মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: ঘটনাস্থলে এখনও উৎসুক জনতার ভিড় -সংবাদ
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে শনিবার,(২৬ জুলাই ২০২৫) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ১৩ বছর বয়সী জারিফ ফারহান রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যায় বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান। এরপর সকাল সোয়া ১০টার দিকে ৩৮ বছর বয়সী প্রতিষ্ঠানটির আয়া মাসুমা মারা যান।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেল দুই শিক্ষার্থী
‘আশঙ্কাজনক’ অবস্থায় আরও ৪ জন আইসিইউতে ও ‘গুরুতর’ অবস্থায় ৯ জন চিকিৎসাধীন
তিনি জানান, জারিফের শ্বাসনালিসহ শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। জারিফ রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। সে রাজবাড়ী সদর থানার হাসনাবাদ এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। এছাড়া মাসুমা শ্বাসনালিসহ শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়ে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। মাসুমার স্বামী সেলিম জানিয়েছিলেন, মাইলস্টোন স্কুলের আয়ার কাজ করতেন তার স্ত্রী। তাদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তুরাগের নয়ানগর এলাকায় থাকতেন মাসুমা-সেলিম দম্পতি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন জানান, সেখানে ভর্তি পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ নিয়ে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭ জনে। আর সামগ্রিকভাবে, এ ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ৩৮ জন, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী। তবে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসাবে এখন মৃতের সংখ্যা ৩৫।
গত মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশ করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সেখানে মৃতের সংখ্যা বলা হয়েছিলে ৩১। পরের দিন বুধবার রাতে বার্ন ইউনিটে মারা যায় নাফি নামে এক শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার দুই শিক্ষার্থী মারা যায় তারা হলেন মাহিয়া ও মাহতাব। শুক্রবার আরও দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয় তারা হলেন মাকিন ও আইমান। আর শনিবার, মারা গেছে জারিফ ফারহান ও মাসুমা। তাতে মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৮ জনে।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেল দুই শিক্ষার্থী
যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকার মধ্যে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন দুই শিক্ষার্থী। শনিবার, বিকেল ৩টার
দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে তাদের ছাড়পত্র দেয়ার তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন। ছাড়পত্র পাওয়া শিক্ষার্থীদের একজন ১২ বছর বয়সী আয়ান খান, আরেকজন একই বয়সী রাফসি আক্তার রাফিয়া। দুইজনই এক শতাংশ দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল, ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হলো।
নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আরও ১০ জনকে আমরা রিলিজ দিতে পারবো।’ চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আয়ান খানের বাবা মোস্তফা কামাল বাপ্পী বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, সে সুস্থ আছে, চিন্তার কিছু নাই। যতটুকু বার্ন হয়েছিল হাতে, এখন ঠিক আছে। কানে একটু সমস্যা আছে, আশা করছি সেটিও ঠিক হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দোয়া করি প্রত্যেকটা সন্তানকে আল্লাহ তার মা-বাবার কোলে ফিরায়ে দিক।’
এ সময় তিনি বার্ন ইনস্টিটিউটে ‘আশঙ্কাজনক’ অবস্থায় আরও চারজন আইসিইউতে এবং ‘গুরুতর’ অবস্থায় আরও ৯ জন চিকিৎসাধীন থাকার তথ্য দিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘ক্রিটিক্যাল যারা, প্রতি মুহূর্তেই তাদের ব্যাপারে যেকোনো সংবাদ পাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকি।’ তিনি জানান, ভারত থেকে আসা টিমে দুইজন ডাক্তার ও দুইজন নার্স রয়েছেন। চীন থেকে এসেছেন তিনজন ডাক্তার, দুইজন নার্স। আর সিঙ্গাপুর থেকে ৯ জন এসেছেন, যাদের মধ্যে তিনজন ডাক্তার বাকিরা ‘সাপোর্টিং স্টাফ’।
পরিচালক নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বিভিন্ন টিম যেগুলা আসছে, তাদের সঙ্গে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবাই মিলে আমাদের ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনিয়ারি’ টিমসহ বসে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এজন্য যা করার দরকার, তাই করেছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা আমাদের সঙ্গে একমত।’ দুজনকে ছাড়পত্র দেয়ার পর বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন চিকিৎসাধীন আছে ৩৬ জন, আর সব হাসপাতাল মিলে চিকিৎসাধীনের সংখ্যা ৪৬ জন।
গত শনিবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের সামনে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় সামরিক বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ৪৬ জন এখনও বার্ন ইনস্টিটিউট, সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: ঘটনাস্থলে এখনও উৎসুক জনতার ভিড় -সংবাদ
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে শনিবার,(২৬ জুলাই ২০২৫) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ১৩ বছর বয়সী জারিফ ফারহান রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যায় বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান। এরপর সকাল সোয়া ১০টার দিকে ৩৮ বছর বয়সী প্রতিষ্ঠানটির আয়া মাসুমা মারা যান।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেল দুই শিক্ষার্থী
‘আশঙ্কাজনক’ অবস্থায় আরও ৪ জন আইসিইউতে ও ‘গুরুতর’ অবস্থায় ৯ জন চিকিৎসাধীন
তিনি জানান, জারিফের শ্বাসনালিসহ শরীরের প্রায় ৪০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। জারিফ রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। সে রাজবাড়ী সদর থানার হাসনাবাদ এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। এছাড়া মাসুমা শ্বাসনালিসহ শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়ে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। মাসুমার স্বামী সেলিম জানিয়েছিলেন, মাইলস্টোন স্কুলের আয়ার কাজ করতেন তার স্ত্রী। তাদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তুরাগের নয়ানগর এলাকায় থাকতেন মাসুমা-সেলিম দম্পতি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন জানান, সেখানে ভর্তি পাঁচ শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ নিয়ে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭ জনে। আর সামগ্রিকভাবে, এ ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ৩৮ জন, যাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী। তবে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসাবে এখন মৃতের সংখ্যা ৩৫।
গত মঙ্গলবার বেলা ১২টা পর্যন্ত দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশ করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সেখানে মৃতের সংখ্যা বলা হয়েছিলে ৩১। পরের দিন বুধবার রাতে বার্ন ইউনিটে মারা যায় নাফি নামে এক শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার দুই শিক্ষার্থী মারা যায় তারা হলেন মাহিয়া ও মাহতাব। শুক্রবার আরও দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয় তারা হলেন মাকিন ও আইমান। আর শনিবার, মারা গেছে জারিফ ফারহান ও মাসুমা। তাতে মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৮ জনে।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেল দুই শিক্ষার্থী
যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকার মধ্যে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন দুই শিক্ষার্থী। শনিবার, বিকেল ৩টার
দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে তাদের ছাড়পত্র দেয়ার তথ্য জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন। ছাড়পত্র পাওয়া শিক্ষার্থীদের একজন ১২ বছর বয়সী আয়ান খান, আরেকজন একই বয়সী রাফসি আক্তার রাফিয়া। দুইজনই এক শতাংশ দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল, ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হলো।
নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আরও ১০ জনকে আমরা রিলিজ দিতে পারবো।’ চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আয়ান খানের বাবা মোস্তফা কামাল বাপ্পী বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, সে সুস্থ আছে, চিন্তার কিছু নাই। যতটুকু বার্ন হয়েছিল হাতে, এখন ঠিক আছে। কানে একটু সমস্যা আছে, আশা করছি সেটিও ঠিক হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দোয়া করি প্রত্যেকটা সন্তানকে আল্লাহ তার মা-বাবার কোলে ফিরায়ে দিক।’
এ সময় তিনি বার্ন ইনস্টিটিউটে ‘আশঙ্কাজনক’ অবস্থায় আরও চারজন আইসিইউতে এবং ‘গুরুতর’ অবস্থায় আরও ৯ জন চিকিৎসাধীন থাকার তথ্য দিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘ক্রিটিক্যাল যারা, প্রতি মুহূর্তেই তাদের ব্যাপারে যেকোনো সংবাদ পাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকি।’ তিনি জানান, ভারত থেকে আসা টিমে দুইজন ডাক্তার ও দুইজন নার্স রয়েছেন। চীন থেকে এসেছেন তিনজন ডাক্তার, দুইজন নার্স। আর সিঙ্গাপুর থেকে ৯ জন এসেছেন, যাদের মধ্যে তিনজন ডাক্তার বাকিরা ‘সাপোর্টিং স্টাফ’।
পরিচালক নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বিভিন্ন টিম যেগুলা আসছে, তাদের সঙ্গে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবাই মিলে আমাদের ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনিয়ারি’ টিমসহ বসে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এজন্য যা করার দরকার, তাই করেছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা আমাদের সঙ্গে একমত।’ দুজনকে ছাড়পত্র দেয়ার পর বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন চিকিৎসাধীন আছে ৩৬ জন, আর সব হাসপাতাল মিলে চিকিৎসাধীনের সংখ্যা ৪৬ জন।
গত শনিবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের সামনে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় সামরিক বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ৪৬ জন এখনও বার্ন ইনস্টিটিউট, সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।