রাজস্ব কমেছে প্রায় ৯০ কোটি টাকার
বেনাপোল স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল -সংবাদ
ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান পথ বেনাপোল-পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন। গত এক বছরে পাসপোর্টধারী যাত্রী কমেছে ১০ লাখের বেশি। এতে ভ্রমণ খাতে রাজস্ব কমেছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ পথে যাতায়াত করেছেন ১১ লাখ ৯০ হাজার ৮২১ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী। এর মধ্যে ভারতে গেছেন ৬ লাখ ৬ হাজার ৪১০, ফিরেছেন ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৪১১ জন। সরকারের আয় হয়েছে প্রায় ১১০ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ রুটে যাতায়াত করেছেন ২২ লাখ ৫ হাজার ৪৭৮ জনযাত্রী। রাজস্ব এসেছিল প্রায় ২০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ভিসা জটিলতাসহ নানান কারণে এক বছরে যাত্রী কমেছে ১০ লাখ ১৪ হাজার ৬৫৭ জন, আর রাজস্ব কমেছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই থেকে ২০ জুলাই এক সপ্তাহে ভারতে যাতায়াত করেছেন ১১ হাজার ৬৫৮ জন। এরমধ্যে ভারতে গেছে, ৬ হাজার ৬৫৫ জন। ভারত থেকে ফিরেছে ৫ হাজার ৩ জন। এরমধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গেছেন ৪ হাজার ১০৭ জন, ভারতে ফিরে গেছেন দুই হাজার ৫৩৪ জন ভারতীয় নাগরিক। একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন দুই হাজার ২৩৪ জন ভারতীয় নাগরিক ও দুই হাজার ৭৫৪ জন বাংলাদেশ নাগরিক।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তন পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চিকিৎসা ও স্টুডেন্ট ছাড়া বাংলাদেশিদের সব ভিসা বন্ধ রেখেছে ভারত। এতে কমে গেছে যাত্রী যাতায়াত। বিভিন্ন রুটের পরিবহনগুলো সামান্য কয়েকজন যাত্রী নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে তাদের গাড়ির তেল খরচ হচ্ছে না। ফলে পরিবহন স্টাফদের বেতন-ভাতা না দিতে পারায় তারা কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যাত্রীর অভাবে দেশ ট্রাভেলসসহ কয়েকটি পরিবহন বন্ধ করে দিতে মালিকপক্ষ বাধ্য হয়েছে। ভিসা বন্ধ থাকায় দুই দেশের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন নাগরিকরা। বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। সহজ যোগাযোগের কারণে চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা ও পর্যটনের জন্য অনেক বাংলাদেশি এ রুটে যাতায়াত করেন। বন্দর এলাকায় নেই পর্যাপ্ত যাত্রীছাউনিসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। শৌচাগার, বিশ্রামাগার, নিরাপত্তাব্যবস্থা সবকিছু নিয়েই অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের।
ভুক্তভোগী পাসপোর্টধারী শ্যামল কুমার রায় বলেন, ভ্রমণ কর বাড়লেও সেবা বাড়েনি। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আরেক পাসপোর্টধারী নূরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে ৫ ঘণ্টায় বেনাপোলে আসা গেলেও ইমিগ্রেশন ও বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয় সকাল সাড়ে ৬টার পর। আগের মতোই দুর্ভোগ রয়ে গেছে।
এছাড়া সীমান্তের দুই পাড়ের ইমিগ্রেশন, কাস্টম ও বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে যাত্রীদের। দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে ছিনতাই ও প্রতারণার শিকার হওয়ার মতো নেতিবাচক অভিজ্ঞতাও আছে অনেকের। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি।
তবে ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ রাজনৈতিক টানাপোড়েনে ভিসা দেয়া একপ্রকার বন্ধ করে রেখেছে ভারত সরকার। এখনও স্বাভাবিক হয়নি ভিসা প্রক্রিয়া। এতেই কমে আসে যাত্রী যাতায়াত। বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, আমাদের প্রায়ই ব্যবসার কাজে যেতে হয় ভারতে। ভারতীয় নাগরিকেরা সহজে বাংলাদেশি ভিসা পেলেও বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমাদের ব্যবসায়ীরা। যাত্রীদের বন্দরে কাঙ্খিত সেবা বাড়েনি। বন্দরে যাত্রী ছাউনি না থাকায় রোদ, বৃষ্টিতে ভিজে যাত্রা করতে হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় প্রতিনিয়ত পাসপোর্টধারীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন চেকপোস্টে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণ ভারতের ভিসা জটিলতা। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়া একরকম বন্ধ করে দেয় ভারত। প্রায় এক বছর হতে চললেও এখন পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক হয়নি। ফলে স্বভাবতই ভারতমুখী যাত্রীদের চাপ কমেছে। বেনাপোল চেকপোস্টের মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, ভারতে চিকিৎসা, ব্যবসায়ী, ছাত্রসহ বিভিন্ন কাজে এ পথে যেত আগে প্রায় ১০ হাজার লোকের উপরে যাত্রী। তাতে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ডলার কেনা-বেচা হত। এতে করে কর্মচারীসহ নিজেদের স্বাচ্ছন্দে দিন কেটে যেত। বর্তমান যে অবস্থা অফিস চালানো দুস্কর হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক (ল্যান্ডপোর্ট) মতিয়ার রহমান বলেন, ভিসা কেন্দ্রগুলো এখন কেবল জরুরি মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সীমিত পরিসরে সট দিচ্ছে। ব্যবসা ও ভ্রমন ভিসার যাত্রীদের সংখ্যা নেই বললেই চলে। ভারত ভিসা সেবা বন্ধ রাখায় ব্যবসা, ভ্রমণ, কিংবা অন্যান্য কাজে বাংলাদেশিরা যেমন যেতে পারছেন না, তেমনি ক্ষতির মুখে পড়ছেন ভারতীয়রাও। আমাদের চেকপোস্টের চেয়ে তাদের চেকপোস্টের অবস্থা আরো করুণ। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সী বলেন, আগে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করতেন। তবে ভিসা জটিলতায় বর্তমানে যাত্রীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩শ’-৪শ’তে। এখন যারা পারাপার হচ্ছেন তাদের অধিকাংশ ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী।
বেনাপোল স্থল বন্দরের সহকারী পরিচালক কাজী রতন জানান, বিদায়ী (২০২৪-২৫) অর্থবছরে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেছে ১১ লাখ ৯০ হাজার ৮২১ জন। ভিসা জটিলতা না কাটলে আগামীতে যাত্রী পারাপার শুন্যের কোটায় এসে দাঁড়াবে। এখন যারা যাতায়াত করছে এদের অধিকাংশই মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসায়। যাত্রী না থাকায় বন্দরের রাজস্ব আয় অনেকটা কমে গেছে। যাত্রী সেবা বাড়াতে বন্দরে যাত্রী ছাউনির জন্য জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলছে। ভারত অংশে ইমিগ্রেশনকেও সেবা বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। যাত্রী নিরাপত্তার প্রতি সজাগ থাকতে সবাইকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।
রাজস্ব কমেছে প্রায় ৯০ কোটি টাকার
বেনাপোল স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
ভারতের সঙ্গে স্থলপথে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান পথ বেনাপোল-পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন। গত এক বছরে পাসপোর্টধারী যাত্রী কমেছে ১০ লাখের বেশি। এতে ভ্রমণ খাতে রাজস্ব কমেছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ পথে যাতায়াত করেছেন ১১ লাখ ৯০ হাজার ৮২১ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী। এর মধ্যে ভারতে গেছেন ৬ লাখ ৬ হাজার ৪১০, ফিরেছেন ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৪১১ জন। সরকারের আয় হয়েছে প্রায় ১১০ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ রুটে যাতায়াত করেছেন ২২ লাখ ৫ হাজার ৪৭৮ জনযাত্রী। রাজস্ব এসেছিল প্রায় ২০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ভিসা জটিলতাসহ নানান কারণে এক বছরে যাত্রী কমেছে ১০ লাখ ১৪ হাজার ৬৫৭ জন, আর রাজস্ব কমেছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই থেকে ২০ জুলাই এক সপ্তাহে ভারতে যাতায়াত করেছেন ১১ হাজার ৬৫৮ জন। এরমধ্যে ভারতে গেছে, ৬ হাজার ৬৫৫ জন। ভারত থেকে ফিরেছে ৫ হাজার ৩ জন। এরমধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গেছেন ৪ হাজার ১০৭ জন, ভারতে ফিরে গেছেন দুই হাজার ৫৩৪ জন ভারতীয় নাগরিক। একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন দুই হাজার ২৩৪ জন ভারতীয় নাগরিক ও দুই হাজার ৭৫৪ জন বাংলাদেশ নাগরিক।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তন পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চিকিৎসা ও স্টুডেন্ট ছাড়া বাংলাদেশিদের সব ভিসা বন্ধ রেখেছে ভারত। এতে কমে গেছে যাত্রী যাতায়াত। বিভিন্ন রুটের পরিবহনগুলো সামান্য কয়েকজন যাত্রী নিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে তাদের গাড়ির তেল খরচ হচ্ছে না। ফলে পরিবহন স্টাফদের বেতন-ভাতা না দিতে পারায় তারা কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। যাত্রীর অভাবে দেশ ট্রাভেলসসহ কয়েকটি পরিবহন বন্ধ করে দিতে মালিকপক্ষ বাধ্য হয়েছে। ভিসা বন্ধ থাকায় দুই দেশের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন নাগরিকরা। বেনাপোল থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। সহজ যোগাযোগের কারণে চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা ও পর্যটনের জন্য অনেক বাংলাদেশি এ রুটে যাতায়াত করেন। বন্দর এলাকায় নেই পর্যাপ্ত যাত্রীছাউনিসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। শৌচাগার, বিশ্রামাগার, নিরাপত্তাব্যবস্থা সবকিছু নিয়েই অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের।
ভুক্তভোগী পাসপোর্টধারী শ্যামল কুমার রায় বলেন, ভ্রমণ কর বাড়লেও সেবা বাড়েনি। রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আরেক পাসপোর্টধারী নূরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে ৫ ঘণ্টায় বেনাপোলে আসা গেলেও ইমিগ্রেশন ও বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয় সকাল সাড়ে ৬টার পর। আগের মতোই দুর্ভোগ রয়ে গেছে।
এছাড়া সীমান্তের দুই পাড়ের ইমিগ্রেশন, কাস্টম ও বন্দর ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে যাত্রীদের। দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে ছিনতাই ও প্রতারণার শিকার হওয়ার মতো নেতিবাচক অভিজ্ঞতাও আছে অনেকের। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি।
তবে ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ রাজনৈতিক টানাপোড়েনে ভিসা দেয়া একপ্রকার বন্ধ করে রেখেছে ভারত সরকার। এখনও স্বাভাবিক হয়নি ভিসা প্রক্রিয়া। এতেই কমে আসে যাত্রী যাতায়াত। বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, আমাদের প্রায়ই ব্যবসার কাজে যেতে হয় ভারতে। ভারতীয় নাগরিকেরা সহজে বাংলাদেশি ভিসা পেলেও বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আমাদের ব্যবসায়ীরা। যাত্রীদের বন্দরে কাঙ্খিত সেবা বাড়েনি। বন্দরে যাত্রী ছাউনি না থাকায় রোদ, বৃষ্টিতে ভিজে যাত্রা করতে হয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় প্রতিনিয়ত পাসপোর্টধারীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন চেকপোস্টে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার মূল কারণ ভারতের ভিসা জটিলতা। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশিদের ভিসা দেয়া একরকম বন্ধ করে দেয় ভারত। প্রায় এক বছর হতে চললেও এখন পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক হয়নি। ফলে স্বভাবতই ভারতমুখী যাত্রীদের চাপ কমেছে। বেনাপোল চেকপোস্টের মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, ভারতে চিকিৎসা, ব্যবসায়ী, ছাত্রসহ বিভিন্ন কাজে এ পথে যেত আগে প্রায় ১০ হাজার লোকের উপরে যাত্রী। তাতে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ডলার কেনা-বেচা হত। এতে করে কর্মচারীসহ নিজেদের স্বাচ্ছন্দে দিন কেটে যেত। বর্তমান যে অবস্থা অফিস চালানো দুস্কর হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক (ল্যান্ডপোর্ট) মতিয়ার রহমান বলেন, ভিসা কেন্দ্রগুলো এখন কেবল জরুরি মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সীমিত পরিসরে সট দিচ্ছে। ব্যবসা ও ভ্রমন ভিসার যাত্রীদের সংখ্যা নেই বললেই চলে। ভারত ভিসা সেবা বন্ধ রাখায় ব্যবসা, ভ্রমণ, কিংবা অন্যান্য কাজে বাংলাদেশিরা যেমন যেতে পারছেন না, তেমনি ক্ষতির মুখে পড়ছেন ভারতীয়রাও। আমাদের চেকপোস্টের চেয়ে তাদের চেকপোস্টের অবস্থা আরো করুণ। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সী বলেন, আগে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করতেন। তবে ভিসা জটিলতায় বর্তমানে যাত্রীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৩শ’-৪শ’তে। এখন যারা পারাপার হচ্ছেন তাদের অধিকাংশ ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী।
বেনাপোল স্থল বন্দরের সহকারী পরিচালক কাজী রতন জানান, বিদায়ী (২০২৪-২৫) অর্থবছরে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেছে ১১ লাখ ৯০ হাজার ৮২১ জন। ভিসা জটিলতা না কাটলে আগামীতে যাত্রী পারাপার শুন্যের কোটায় এসে দাঁড়াবে। এখন যারা যাতায়াত করছে এদের অধিকাংশই মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসায়। যাত্রী না থাকায় বন্দরের রাজস্ব আয় অনেকটা কমে গেছে। যাত্রী সেবা বাড়াতে বন্দরে যাত্রী ছাউনির জন্য জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলছে। ভারত অংশে ইমিগ্রেশনকেও সেবা বাড়াতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। যাত্রী নিরাপত্তার প্রতি সজাগ থাকতে সবাইকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।