alt

জাতীয়

‘যান্ত্রিক ত্রুটিতে’ বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ, জনবিরল এলাকায় নেয়ার ‘চেষ্টা করেন’ বৈমানিক: আইএসপিআর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্তের সময় থেকে উড্ডয়নের পর ‘যান্ত্রিক ত্রুটির’ সম্মুখীন হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সোমবার,(২১ জুলাই ২০২৫) এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সোমবার ((২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলার বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় (যার বিস্তারিত তদন্তসাপেক্ষে জানানো হবে)।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জানিয়েছে, দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওই বিমানের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের একটি ভবনে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।

এছাড়াও দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য ইতোমধ্যে বিমানবাহিনীর একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হওয়া এফ-৭ বিজিআই বিমানটি মূলত চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের একটি যুদ্ধবিমান। এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট হালকা ওজনের যুদ্ধবিমান তৈরি করে চীনের চেংডু এয়ারক্রাফট করপোরেশন (সিএসি)। অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য চীনে এটি জে-৭ নামে পরিচিত। তবে রপ্তানির সময় এর নামকরণ হয় এফ-৭।

১৯৬০ থেকে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির বহরে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় উড়তে সক্ষম ও দ্রুতগামী জেট ছিল জে-৭। আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট এয়ারফোর্স টেকনোলজি ডটকম-এর তথ্যানুযায়ী, জে-৭ এর নকশার অনুপ্রেরণা নেয়া হয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়কালে তৈরি যুদ্ধবিমান এমআইজে-২১ থেকে।

এভিয়েশনভিত্তিক ওয়েবসাইট এয়ারোস্পেস গ্লোবাল নিউজের তথ্যানুযায়ী, রপ্তানির সময় চীনা কোম্পানিটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান

আমদানিকারকের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করে। সে সময় এর নামের সঙ্গে কিছু সংকেত ব্যবহার করা হয়। যেমন, বাংলাদেশ যদি এই সিরিজের যুদ্ধবিমান আমদানি করে তাহলে এফ-৭-এর পর ইংরেজি অক্ষর ‘বি’ যুক্ত হবে। আর গ্লাস ককপিটের নকশার ক্ষেত্রে ‘জি’ এবং উন্নত সংস্করণ বোঝাতে ইম্প্রুভড এর ‘আই’ যুক্ত হবে। এ সংস্করণের যুদ্ধবিমানে থাকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল গ্লাস ককপিট, উন্নত রাডার ব্যবস্থা ও অ্যাভিওনিক্স (ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা) প্রযুক্তি।

এ বিমানের ককপিটে একজন বৈমানিক বসতে পারেন। এর রেডার ব্যবস্থা ‘কেএলজে-৬এফ’ সংস্করণের। এটি সাড়ে ১৭ হাজার মিটার পর্যন্ত উঁচুতে চলাচল করতে পারে। এর ককপিটে সব তথ্য আধুনিক ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দেখানো হয়।

এয়ারোস্পেস গ্লোবাল নিউজ (এজিএন) বলছে, এই ধরনের জেট সারা বিশ্বেই আকাশ প্রতিরক্ষা, বহুমুখী অভিযান ও পাইলদের প্রশিক্ষণের জন্যও ব্যবহার হয়। তবে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের চেয়ে এর দুর্ঘটনার হার বেশি। এর কারণ, পুরোনো নকশার এয়ারফ্রেম, সীমিত নিরাপত্তা, আধুনিক ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাব।

এভিয়েশনভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর তথ্যানুযায়ী, এফ-৭ কম স্বয়ংক্রিয় যুদ্ধবিমান। তাই দ্রুতগতিতে এবং কম উচ্চতায় প্রশিক্ষণের সময় পাইলটদের বিশেষ মনোযোগের প্রয়োজন হয়।

লাইটওয়েট মাল্টিরোল ফাইটার ধরনের এই যুদ্ধবিমানগুলোর গতি সাধারণত মাক ২ দশমিক ২ বা শব্দের গতির অন্তত ২ দশমিক ২ গুণ। এগুলোতে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড বোমা, জিপিএস গাইডেড বোমা এবং বাড়তি জ্বালানি ট্যাংক ও অস্ত্র বহনের জন্য পাঁচটি হার্ড পয়েন্ট রয়েছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো ১ হাজার ৫০০ কেজির মতো ভার বহন করতে পারে।

এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-৭ এমবি। ওই দুই ঘটনায় দুজন বৈমানিক নিহত হন।

বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর বাফা-৭৬ ব্যাচের। তৌকির ইসলাম রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। পরে পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজের ৩৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। এক বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সোমবার জীবনের প্রথম একক ফ্লাইট ছিল তার বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। বিমান প্রশিক্ষকদের মতে, একজন বৈমানিককে সলো বা একক ফ্লাইটের জন্য এককভাবে বিমান চালাতে প্রস্তুত করা হয়, যখন সে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়, তখনই তাকে প্রথম সলো ফ্লাইটে পাঠানো হয়। এই ফ্লাইটে পাইলটকে সম্পূর্ণ একা সব সিদ্ধান্ত নিতে হয় রানওয়ে নির্বাচন, টেক-অফ, ইন-ফ্লাইট ম্যানুভারিং এবং ল্যান্ডিংসহ সবকিছু তার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে।

জানা গেছে, পাইলট তৌকিরের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের কানসার্ট এলাকায়। পরিবার নিয়ে রাজশাহী নগরীর উপশহরের তিন নম্বর সেক্টরের আশ্রয় নামের একটি বাড়ির তিনতলায় ভাড়া থাকেন। নিহত তৌকিরের বাবা তোহরুল ইসলাম। তিনি পেশায় সোনামসজিদ স্থলবন্দরে পাথর ব্যবসায়ী। আর মা সালেহা খাতুন গৃহিণী।

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশ

চিকিৎসা ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষায় এআই চালুর উদ্যোগ

পীরগাছায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, মামলা দায়ের

চৌদ্দ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি শিশু ধর্ষণচেষ্টার প্রধান আসামি

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন নিয়ে রিজভীর প্রশ্ন

ছবি

টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত শার্শার ঠেঙামারী ও আওয়ালী বিল

চরম আবহাওয়ায় রেকর্ড খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি, বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে: গবেষণা

ছবি

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ৩ জনের লাশ উত্তোলন

এক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন পাইলট তৌকির

ছবি

দুর্ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতাল সর্বত্রই স্বজনদের আহাজারি

নিহত অন্তত ২০

ছবি

দুই হাসপাতালে একের পর এক আসছিল অ্যাম্বুলেন্স

ছবি

বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির শোক

ছবি

সংস্কার প্রশ্নে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাকি আর ১০ দিন, আলী রীয়াজের তাগাদা

ছবি

উত্তরার দিয়াবাড়িতে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ১

ছবি

‘বিতর্কিত’ তিন নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের তথ্য নিচ্ছে ইসি

হাসিনা ঘনিষ্ঠরা যুক্তরাজ্যে সম্পদ বিক্রি করার খবর, তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেবে দুদক

ছবি

গোপালগঞ্জে প্রশাসন চাইলে রক্তপাত এড়ানো যেত: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

ছবি

৪৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫২০৬

ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ঐকমত্যের পথে রাজনৈতিক দলগুলো, সমন্বিত প্রস্তাবে যা আছে

হাতিরঝিলে চক্রাকার বাস সার্ভিসে র‌্যাপিড পাস চালু

ছবি

বান্দরবানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা: পার্বত্যাঞ্চলে পরিপূর্ণ শান্তি ফেরাতে বর্তমান সরকার গুরুত্বসহকারে দেখছে

পটিয়ায় গৃহবধূর আত্মহত্যা: পরিবারের দাবি নির্যাতনে মৃত্যু

কদমতলীতে মা ও মেয়ে খুন : দুইজনের মৃত্যুদণ্ড

ছবি

জাফলংয়ের পিয়াইন নদীতে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য

ছবি

কৃষি: আবহাওয়ার সঠিক পূর্বাভাস বদলে দিচ্ছে কৃষকের জীবন

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫: তফসিল ঘোষণা ২৯ জুলাই

ডিমলায় মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছে উল্টো করে বেঁধে যুবককে নির্যাতন

বিএমইউতে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপির দ্বিতীয় শিফট চালু

ছবি

সেনাবাহিনীতে পদোন্নতিতে পেশাগত দক্ষতার ওপর জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা

নিবন্ধনে তথ্য ঘাটতি: দ্বিতীয় ধাপে এনসিপিসহ ৮২ দলকে চিঠি দিচ্ছে ইসি

ছবি

দিন দিন রেলপথে আমদানি কমছে বেনাপোলে

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ‘অনেক উন্নত’, ভোটে সমস্যা ‘হবে না’: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এসএসসির ভুয়া প্রশ্ন সরবরাহের ১৭টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট শনাক্ত : সিআইডি

সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধি: প্রথম অব্যাহতি পেল তরুণ ফাইয়াজ

কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ১৫ অক্টোবর

tab

জাতীয়

‘যান্ত্রিক ত্রুটিতে’ বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ, জনবিরল এলাকায় নেয়ার ‘চেষ্টা করেন’ বৈমানিক: আইএসপিআর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্তের সময় থেকে উড্ডয়নের পর ‘যান্ত্রিক ত্রুটির’ সম্মুখীন হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সোমবার,(২১ জুলাই ২০২৫) এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে সোমবার ((২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলার বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় (যার বিস্তারিত তদন্তসাপেক্ষে জানানো হবে)।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জানিয়েছে, দুর্ঘটনা মোকাবিলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওই বিমানের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের একটি ভবনে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।

এছাড়াও দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য ইতোমধ্যে বিমানবাহিনীর একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হওয়া এফ-৭ বিজিআই বিমানটি মূলত চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের একটি যুদ্ধবিমান। এক ইঞ্জিনবিশিষ্ট হালকা ওজনের যুদ্ধবিমান তৈরি করে চীনের চেংডু এয়ারক্রাফট করপোরেশন (সিএসি)। অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য চীনে এটি জে-৭ নামে পরিচিত। তবে রপ্তানির সময় এর নামকরণ হয় এফ-৭।

১৯৬০ থেকে ১৯৯০-এর দশক পর্যন্ত চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির বহরে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় উড়তে সক্ষম ও দ্রুতগামী জেট ছিল জে-৭। আধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট এয়ারফোর্স টেকনোলজি ডটকম-এর তথ্যানুযায়ী, জে-৭ এর নকশার অনুপ্রেরণা নেয়া হয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়কালে তৈরি যুদ্ধবিমান এমআইজে-২১ থেকে।

এভিয়েশনভিত্তিক ওয়েবসাইট এয়ারোস্পেস গ্লোবাল নিউজের তথ্যানুযায়ী, রপ্তানির সময় চীনা কোম্পানিটি এফ-৭ যুদ্ধবিমান

আমদানিকারকের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করে। সে সময় এর নামের সঙ্গে কিছু সংকেত ব্যবহার করা হয়। যেমন, বাংলাদেশ যদি এই সিরিজের যুদ্ধবিমান আমদানি করে তাহলে এফ-৭-এর পর ইংরেজি অক্ষর ‘বি’ যুক্ত হবে। আর গ্লাস ককপিটের নকশার ক্ষেত্রে ‘জি’ এবং উন্নত সংস্করণ বোঝাতে ইম্প্রুভড এর ‘আই’ যুক্ত হবে। এ সংস্করণের যুদ্ধবিমানে থাকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল গ্লাস ককপিট, উন্নত রাডার ব্যবস্থা ও অ্যাভিওনিক্স (ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা) প্রযুক্তি।

এ বিমানের ককপিটে একজন বৈমানিক বসতে পারেন। এর রেডার ব্যবস্থা ‘কেএলজে-৬এফ’ সংস্করণের। এটি সাড়ে ১৭ হাজার মিটার পর্যন্ত উঁচুতে চলাচল করতে পারে। এর ককপিটে সব তথ্য আধুনিক ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দেখানো হয়।

এয়ারোস্পেস গ্লোবাল নিউজ (এজিএন) বলছে, এই ধরনের জেট সারা বিশ্বেই আকাশ প্রতিরক্ষা, বহুমুখী অভিযান ও পাইলদের প্রশিক্ষণের জন্যও ব্যবহার হয়। তবে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের চেয়ে এর দুর্ঘটনার হার বেশি। এর কারণ, পুরোনো নকশার এয়ারফ্রেম, সীমিত নিরাপত্তা, আধুনিক ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভাব।

এভিয়েশনভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর তথ্যানুযায়ী, এফ-৭ কম স্বয়ংক্রিয় যুদ্ধবিমান। তাই দ্রুতগতিতে এবং কম উচ্চতায় প্রশিক্ষণের সময় পাইলটদের বিশেষ মনোযোগের প্রয়োজন হয়।

লাইটওয়েট মাল্টিরোল ফাইটার ধরনের এই যুদ্ধবিমানগুলোর গতি সাধারণত মাক ২ দশমিক ২ বা শব্দের গতির অন্তত ২ দশমিক ২ গুণ। এগুলোতে আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড বোমা, জিপিএস গাইডেড বোমা এবং বাড়তি জ্বালানি ট্যাংক ও অস্ত্র বহনের জন্য পাঁচটি হার্ড পয়েন্ট রয়েছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো ১ হাজার ৫০০ কেজির মতো ভার বহন করতে পারে।

এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-৭ এমবি। ওই দুই ঘটনায় দুজন বৈমানিক নিহত হন।

বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগর বাফা-৭৬ ব্যাচের। তৌকির ইসলাম রাজশাহীর ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। পরে পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। তিনি পাবনা ক্যাডেট কলেজের ৩৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। এক বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সোমবার জীবনের প্রথম একক ফ্লাইট ছিল তার বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। বিমান প্রশিক্ষকদের মতে, একজন বৈমানিককে সলো বা একক ফ্লাইটের জন্য এককভাবে বিমান চালাতে প্রস্তুত করা হয়, যখন সে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়, তখনই তাকে প্রথম সলো ফ্লাইটে পাঠানো হয়। এই ফ্লাইটে পাইলটকে সম্পূর্ণ একা সব সিদ্ধান্ত নিতে হয় রানওয়ে নির্বাচন, টেক-অফ, ইন-ফ্লাইট ম্যানুভারিং এবং ল্যান্ডিংসহ সবকিছু তার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে।

জানা গেছে, পাইলট তৌকিরের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের কানসার্ট এলাকায়। পরিবার নিয়ে রাজশাহী নগরীর উপশহরের তিন নম্বর সেক্টরের আশ্রয় নামের একটি বাড়ির তিনতলায় ভাড়া থাকেন। নিহত তৌকিরের বাবা তোহরুল ইসলাম। তিনি পেশায় সোনামসজিদ স্থলবন্দরে পাথর ব্যবসায়ী। আর মা সালেহা খাতুন গৃহিণী।

back to top