জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর অতিক্রম হতে না হতেই পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘মতপার্থক্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ থাকলেও ‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার।
উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পর ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠকের পরদিন বুধবার,(২৩ জুলাই ২০২৫) আরও ১২টি রাজনৈতিক দল এবং একটি জোটের নেতাদের সঙ্গে বুধবার বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় বিকেলে এ বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরে আমাদের আয়োজন ছিল সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে নিয়ে অতীতকে স্মরণ করা, সেজন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। এতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে ঐক্যটা দৃশ্যমান হতো। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মতপার্থক্য, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার। তা না হলে তারা এটাকে সুযোগ মনে করছে।’
বৈঠকে অংশ নেয়া সব দল ‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও গণঐক্য বজায় রাখার বিষয়ে ‘একমত’ পোষণ করে, এ কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছে, দলগুলোর নেতারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টাকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তারা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এবং ‘ফ্যাসিবাদ’ প্রতিহত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও নিয়মিত সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ জানান।
এর আগে বিকেল ৩টায় এ বৈঠক শুরু হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির তানিয়া রব, ১২-দলীয় জোটের শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণফোরামের মিজানুর রহমান বৈঠকে অংশ নেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে প্রধান উপদেষ্টা চারটি রাজনৈতিক দলকে ডেকেছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, আপনাদের মধ্যে যে ঐক্য আছে, সেটা আরেকটু দৃশ্যমান হলে ভালো হয়। গঠনমূলক কোনো কর্মসূচি দিয়ে হোক, অথবা যে কোনোভাবে হোক, আপনার যদি একসঙ্গে থাকেন, তাহলে মানুষের মনে স্বস্তি আসবে।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ঐক্যের প্রমাণ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলো উপস্থাপন করে যে, মাঠে উনারা নিজেদের মধ্যে যাই বলুন না কেন, প্রধান উপদেষ্টা ডাকলে সবাই একসঙ্গে হাজির হন। ঐক্য থাকার আরেকটা প্রমাণ হচ্ছে যে দলগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়ে নিয়মিত যাচ্ছে।’
গত সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ ছয় দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারকে তারা দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এদিকে মাইলস্টোনের ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর ঘোষণা দিতে দেরি হওয়ায় এদিন দুপুরে সচিবালয়ে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভ দেখায় কয়েকশ’ শিক্ষার্থী। সেখানে তারা ভাঙচুরও চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি এই আন্দোলনের পেছনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের হাত দেখতে পাওয়ার কথা বলেছে। ইসলামী আন্দোলনও যে একই ধারণা পোষণ করছে, সে কথা বৈঠক শেষে তুলে ধরেছেন আতাউর রহমান।
বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর অতিক্রম হতে না হতেই পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘মতপার্থক্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ থাকলেও ‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার।
উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পর ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠকের পরদিন বুধবার,(২৩ জুলাই ২০২৫) আরও ১২টি রাজনৈতিক দল এবং একটি জোটের নেতাদের সঙ্গে বুধবার বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় বিকেলে এ বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছরে আমাদের আয়োজন ছিল সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে নিয়ে অতীতকে স্মরণ করা, সেজন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। এতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে ঐক্যটা দৃশ্যমান হতো। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মতপার্থক্য, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যকে আরও দৃশ্যমান করা দরকার। তা না হলে তারা এটাকে সুযোগ মনে করছে।’
বৈঠকে অংশ নেয়া সব দল ‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও গণঐক্য বজায় রাখার বিষয়ে ‘একমত’ পোষণ করে, এ কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছে, দলগুলোর নেতারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টাকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে তারা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এবং ‘ফ্যাসিবাদ’ প্রতিহত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও নিয়মিত সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ জানান।
এর আগে বিকেল ৩টায় এ বৈঠক শুরু হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে সৈয়দ হাসিবউদ্দিন হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির তানিয়া রব, ১২-দলীয় জোটের শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণফোরামের মিজানুর রহমান বৈঠকে অংশ নেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে প্রধান উপদেষ্টা চারটি রাজনৈতিক দলকে ডেকেছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, আপনাদের মধ্যে যে ঐক্য আছে, সেটা আরেকটু দৃশ্যমান হলে ভালো হয়। গঠনমূলক কোনো কর্মসূচি দিয়ে হোক, অথবা যে কোনোভাবে হোক, আপনার যদি একসঙ্গে থাকেন, তাহলে মানুষের মনে স্বস্তি আসবে।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ঐক্যের প্রমাণ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলো উপস্থাপন করে যে, মাঠে উনারা নিজেদের মধ্যে যাই বলুন না কেন, প্রধান উপদেষ্টা ডাকলে সবাই একসঙ্গে হাজির হন। ঐক্য থাকার আরেকটা প্রমাণ হচ্ছে যে দলগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়ে নিয়মিত যাচ্ছে।’
গত সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ ছয় দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারকে তারা দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এদিকে মাইলস্টোনের ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর ঘোষণা দিতে দেরি হওয়ায় এদিন দুপুরে সচিবালয়ে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভ দেখায় কয়েকশ’ শিক্ষার্থী। সেখানে তারা ভাঙচুরও চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি এই আন্দোলনের পেছনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের হাত দেখতে পাওয়ার কথা বলেছে। ইসলামী আন্দোলনও যে একই ধারণা পোষণ করছে, সে কথা বৈঠক শেষে তুলে ধরেছেন আতাউর রহমান।