ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে বিকেল পর্যন্ত ভর্তি করা হয় ৫১ জনকে, যাদের অধিকাংশই ছিল সংকটাপন্ন
দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকৃতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে, উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ১. দগ্ধ ও আহত এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে ২. ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে আনা হয়েছে উদ্ধার হওয়া আরেক শিক্ষার্থীকে -সোহরাব আলম
প্রায় সাড়ে তিনটা। উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে পৌঁছতে বেগ পেতে হচ্ছিল। কেননা অনেক মানুষ তখন ছুটছিল হাসপাতালটির দিকে।
দেখা গেল একের পর এক অ্যাম্বুলেস আসছে। ভিড়ের মধ্য দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলোর পথ বের করে দেয়ার চেষ্টা করছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। অ্যাম্বুলেন্সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আহতদের আনা হচ্ছে। তাদের অনেকের শরীরে জামাকাপড় নেই বললেই চলে, পুড়ে গেছে। শরীর যে ঝলসে গেছে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। সেখানকার একজন চিকিৎসক জানালেন, যাদের আনা হয়েছে, তাদের দুজন সম্ভবত বেঁচে নেই। তখন পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি আহত চিকিৎসা নিচ্ছিল। যারা বেশি গুরুতর তাদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল।
তখনও অনেকের স্বজন হাসপাতাল পৌঁছাতে পারেনি। স্বজনদের অনেকেই তখনও স্কুলের সামনে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে সন্তান বা পরিবারের সদস্যদের খুঁজছেন। ততক্ষণে সেখানে উদ্ধার তৎপরতায় নেমে গেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আগুন নেভাচ্ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ সময় কিছু সহপাঠী বিশেষ করে যারা একটু ওপরের শ্রেণীর এবং যেসব অভিভাবক তাদের সন্তানদের খুঁজে পেয়েছেন তাদের অনেকেই আহত শিক্ষার্থীদের স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও একই পরিস্থিতি। অ্যাম্বুলেন্সে করে একের পর এক আসছে আহতরা। উৎসুকদের ভিড়। সেই ভিড় ঠেলে অ্যাম্বুলেন্সগুলো ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে। এখানেও ভিড় সামলাতে দেখা গেল স্বেচ্ছাসেবীদের।
অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে আহত রোগী, যাদের অনেককে অক্সিজেন দেয়া। দূর থেকে দেখা গেছে, একেক অ্যাম্বুলেন্স থেকে দুই-তিনজন করে রোগী নামানো হচ্ছে। বেশিরভাগই শরীর ঝলসে যাওয়া, জামাকাপড় পুড়ে যাওয়া, বেশিরভাগ অল্প বয়সের শিশু।
তবে হাসপাতালের ভেতরে ঢোকার সুযোগ ছিল না।
তাদের আত্মীয়স্বজনরা ছোটাছুটি করছিলেন। তাদের কারও সঙ্গেই কথা বলার সুযোগ ছিল না।
সংবাদকর্মীদেরও দেখা যায় বাইরে থেকেই সংবাদ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
ছ’টার দিকে বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক নাসিরউদ্দিন কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তিনি জানান, ৫১ জন রোগী তখন পর্যন্ত ভর্তি করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশের অবস্থা সংকটাপন্ন।
ইতোমধ্যেই যথেষ্ট পরিমাণ রক্ত সংগ্রহ হয়েছে। আপাতত আর রক্তের দরকার নেই। তবে যারা রক্ত দিতে ইচ্ছুক তাদের যোগাযোগের নম্বর রেখে যাওয়ার জন্য বলেন তিনি।
বিএনসিসিতে সম্পৃক্ত মাইলস্টোনের এক ছাত্র সংবাদকে জানান, মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের নিচতলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ক্লাস চলছিল। ওপরে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস চলছিল। ছুটির ঠিক আগে। নিয়মিত ক্লাস শেষ হলে কোচিং ক্লাস হয় সেখানে। ঠিক সেই সময় বিমানটি এসে পড়ে।
তার বর্ণনা মতে, দোতলা সেই ভবনের ওপরে আঘাত করে নিচতলায় পর্যন্ত ঢুকে যায়।
ওই শিক্ষার্থীর আশঙ্কা তিনি যে শিক্ষিকাকে ক্লাস নিতে দেখেছিলেন তিনি সম্ভবত আর বেঁচে নেই।
ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে বিকেল পর্যন্ত ভর্তি করা হয় ৫১ জনকে, যাদের অধিকাংশই ছিল সংকটাপন্ন
দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকৃতদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে, উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ১. দগ্ধ ও আহত এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে ২. ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে আনা হয়েছে উদ্ধার হওয়া আরেক শিক্ষার্থীকে -সোহরাব আলম
সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
প্রায় সাড়ে তিনটা। উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে পৌঁছতে বেগ পেতে হচ্ছিল। কেননা অনেক মানুষ তখন ছুটছিল হাসপাতালটির দিকে।
দেখা গেল একের পর এক অ্যাম্বুলেস আসছে। ভিড়ের মধ্য দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলোর পথ বের করে দেয়ার চেষ্টা করছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। অ্যাম্বুলেন্সে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আহতদের আনা হচ্ছে। তাদের অনেকের শরীরে জামাকাপড় নেই বললেই চলে, পুড়ে গেছে। শরীর যে ঝলসে গেছে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। সেখানকার একজন চিকিৎসক জানালেন, যাদের আনা হয়েছে, তাদের দুজন সম্ভবত বেঁচে নেই। তখন পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি আহত চিকিৎসা নিচ্ছিল। যারা বেশি গুরুতর তাদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিল।
তখনও অনেকের স্বজন হাসপাতাল পৌঁছাতে পারেনি। স্বজনদের অনেকেই তখনও স্কুলের সামনে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে সন্তান বা পরিবারের সদস্যদের খুঁজছেন। ততক্ষণে সেখানে উদ্ধার তৎপরতায় নেমে গেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আগুন নেভাচ্ছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ সময় কিছু সহপাঠী বিশেষ করে যারা একটু ওপরের শ্রেণীর এবং যেসব অভিভাবক তাদের সন্তানদের খুঁজে পেয়েছেন তাদের অনেকেই আহত শিক্ষার্থীদের স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও একই পরিস্থিতি। অ্যাম্বুলেন্সে করে একের পর এক আসছে আহতরা। উৎসুকদের ভিড়। সেই ভিড় ঠেলে অ্যাম্বুলেন্সগুলো ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে। এখানেও ভিড় সামলাতে দেখা গেল স্বেচ্ছাসেবীদের।
অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে আহত রোগী, যাদের অনেককে অক্সিজেন দেয়া। দূর থেকে দেখা গেছে, একেক অ্যাম্বুলেন্স থেকে দুই-তিনজন করে রোগী নামানো হচ্ছে। বেশিরভাগই শরীর ঝলসে যাওয়া, জামাকাপড় পুড়ে যাওয়া, বেশিরভাগ অল্প বয়সের শিশু।
তবে হাসপাতালের ভেতরে ঢোকার সুযোগ ছিল না।
তাদের আত্মীয়স্বজনরা ছোটাছুটি করছিলেন। তাদের কারও সঙ্গেই কথা বলার সুযোগ ছিল না।
সংবাদকর্মীদেরও দেখা যায় বাইরে থেকেই সংবাদ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
ছ’টার দিকে বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক নাসিরউদ্দিন কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তিনি জানান, ৫১ জন রোগী তখন পর্যন্ত ভর্তি করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশের অবস্থা সংকটাপন্ন।
ইতোমধ্যেই যথেষ্ট পরিমাণ রক্ত সংগ্রহ হয়েছে। আপাতত আর রক্তের দরকার নেই। তবে যারা রক্ত দিতে ইচ্ছুক তাদের যোগাযোগের নম্বর রেখে যাওয়ার জন্য বলেন তিনি।
বিএনসিসিতে সম্পৃক্ত মাইলস্টোনের এক ছাত্র সংবাদকে জানান, মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের নিচতলায় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ক্লাস চলছিল। ওপরে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস চলছিল। ছুটির ঠিক আগে। নিয়মিত ক্লাস শেষ হলে কোচিং ক্লাস হয় সেখানে। ঠিক সেই সময় বিমানটি এসে পড়ে।
তার বর্ণনা মতে, দোতলা সেই ভবনের ওপরে আঘাত করে নিচতলায় পর্যন্ত ঢুকে যায়।
ওই শিক্ষার্থীর আশঙ্কা তিনি যে শিক্ষিকাকে ক্লাস নিতে দেখেছিলেন তিনি সম্ভবত আর বেঁচে নেই।