স্কুলে পড়ে আছে বই-খাতা, এখনও উৎসুক মানুষের ভিড়
মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার আজ ছয়দিন। শনিবার,(২৬ জুলাই ২০২৫) সকালে স্কুলে আসেন সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। বেলা ১১টার দিকে গলায় স্কুলের পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকেন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র জুনায়েদ। আধাঘণ্টা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেলা সাড়ে ১১টায় বের হন তিনি।
এ সময় স্কুলের গেটের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জুনায়েদ। সে জানায়, ওদিন বিমান দুর্ঘটনার সময় বিকট শব্দ হয়েছিল। মনে হয়েছিল কানের পর্দা ফেটে যাবে। আতংকে সবাই ছোটাছুটি করি। একপর্যায়ে শান্ত হয়ে স্কুলের যে ভবনটিতে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে আসি। দেখি শিশু শিক্ষার্থীদের হাত-পা ছড়িয়ে ছিটে আছে। অনেক শিক্ষার্থী আগুনে পুড়ে গেছে। এমন করুণ দৃশ্য বলে বোঝানো যাবে না। এখন রাতে ঘুমাতে গেলে এই দৃশ্য চোখে ভেসে উঠে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে ক্লাস-পরীক্ষা দেবো মাথায় আসে না।
মাইলস্টোনের পাশের রাস্তায় কাজ করা এক নারী বলেন, ‘বিকট শব্দ হয়। ধোঁয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। এরপর দেখলাম আহতরা একে একে বের হচ্ছে। যে যেভাবে পারছে ছোটাছুটি করছে। অনেকের শরীর পুড়ে গেছে। অধিকাংশেরই শরীরে কাপড় ছিল না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার ছেলে স্কুলটিতে পড়ে। আমি তাকে আনতে গিয়েছিলাম। আমি ভেতরে ঢুকেছিলাম, অনেকে আহত হয়েছে। বেশিরভাগই ছোট ছোট বাচ্চা। স্কুলের ভেতরে যারা ছিল তাদের ৮০ শতাংশই আহত। বিমান বিধ্বস্তের পরে তেল ছড়িয়ে পড়ায় আগুনের বিস্তৃতি বেড়েছে।’
স্কুল ভবন থেকে ১০০ গজের মধ্যে মোহাম্মদ জইমত আলীর এক্সক্যাভেটর মেরামতের গ্যারেজ। চালক আপন আহমেদ কাজ করছিলেন। উড়োজাহাজ খুব নিচু দিয়ে উঠতে দেখে তারা দুজনে কিছুটা অবাক হয়েছিলেন। কয়েক মুহূর্ত পরেই বিকট শব্দ শুনে তারা প্রথমে ছুটে যান পাশের মেট্রোরেলের ডিপোর দিকে। পরে তারা দেখেন, স্কুল থেকে আগুন বের হচ্ছে। ঘটনার পর পরই উপস্থিত হয়েছিলেন ঠিকাদার আতিকুর রহমান। তিনি বলছেন, ‘যারা পুড়েছে, তাদের বেশিরভাগই ৮ থেকে ১০ বছরের বাচ্চা। অনেককে হাতে ধরার মতো অবস্থায় ছিল না।’
মাইলস্টোনে ছুটি আরও দুইদিন
বিমান বিধ্বস্তের ভয়াবহ ঘটনার পর থেকে বন্ধ ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত রোববার থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন করে আজ ও আগামীকাল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি কবে খুলবে সে ব্যাপারে আগামীকালের সিদ্ধান্ত জানানো হবে। মর্মান্তিক এ ঘটনার ৬ দিন বাদে আজ থেকে সীমিত পরিসরে ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়েছিল। তবে এর আগের দিন গত শনিবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, ‘রোববার (আজ) থেকে ক্লাস শুরু হচ্ছে না। প্রথম তিন দিন ছুটি ঘোষণা হয়েছিল, পরে তা আরও দুই দিন রোববার (আজ) ও সোমবার (আগামীকাল) পর্যন্ত বাড়ানো হয়।’ ছুটি শেষে আগামী মঙ্গলবার স্কুল খুলবে কিনা, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সে সিদ্ধান্ত সোমবার (আগামীকাল) জানা যাবে। কর্তৃপক্ষ আজ বসে স্কুল খোলা বা না খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’ স্কুলে পড়ে আছে বই-খাতা,
এখনও উৎসুক মানুষের ভিড়
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে শনিবার সকালে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দেখা যায়নি। তদন্তদলের কেউ ক্যাম্পাসে আসেননি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ফটকে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। তবে এখনও পড়ে আছে বই-খাতা। রাজধানীর ভাটারা থেকে এসেছেন মো. টিটু। তিনি বলেন, ‘এখানটায় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে শুনেছি। সেজন্য দেখতে এসেছি। নিজের চোখে দেখার জন্যই কষ্ট করে এসেছি।’
সাংবাদিকদের বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তারক্ষীরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে। সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হবে না। শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে উৎসুক জনতার জটলা দেখা গেছে। অল্প অল্প করে তাদের ক্যাম্পাসের একটি প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য পথ দিয়ে বের করে দিচ্ছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তারক্ষীরা। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। বিদ্যালয়ের ভেতরে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভেতরে পুলিশের ১০-?১২ জন সদস্য রয়েছেন। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলারক্ষার কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তারক্ষীরা।
তবে দুর্ঘটনার পর কয়েকদিন সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ থাকলেও সকালে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল করা হয়। কলেজের নিরাপত্তাকর্মীরা ৫ থেকে ৭ মিনিট পরপর ৮ থেকে ১০ জনের ছোট ছোট দলে উৎসুক জনতাকে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছিলেন। যে দোতলা ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, তার সামনের খোলা অংশ টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। দর্শনার্থীরা প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে সেই বেড়ার পাশ দিয়ে হেঁটে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি দেখছেন এবং পেছনের ৪ নম্বর ফটক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় সবাইকেই মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল দেখা শেষে কলেজের কর্মীরা উৎসুক জনতাকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে অনুরোধ করছিলেন।
এছাড়া ওই দোতালা ভবনের পেছনের সরু রাস্তায়ও উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা যারা আসছেন, তারা স্কুলের সামনে এসে সেদিনের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করছেন। এখনও ট্রমার মধ্যে আছেন তারা। তাদের অনেকের চোখের সামনেই বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা এখনও সেই ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারছে না। চোখের সামনে দেখা আগুনের লেলিহান শিখা ও বন্ধুদের আর্তনাদ তাদের তাড়া করে ফিরছে।
এদিকে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাও শনিবার ও জারিফ নামে এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। মারা গেছেন মাসুমা নামে আরও একজন। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হলো। গত শনিবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের সামনে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় সামরিক বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ৪৬ জন এখনও বার্ন ইনস্টিটিউট, সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্কুলে পড়ে আছে বই-খাতা, এখনও উৎসুক মানুষের ভিড়
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার আজ ছয়দিন। শনিবার,(২৬ জুলাই ২০২৫) সকালে স্কুলে আসেন সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। বেলা ১১টার দিকে গলায় স্কুলের পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকেন সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র জুনায়েদ। আধাঘণ্টা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেলা সাড়ে ১১টায় বের হন তিনি।
এ সময় স্কুলের গেটের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জুনায়েদ। সে জানায়, ওদিন বিমান দুর্ঘটনার সময় বিকট শব্দ হয়েছিল। মনে হয়েছিল কানের পর্দা ফেটে যাবে। আতংকে সবাই ছোটাছুটি করি। একপর্যায়ে শান্ত হয়ে স্কুলের যে ভবনটিতে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানে আসি। দেখি শিশু শিক্ষার্থীদের হাত-পা ছড়িয়ে ছিটে আছে। অনেক শিক্ষার্থী আগুনে পুড়ে গেছে। এমন করুণ দৃশ্য বলে বোঝানো যাবে না। এখন রাতে ঘুমাতে গেলে এই দৃশ্য চোখে ভেসে উঠে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে ক্লাস-পরীক্ষা দেবো মাথায় আসে না।
মাইলস্টোনের পাশের রাস্তায় কাজ করা এক নারী বলেন, ‘বিকট শব্দ হয়। ধোঁয়ায় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। এরপর দেখলাম আহতরা একে একে বের হচ্ছে। যে যেভাবে পারছে ছোটাছুটি করছে। অনেকের শরীর পুড়ে গেছে। অধিকাংশেরই শরীরে কাপড় ছিল না।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার ছেলে স্কুলটিতে পড়ে। আমি তাকে আনতে গিয়েছিলাম। আমি ভেতরে ঢুকেছিলাম, অনেকে আহত হয়েছে। বেশিরভাগই ছোট ছোট বাচ্চা। স্কুলের ভেতরে যারা ছিল তাদের ৮০ শতাংশই আহত। বিমান বিধ্বস্তের পরে তেল ছড়িয়ে পড়ায় আগুনের বিস্তৃতি বেড়েছে।’
স্কুল ভবন থেকে ১০০ গজের মধ্যে মোহাম্মদ জইমত আলীর এক্সক্যাভেটর মেরামতের গ্যারেজ। চালক আপন আহমেদ কাজ করছিলেন। উড়োজাহাজ খুব নিচু দিয়ে উঠতে দেখে তারা দুজনে কিছুটা অবাক হয়েছিলেন। কয়েক মুহূর্ত পরেই বিকট শব্দ শুনে তারা প্রথমে ছুটে যান পাশের মেট্রোরেলের ডিপোর দিকে। পরে তারা দেখেন, স্কুল থেকে আগুন বের হচ্ছে। ঘটনার পর পরই উপস্থিত হয়েছিলেন ঠিকাদার আতিকুর রহমান। তিনি বলছেন, ‘যারা পুড়েছে, তাদের বেশিরভাগই ৮ থেকে ১০ বছরের বাচ্চা। অনেককে হাতে ধরার মতো অবস্থায় ছিল না।’
মাইলস্টোনে ছুটি আরও দুইদিন
বিমান বিধ্বস্তের ভয়াবহ ঘটনার পর থেকে বন্ধ ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত রোববার থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চলার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন করে আজ ও আগামীকাল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি কবে খুলবে সে ব্যাপারে আগামীকালের সিদ্ধান্ত জানানো হবে। মর্মান্তিক এ ঘটনার ৬ দিন বাদে আজ থেকে সীমিত পরিসরে ক্লাস শুরুর কথা বলা হয়েছিল। তবে এর আগের দিন গত শনিবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, ‘রোববার (আজ) থেকে ক্লাস শুরু হচ্ছে না। প্রথম তিন দিন ছুটি ঘোষণা হয়েছিল, পরে তা আরও দুই দিন রোববার (আজ) ও সোমবার (আগামীকাল) পর্যন্ত বাড়ানো হয়।’ ছুটি শেষে আগামী মঙ্গলবার স্কুল খুলবে কিনা, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সে সিদ্ধান্ত সোমবার (আগামীকাল) জানা যাবে। কর্তৃপক্ষ আজ বসে স্কুল খোলা বা না খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’ স্কুলে পড়ে আছে বই-খাতা,
এখনও উৎসুক মানুষের ভিড়
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে শনিবার সকালে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দেখা যায়নি। তদন্তদলের কেউ ক্যাম্পাসে আসেননি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ফটকে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। তবে এখনও পড়ে আছে বই-খাতা। রাজধানীর ভাটারা থেকে এসেছেন মো. টিটু। তিনি বলেন, ‘এখানটায় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে শুনেছি। সেজন্য দেখতে এসেছি। নিজের চোখে দেখার জন্যই কষ্ট করে এসেছি।’
সাংবাদিকদের বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তারক্ষীরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে। সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হবে না। শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে উৎসুক জনতার জটলা দেখা গেছে। অল্প অল্প করে তাদের ক্যাম্পাসের একটি প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য পথ দিয়ে বের করে দিচ্ছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তারক্ষীরা। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকেই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। বিদ্যালয়ের ভেতরে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভেতরে পুলিশের ১০-?১২ জন সদস্য রয়েছেন। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলারক্ষার কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তারক্ষীরা।
তবে দুর্ঘটনার পর কয়েকদিন সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ থাকলেও সকালে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল করা হয়। কলেজের নিরাপত্তাকর্মীরা ৫ থেকে ৭ মিনিট পরপর ৮ থেকে ১০ জনের ছোট ছোট দলে উৎসুক জনতাকে ভেতরে প্রবেশের সুযোগ দিচ্ছিলেন। যে দোতলা ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, তার সামনের খোলা অংশ টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। দর্শনার্থীরা প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে সেই বেড়ার পাশ দিয়ে হেঁটে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি দেখছেন এবং পেছনের ৪ নম্বর ফটক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় সবাইকেই মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল দেখা শেষে কলেজের কর্মীরা উৎসুক জনতাকে দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে অনুরোধ করছিলেন।
এছাড়া ওই দোতালা ভবনের পেছনের সরু রাস্তায়ও উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা যারা আসছেন, তারা স্কুলের সামনে এসে সেদিনের ভয়াবহতার কথা স্মরণ করছেন। এখনও ট্রমার মধ্যে আছেন তারা। তাদের অনেকের চোখের সামনেই বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা এখনও সেই ভয়াবহ স্মৃতি ভুলতে পারছে না। চোখের সামনে দেখা আগুনের লেলিহান শিখা ও বন্ধুদের আর্তনাদ তাদের তাড়া করে ফিরছে।
এদিকে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাও শনিবার ও জারিফ নামে এক শিক্ষার্থী মারা গেছে। মারা গেছেন মাসুমা নামে আরও একজন। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের মৃত্যু হলো। গত শনিবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের একটি ভবনের সামনে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় সামরিক বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় দগ্ধ ও আহত ৪৬ জন এখনও বার্ন ইনস্টিটিউট, সিএমএইচসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।