মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস। ছবি: ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত, আহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষিকা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আহত, নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সঠিক তালিকা ঠিকানাসহ প্রস্তুত করতে অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল আলমকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন উপাধ্যক্ষ মো. মাসুদ আলম, প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার, কো-অর্ডিনেটর লুৎফুন্নেসা লোপা, অভিভাবক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মোল্লা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মারুফ বিন জিয়াউর রহমান ও মো. তাসনিম ভূঁইয়া। কমিটি আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টা ১২ মিনিটে দিয়াবাড়ির হায়দার আলী ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকদের মধ্যে অনেকে হতাহত হন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ৬৭ জন আহত অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার দিনভর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা ছিল— “নিয়ারলি হান্ড্রেড প্লাস ডেথ”, “লাশের নিরাপত্তা চাই”, “বিচার নয়, লাশের হিসাব চাই”।
এই প্রেক্ষাপটে মাইলস্টোনের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় ফেইসবুক পোস্টে সবাইকে সতর্ক করে লেখেন, “আমি মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের একজন শিক্ষিকা। আপনাদেরকে দুই হাত জোর করে বলছি, ভুল তথ্য ছড়াবেন না।”
তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় তিনি নিজেও আগুনে আটকা পড়েছিলেন এবং নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে স্পষ্ট করেছেন যে স্কুল ছুটি হওয়ার সময় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভবন ত্যাগ করেছিল। তবে কিছু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক দেরিতে ক্লাসে ফেরত গিয়েছিল, যাদের মধ্যে কয়েকজন আহত বা নিহত হয়েছেন।
পূর্ণিমা আরও বলেন, “কিছু শ্রেণিকক্ষে ৮-১০ জন, কিছুতে ৫-৬ জন শিশু ছিল। দ্বিতীয় তলার দুটি ক্লাসরুম ও একটি টিচার্স রুম পুড়ে গেছে, সেখানে ১৫-২০ জন ছিল। করিডোর, দোলনা ও সিঁড়ি ঘরে থাকা অনেকের শরীর পুড়ে চেনা যাচ্ছে না, তাই শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিক্ষকরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শিশুদের জীবন রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। মাহরীন মিস ও মাসুকা মিস শিশুদের রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, মাহফুজা মিস লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
পূর্ণিমা দাস তার স্ট্যাটাসে লেখেন, “হাত জোর করে বলছি— ভুল তথ্য ছড়াবেন না। মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলবেন না।”
এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকেও হতাহতের সংখ্যা গোপন করার কোনো উদ্দেশ্য নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, কলেজ ক্যাম্পাসেই একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে তথ্য হালনাগাদ করা হবে।
মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস। ছবি: ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত, আহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষিকা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেইজে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আহত, নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সঠিক তালিকা ঠিকানাসহ প্রস্তুত করতে অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল আলমকে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন উপাধ্যক্ষ মো. মাসুদ আলম, প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার, কো-অর্ডিনেটর লুৎফুন্নেসা লোপা, অভিভাবক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মোল্লা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মারুফ বিন জিয়াউর রহমান ও মো. তাসনিম ভূঁইয়া। কমিটি আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টা ১২ মিনিটে দিয়াবাড়ির হায়দার আলী ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকদের মধ্যে অনেকে হতাহত হন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ৬৭ জন আহত অবস্থায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার দিনভর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের হাতে থাকা পোস্টারে লেখা ছিল— “নিয়ারলি হান্ড্রেড প্লাস ডেথ”, “লাশের নিরাপত্তা চাই”, “বিচার নয়, লাশের হিসাব চাই”।
এই প্রেক্ষাপটে মাইলস্টোনের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় ফেইসবুক পোস্টে সবাইকে সতর্ক করে লেখেন, “আমি মাইলস্টোনের হায়দার আলী ভবনের একজন শিক্ষিকা। আপনাদেরকে দুই হাত জোর করে বলছি, ভুল তথ্য ছড়াবেন না।”
তিনি জানান, দুর্ঘটনার সময় তিনি নিজেও আগুনে আটকা পড়েছিলেন এবং নিজের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে স্পষ্ট করেছেন যে স্কুল ছুটি হওয়ার সময় অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভবন ত্যাগ করেছিল। তবে কিছু শিক্ষার্থী ও শিক্ষক দেরিতে ক্লাসে ফেরত গিয়েছিল, যাদের মধ্যে কয়েকজন আহত বা নিহত হয়েছেন।
পূর্ণিমা আরও বলেন, “কিছু শ্রেণিকক্ষে ৮-১০ জন, কিছুতে ৫-৬ জন শিশু ছিল। দ্বিতীয় তলার দুটি ক্লাসরুম ও একটি টিচার্স রুম পুড়ে গেছে, সেখানে ১৫-২০ জন ছিল। করিডোর, দোলনা ও সিঁড়ি ঘরে থাকা অনেকের শরীর পুড়ে চেনা যাচ্ছে না, তাই শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শিক্ষকরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শিশুদের জীবন রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। মাহরীন মিস ও মাসুকা মিস শিশুদের রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, মাহফুজা মিস লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।
পূর্ণিমা দাস তার স্ট্যাটাসে লেখেন, “হাত জোর করে বলছি— ভুল তথ্য ছড়াবেন না। মানুষের ইমোশন নিয়ে খেলবেন না।”
এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকেও হতাহতের সংখ্যা গোপন করার কোনো উদ্দেশ্য নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, কলেজ ক্যাম্পাসেই একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে তথ্য হালনাগাদ করা হবে।