবজির মতো কাঁচাপণ্যের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। দোকান বন্ধ থাকায় তাদের পণ্য পচে যাচ্ছে।
শহরের বড় বাজারের ফল ব্যবসায়ী রতন সাহা বলেন, কারফিউয়ে দোকান খুলতে না পারায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছি। তিন দিনে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ফল পচে গেছে। আজ তিন ঘণ্টার জন্য দোকান খুলেছি। কিন্তু এই সময়ে আর কতটুকু বিক্রি করা যায়। বাকি ফলগুলোও পচে যাবে। আমরা চাই, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসুক।
শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্কতার সঙ্গে টহল ও অবস্থান করতে দেখা গেছে।
ফের কারফিউ শুরুর পর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শহরে যান চলাচল কমেছে। শহরের অলিতে-গলিতে মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে এসেছে।
গত বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-সংঘর্ষের পর রাত ৮টা থেকে চলছে কারফিউ।
গোপালগঞ্জে নদীপথে টহল জোরদার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী
গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান, নদীপথে টহল জোরদার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
শুক্রবার দুপুরে কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো
সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর সংঘটিত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে দুষ্কৃতিকারীরা নদীপথ ব্যবহার করে যেন পালিয়ে যেতে না পারে, সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জ জেলার নদীপথে বিশেষ টহল পরিচালনা করছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা দিন-রাত টহল চালিয়ে যাচ্ছেন। সন্দেহভাজন নৌযানসমূহে তল্লাশি, যাত্রীর পরিচয় যাচাই ও সন্দেহভাজন গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
কারফিউতে গোপালগঞ্জ, শুক্রবারের ছবি - প্রতিনিধি
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ ও সংহিসতার ঘটনায় চলমান কারফিউর মধ্যে ১৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে মুকসুদপুরে ৬৬ জন, গোপালগঞ্জ সদরে ৪৫, কাশিয়ানীতে ২৪, টুঙ্গিপাড়ায় ১৭ ও কোটালীপাড়া থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫
মুকসুদপুরে ৬৬ জন,
সদরে ৪৫, কাশিয়ানীতে ২৪, টুঙ্গিপাড়ায় ১৭ ও কোটালীপাড়া থেকে ১২ জন
গ্রেপ্তার
৭৫ জনের নাম উল্লেখ
ও অজ্ঞাত সাড়ে ৪শ’
থেকে ৫শ’ জনকে আসামি করে মামলা
শুক্রবার,(১৮ জুলাই ২০২৫) বিকেলের মধ্যে গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির সাজেদুর রহমান।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫
গোপালগঞ্জ শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সী (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ জনে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে তিনটার দিকে তিনি মারা যান। রমজান মুন্সির ভাই জামাল মুন্সি তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা আছে। রমজান মুন্সী গত ১৬ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০১ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি হন।
নিহত রমজান মুন্সির ভাই জামাল মুন্সি জানান, তার ভাই রিকশা চালাতেন। গত বুধবারের সংঘর্ষের সময় তিনি এক যাত্রীকে পৌঁছে দিতে রিকশা নিয়ে লঞ্চঘাট এলাকায় যান। তখন সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।
রমজান কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেন জামাল মুন্সি। তিনি ভাইয়ের হত্যার বিচার দাবি করেন। জামাল আরও বলেন, পোস্ট মর্টেম শেষে লাশ সন্ধ্যার দিকে গোপালগঞ্জে আসবে। তারপর জানাজা শেষে দাফন করা হবে।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় এ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হলো। এর আগে গত বুধবার ঘটনার দিনই চারজন নিহত হন। তারা হলেন- মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশের দোকানি সোহেল মোল্লা (৩৫), পোশাক ব্যবসায়ী দীপ্ত সাহা (২৫), ক্রোকারিজ পণ্যের দোকান কর্মচারী ইমন তালুকদার (১৭) ও টাইলস মিস্ত্রির সহকারী রমজান কাজী (১৮)।
গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে রমজান মুন্সি গত বুধবার বিকেলে আমাদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। তাই তাকে উন্নত
চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় মামলা
গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, মারপিট গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-১৫। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বাদী হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লা-সাধারণ সম্পাদক আতাউর পিয়ালসহ ৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান শুক্রবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, গত বুধবার সকালে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট আঞ্চলিক সড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুরে পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক অতর্কিতে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হামলা করে। তারপর তারা পুলিশ সদস্যদের মারপিট ও গাড়ি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় পুলিশ পরিদর্শক আহম্মেদ আলীসহ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।
অনির্দিষ্টকালের কারফিউ
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ শুরু হয়েছে।
বেলা ১১টা থেকে ৩ ঘণ্টার বিরতি দিয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত করফিউ শিথিল ছিল।
তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল হওয়ার পর গোপালগঞ্জ শহরে এখন কিছুটা প্রাণের সঞ্চার হয়। বেড়ে যায় যানবাহন চলাচল ও লোকজনের উপস্থিতি। কিছু দোকানপাট খুলেছে, চলেছে বেচাকেনা।
তখন গোপালগঞ্জ শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত লঞ্চঘাটসংলগ্ন রাস্তায় প্রচুর ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও টেম্পো (মাহিন্দ্র) চলছে। সড়কে রয়েছে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল। জরুরি দরকারে বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটছেন মানুষ। মূল সড়কের পাশের ও গলির ভেতর বেশ কিছু দোকান খুলেছে। তবে মার্কেট বন্ধ রয়েছে। বাজারের বেশিরভাগ দোকান খোলেনি।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ফল-সবজির মতো কাঁচাপণ্যের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। দোকান বন্ধ থাকায় তাদের পণ্য পচে যাচ্ছে।
শহরের বড় বাজারের ফল ব্যবসায়ী রতন সাহা বলেন, কারফিউয়ে দোকান খুলতে না পারায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছি। তিন দিনে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ফল পচে গেছে। আজ তিন ঘণ্টার জন্য দোকান খুলেছি। কিন্তু এই সময়ে আর কতটুকু বিক্রি করা যায়। বাকি ফলগুলোও পচে যাবে। আমরা চাই, দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসুক।
শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্কতার সঙ্গে টহল ও অবস্থান করতে দেখা গেছে।
ফের কারফিউ শুরুর পর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। শহরে যান চলাচল কমেছে। শহরের অলিতে-গলিতে মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে এসেছে।
গত বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-সংঘর্ষের পর রাত ৮টা থেকে চলছে কারফিউ।
গোপালগঞ্জে নদীপথে টহল জোরদার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী
গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান, নদীপথে টহল জোরদার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
শুক্রবার দুপুরে কোস্টগার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো
সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর সংঘটিত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে দুষ্কৃতিকারীরা নদীপথ ব্যবহার করে যেন পালিয়ে যেতে না পারে, সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জ জেলার নদীপথে বিশেষ টহল পরিচালনা করছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা দিন-রাত টহল চালিয়ে যাচ্ছেন। সন্দেহভাজন নৌযানসমূহে তল্লাশি, যাত্রীর পরিচয় যাচাই ও সন্দেহভাজন গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।