নরসিংদীর শিবপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা
গুলি করার পর প্রাইভেটকারযোগে আসামিরা আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যায় :পিবিআই
নরসিংদীর শিবপুরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামি মো. মহসিন মিয়াকে দুবাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড এলার্টের ভিত্তিতে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর দুবাই থেকে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বাংলাদেশে ফেরত আনার জন্য বার্তা পাঠায় দুবাই পুলিশ।
বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম সম্প্রতি দুবাই গিয়ে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। গত ২০ জুলাই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পিবিআই নরসিংদী জেলা উক্ত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করেছে।
পিবিআইয়ের ধানমন্ডি প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া শাখা পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ জানিয়েছেন, নিহত হারুনুর রশিদ খান নরসিংদী শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাও ছিলেন। তিনি টানা ২৫ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০২৩ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলার প্রধান আসামি আরিফ সরকার একটি বিদেশি ফোন নম্বর ব্যবহার করে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদকে ফোন করে বলে, ‘আমি বিদেশে চলে এসেছি এবং আগামীকাল মহসিন মিয়া আপনার নিকট মসজিদের অনুদানের টাকা নিয়ে আসবে।’ তখন উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ জানান, সকালে আসতে বলে। এরপর গত ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সোয়া ৬টার দিকে এজাহার নামীয় ২ নম্বর আসামি মহসিন মিয়া একটি মোটরসাইকেল যোগে দুইটি পিস্তলসহ দুইজন শুটারম্যান নিয়ে হারুনুর রশিদের বাসার নিচে গিয়ে তাকে ফোন করে বলে, আরিফ আমাকে মসজিদের অনুদানের জন্য কিছু টাকা দিয়ে পাঠিয়েছে। আমি আপনার বাসার নিচে আছি।
এরপর ভিকটিম হারুনুর রশিদ আসামি মহসিন মিয়াকে তার বাস ভবনের তৃতীয় তলায় ড্রয়িং রুমে উঠে বসতে বলেন। এরপর ড্রয়িং রুমের দরজাও খুলে দেয়া হয়। তখন আসামিরা দুইটি পিস্তল লুকিয়ে নিয়ে বাসায় ঢুকে। ভিকটিম ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আসামিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে। এরপর তাদের বসতে বলে, তিনি ভিতরে ঢুকে ফল কেটে নিয়ে আসতে বলে উঠে দাঁড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে দুইজন কিলার হারুনুর রশিদের কোমরে ২ রাউন্ড গুলি করে।
এরপর আসামিরা দৌড়ে তৃতীয় তলা থেকে নিচে নেমে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। আর আসামি হুমায়ুন একটি প্রাইভেটকার নিয়ে নিচে অবস্থান নেয়। আসামিরা প্রাইভেটকার দিয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশের বাইরে চলে যায়।
রক্তাক্ত অবস্থায় ভিকটিম হারুনুর রশিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা ও অপারেশন করে তার শরীর থেকে ২টি গুলি বের করা হয়। তাকে দেশে ও বিদেশে চিকিৎসা করার করানোর পরও তার শরীরের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২৩ সালেল ৩১ মে মারা যান।
এই ঘটনায় ২০২৩ সালে তার ছেলে বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ আসামিদের বহনকারী ড্রাইভার নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করে। সে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ মার্চ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে। ঘটনায় আসামি ফরহাদ হোসেন ও আরিফুল ইসলাম আরিফকে গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানার একটি মামলায়। এরপর তাদের উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ নরসিংদী আদালতে উপস্থাপন করে।
এরপর আলোচিত এই মামলার বাদী আমানুর রশিদ খানের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ হেডকোয়াটার্সের নির্দেশে ২০২৩ সালের ২৩ জুন পিবিআই নরসিংদী জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোস্তফা কামালের দিক নির্দেশনায় পিবিআই নরসিংদী জেলার সাবেক ইনচার্জ পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মন্তোষ চন্দ্র দাস আসামি জহিরুল ইসলাম শরীফ মোল্লাকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। এরপর আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দেয়।
পিবিআয়ের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জহিরুল ইসলাম জানিয়েছে, আসামিদের সঙ্গে তার হোয়াটসআ্যাপে কথা হয়েছে। আসামি আরিফ সরকারের পরিকল্পনায় আসামি মহসিন মিয়া, আসামি ইরান মোল্লা ও আসামি মোবারক উপজেলা চেয়ারম্যানকে তার বাসায় ঢুকে গুলি করছে। এরপর আসামি হুমায়ুন একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে তাদেরকে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছে দেয়। এরপর আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যায়।
এরপর পিবিআইয়ের টিম নরসিংদী জেলার আসামিদের বিদেশে অবস্থানের বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তরে ইন্টারপোল শাখার এআইজি (ইন্টারপোল) বরাবর আবেদন করে। তার প্রেক্ষিতে ইন্টারপোল আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করে। বিষয়টি নিয়ে দুবাই ইন্টারপোল পুলিশের কাছে চিঠি পাঠায়। এতে বলা হয়, হত্যা মামলার আসামি আরিফ সরকার, মহসীন মিয়া, হুমায়ুন দুবাইতে অবস্থান করছে। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে তাদের দেশে ফেরত আনার জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করে। সম্প্রতি আসামি মোবারক ওরফে শুটার মোবারক দেশে ফিরে। পিবিআই নরসিংদী জেলা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ২০২৫ সালের গত ৯ মার্চ তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি করে। রেড নোটিশের কপি দুবাইতে পাঠানো হয়। দুবাই পুলিশ রেড নোটিশের ভিত্তিতে গত ২১ মে আসামি মহসিন মিয়াকে গ্রেপ্তার বাংলাদেশে ইন্টারপোল শাখাকে অবগত করে।
গত ১৫ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম আসামি মহসিনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দুবাই যান। গত ২০ জুলাই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আসামি মহসিনকে দুবাই থেকে পিবিআই দেশে ফেরত নিয়ে আসে। গত ২১ জুলাই মহসিনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
পিবিআই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) এসএম মোস্তাইন হোসেন জানান, আমরা দীর্ঘ চেষ্টা করে আসামি মহসিন মিয়ার অবস্থান নিশ্চিত করে। দেশে ফেরার পর সে আদালতে দিকে হাত জোর করে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মন্তোষ চন্দ্র দাস সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, গত ২ বছর ধরে তিনি এই মামলাটি তদন্ত করেন। দুবাই থেকে আসামি গ্রেপ্তার করে আনানসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও ৪ জন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এরপর মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।
মিডিয়া শাখার পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ তার বৃহস্পতিবার,(২৪ জুলাই ২০২৫) রাতে সংবাদকে জানান, বিদেশ থেকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে তারা সক্ষম হয়েছে। এই ঘটনা বিরল। মামলার পলাতক অন্যদের ধরতে চলছে অভিযান।
নরসিংদীর শিবপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা
গুলি করার পর প্রাইভেটকারযোগে আসামিরা আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যায় :পিবিআই
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
নরসিংদীর শিবপুরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামি মো. মহসিন মিয়াকে দুবাই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড এলার্টের ভিত্তিতে দুবাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর দুবাই থেকে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বাংলাদেশে ফেরত আনার জন্য বার্তা পাঠায় দুবাই পুলিশ।
বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম সম্প্রতি দুবাই গিয়ে গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। গত ২০ জুলাই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পিবিআই নরসিংদী জেলা উক্ত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করেছে।
পিবিআইয়ের ধানমন্ডি প্রধান কার্যালয়ের মিডিয়া শাখা পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ জানিয়েছেন, নিহত হারুনুর রশিদ খান নরসিংদী শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাও ছিলেন। তিনি টানা ২৫ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০২৩ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলার প্রধান আসামি আরিফ সরকার একটি বিদেশি ফোন নম্বর ব্যবহার করে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদকে ফোন করে বলে, ‘আমি বিদেশে চলে এসেছি এবং আগামীকাল মহসিন মিয়া আপনার নিকট মসজিদের অনুদানের টাকা নিয়ে আসবে।’ তখন উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ জানান, সকালে আসতে বলে। এরপর গত ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সোয়া ৬টার দিকে এজাহার নামীয় ২ নম্বর আসামি মহসিন মিয়া একটি মোটরসাইকেল যোগে দুইটি পিস্তলসহ দুইজন শুটারম্যান নিয়ে হারুনুর রশিদের বাসার নিচে গিয়ে তাকে ফোন করে বলে, আরিফ আমাকে মসজিদের অনুদানের জন্য কিছু টাকা দিয়ে পাঠিয়েছে। আমি আপনার বাসার নিচে আছি।
এরপর ভিকটিম হারুনুর রশিদ আসামি মহসিন মিয়াকে তার বাস ভবনের তৃতীয় তলায় ড্রয়িং রুমে উঠে বসতে বলেন। এরপর ড্রয়িং রুমের দরজাও খুলে দেয়া হয়। তখন আসামিরা দুইটি পিস্তল লুকিয়ে নিয়ে বাসায় ঢুকে। ভিকটিম ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আসামিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে। এরপর তাদের বসতে বলে, তিনি ভিতরে ঢুকে ফল কেটে নিয়ে আসতে বলে উঠে দাঁড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে দুইজন কিলার হারুনুর রশিদের কোমরে ২ রাউন্ড গুলি করে।
এরপর আসামিরা দৌড়ে তৃতীয় তলা থেকে নিচে নেমে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। আর আসামি হুমায়ুন একটি প্রাইভেটকার নিয়ে নিচে অবস্থান নেয়। আসামিরা প্রাইভেটকার দিয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশের বাইরে চলে যায়।
রক্তাক্ত অবস্থায় ভিকটিম হারুনুর রশিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা ও অপারেশন করে তার শরীর থেকে ২টি গুলি বের করা হয়। তাকে দেশে ও বিদেশে চিকিৎসা করার করানোর পরও তার শরীরের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২৩ সালেল ৩১ মে মারা যান।
এই ঘটনায় ২০২৩ সালে তার ছেলে বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ আসামিদের বহনকারী ড্রাইভার নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করে। সে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ মার্চ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে। ঘটনায় আসামি ফরহাদ হোসেন ও আরিফুল ইসলাম আরিফকে গ্রেপ্তার করে মতিঝিল থানার একটি মামলায়। এরপর তাদের উপজেলা চেয়ারম্যান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ নরসিংদী আদালতে উপস্থাপন করে।
এরপর আলোচিত এই মামলার বাদী আমানুর রশিদ খানের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ হেডকোয়াটার্সের নির্দেশে ২০২৩ সালের ২৩ জুন পিবিআই নরসিংদী জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
পিবিআইয়ের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোস্তফা কামালের দিক নির্দেশনায় পিবিআই নরসিংদী জেলার সাবেক ইনচার্জ পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মন্তোষ চন্দ্র দাস আসামি জহিরুল ইসলাম শরীফ মোল্লাকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। এরপর আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দেয়।
পিবিআয়ের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জহিরুল ইসলাম জানিয়েছে, আসামিদের সঙ্গে তার হোয়াটসআ্যাপে কথা হয়েছে। আসামি আরিফ সরকারের পরিকল্পনায় আসামি মহসিন মিয়া, আসামি ইরান মোল্লা ও আসামি মোবারক উপজেলা চেয়ারম্যানকে তার বাসায় ঢুকে গুলি করছে। এরপর আসামি হুমায়ুন একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে তাদেরকে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছে দেয়। এরপর আসামিরা বিদেশে পালিয়ে যায়।
এরপর পিবিআইয়ের টিম নরসিংদী জেলার আসামিদের বিদেশে অবস্থানের বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তরে ইন্টারপোল শাখার এআইজি (ইন্টারপোল) বরাবর আবেদন করে। তার প্রেক্ষিতে ইন্টারপোল আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করে। বিষয়টি নিয়ে দুবাই ইন্টারপোল পুলিশের কাছে চিঠি পাঠায়। এতে বলা হয়, হত্যা মামলার আসামি আরিফ সরকার, মহসীন মিয়া, হুমায়ুন দুবাইতে অবস্থান করছে। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে তাদের দেশে ফেরত আনার জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করে। সম্প্রতি আসামি মোবারক ওরফে শুটার মোবারক দেশে ফিরে। পিবিআই নরসিংদী জেলা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ২০২৫ সালের গত ৯ মার্চ তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি করে। রেড নোটিশের কপি দুবাইতে পাঠানো হয়। দুবাই পুলিশ রেড নোটিশের ভিত্তিতে গত ২১ মে আসামি মহসিন মিয়াকে গ্রেপ্তার বাংলাদেশে ইন্টারপোল শাখাকে অবগত করে।
গত ১৫ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম আসামি মহসিনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দুবাই যান। গত ২০ জুলাই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আসামি মহসিনকে দুবাই থেকে পিবিআই দেশে ফেরত নিয়ে আসে। গত ২১ জুলাই মহসিনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
পিবিআই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) এসএম মোস্তাইন হোসেন জানান, আমরা দীর্ঘ চেষ্টা করে আসামি মহসিন মিয়ার অবস্থান নিশ্চিত করে। দেশে ফেরার পর সে আদালতে দিকে হাত জোর করে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে।
এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মন্তোষ চন্দ্র দাস সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, গত ২ বছর ধরে তিনি এই মামলাটি তদন্ত করেন। দুবাই থেকে আসামি গ্রেপ্তার করে আনানসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও ৪ জন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এরপর মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।
মিডিয়া শাখার পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ তার বৃহস্পতিবার,(২৪ জুলাই ২০২৫) রাতে সংবাদকে জানান, বিদেশ থেকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে তারা সক্ষম হয়েছে। এই ঘটনা বিরল। মামলার পলাতক অন্যদের ধরতে চলছে অভিযান।