অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আট থেকে দশ মাস ধরে অকার্যকর অবস্থায় থাকা তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবি বলেছে, “এই দুই প্রতিষ্ঠানের শূন্যতা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রতি সরকারের অবহেলার একটি অগ্রহণযোগ্য উদাহরণ। সরকারের জন্য এটি বিব্রতকর রেকর্ড হয়েছে।”
বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠন সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও মানবাধিকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতির গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।
তিনি বলেন, “অথচ দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের কাছাকাছি সময় পার হয়ে গেলেও কমিশন দুটি গঠনে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। কেন দীর্ঘকাল যাবৎ তা গঠিত হচ্ছে না, তার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যাও নেই।”
টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, “কমিশন দুটি অতীতে যত অকার্যকরতারই পরিচয় দিক, প্রায় এক বছর নেতৃত্বশূন্য রাখার বিব্রতকর রেকর্ড স্থাপনের পাশাপাশি সরকার তার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও মানবাধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতির প্রতি নির্বিকার অবহেলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন নেতৃত্বহীন রাখা শুধু দুঃখজনক নয়, রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখ্য ম্যান্ডেটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই শূন্যতার ফলে নাগরিকদের তথ্যে অভিগম্যতা ও মানবাধিকার নিশ্চিতের ন্যূনতম সুযোগও ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।”
২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদসহ সব সদস্য পদত্যাগ করেন। এর আগে সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন প্রধান তথ্য কমিশনার ও এক কমিশনার। তখন থেকেই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে এ দুটি প্রতিষ্ঠান। এরপর আট থেকে দশ মাস পার হলেও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বা প্রধান তথ্য কমিশনার হিসেবে কেউ দায়িত্ব নেননি। ফলে ভুক্তভোগীরা সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
টিআইবির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “প্রায় এক বছর তথ্য কমিশন না থাকা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, বরং তথ্যপ্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকারকে উপেক্ষা করার শামিল। তথ্য কমিশন না থাকায় সরকারি তথ্য না পেলে তার সমাধানে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়েছে। কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা মূলত ফাঁকাবুলিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে এ ধরনের নজির আগে কখনও দেখা যায়নি, এমনকি বিশ্বে অন্য কোথাও এ নজির নেই।”
অবিলম্বে কমিশন দুটি গঠনের দাবি জানিয়ে টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, “পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময়ে মানবাধিকার কমিশন শুধু কাগুজে প্রতিষ্ঠান হয়েছিল। সেই সরকার পতনের পর মানবাধিকার কমিশন শক্তিশালীভাবে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে এমন প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবতা আরও হতাশাজনক হয়েছে। আইনগত বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও এত দীর্ঘ সময় কমিশন গঠন করতে ব্যর্থতা দেশে মানবাধিকার নিশ্চিতে সরকারের সদিচ্ছার ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এমন এক সময়ে যখন জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশে স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তখন দেশের নিজস্ব মানবাধিকার কমিশন শূন্য রাখা দ্বিচারিতার পরিচায়ক।”
টিআইবি গণতন্ত্র, সুশাসন, তথ্যপ্রকাশ ও মানবাধিকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি পালনে অবিলম্বে তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠনের পাশাপাশি উভয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে স্বাধীন, দক্ষ ও জনগণের আস্থাযোগ্য করতে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারেরও দাবি জানিয়েছে।
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর আট থেকে দশ মাস ধরে অকার্যকর অবস্থায় থাকা তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবি বলেছে, “এই দুই প্রতিষ্ঠানের শূন্যতা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রতি সরকারের অবহেলার একটি অগ্রহণযোগ্য উদাহরণ। সরকারের জন্য এটি বিব্রতকর রেকর্ড হয়েছে।”
বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠন সরকারের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও মানবাধিকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতির গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।
তিনি বলেন, “অথচ দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের কাছাকাছি সময় পার হয়ে গেলেও কমিশন দুটি গঠনে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। কেন দীর্ঘকাল যাবৎ তা গঠিত হচ্ছে না, তার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যাও নেই।”
টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, “কমিশন দুটি অতীতে যত অকার্যকরতারই পরিচয় দিক, প্রায় এক বছর নেতৃত্বশূন্য রাখার বিব্রতকর রেকর্ড স্থাপনের পাশাপাশি সরকার তার অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও মানবাধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতির প্রতি নির্বিকার অবহেলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন নেতৃত্বহীন রাখা শুধু দুঃখজনক নয়, রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখ্য ম্যান্ডেটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই শূন্যতার ফলে নাগরিকদের তথ্যে অভিগম্যতা ও মানবাধিকার নিশ্চিতের ন্যূনতম সুযোগও ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।”
২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদসহ সব সদস্য পদত্যাগ করেন। এর আগে সেপ্টেম্বরে পদত্যাগ করেন প্রধান তথ্য কমিশনার ও এক কমিশনার। তখন থেকেই অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে এ দুটি প্রতিষ্ঠান। এরপর আট থেকে দশ মাস পার হলেও মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বা প্রধান তথ্য কমিশনার হিসেবে কেউ দায়িত্ব নেননি। ফলে ভুক্তভোগীরা সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
টিআইবির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “প্রায় এক বছর তথ্য কমিশন না থাকা শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, বরং তথ্যপ্রাপ্তির সাংবিধানিক অধিকারকে উপেক্ষা করার শামিল। তথ্য কমিশন না থাকায় সরকারি তথ্য না পেলে তার সমাধানে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়েছে। কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা মূলত ফাঁকাবুলিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশে এ ধরনের নজির আগে কখনও দেখা যায়নি, এমনকি বিশ্বে অন্য কোথাও এ নজির নেই।”
অবিলম্বে কমিশন দুটি গঠনের দাবি জানিয়ে টিআইবির বিবৃতিতে বলা হয়, “পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময়ে মানবাধিকার কমিশন শুধু কাগুজে প্রতিষ্ঠান হয়েছিল। সেই সরকার পতনের পর মানবাধিকার কমিশন শক্তিশালীভাবে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে এমন প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবতা আরও হতাশাজনক হয়েছে। আইনগত বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও এত দীর্ঘ সময় কমিশন গঠন করতে ব্যর্থতা দেশে মানবাধিকার নিশ্চিতে সরকারের সদিচ্ছার ঘোষণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এমন এক সময়ে যখন জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বাংলাদেশে স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তখন দেশের নিজস্ব মানবাধিকার কমিশন শূন্য রাখা দ্বিচারিতার পরিচায়ক।”
টিআইবি গণতন্ত্র, সুশাসন, তথ্যপ্রকাশ ও মানবাধিকারের প্রতি রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি পালনে অবিলম্বে তথ্য কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গঠনের পাশাপাশি উভয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে স্বাধীন, দক্ষ ও জনগণের আস্থাযোগ্য করতে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারেরও দাবি জানিয়েছে।