বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে আট বিভাগেই আগামী দুই-তিন দিন বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার কারণে উপকূলীয় ১৫ জেলার নিম্নঞ্চল জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রবল জোয়ারে ভাঙন দেখা দিয়েছে
বরগুনায় বিপৎসীমার ওপর নদীর পানি, ফেরিঘাট প্লাবিত,
টানা বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত
শনিবার,(২৬ জুলাই ২০২৫) আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি বর্তমানে (শনিবার) ভারতের বিহারে অবস্থান করছিল। পরে পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন ঝাড়খন্ডে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করবে। এর প্রভাবে আগামী দুই-তিন বৃষ্টিপাত বেশি হতে পারে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এরপরও কম-বেশি বৃষ্টিপাত থাকবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এর ফলে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ এক থেকে তিন ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এজন্য উত্তর বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবারের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এই সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গেল ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করেছে। এই সময়ে রাজধানী ঢাকায়ও ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নীলফামারীর ডিমলায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বরগুনায় বিপৎসীমার
ওপর নদীর পানি
বরগুনা থেকে নিজস্ব র্বার্তা পরিবেশক জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও স্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে বরগুনায় নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। প্লাবিত হয়েছে বরগুনার ৩ টি ফেরীঘাট। প্রায় ২ঘন্টা ফেরী চলাচল বন্ধ ছিল।
ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে অন্তত ২ ঘণ্টা বন্ধ থাকায় জেলার আমতলী-পুরাকাটা ও বড়ইতলা-বাইন চটকিও বেতাগী কচুয়া ফেরি চলাচল ব্যহত হয়। এদিকে রাত-দিনের টানা বর্ষণে ভোগান্তি বেড়েছে জনজীবনে।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ জানায়,স্বাভাবিক জোয়ারের সাথে মৌসুমী জো’র কারণে শনিবার জোয়ারের পানি ২ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে। এ পানি দ্রুত নেমে গেলেও যা বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়েছে।
জোয়ারের পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে সদর উপজেলার বড়ইতলা ফেরিঘাট, পোটকাখালী ও কুমড়াখালী আবাসন প্রকল্প, জেলা শহরের কলেজ রোড, পশু হাসপাতাল সড়ক, চরকলোনি, মাঝের চর, তালতলী উপজেলার নিদ্রা, সকিনা, শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকতসহ একাধিক এলাকা।পানি দ্রুত নেমে গেলেও এতে চরম ভোগান্তিতে পরতে হয়েছে নিম্নাঞ্চলের মানুষের। জোয়ারের পানিতে জেলার বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরির গ্যাংওয়ে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত।
তবে বরগুনা বেড়িবাঁধের বেশকিছু জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও কোথাও কোনো ধরনের দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে আট বিভাগেই আগামী দুই-তিন দিন বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার কারণে উপকূলীয় ১৫ জেলার নিম্নঞ্চল জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে প্রবল জোয়ারে ভাঙন দেখা দিয়েছে
বরগুনায় বিপৎসীমার ওপর নদীর পানি, ফেরিঘাট প্লাবিত,
টানা বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত
শনিবার,(২৬ জুলাই ২০২৫) আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি বর্তমানে (শনিবার) ভারতের বিহারে অবস্থান করছিল। পরে পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন ঝাড়খন্ডে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করবে। এর প্রভাবে আগামী দুই-তিন বৃষ্টিপাত বেশি হতে পারে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এরপরও কম-বেশি বৃষ্টিপাত থাকবে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এর ফলে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ এক থেকে তিন ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এজন্য উত্তর বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শনিবারের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এই সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গেল ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করেছে। এই সময়ে রাজধানী ঢাকায়ও ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নীলফামারীর ডিমলায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বরগুনায় বিপৎসীমার
ওপর নদীর পানি
বরগুনা থেকে নিজস্ব র্বার্তা পরিবেশক জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও স্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে বরগুনায় নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। প্লাবিত হয়েছে বরগুনার ৩ টি ফেরীঘাট। প্রায় ২ঘন্টা ফেরী চলাচল বন্ধ ছিল।
ফেরির গ্যাংওয়ে তলিয়ে অন্তত ২ ঘণ্টা বন্ধ থাকায় জেলার আমতলী-পুরাকাটা ও বড়ইতলা-বাইন চটকিও বেতাগী কচুয়া ফেরি চলাচল ব্যহত হয়। এদিকে রাত-দিনের টানা বর্ষণে ভোগান্তি বেড়েছে জনজীবনে।
বরগুনার পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষ জানায়,স্বাভাবিক জোয়ারের সাথে মৌসুমী জো’র কারণে শনিবার জোয়ারের পানি ২ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়েছে। এ পানি দ্রুত নেমে গেলেও যা বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়েছে।
জোয়ারের পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে সদর উপজেলার বড়ইতলা ফেরিঘাট, পোটকাখালী ও কুমড়াখালী আবাসন প্রকল্প, জেলা শহরের কলেজ রোড, পশু হাসপাতাল সড়ক, চরকলোনি, মাঝের চর, তালতলী উপজেলার নিদ্রা, সকিনা, শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকতসহ একাধিক এলাকা।পানি দ্রুত নেমে গেলেও এতে চরম ভোগান্তিতে পরতে হয়েছে নিম্নাঞ্চলের মানুষের। জোয়ারের পানিতে জেলার বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরির গ্যাংওয়ে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত।
তবে বরগুনা বেড়িবাঁধের বেশকিছু জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও কোথাও কোনো ধরনের দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।