কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে শুক্রবার আধিপত্য ও চাঁদা দাবিতে বাজারে হামলা, ভাংচুর, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের আধিপত্য ও চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে দেবীদ্বার ও মুরাদনগরের দু’পক্ষের মধ্যে দিনভর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বাস কাউন্টার ও ২০টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ১০-১২ জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার,(১৮ জুলাই ২০২৫) জুমার নামাজ চলাকালে। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার ও মুরাদনগর থানা পুলিশ এবং সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত উভয় ঘটনাস্থলে থমথমে বিরাজ করছে বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের ‘ফারজানা কাউন্টার’র পরিচালক দেবীদ্বার পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি গ্রামের মো. ইসমাইলের পুত্র আল আমিন (৪০)’র নিকট মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর গ্রামের কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী, বাস কাউন্টার চালাতে হলে তাদের মাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়ার দাবি জানান। আল আমিন চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বাখরনগর গ্রামের দুই শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী বিভিন্ন মারণাস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়াপাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এক রণক্ষেত্র তৈরি হয় এবং সড়কের উভয় পাশে যান ও মাল পরিহনের দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষ ভাগ হয়ে, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ গোমতী নদীর ব্রিজের দক্ষিণপাড়ে দেবীদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ি গ্রামের লোকজন এবং গোমতী ব্রিজের উত্তরপাড়ে মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর গ্রামের লোকজন অবস্থান নেয়।
এ সময় বাখরনগরের সশস্ত্র হামলাকারীরা কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল ও বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাস কাউন্টার ও বাজারের দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও গণলুটপাট চালায়। হামলাকারীরা ‘ফারজানা বাস কাউন্টার’, ‘ফারহানা বাস কাউন্টার’, ‘হানিফ বাস কাউন্টার’সহ বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টার ভাংচুর এবং কোম্পানীগঞ্জ বাজারের অন্তত ২০টি দোকান লুটপাট, ভাংচুর ও কুপিয়ে পিটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
‘ফারজানা কাউন্টার’র পরিচালক আল আমিন (৪০) জানান, ‘আমাদের ‘ফারজানা বাস কাউন্টারের অধীনে প্রায় ৯৩৮ জন শ্রমিক রয়েছেন।
আমি তা নিয়ন্ত্রণ করি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টায় বাখরনগর গ্রামের ২০/২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাস কাউন্টারে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, বাস কাউন্টার চালাতে হলে, তাদের মাসে ৫০ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হবে। নচেৎ কাউন্টার চালাতে পারব না বলে জানায়। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে, আমাকে বাঁচাতে আসা কয়েকজন শ্রমিকও তাদের মারধরের শিকার হন। আমি দৌড়ে পালিয়ে জীবন বাঁচাই। ওই ঘটনায় শুক্রবার সকালে মুরাদনগর থানায় বাখরনগর গ্রামের মো. সোহেল (৩০), নাঈম (২৫), উজ্জল (৩০), রাজামিয়া (২৬) ও শ্যাম্পু (২৮)সহ ১১ জনকে এজহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগপত্র থানায় জমা দেই। ওই ঘটনায় শুক্রবার জুমার নামাজের সময় প্রায় ২/৩ শত সশস্ত্র সন্ত্রাসী এ অতর্কিত হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। আমার কাউন্টারে রক্ষিত ৩০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।’
কোম্পানীগঞ্জ ‘সাফল্য বহুমূখী সমবায় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, বাখরনগর গ্রামের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ‘সাফল্য বহুমূখী সমবায় সমিতি’র কার্যালয় ভেঙে নগদ ৫ লাখ টাকা লুট ও গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কাগজপত্রাদি নিয়ে যায়। কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের বিভিন্ন পরিবহনের অধিকাংশ গাড়ির মালিক দেবীদ্বার ভিংলা বাড়ি গ্রামের। এছাড়াও ঐতিহ্যবাহী কোম্পানীগঞ্জ বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী দেবীদ্বারের। তাই বাখরনগরের সশস্ত্র হামলাকারীরা বাস কাউন্টার, বাজারের দোকানপাট ভাংচুরসহ লাখ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার ওসি শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, বাস টার্মিনালের আধিপত্য ও চাঁদাবাজি নিয়ে দেবীদ্বারের ভিংলাবাড়ি ও মুরাদনগরের বাখরনগরের লোকদের মধ্যে ধাওয়াপাল্টা ধাওয়া হয়।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, সিম্পল ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আজ উভয়পক্ষকে ডেকে এনে সৃষ্ট ঘটনার মীমাংসার উদ্যোগ নেব।
কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে শুক্রবার আধিপত্য ও চাঁদা দাবিতে বাজারে হামলা, ভাংচুর, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
কুমিল্লার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের আধিপত্য ও চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে দেবীদ্বার ও মুরাদনগরের দু’পক্ষের মধ্যে দিনভর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, বাস কাউন্টার ও ২০টি দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ১০-১২ জন আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার,(১৮ জুলাই ২০২৫) জুমার নামাজ চলাকালে। সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার ও মুরাদনগর থানা পুলিশ এবং সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত উভয় ঘটনাস্থলে থমথমে বিরাজ করছে বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের ‘ফারজানা কাউন্টার’র পরিচালক দেবীদ্বার পৌর এলাকার ভিংলাবাড়ি গ্রামের মো. ইসমাইলের পুত্র আল আমিন (৪০)’র নিকট মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর গ্রামের কিছু সশস্ত্র সন্ত্রাসী, বাস কাউন্টার চালাতে হলে তাদের মাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়ার দাবি জানান। আল আমিন চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, শুক্রবার জুমার নামাজের সময় বাখরনগর গ্রামের দুই শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী বিভিন্ন মারণাস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়াপাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় এক রণক্ষেত্র তৈরি হয় এবং সড়কের উভয় পাশে যান ও মাল পরিহনের দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষ ভাগ হয়ে, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ গোমতী নদীর ব্রিজের দক্ষিণপাড়ে দেবীদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ি গ্রামের লোকজন এবং গোমতী ব্রিজের উত্তরপাড়ে মুরাদনগর উপজেলার বাখরনগর গ্রামের লোকজন অবস্থান নেয়।
এ সময় বাখরনগরের সশস্ত্র হামলাকারীরা কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল ও বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাস কাউন্টার ও বাজারের দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর ও গণলুটপাট চালায়। হামলাকারীরা ‘ফারজানা বাস কাউন্টার’, ‘ফারহানা বাস কাউন্টার’, ‘হানিফ বাস কাউন্টার’সহ বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টার ভাংচুর এবং কোম্পানীগঞ্জ বাজারের অন্তত ২০টি দোকান লুটপাট, ভাংচুর ও কুপিয়ে পিটিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
‘ফারজানা কাউন্টার’র পরিচালক আল আমিন (৪০) জানান, ‘আমাদের ‘ফারজানা বাস কাউন্টারের অধীনে প্রায় ৯৩৮ জন শ্রমিক রয়েছেন।
আমি তা নিয়ন্ত্রণ করি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯টায় বাখরনগর গ্রামের ২০/২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাস কাউন্টারে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, বাস কাউন্টার চালাতে হলে, তাদের মাসে ৫০ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হবে। নচেৎ কাউন্টার চালাতে পারব না বলে জানায়। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে, আমাকে বাঁচাতে আসা কয়েকজন শ্রমিকও তাদের মারধরের শিকার হন। আমি দৌড়ে পালিয়ে জীবন বাঁচাই। ওই ঘটনায় শুক্রবার সকালে মুরাদনগর থানায় বাখরনগর গ্রামের মো. সোহেল (৩০), নাঈম (২৫), উজ্জল (৩০), রাজামিয়া (২৬) ও শ্যাম্পু (২৮)সহ ১১ জনকে এজহার নামীয় ও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগপত্র থানায় জমা দেই। ওই ঘটনায় শুক্রবার জুমার নামাজের সময় প্রায় ২/৩ শত সশস্ত্র সন্ত্রাসী এ অতর্কিত হামলা ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। আমার কাউন্টারে রক্ষিত ৩০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।’
কোম্পানীগঞ্জ ‘সাফল্য বহুমূখী সমবায় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, বাখরনগর গ্রামের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ‘সাফল্য বহুমূখী সমবায় সমিতি’র কার্যালয় ভেঙে নগদ ৫ লাখ টাকা লুট ও গুরুত্বপূর্ণ ফাইল কাগজপত্রাদি নিয়ে যায়। কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের বিভিন্ন পরিবহনের অধিকাংশ গাড়ির মালিক দেবীদ্বার ভিংলা বাড়ি গ্রামের। এছাড়াও ঐতিহ্যবাহী কোম্পানীগঞ্জ বাজারের অধিকাংশ ব্যবসায়ী দেবীদ্বারের। তাই বাখরনগরের সশস্ত্র হামলাকারীরা বাস কাউন্টার, বাজারের দোকানপাট ভাংচুরসহ লাখ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে দেবীদ্বার থানার ওসি শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, বাস টার্মিনালের আধিপত্য ও চাঁদাবাজি নিয়ে দেবীদ্বারের ভিংলাবাড়ি ও মুরাদনগরের বাখরনগরের লোকদের মধ্যে ধাওয়াপাল্টা ধাওয়া হয়।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান জানান, সিম্পল ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আজ উভয়পক্ষকে ডেকে এনে সৃষ্ট ঘটনার মীমাংসার উদ্যোগ নেব।