বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছর ১৯ জুলাই আজকের এই দিনে ছাত্র জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল রংপুর মহানগরী। আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে এতে ৬ জন নিহত হয়। আহত হয় অর্ধশতাধিক মানুষ। এক বছরেও এসব ঘটনায় মূল আসামিরা কেউই গ্রেপ্তার হয়নি।
এক বছরেও মামলার তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই
মামলা নিয়ে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ
৬ মামলাতেই মামলার বাদীরা অনেক আসামির পক্ষে আদালতে এফিডেফিট করে বলেছেন, আসামিদের চেনেন না
এক বছরেও মামলার প্রধান আসামিদের মধ্যে একজনও পুলিশ ও প্রশাসনের কমকর্তাদের গ্রেপ্তার না করার অভিযোগ
মামলার তদন্ত করার নামে চলছে টালবাহানার অভিযোগ। অন্যদিকে ৬টি হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রায় ৭শ’ আসামির অধিকাংশকে মামলার বাদীরা এফিডেফিট করে বলেছে তাদের চেনে না তাদের নামে মামলা করে নাই। এদের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার ডিসি, এসপিসহ পুলিশের উচ্চপদস্থ থেকে এস আই পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও আছে। ফলে ৬ হত্যা মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে খোদ তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাসহ আইনজীবীদের মাঝে নানান শঙ্কা।
জানা গেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় পুরো রংপুর মহানগরী অগ্নিগর্ভে রূপ ধারণ করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্র জনতাও যোগ দেয়। বিক্ষোভে উত্তাল ছিল রংপুর। ১৯ জুলাই বেলা ১২টার দিকে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ছাত্র জনতার বিশাল বিক্ষোভ মিছিল রংপুর সিটি বাজারের কাছে আসলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা বড় বড় ব্যাকি, রামদা, ছুরি ও পিস্তল নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায়। এক ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলাকালে আন্দোলনকারী হাজার হাজার ছাত্র জনতার প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটে। এ সময় পুলিশ তাদের রক্ষা করতে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে কলা ব্যবসায়ী মেরাজুল, শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাহির, ব্যবসায়ী সাজ্জাদ, স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী মোসলেম উদ্দিন, অটোচালক মানিক ও যুবক মাহমুদুল হাসান মুন্নাসহ ৬ জন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় অর্ধশতাধিক ছাত্র জনতা।
৬ জন নিহত হবার ঘটনায় ৫ আগস্টের পর রংপুর মেট্রোপলিটান কোতয়ালী থানায় ৬টি হত্যা মামলা
দায়ের করে নিহতের স্বজনরা। ওই ৬ মামলায় আসামি করা হয় ২ হাজার ৬শ’ ৩৬ জন। প্রতিটি মামলায় এজাহারে পুলিশের কমিশনার, ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ, সুপারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন জনকে আসামি করা হয়। এক বছর অতিবাহিত হবার পরেও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহাম্মেদ নীলফামারীর ডিমলার এমপি আফতাব আহাম্মেদ মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আটক আছে এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের ১শ’ ২৫ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও গুলিবর্ষণকারী, নির্দ্দেশদাতা, মদদদাতা কোনো পুলিশ কোনো কর্মকর্তাকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ স্বজনদের। ৬টি হত্যার মধ্যে ৪টি হত্যা মামলা রংপুর সিআইডি তদন্ত করলেও কোনো অগ্রগতি নেই বলছেন রংপুর সিআইডির প্রধান পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী।
এ ব্যাপারে ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে ৬ জনের পক্ষে হত্যা মামলা দায়েরকারী কলা ব্যবসায়ী মেরাজুল হত্যা মামলার বাদি তার মা আম্বিয়া বেগম জানিয়েছেন, তাকে তার বাসায় কয়েকজন আইনজীবী এসে ছেলে হত্যার বিচারের জন্য আদালতে মামলা করার জন্য আসতে বলেন। মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে তা তিনি জানেন না। পরে শুনেছেন ২১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যাদের কাউকেই তিনি চেনেন না। পরে কয়েকজনের পক্ষে আদালতে এফিডেফিট করে বলেছেন মামলায় তাদের নাম দেই নাই চিনিও না। একইভাবে শিক্ষার্থী আব্দুল্লা আল তাহির হত্যা মামলার বাদী হয়েছেন তার বাবা আব্দুর রহমান মামলায় ৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও অজ্ঞাত দেয়া হয়েছে আরো ২/৩শ’ জন। একইভাবে ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হত্যা মামলার বাদী হয়েছেন তার স্ত্রী জিতু বেগম তিনিও ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করলেও অজ্ঞাত নামা উল্লেখ করেছেন ৩শ’ জন। অন্যদিকে স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী মোসলেম উদ্দিন হত্যা মামলার বাদী হয়েছেন তার স্ত্রী দিলরুবা বেগম মামলায় ১৭ জনের নাম দেয়া হলেও অজ্ঞাত অনেকে উল্লেখ করা হয়েছে। যুবক মাহমুদুল হক মুন্না হত্যা মামলার বাদী তার বাবা আব্দুল মজিদ। মামলায় ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও অজ্ঞাত অনেকে এবং অটোচালক মানিক হত্যা মামলায় বাদী হয়েছেন তার মা নুর জাহান বেগম। মামলায় ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ৬টি হত্যা মামলার বাদীরা কেউই কাদের আসামি করা হয়েছে তা জানেন না বলে স্বীকার করে বলেছেন। অনেককে এফিডেফিট করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে আসামিরা ঘটনার সময় ছিল না চেনে না।
এদিকে সাজ্জাদ হত্যা মামলার বাদী জিতু বেগমের আদালতে সম্বপাদন করা এফিডেফিটে গত ২৬/০৯/২৪ইং তারিখে উল্লেখ করেছেন তার মামলার আসামি হিসেবে সাবেক মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার সাবেক এসি এমরান, আরিফসহ ১৫ জন বিভিন্ন ফেইসবুকের পোস্টে দেখে মামলা দায়ের করা হলেও কিন্তু তারা ঘটনার সময় ছিল না। তাদের অসৎ উদ্দেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
একইভাবে অটোচালক মানিক হত্যা মামলার বাদী ৫০/৬০ জন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাম প্রত্যাহার করে আদালতে এফিডেফিট জমা দিয়েছে। (এরকম অনেক এফিডেফিটের কপি এ প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত আছে)
এ ব্যাপারে রংপুরের সিনিয়র আইনজীবী রইছ উদ্দিন বাদশা অ্যাডভোকেট জানান মামলা দায়ের করার পর চিনি না আসামি করি নাই বলে এফিডেফিট করলে এতে আইনগত কোনো ভ্যালু নেই। তবে মামলাটি দুর্বল হয়ে যায়। এভাবে মামলা করার নামে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য হয়েছে। অনেক নিরীহ মানুষকে ফাঁসানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর মুখ্য সমন্ময়ক নাহিদ হাসান খন্দকার বলেন, রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহতদের মামলা নিয়ে বাণিজ্য হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগ করেন শতকরা ৮০ ভাগ আসামি নিরপরাধ। তিনি বলেন, ‘৬টি হত্যা মামলায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা যারা আসামি তাদের একজনকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। অথচ ওরাই মূল আসামি গুলি করেছে, হুকুম দিয়েছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে রক্ষা করতে চেয়েছে।’ তিনি বলেন, পুলিশে এখনও ফ্যাসিস্টদের দোসর আছে।
৬টি হত্যা মামলার মধ্যে ৪টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। এ ব্যাপারে রংপুর সিআইডির পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী বলেন, তদন্ত চলছে কতদিন শেষ হতে লাগবে তা জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা। তবে নিহতদের পরিবার দাবি করেছে প্রকৃত হত্যা কারীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি তাদের।
শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছর ১৯ জুলাই আজকের এই দিনে ছাত্র জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল রংপুর মহানগরী। আন্দোলনকারী ছাত্র জনতার ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে এতে ৬ জন নিহত হয়। আহত হয় অর্ধশতাধিক মানুষ। এক বছরেও এসব ঘটনায় মূল আসামিরা কেউই গ্রেপ্তার হয়নি।
এক বছরেও মামলার তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই
মামলা নিয়ে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ
৬ মামলাতেই মামলার বাদীরা অনেক আসামির পক্ষে আদালতে এফিডেফিট করে বলেছেন, আসামিদের চেনেন না
এক বছরেও মামলার প্রধান আসামিদের মধ্যে একজনও পুলিশ ও প্রশাসনের কমকর্তাদের গ্রেপ্তার না করার অভিযোগ
মামলার তদন্ত করার নামে চলছে টালবাহানার অভিযোগ। অন্যদিকে ৬টি হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রায় ৭শ’ আসামির অধিকাংশকে মামলার বাদীরা এফিডেফিট করে বলেছে তাদের চেনে না তাদের নামে মামলা করে নাই। এদের মধ্যে বিভাগীয় কমিশনার ডিসি, এসপিসহ পুলিশের উচ্চপদস্থ থেকে এস আই পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও আছে। ফলে ৬ হত্যা মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে খোদ তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাসহ আইনজীবীদের মাঝে নানান শঙ্কা।
জানা গেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় পুরো রংপুর মহানগরী অগ্নিগর্ভে রূপ ধারণ করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্র জনতাও যোগ দেয়। বিক্ষোভে উত্তাল ছিল রংপুর। ১৯ জুলাই বেলা ১২টার দিকে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ছাত্র জনতার বিশাল বিক্ষোভ মিছিল রংপুর সিটি বাজারের কাছে আসলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা বড় বড় ব্যাকি, রামদা, ছুরি ও পিস্তল নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায়। এক ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলাকালে আন্দোলনকারী হাজার হাজার ছাত্র জনতার প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটে। এ সময় পুলিশ তাদের রক্ষা করতে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে কলা ব্যবসায়ী মেরাজুল, শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাহির, ব্যবসায়ী সাজ্জাদ, স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী মোসলেম উদ্দিন, অটোচালক মানিক ও যুবক মাহমুদুল হাসান মুন্নাসহ ৬ জন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় অর্ধশতাধিক ছাত্র জনতা।
৬ জন নিহত হবার ঘটনায় ৫ আগস্টের পর রংপুর মেট্রোপলিটান কোতয়ালী থানায় ৬টি হত্যা মামলা
দায়ের করে নিহতের স্বজনরা। ওই ৬ মামলায় আসামি করা হয় ২ হাজার ৬শ’ ৩৬ জন। প্রতিটি মামলায় এজাহারে পুলিশের কমিশনার, ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ, সুপারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন জনকে আসামি করা হয়। এক বছর অতিবাহিত হবার পরেও সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহাম্মেদ নীলফামারীর ডিমলার এমপি আফতাব আহাম্মেদ মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আটক আছে এছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের ১শ’ ২৫ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও গুলিবর্ষণকারী, নির্দ্দেশদাতা, মদদদাতা কোনো পুলিশ কোনো কর্মকর্তাকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ স্বজনদের। ৬টি হত্যার মধ্যে ৪টি হত্যা মামলা রংপুর সিআইডি তদন্ত করলেও কোনো অগ্রগতি নেই বলছেন রংপুর সিআইডির প্রধান পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী।
এ ব্যাপারে ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে ৬ জনের পক্ষে হত্যা মামলা দায়েরকারী কলা ব্যবসায়ী মেরাজুল হত্যা মামলার বাদি তার মা আম্বিয়া বেগম জানিয়েছেন, তাকে তার বাসায় কয়েকজন আইনজীবী এসে ছেলে হত্যার বিচারের জন্য আদালতে মামলা করার জন্য আসতে বলেন। মামলায় কাদের আসামি করা হয়েছে তা তিনি জানেন না। পরে শুনেছেন ২১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যাদের কাউকেই তিনি চেনেন না। পরে কয়েকজনের পক্ষে আদালতে এফিডেফিট করে বলেছেন মামলায় তাদের নাম দেই নাই চিনিও না। একইভাবে শিক্ষার্থী আব্দুল্লা আল তাহির হত্যা মামলার বাদী হয়েছেন তার বাবা আব্দুর রহমান মামলায় ৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও অজ্ঞাত দেয়া হয়েছে আরো ২/৩শ’ জন। একইভাবে ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হত্যা মামলার বাদী হয়েছেন তার স্ত্রী জিতু বেগম তিনিও ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করলেও অজ্ঞাত নামা উল্লেখ করেছেন ৩শ’ জন। অন্যদিকে স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী মোসলেম উদ্দিন হত্যা মামলার বাদী হয়েছেন তার স্ত্রী দিলরুবা বেগম মামলায় ১৭ জনের নাম দেয়া হলেও অজ্ঞাত অনেকে উল্লেখ করা হয়েছে। যুবক মাহমুদুল হক মুন্না হত্যা মামলার বাদী তার বাবা আব্দুল মজিদ। মামলায় ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও অজ্ঞাত অনেকে এবং অটোচালক মানিক হত্যা মামলায় বাদী হয়েছেন তার মা নুর জাহান বেগম। মামলায় ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ৬টি হত্যা মামলার বাদীরা কেউই কাদের আসামি করা হয়েছে তা জানেন না বলে স্বীকার করে বলেছেন। অনেককে এফিডেফিট করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে আসামিরা ঘটনার সময় ছিল না চেনে না।
এদিকে সাজ্জাদ হত্যা মামলার বাদী জিতু বেগমের আদালতে সম্বপাদন করা এফিডেফিটে গত ২৬/০৯/২৪ইং তারিখে উল্লেখ করেছেন তার মামলার আসামি হিসেবে সাবেক মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার সাবেক এসি এমরান, আরিফসহ ১৫ জন বিভিন্ন ফেইসবুকের পোস্টে দেখে মামলা দায়ের করা হলেও কিন্তু তারা ঘটনার সময় ছিল না। তাদের অসৎ উদ্দেশে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
একইভাবে অটোচালক মানিক হত্যা মামলার বাদী ৫০/৬০ জন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাম প্রত্যাহার করে আদালতে এফিডেফিট জমা দিয়েছে। (এরকম অনেক এফিডেফিটের কপি এ প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত আছে)
এ ব্যাপারে রংপুরের সিনিয়র আইনজীবী রইছ উদ্দিন বাদশা অ্যাডভোকেট জানান মামলা দায়ের করার পর চিনি না আসামি করি নাই বলে এফিডেফিট করলে এতে আইনগত কোনো ভ্যালু নেই। তবে মামলাটি দুর্বল হয়ে যায়। এভাবে মামলা করার নামে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য হয়েছে। অনেক নিরীহ মানুষকে ফাঁসানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর মুখ্য সমন্ময়ক নাহিদ হাসান খন্দকার বলেন, রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহতদের মামলা নিয়ে বাণিজ্য হয়েছে উল্লেখ করে অভিযোগ করেন শতকরা ৮০ ভাগ আসামি নিরপরাধ। তিনি বলেন, ‘৬টি হত্যা মামলায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা যারা আসামি তাদের একজনকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। অথচ ওরাই মূল আসামি গুলি করেছে, হুকুম দিয়েছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে রক্ষা করতে চেয়েছে।’ তিনি বলেন, পুলিশে এখনও ফ্যাসিস্টদের দোসর আছে।
৬টি হত্যা মামলার মধ্যে ৪টি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি। এ ব্যাপারে রংপুর সিআইডির পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী বলেন, তদন্ত চলছে কতদিন শেষ হতে লাগবে তা জানাতে পারেননি এই কর্মকর্তা। তবে নিহতদের পরিবার দাবি করেছে প্রকৃত হত্যা কারীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি তাদের।