alt

জাতীয়

মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াই এখনো চালিয়ে যাচ্ছি: মাইকেল চাকমা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

ক্ষমতা হারানোর ভয় না থাকলে সরকার ‘দানবে’ পরিণত হয়—এমন মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবাধিকার বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি বলেন, “ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার ভয়টা চলে গেলে তখন (সরকার) কী দানবে পরিণত হয়, সেটা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট আমল থেকে আমরা বুঝতে পারি। যে কারণে আমাদের এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে প্রাণ দিতে হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ চিরস্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের ভয়াবহ মূল্য স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী থাকবো, কিন্তু যেন কল্পলোকের বাসিন্দা হয়ে না যাই।”

তিনি বলেন, মানবাধিকারকে কেবল আইন দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না; এর জন্য দরকার সবার উপলব্ধি, আত্মশুদ্ধি ও স্বচ্ছতা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আত্মসমালোচনার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান অঙ্গ—নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ—শুদ্ধ না হলে মানবাধিকার কমিশন বা তথ্য কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসিফ নজরুল বলেন, “এই তিনটা অঙ্গের সমস্যা রেখে শুধু কমিশন করে, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করে কোনো লাভ হবে না।”

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাকে তিনি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “অনেকে মনে করে ইউরোপ-আমেরিকায় মানবাধিকার বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু তারা নিজের দেশে কিছু করলেও বিশ্বের অন্য প্রান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজ করে যাচ্ছে। যুদ্ধ ছড়ানো, অস্ত্র বিক্রি ও অত্যাচারী শাসকদের সহায়তার মাধ্যমে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।”

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মুহম্মদ একরামুল হক বলেন, “কাগজে অনেক কিছু লেখা থাকে। বাস্তবায়নটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আদালতকে ফ্যাসিবাদের অংশে পরিণত করা হয়, তাহলে সংবিধানের কথাগুলো বাস্তবায়ন হবে না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এখানে জরুরি।”

‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’ আয়োজিত এই সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘গুম’ হওয়া আহমেদ বিন কাশেম ও মাইকেল চাকমা, অভ্যুত্থানে নিহত নাইমা সুলতানা ও শাহরিয়ার খানের মা, এবং আহত দুইজন জুলাইযোদ্ধা বক্তব্য রাখেন।

শাহরিয়ার খানের মা সানজিদা খান বলেন, “আমরা এমন একটি রাষ্ট্রে বাস করি, যেখানে প্রতিটি স্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। আমার ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি আমার সন্তানের বুকে লেগেছে। আমার দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী আমার সন্তানের ঘাতক।”

তিনি আরও বলেন, “আমার সন্তানরা মানবাধিকার রক্ষায় রাস্তায় নেমেছিল, অথচ তারাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। পৃথিবীতে ক’টা দেশে এমন হয়, যেখানে দেশের সেনাবাহিনী নিজের দেশের সাধারণ মানুষকে হত্যা করে?”

মাইকেল চাকমা বলেন, “আমাকে তুলে নেওয়ার পর আমার পরিবার ও মানবাধিকারকর্মীরা আমাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছেন। এক পর্যায়ে আমার পরিবার এতটাই ভেঙে পড়ে যে আমার বাবার মৃত্যু ঘটে। তারা এক সময় আমার শেষকৃত্যও করে ফেলে।”

তিনি বলেন, “সেই অবস্থা থেকে আমি ফিরেছি, কিন্তু এখনো প্রশ্ন রয়ে যায়—ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে? আমরা যেন সবাই এক হয়ে বাস করতে পারি। আমি আশাবাদী, আমার অধিকার আদায়ের লড়াই এখনো চলছে।”

সম্মেলনের শেষ অংশে মানবাধিকার অলিম্পিয়াডে বিজয়ী দশজনের হাতে ব্যাগ, সম্মান স্মারক, সনদ ও সম্মাননা অর্থ তুলে দেওয়া হয়।

আন্দোলনের ফসল ‘দখল’ হওয়ায় মানুষকে রাস্তায় নামতে হচ্ছে হাসনাত কাইয়ুম

ছবি

ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার পর নতুন করে বাড়ছে জিকা ভাইরাস

ছবি

ব্যাংক পুনর্গঠনে ৩৫ বিলিয়ন ডলার লাগবে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

মেঘনায় ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধে ভাঙন, ঝুঁকিতে ২ হাজার পরিবার

ছবি

দেশজুড়ে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ গ্রহণ

‘জাতীয় সনদ’কে সর্বোচ্চ আইন হিসেবে বিবেচনা করার পরামর্শ সুজনের

ছবি

নিম্নচাপ: সারাদেশে বৃষ্টির আভাস, ১৫ জেলায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

অসংখ্য আসামি, তাই চার্জশিট দিতে দেরি হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

পরে ডিআইজি বললেন, খাগড়াছড়িতে ৪ জন নিহতের খবর সঠিক নয়

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক ২৯, ৩০, ৩১ জুলাই, দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি ‘করবে না’ সরকার

ছবি

গ্রিন শিপ ইয়ার্ড না হলে ব্যবসা গুটানোর নির্দেশ : নৌ উপদেষ্টা

ছবি

সেই যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

‘মনে হচ্ছিল কানের পর্দা ফেটে যাবে, আতঙ্কে সবাই ছোটাছুটি করছিলাম’

ছবি

গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানালেন অধ্যাপক ইউনূস

ছবি

রোববার খুলছে না মাইলস্টোন স্কুল, সিদ্ধান্ত সোমবার

ছবি

রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করলে নির্বাচনে সমস্যা হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

ভাড়া করা লোক এনে দেশ চালানো যায় না: ফখরুল

ছবি

গোপালগঞ্জের ঘটনা পুরনো বন্দোবস্ত ফেরাচ্ছে, বিবৃতি ১০ নাগরিকের

ছবি

মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় দগ্ধ আরও দুইজনের মৃত্যু

ছবি

‘চার-পাঁচ দিনের মধ্যে’ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

ছবি

‘৪-৫ দিনের মধ্যে ভোটের তারিখ জানাবেন ইউনূস’, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে ‘আশ্বাস’

ছবি

নির্বাচনের আগে আরও অস্ত্র উদ্ধার হতে পারে: জাহাঙ্গীর আলম

ছবি

রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার আলোচনা

ছবি

ভুয়া তথ্য ও এআই চ্যালেঞ্জ,জনআস্থা ফেরানোই বড় দায়িত্ব: সিইসি

ছবি

তথ্য কমিশন গঠন শিগগিরই

ছবি

সংস্কারে অগ্রগতি, কিন্তু ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ: ইউএসসিআইআরএফ

ছবি

নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস, উপকূলজুড়ে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা

ছবি

মাইলস্টোন দুর্ঘটনা: দগ্ধ আয়া মাসুমার মৃত্যু

ছবি

মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় দগ্ধ আরেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে অপপ্রচার না করার আহ্বান উপদেষ্টার

নিহত শিক্ষিকা মাসুকার কবরে বিমানবাহিনীর গার্ড অব অনার

কুমারশাইল সীমান্ত দিয়ে ৫ জনকে পুশইন

ছবি

আ’লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউটের’ ব্যানার

‘ওসি বললেন, দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই!’

ছবি

দু’দিনের বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে আবারও জলাবদ্ধতা

নিলামে বেনজীর পরিবারের শার্ট-প্যান্ট-শাড়ি-জুতা

tab

জাতীয়

মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াই এখনো চালিয়ে যাচ্ছি: মাইকেল চাকমা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

ক্ষমতা হারানোর ভয় না থাকলে সরকার ‘দানবে’ পরিণত হয়—এমন মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবাধিকার বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি বলেন, “ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার ভয়টা চলে গেলে তখন (সরকার) কী দানবে পরিণত হয়, সেটা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট আমল থেকে আমরা বুঝতে পারি। যে কারণে আমাদের এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে প্রাণ দিতে হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ চিরস্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছে।”

জুলাই অভ্যুত্থানের ভয়াবহ মূল্য স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী থাকবো, কিন্তু যেন কল্পলোকের বাসিন্দা হয়ে না যাই।”

তিনি বলেন, মানবাধিকারকে কেবল আইন দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না; এর জন্য দরকার সবার উপলব্ধি, আত্মশুদ্ধি ও স্বচ্ছতা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আত্মসমালোচনার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান অঙ্গ—নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ—শুদ্ধ না হলে মানবাধিকার কমিশন বা তথ্য কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসিফ নজরুল বলেন, “এই তিনটা অঙ্গের সমস্যা রেখে শুধু কমিশন করে, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করে কোনো লাভ হবে না।”

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাকে তিনি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “অনেকে মনে করে ইউরোপ-আমেরিকায় মানবাধিকার বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু তারা নিজের দেশে কিছু করলেও বিশ্বের অন্য প্রান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজ করে যাচ্ছে। যুদ্ধ ছড়ানো, অস্ত্র বিক্রি ও অত্যাচারী শাসকদের সহায়তার মাধ্যমে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।”

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মুহম্মদ একরামুল হক বলেন, “কাগজে অনেক কিছু লেখা থাকে। বাস্তবায়নটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আদালতকে ফ্যাসিবাদের অংশে পরিণত করা হয়, তাহলে সংবিধানের কথাগুলো বাস্তবায়ন হবে না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এখানে জরুরি।”

‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’ আয়োজিত এই সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘গুম’ হওয়া আহমেদ বিন কাশেম ও মাইকেল চাকমা, অভ্যুত্থানে নিহত নাইমা সুলতানা ও শাহরিয়ার খানের মা, এবং আহত দুইজন জুলাইযোদ্ধা বক্তব্য রাখেন।

শাহরিয়ার খানের মা সানজিদা খান বলেন, “আমরা এমন একটি রাষ্ট্রে বাস করি, যেখানে প্রতিটি স্তরে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। আমার ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি আমার সন্তানের বুকে লেগেছে। আমার দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী আমার সন্তানের ঘাতক।”

তিনি আরও বলেন, “আমার সন্তানরা মানবাধিকার রক্ষায় রাস্তায় নেমেছিল, অথচ তারাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। পৃথিবীতে ক’টা দেশে এমন হয়, যেখানে দেশের সেনাবাহিনী নিজের দেশের সাধারণ মানুষকে হত্যা করে?”

মাইকেল চাকমা বলেন, “আমাকে তুলে নেওয়ার পর আমার পরিবার ও মানবাধিকারকর্মীরা আমাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেছেন। এক পর্যায়ে আমার পরিবার এতটাই ভেঙে পড়ে যে আমার বাবার মৃত্যু ঘটে। তারা এক সময় আমার শেষকৃত্যও করে ফেলে।”

তিনি বলেন, “সেই অবস্থা থেকে আমি ফিরেছি, কিন্তু এখনো প্রশ্ন রয়ে যায়—ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে? আমরা যেন সবাই এক হয়ে বাস করতে পারি। আমি আশাবাদী, আমার অধিকার আদায়ের লড়াই এখনো চলছে।”

সম্মেলনের শেষ অংশে মানবাধিকার অলিম্পিয়াডে বিজয়ী দশজনের হাতে ব্যাগ, সম্মান স্মারক, সনদ ও সম্মাননা অর্থ তুলে দেওয়া হয়।

back to top