রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ১০ তলা ভবনের সামনে টাঙানো আছে একটি লাল ব্যানার। লেখা আছে, ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’।
চলছে পরিচ্ছন্নতার কাজ, ৩১ আগস্টের মধ্যে পুরো সাফ
ভবনটির ভেতরে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। যদিও শুক্রবার(২৫-০৭-২০২৫) বন্ধের দিন থাকায় শ্রমিকরা ছিল ছুটিতে, শুধু মোটর পাম্প লাগিয়ে ময়লা পানি অপসারণ করা হচ্ছিল।
পরিষ্কার করার কাজে নিয়োজিত এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, এখানে ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট হবে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, তখনই দেখতে পারবেন সবকিছু।
যদিও এ ধরনের কোনো ইনস্টিটিউট করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির কার্যালয় ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়ে। তছনছ করার পর আগুন দেয়া হয় ১০ তলা ভবনটিতে। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এ ভবনে ময়লা আবর্জনার স্তুপ জমেছে। ছিন্নমূল মানুষ, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পথচারীদের শৌচাগারে পরিণত হয়েছিল এটি, ভাসমান মানুষের নেশার আড্ডাও জমে এখানে।
সরজমিনে দেখা যায়, ভবনের নিচের তলা ময়লা-আবর্জনা জমে এমন অবস্থা হয়েছে যে সেখানে কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের।
পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত এক ব্যক্তি জানান, গত বুধবার থেকে কাজ শুরু করেছেন তারা। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ময়লা-আর্বজনা এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
খানিক বাদেই কথা হলো ভবনটির সামনে বসে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে। জানা গেছে, জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের নামে একটি কার্যালয় করা হবে। কার্যালয়ের নাম কী? একজন বলেন, ‘ওই যে লাল কাপড়ে লেখা আছে, সেই অফিসটি হবে।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সড়ক, স্থাপনার নাম পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় মার্চ মাসে বদলে ফেলা হয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের নাম। সড়কটির নতুন নাম হয়েছে শহীদ আবরার ফাহাদ এভিনিউ।
মে মাসে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সব ধরনের কর্মকা-ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অন্তর্বর্তী সরকার। দল হিসেবে নিবন্ধনও স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ফলে ছয় মেয়াদে দুই যুগের বেশি সময় সরকারে থাকা দেশের অন্যতম প্রাচীন এ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের উল্টো পাশে রমনা মার্কেটের সামনে একজন হকার বলেন, ‘এখন এখানে আওয়ামী লীগের কোনো চিহ্ন নাই, শুধু ভাঙা নৌকার একটি অংশ ছাড়া।... এক বছরে এখানে মানুষজন ময়লা-আবর্জনা ফেলায় এমন অবস্থা হয়েছে যে উৎকট গন্ধে আশপাশের দোকানদারদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে কিছু ছেলে-পেলেকে দেখলাম... তারা কিছু লোকজন এনে ময়লা পরিষ্কার করার কথা বলে গেছেন বলে শুনেছি।’
মুক্তিযুদ্ধের পরে গুলিস্তানে পরিত্যক্ত বিভিন্ন বাড়ি খালি পড়ে ছিল। এসব ভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয় হয়। তারই একটি তখনকার ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ঠিকানার এই পুরনো ভবন, যা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে ১৯৮১ সাল থেকে।
পরে এই পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলা হয় ২০১৬ সালে, ২০১৮ সালে ১০ তলা ভবন তৈরি নির্মাণ হয়। আট কাঠা জমি ৯৯ বছরের জন্য সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেয়া হয়েছিল আশির দশকে। পরে এই জমিতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করে এটিকে আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
২০১৮ সালের ২৩ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের দিনই এই ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপর সব কিছু নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এর পর থেকে ভবনটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর ৪ হাজার ১০০ বর্গফুট। চতুর্থ তলা থেকে ওপরের সব ফ্লোর ৩ হাজার ১০০ বর্গফুটের।
চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় সাজানো হয়েছে দলের অফিস, ডিজিটাল লাইব্রেরি ও মিডিয়া রুম। ষষ্ঠ তলায় সম্মেলন কক্ষ; সপ্তম তলা বরাদ্দ দলের কোষাধ্যক্ষের জন্য।
অষ্টম তলায় সাধারণ সম্পাদকের অফিস। নবম তলায় বসবেন দলের সভানেত্রী। তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই ফ্লোরটি ‘বুলেটপ্রুফ’ করা হয়েছে। দশম তলায় রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া।
ভবন ঘুরে দেখা যায়, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য রয়েছে সুপরিসর কক্ষ। সভাপতির কক্ষের সঙ্গে রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা।
দ্বিতীয় তলায় মাঝখানে কনফারেন্স রুম আর দুই পাশে বেশ কিছু কক্ষ রয়েছে। কনফারেন্স রুমে ৩৫০ জনের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তৃতীয় তলায়ও ২৪০ জনের বসার ব্যবস্থা থাকছে। এই ফ্লোরের সামনের অংশে আছে ‘ওপেন স্কাই টেরেস’। আর ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়াও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিমসহ সমমনা অন্যান্য সংগঠনের কার্যালয় রয়েছে। এছাড়া ভবনে রয়েছে ভিআইপি লাউঞ্জ, সাংবাদিক লাউঞ্জ, ডরমিটরি ও ক্যান্টিন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই পুরো ভবনটি থাকবে ওয়াইফাইয়ের আওতায়।
রমনার মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার যতদূর মনে পড়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের অফিস স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে আট থেকে নয় বার।’
# আওয়ামী লীগের কার্যালয় যেভাবে গুলিস্তানে
প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের অফিস স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে অন্তত আটবার। পুরান ঢাকার কে এম দাশ লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ।
শুরুর দিকে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাসায় বসে দল পরিচালনার নীতি-কর্মসূচি গ্রহণ করা হত, কোনো কার্যালয় ছিল না।
১৯৫৩ সালে কানকুন বাড়ি লেইনে অস্থায়ী একটি কার্যালয় ব্যবহার করা হত। ১৯৫৬ সালে পুরান ঢাকার ৫৬, সিমসন রোডের ঠিকানায় যায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়।
১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৯১, নবাবপুর রোডে দলীয় কার্যালয় নেন। এর কিছু দিন পর অস্থায়ীভাবে সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলের গলিতে বসা শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে পুরানা পল্টনে দুটি স্থানে দীর্ঘদিন দলের কার্যালয় ছিল।
১৯৮১ সালের দিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দলের দায়িত্ব নেয়ার পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা হয় তখনকার ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। তার পর সেখানেই আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের স্থায়ী ভবন করা হয়।
শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ১০ তলা ভবনের সামনে টাঙানো আছে একটি লাল ব্যানার। লেখা আছে, ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’।
চলছে পরিচ্ছন্নতার কাজ, ৩১ আগস্টের মধ্যে পুরো সাফ
ভবনটির ভেতরে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। যদিও শুক্রবার(২৫-০৭-২০২৫) বন্ধের দিন থাকায় শ্রমিকরা ছিল ছুটিতে, শুধু মোটর পাম্প লাগিয়ে ময়লা পানি অপসারণ করা হচ্ছিল।
পরিষ্কার করার কাজে নিয়োজিত এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেছে, এখানে ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট হবে। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, তখনই দেখতে পারবেন সবকিছু।
যদিও এ ধরনের কোনো ইনস্টিটিউট করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির কার্যালয় ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়ে। তছনছ করার পর আগুন দেয়া হয় ১০ তলা ভবনটিতে। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এ ভবনে ময়লা আবর্জনার স্তুপ জমেছে। ছিন্নমূল মানুষ, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পথচারীদের শৌচাগারে পরিণত হয়েছিল এটি, ভাসমান মানুষের নেশার আড্ডাও জমে এখানে।
সরজমিনে দেখা যায়, ভবনের নিচের তলা ময়লা-আবর্জনা জমে এমন অবস্থা হয়েছে যে সেখানে কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের।
পরিচ্ছন্নতা কাজে নিয়োজিত এক ব্যক্তি জানান, গত বুধবার থেকে কাজ শুরু করেছেন তারা। আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ময়লা-আর্বজনা এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে।
খানিক বাদেই কথা হলো ভবনটির সামনে বসে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে। জানা গেছে, জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের নামে একটি কার্যালয় করা হবে। কার্যালয়ের নাম কী? একজন বলেন, ‘ওই যে লাল কাপড়ে লেখা আছে, সেই অফিসটি হবে।’
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সড়ক, স্থাপনার নাম পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় মার্চ মাসে বদলে ফেলা হয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের নাম। সড়কটির নতুন নাম হয়েছে শহীদ আবরার ফাহাদ এভিনিউ।
মে মাসে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সব ধরনের কর্মকা-ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অন্তর্বর্তী সরকার। দল হিসেবে নিবন্ধনও স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ফলে ছয় মেয়াদে দুই যুগের বেশি সময় সরকারে থাকা দেশের অন্যতম প্রাচীন এ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের উল্টো পাশে রমনা মার্কেটের সামনে একজন হকার বলেন, ‘এখন এখানে আওয়ামী লীগের কোনো চিহ্ন নাই, শুধু ভাঙা নৌকার একটি অংশ ছাড়া।... এক বছরে এখানে মানুষজন ময়লা-আবর্জনা ফেলায় এমন অবস্থা হয়েছে যে উৎকট গন্ধে আশপাশের দোকানদারদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে কিছু ছেলে-পেলেকে দেখলাম... তারা কিছু লোকজন এনে ময়লা পরিষ্কার করার কথা বলে গেছেন বলে শুনেছি।’
মুক্তিযুদ্ধের পরে গুলিস্তানে পরিত্যক্ত বিভিন্ন বাড়ি খালি পড়ে ছিল। এসব ভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয় হয়। তারই একটি তখনকার ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ঠিকানার এই পুরনো ভবন, যা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে ১৯৮১ সাল থেকে।
পরে এই পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলা হয় ২০১৬ সালে, ২০১৮ সালে ১০ তলা ভবন তৈরি নির্মাণ হয়। আট কাঠা জমি ৯৯ বছরের জন্য সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেয়া হয়েছিল আশির দশকে। পরে এই জমিতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করে এটিকে আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
২০১৮ সালের ২৩ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের দিনই এই ভবনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপর সব কিছু নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এর পর থেকে ভবনটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর ৪ হাজার ১০০ বর্গফুট। চতুর্থ তলা থেকে ওপরের সব ফ্লোর ৩ হাজার ১০০ বর্গফুটের।
চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় সাজানো হয়েছে দলের অফিস, ডিজিটাল লাইব্রেরি ও মিডিয়া রুম। ষষ্ঠ তলায় সম্মেলন কক্ষ; সপ্তম তলা বরাদ্দ দলের কোষাধ্যক্ষের জন্য।
অষ্টম তলায় সাধারণ সম্পাদকের অফিস। নবম তলায় বসবেন দলের সভানেত্রী। তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই ফ্লোরটি ‘বুলেটপ্রুফ’ করা হয়েছে। দশম তলায় রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া।
ভবন ঘুরে দেখা যায়, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য রয়েছে সুপরিসর কক্ষ। সভাপতির কক্ষের সঙ্গে রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা।
দ্বিতীয় তলায় মাঝখানে কনফারেন্স রুম আর দুই পাশে বেশ কিছু কক্ষ রয়েছে। কনফারেন্স রুমে ৩৫০ জনের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
তৃতীয় তলায়ও ২৪০ জনের বসার ব্যবস্থা থাকছে। এই ফ্লোরের সামনের অংশে আছে ‘ওপেন স্কাই টেরেস’। আর ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়াও সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিমসহ সমমনা অন্যান্য সংগঠনের কার্যালয় রয়েছে। এছাড়া ভবনে রয়েছে ভিআইপি লাউঞ্জ, সাংবাদিক লাউঞ্জ, ডরমিটরি ও ক্যান্টিন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই পুরো ভবনটি থাকবে ওয়াইফাইয়ের আওতায়।
রমনার মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার যতদূর মনে পড়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের অফিস স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে আট থেকে নয় বার।’
# আওয়ামী লীগের কার্যালয় যেভাবে গুলিস্তানে
প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের অফিস স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে অন্তত আটবার। পুরান ঢাকার কে এম দাশ লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ।
শুরুর দিকে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাসায় বসে দল পরিচালনার নীতি-কর্মসূচি গ্রহণ করা হত, কোনো কার্যালয় ছিল না।
১৯৫৩ সালে কানকুন বাড়ি লেইনে অস্থায়ী একটি কার্যালয় ব্যবহার করা হত। ১৯৫৬ সালে পুরান ঢাকার ৫৬, সিমসন রোডের ঠিকানায় যায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়।
১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৯১, নবাবপুর রোডে দলীয় কার্যালয় নেন। এর কিছু দিন পর অস্থায়ীভাবে সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলের গলিতে বসা শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে পুরানা পল্টনে দুটি স্থানে দীর্ঘদিন দলের কার্যালয় ছিল।
১৯৮১ সালের দিকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দলের দায়িত্ব নেয়ার পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা হয় তখনকার ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। তার পর সেখানেই আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের স্থায়ী ভবন করা হয়।