জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জনসভাকে কেন্দ্র করে হামলা, সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা এবং নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সাবেক বিচারপতি মো. আবু তারিকের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার,(২৪ জুলাই ২০২৫) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯৫৬ সালের কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট-এর ধারা ৩ অনুযায়ী এই কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কমিশনের সদস্যরা হলেন সভাপতি: সাবেক বিচারপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. আবু তারিক, সদস্য: জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) মো. সাইফুল
ইসলাম, ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক (অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক) সরদার নূরুল আমিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী।
কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত যে কোনো ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা, প্রয়োজনীয় অর্থায়ন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সহায়তা দেবে।
কমিশনের কার্যপরিধি : ১. সংঘটিত ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ চিহ্নিত করা, ২. এনসিপির জনসভায় আক্রমণের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠন চিহ্নিত করা, ৩. দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা, ৪. জেলা কারাগারসহ সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটানো সম্পর্কিত ঘটনাসমূহ বিশ্লেষণ ও মতামত দেয়া, ৫. ভবিষ্যতে অনুরূপ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করা।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে গঠিত তদন্ত কমিটির মতে, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা সদরে এনসিপির পূর্বনির্ধারিত জনসভায় নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা ‘পরিকল্পিতভাবে’ হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে। পরে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে কারফিউ জারি করা হয় এবং সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা নেয়া হয়। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এ প্রেক্ষিতে জেলা কারাগারসহ সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নিরাপত্তা সংকটের বিষয়গুলো উদ্ঘাটন করা জরুরি হয়ে ওঠে।
চব্বিশের অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকে সারাদেশে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করে আসছে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে যায় দলটি। সেখানে তাদের কর্মসূচির নাম দেয়া হয় ‘মার্চ ফর গোপালগঞ্জ’। গত ১৬ জুলাই সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এসবের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় বলে এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ। এর কিছু সময় পর কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছালে সেই মঞ্চেই সমাবেশ শুরু হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেহাট হয়ে মাদারীপুর যাওয়ার পথে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের হামলা হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ পরিস্থিতিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। দুপুরে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। পরে রাত ৮টা থেকে জারি করা হয় কারফিউ। এ ঘটনায় মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়।
সেদিনের ঘটনায় এ পর্যন্ত দশটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় প্রায় দশ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩১২ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জনসভাকে কেন্দ্র করে হামলা, সহিংসতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা এবং নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সাবেক বিচারপতি মো. আবু তারিকের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত ও সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার,(২৪ জুলাই ২০২৫) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপালগঞ্জের ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯৫৬ সালের কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট-এর ধারা ৩ অনুযায়ী এই কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কমিশনের সদস্যরা হলেন সভাপতি: সাবেক বিচারপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. আবু তারিক, সদস্য: জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) মো. সাইফুল
ইসলাম, ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক (অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক) সরদার নূরুল আমিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী।
কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত যে কোনো ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা, প্রয়োজনীয় অর্থায়ন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সহায়তা দেবে।
কমিশনের কার্যপরিধি : ১. সংঘটিত ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ চিহ্নিত করা, ২. এনসিপির জনসভায় আক্রমণের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠন চিহ্নিত করা, ৩. দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা, ৪. জেলা কারাগারসহ সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটানো সম্পর্কিত ঘটনাসমূহ বিশ্লেষণ ও মতামত দেয়া, ৫. ভবিষ্যতে অনুরূপ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করা।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে গঠিত তদন্ত কমিটির মতে, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা সদরে এনসিপির পূর্বনির্ধারিত জনসভায় নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা ‘পরিকল্পিতভাবে’ হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে। পরে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে কারফিউ জারি করা হয় এবং সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা নেয়া হয়। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এ প্রেক্ষিতে জেলা কারাগারসহ সরকারি স্থাপনায় হামলা ও নিরাপত্তা সংকটের বিষয়গুলো উদ্ঘাটন করা জরুরি হয়ে ওঠে।
চব্বিশের অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকে সারাদেশে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করে আসছে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরে গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে যায় দলটি। সেখানে তাদের কর্মসূচির নাম দেয়া হয় ‘মার্চ ফর গোপালগঞ্জ’। গত ১৬ জুলাই সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। এসবের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় বলে এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ। এর কিছু সময় পর কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছালে সেই মঞ্চেই সমাবেশ শুরু হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেহাট হয়ে মাদারীপুর যাওয়ার পথে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে ফের হামলা হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীদের সংঘর্ষে গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ পরিস্থিতিতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। দুপুরে জেলা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। পরে রাত ৮টা থেকে জারি করা হয় কারফিউ। এ ঘটনায় মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়।
সেদিনের ঘটনায় এ পর্যন্ত দশটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এসব মামলায় প্রায় দশ হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩১২ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।